হাসান আলী

সমাজের প্রয়োজনে একদিন গড়ে উঠেছিল পরিবার। পরিবার ছিল বিপদে আশ্রয়, ক্ষুধায় খাবার, সন্তান জন্মদান ও লালনপালনের কেন্দ্র হিসেবে। মূলত গোষ্ঠীকেন্দ্রিক জীবন বিকশিত হয়ে যৌথ পরিবারে রূপ নেয়। সমাজের বিশেষ পরিস্থিতিতে যৌথ পরিবার ভেঙে গিয়ে একক পরিবারে রূপ নিয়েছে। সেই একক পরিবারও হালে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে নিয়ে যে একক পরিবার ছিল, সেটি এখন ভাঙনের কবলে পড়েছে। স্বামী-স্ত্রীর কর্মক্ষেত্র আলাদা। পড়াশোনা, চাকরিবাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কারণে ছেলেমেয়েদের আলাদা জায়গায় বসবাস করতে হচ্ছে। অনেকে আবার বার্ধক্যে এসে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করার সুযোগ পান না। কেউ একজন আগে মরে গিয়ে ‘একজন’ হয়ে পড়েন। সেই একজন গরিব হলে অসুখ-বিসুখ, অভাব-অনটন মোকাবিলা করতে না পেরে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।
আবার যাঁদের টাকাপয়সা থাকে, তাঁরা সেবাযত্ন, খাবার-দাবার, চিকিৎসা সময়মতো পান। অধিক বয়সী প্রবীণদের জীবনে ভয়ংকর নিঃসঙ্গতা জেঁকে বসে।
এই নিঃসঙ্গতা ভয়ংকর নিষ্ঠুর হয় যদি তিনি শারীরিক বা মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হন। মানুষ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, দায়িত্ব-কর্তব্য, প্রেম-ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা এক পাশে সরিয়ে রেখে টিকে থাকার সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়। কী করলে টিকে থাকা যাবে, সেই পথ খুঁজে বের করতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
এই টিকে থাকার জন্য তার সামনে যা কিছু বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তা অপসারণে চরম মূল্য দিতে কোনো দ্বিধা করে না। সমাজ বিকাশের বিভিন্ন স্তরে এসে মানুষ সভ্যতা-সংস্কৃতি, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ তৈরি যেমন করেছে, তেমনি আবার ভেঙে ফেলেছে যখন তা বিরক্তিকর ও কষ্টকর হয়ে সামনে দাঁড়িয়েছে।
আমাদের প্রবীণেরা বেশির ভাগই শৈশব-কৈশোর কাটিয়েছেন যৌথ পরিবারে। যৌথ পরিবারের উত্তাপ, মায়া-মমতা, স্নেহ-ভালোবাসায় তাঁর মনোজগৎ গড়ে উঠেছে। যৌথ পরিবার ভাঙার জন্য যেসব যুবক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, আজ তাঁদের অনেকেই যৌথ পরিবারের জন্য আক্ষেপ করছেন।
অপেক্ষাকৃত দুর্বল ভাইবোন, আত্মীয়স্বজনকে বোঝা মনে করে একদল মানুষ নিজের ক্যারিয়ারের জন্য যৌথ পরিবার থেকে নিজেকে কার্যত সরিয়ে এনেছিলেন। ৩০-৪০ বছর আগেও বিয়ে করে স্ত্রীকে মা-বাবার কাছে রেখে আসার রেওয়াজ ছিল। তারপর খাওয়ার কষ্ট, ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ, পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ, শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে স্ত্রীকে নিজের কর্মক্ষেত্রে নিয়ে আসা অথবা আলাদা সংসার করার রেওয়াজ চালু হয়।
পৃথিবীর ইতিহাস হলো সামনে এগিয়ে যাওয়া। অতীতে ফিরে যাওয়া নয়। অতীতের নানা ঘটনা-স্মৃতি মানুষকে নতুন করে অনেক কিছু ভাবতে শেখায়। নতুন নতুন সিদ্ধান্ত নিতে রসদ জোগায় কিন্তু অতীতে বসবাস করার সুযোগ দেয় না।
মানুষ তার অতীত ঐতিহ্য জাদুঘরে সংরক্ষণ করে। সময়-সুযোগ করে পরিবার-পরিজনসহ দেখে আসে।
মানুষ বসবাস করে বর্তমানে। অতীত শুধু বর্তমানকে এগিয়ে নিতে প্রেরণা দেয়। যৌথ পরিবার আর ফিরে আসবে না। একক পরিবারে চলছে ভাঙনের সুর। ৫০ বছর পর পরিবারের ধরন পাল্টে যেতে পারে। সেটা আমরা এই মুহূর্তে কল্পনাও করতে পারছি না। তবে মানুষের এই উপলব্ধি তৈরি হয়েছে একা একা, বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়বে। একদিন মানুষ আলাদা বাড়িঘর তৈরি করার জন্য উদ্গ্রীব ছিল, তুচ্ছ ঘটনায় যৌথ পরিবারের মাঝ উঠানে দেয়াল টেনেছে, দালান তুলে অপেক্ষাকৃত দুর্বলকে কোণঠাসা করে দিয়েছে। শহরে নিজের একটা বাড়ি করার জন্য কেউ কেউ মূল্যবোধ বিসর্জন দিতে দ্বিধা বোধ করেনি। অবশেষে ফ্ল্যাট বাড়ির ধারণা তৈরি হলে দ্রুত তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ফ্ল্যাট বাড়ি মানে একই দালানে বেশ কয়েকটি পরিবারের বসবাস। গড়ে ওঠা ফ্ল্যাট মালিক সমিতি কল্যাণমূলক কর্মসূচি নিচ্ছে। সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কনডোমনিয়াম। যেখানে শত শত পরিবার একত্রে বসবাস করে। ভেতরে থাকে শপিং মল, সুইমিংপুল, জিমনেসিয়াম, খেলার মাঠ, এটিএম বুথ, কমিউনিটি সেন্টারসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা।
মানুষ যেমন একদিন পরস্পরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল, তেমনি আবার একত্র হওয়ার তোড়জোড় চলছে। শহরের মানুষ চিন্তা-চেতনায়, রুচি-সংস্কৃতিতে তুলনামূলকভাবে এগিয়ে থাকায় শহরেই যৌথ জীবনের চর্চা শুরু হয়েছে।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) সামাজিক এসব পরিবর্তনকে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে ধরতে পেরেছে। এ প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশের দেড় কোটি প্রবীণের জীবনমান উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩, পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন, ২০১৩, প্রবীণদের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সিনিয়র সিটিজেন ঘোষণা, ৫০ লাখ মানুষকে বয়স্ক ভাতার আওতাভুক্ত করা।
আমাদের নীতিনির্ধারক মহল বিদেশের আদলে বৃদ্ধাশ্রম, প্রবীণ নিবাস তৈরি করেছিল। এতে প্রবীণদের মতামত, সামাজিক-ধর্মীয় মূল্যবোধ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে প্রয়োজন থাকলেও বৃদ্ধাশ্রম বা প্রবীণ নিবাসে থাকার লোকজন তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় ভিক্ষা করে, নির্যাতন-অপমান সয়ে পরিবারের সঙ্গে থাকার দার্শনিক ব্যাখ্যা আমরা করতে পারিনি। আমরা বিবেচনায় নিয়েছি প্রবীণের থাকা-খাওয়া আর চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয়।
আবেগিক সম্পর্ক, মর্যাদা, সামাজিক কর্মকাণ্ড, স্বাধীনতা, পরিবারে অবস্থান, বিনোদন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ-প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকে আমরা বিবেচনায় নিতে চাইনি। এগুলো মামুলি ব্যাপার বলে এড়িয়ে গিয়েছি। পিকেএসএফ এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রবীণের জন্য গড়ে তুলেছে প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র। দেশের ৬১ জেলার ১৫৩ উপজেলায় ২১৮টি ইউনিয়নে সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। পিকেএসএফ প্রবীণদের জন্য বয়স্ক ভাতা, প্রবীণদের সম্মাননা প্রদান, সেবা প্রদানকারী সন্তানকে শ্রেষ্ঠ সন্তান সম্মান প্রদান, অতিদরিদ্র ও সক্ষম প্রবীণকে প্রশিক্ষণ ও বিশেষ ঋণ প্রদান, প্রবীণ ব্যক্তি ও পরিবারের জন্য জীবন-সহায়ক সামগ্রী প্রদান করে।
প্রবীণকল্যাণে গড়ে উঠেছে ইউনিয়ন কমিটি, ওয়ার্ড কমিটি। কমিটিগুলো প্রবীণের চলমান সমস্যা নিরসনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমি নিজে ৪০টি প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। প্রবীণদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলেছি। তাঁদের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার কথা শুনেছি। দেখলাম, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত প্রবীণ কেন্দ্রে প্রবীণেরা উপস্থিত হয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, দাবা, লুডু, ক্যারম খেলছেন। ঝগড়া-বিবাদ মীমাংসা করে দিচ্ছেন, যাতে করে বাদী-বিবাদী উভয়েই সন্তুষ্ট হচ্ছেন। প্রত্যেক মানুষের সম্মান-মর্যাদাকে বিবেচনায় নিয়ে কেন্দ্রে নেতারা কাজ করছেন। কমিটির নেতারা সরকারের বিভিন্ন মহলে নিজেদের প্রয়োজনীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। প্রবীণেরা যেন কোনোভাবেই নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার না হন, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। যেসব ছেলেমেয়ে মা-বাবাকে কষ্ট দিচ্ছেন, তাঁদের বুঝিয়ে বা চাপ সৃষ্টি করে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। প্রবীণেরা দল বেঁধে বেড়াতে যাচ্ছেন, এতে স্থানীয় জনসাধারণ সমর্থন-সহযোগিতা করছে।
প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে তাদের সক্রিয় রাখার চেষ্টা করছে। বাতের ব্যথা থেকে খানিকটা রেহাই পেতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাসেবা প্রদানের প্রশংসনীয় উদ্যোগও রয়েছে।
প্রবীণেরা জীবনের শেষ দিনগুলো পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজনের সান্নিধ্যে কাটাতে চান। এখান থেকে সরিয়ে নিলে তাঁদের ওপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। যাঁদের থাকা-খাওয়া, দেখাশোনা, চিকিৎসাসেবা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, তাঁদের অবশ্যই বিশেষ ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। নানা কারণে জীবনের শেষ দিনগুলোতে মানুষ একা হয়ে পড়েন। একা মানুষটি পরিচিত পরিবেশে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে থাকলে ভালো থাকেন।
প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র স্বস্তিদায়ক, শান্তিপূর্ণ প্রবীণ জীবনের জন্য কাজ করছে। এ মডেলটি নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্রের সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের এগিয়ে আসা জরুরি হয়ে পড়েছে।

সমাজের প্রয়োজনে একদিন গড়ে উঠেছিল পরিবার। পরিবার ছিল বিপদে আশ্রয়, ক্ষুধায় খাবার, সন্তান জন্মদান ও লালনপালনের কেন্দ্র হিসেবে। মূলত গোষ্ঠীকেন্দ্রিক জীবন বিকশিত হয়ে যৌথ পরিবারে রূপ নেয়। সমাজের বিশেষ পরিস্থিতিতে যৌথ পরিবার ভেঙে গিয়ে একক পরিবারে রূপ নিয়েছে। সেই একক পরিবারও হালে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে নিয়ে যে একক পরিবার ছিল, সেটি এখন ভাঙনের কবলে পড়েছে। স্বামী-স্ত্রীর কর্মক্ষেত্র আলাদা। পড়াশোনা, চাকরিবাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কারণে ছেলেমেয়েদের আলাদা জায়গায় বসবাস করতে হচ্ছে। অনেকে আবার বার্ধক্যে এসে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করার সুযোগ পান না। কেউ একজন আগে মরে গিয়ে ‘একজন’ হয়ে পড়েন। সেই একজন গরিব হলে অসুখ-বিসুখ, অভাব-অনটন মোকাবিলা করতে না পেরে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।
আবার যাঁদের টাকাপয়সা থাকে, তাঁরা সেবাযত্ন, খাবার-দাবার, চিকিৎসা সময়মতো পান। অধিক বয়সী প্রবীণদের জীবনে ভয়ংকর নিঃসঙ্গতা জেঁকে বসে।
এই নিঃসঙ্গতা ভয়ংকর নিষ্ঠুর হয় যদি তিনি শারীরিক বা মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হন। মানুষ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, দায়িত্ব-কর্তব্য, প্রেম-ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা এক পাশে সরিয়ে রেখে টিকে থাকার সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়। কী করলে টিকে থাকা যাবে, সেই পথ খুঁজে বের করতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
এই টিকে থাকার জন্য তার সামনে যা কিছু বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তা অপসারণে চরম মূল্য দিতে কোনো দ্বিধা করে না। সমাজ বিকাশের বিভিন্ন স্তরে এসে মানুষ সভ্যতা-সংস্কৃতি, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ তৈরি যেমন করেছে, তেমনি আবার ভেঙে ফেলেছে যখন তা বিরক্তিকর ও কষ্টকর হয়ে সামনে দাঁড়িয়েছে।
আমাদের প্রবীণেরা বেশির ভাগই শৈশব-কৈশোর কাটিয়েছেন যৌথ পরিবারে। যৌথ পরিবারের উত্তাপ, মায়া-মমতা, স্নেহ-ভালোবাসায় তাঁর মনোজগৎ গড়ে উঠেছে। যৌথ পরিবার ভাঙার জন্য যেসব যুবক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, আজ তাঁদের অনেকেই যৌথ পরিবারের জন্য আক্ষেপ করছেন।
অপেক্ষাকৃত দুর্বল ভাইবোন, আত্মীয়স্বজনকে বোঝা মনে করে একদল মানুষ নিজের ক্যারিয়ারের জন্য যৌথ পরিবার থেকে নিজেকে কার্যত সরিয়ে এনেছিলেন। ৩০-৪০ বছর আগেও বিয়ে করে স্ত্রীকে মা-বাবার কাছে রেখে আসার রেওয়াজ ছিল। তারপর খাওয়ার কষ্ট, ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ, পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ, শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে স্ত্রীকে নিজের কর্মক্ষেত্রে নিয়ে আসা অথবা আলাদা সংসার করার রেওয়াজ চালু হয়।
পৃথিবীর ইতিহাস হলো সামনে এগিয়ে যাওয়া। অতীতে ফিরে যাওয়া নয়। অতীতের নানা ঘটনা-স্মৃতি মানুষকে নতুন করে অনেক কিছু ভাবতে শেখায়। নতুন নতুন সিদ্ধান্ত নিতে রসদ জোগায় কিন্তু অতীতে বসবাস করার সুযোগ দেয় না।
মানুষ তার অতীত ঐতিহ্য জাদুঘরে সংরক্ষণ করে। সময়-সুযোগ করে পরিবার-পরিজনসহ দেখে আসে।
মানুষ বসবাস করে বর্তমানে। অতীত শুধু বর্তমানকে এগিয়ে নিতে প্রেরণা দেয়। যৌথ পরিবার আর ফিরে আসবে না। একক পরিবারে চলছে ভাঙনের সুর। ৫০ বছর পর পরিবারের ধরন পাল্টে যেতে পারে। সেটা আমরা এই মুহূর্তে কল্পনাও করতে পারছি না। তবে মানুষের এই উপলব্ধি তৈরি হয়েছে একা একা, বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়বে। একদিন মানুষ আলাদা বাড়িঘর তৈরি করার জন্য উদ্গ্রীব ছিল, তুচ্ছ ঘটনায় যৌথ পরিবারের মাঝ উঠানে দেয়াল টেনেছে, দালান তুলে অপেক্ষাকৃত দুর্বলকে কোণঠাসা করে দিয়েছে। শহরে নিজের একটা বাড়ি করার জন্য কেউ কেউ মূল্যবোধ বিসর্জন দিতে দ্বিধা বোধ করেনি। অবশেষে ফ্ল্যাট বাড়ির ধারণা তৈরি হলে দ্রুত তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ফ্ল্যাট বাড়ি মানে একই দালানে বেশ কয়েকটি পরিবারের বসবাস। গড়ে ওঠা ফ্ল্যাট মালিক সমিতি কল্যাণমূলক কর্মসূচি নিচ্ছে। সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কনডোমনিয়াম। যেখানে শত শত পরিবার একত্রে বসবাস করে। ভেতরে থাকে শপিং মল, সুইমিংপুল, জিমনেসিয়াম, খেলার মাঠ, এটিএম বুথ, কমিউনিটি সেন্টারসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা।
মানুষ যেমন একদিন পরস্পরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল, তেমনি আবার একত্র হওয়ার তোড়জোড় চলছে। শহরের মানুষ চিন্তা-চেতনায়, রুচি-সংস্কৃতিতে তুলনামূলকভাবে এগিয়ে থাকায় শহরেই যৌথ জীবনের চর্চা শুরু হয়েছে।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) সামাজিক এসব পরিবর্তনকে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে ধরতে পেরেছে। এ প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশের দেড় কোটি প্রবীণের জীবনমান উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩, পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন, ২০১৩, প্রবীণদের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সিনিয়র সিটিজেন ঘোষণা, ৫০ লাখ মানুষকে বয়স্ক ভাতার আওতাভুক্ত করা।
আমাদের নীতিনির্ধারক মহল বিদেশের আদলে বৃদ্ধাশ্রম, প্রবীণ নিবাস তৈরি করেছিল। এতে প্রবীণদের মতামত, সামাজিক-ধর্মীয় মূল্যবোধ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে প্রয়োজন থাকলেও বৃদ্ধাশ্রম বা প্রবীণ নিবাসে থাকার লোকজন তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় ভিক্ষা করে, নির্যাতন-অপমান সয়ে পরিবারের সঙ্গে থাকার দার্শনিক ব্যাখ্যা আমরা করতে পারিনি। আমরা বিবেচনায় নিয়েছি প্রবীণের থাকা-খাওয়া আর চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয়।
আবেগিক সম্পর্ক, মর্যাদা, সামাজিক কর্মকাণ্ড, স্বাধীনতা, পরিবারে অবস্থান, বিনোদন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ-প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকে আমরা বিবেচনায় নিতে চাইনি। এগুলো মামুলি ব্যাপার বলে এড়িয়ে গিয়েছি। পিকেএসএফ এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রবীণের জন্য গড়ে তুলেছে প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র। দেশের ৬১ জেলার ১৫৩ উপজেলায় ২১৮টি ইউনিয়নে সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। পিকেএসএফ প্রবীণদের জন্য বয়স্ক ভাতা, প্রবীণদের সম্মাননা প্রদান, সেবা প্রদানকারী সন্তানকে শ্রেষ্ঠ সন্তান সম্মান প্রদান, অতিদরিদ্র ও সক্ষম প্রবীণকে প্রশিক্ষণ ও বিশেষ ঋণ প্রদান, প্রবীণ ব্যক্তি ও পরিবারের জন্য জীবন-সহায়ক সামগ্রী প্রদান করে।
প্রবীণকল্যাণে গড়ে উঠেছে ইউনিয়ন কমিটি, ওয়ার্ড কমিটি। কমিটিগুলো প্রবীণের চলমান সমস্যা নিরসনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমি নিজে ৪০টি প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। প্রবীণদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলেছি। তাঁদের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার কথা শুনেছি। দেখলাম, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত প্রবীণ কেন্দ্রে প্রবীণেরা উপস্থিত হয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, দাবা, লুডু, ক্যারম খেলছেন। ঝগড়া-বিবাদ মীমাংসা করে দিচ্ছেন, যাতে করে বাদী-বিবাদী উভয়েই সন্তুষ্ট হচ্ছেন। প্রত্যেক মানুষের সম্মান-মর্যাদাকে বিবেচনায় নিয়ে কেন্দ্রে নেতারা কাজ করছেন। কমিটির নেতারা সরকারের বিভিন্ন মহলে নিজেদের প্রয়োজনীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। প্রবীণেরা যেন কোনোভাবেই নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার না হন, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। যেসব ছেলেমেয়ে মা-বাবাকে কষ্ট দিচ্ছেন, তাঁদের বুঝিয়ে বা চাপ সৃষ্টি করে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। প্রবীণেরা দল বেঁধে বেড়াতে যাচ্ছেন, এতে স্থানীয় জনসাধারণ সমর্থন-সহযোগিতা করছে।
প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে তাদের সক্রিয় রাখার চেষ্টা করছে। বাতের ব্যথা থেকে খানিকটা রেহাই পেতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাসেবা প্রদানের প্রশংসনীয় উদ্যোগও রয়েছে।
প্রবীণেরা জীবনের শেষ দিনগুলো পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজনের সান্নিধ্যে কাটাতে চান। এখান থেকে সরিয়ে নিলে তাঁদের ওপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। যাঁদের থাকা-খাওয়া, দেখাশোনা, চিকিৎসাসেবা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, তাঁদের অবশ্যই বিশেষ ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। নানা কারণে জীবনের শেষ দিনগুলোতে মানুষ একা হয়ে পড়েন। একা মানুষটি পরিচিত পরিবেশে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে থাকলে ভালো থাকেন।
প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র স্বস্তিদায়ক, শান্তিপূর্ণ প্রবীণ জীবনের জন্য কাজ করছে। এ মডেলটি নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্রের সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের এগিয়ে আসা জরুরি হয়ে পড়েছে।
হাসান আলী

সমাজের প্রয়োজনে একদিন গড়ে উঠেছিল পরিবার। পরিবার ছিল বিপদে আশ্রয়, ক্ষুধায় খাবার, সন্তান জন্মদান ও লালনপালনের কেন্দ্র হিসেবে। মূলত গোষ্ঠীকেন্দ্রিক জীবন বিকশিত হয়ে যৌথ পরিবারে রূপ নেয়। সমাজের বিশেষ পরিস্থিতিতে যৌথ পরিবার ভেঙে গিয়ে একক পরিবারে রূপ নিয়েছে। সেই একক পরিবারও হালে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে নিয়ে যে একক পরিবার ছিল, সেটি এখন ভাঙনের কবলে পড়েছে। স্বামী-স্ত্রীর কর্মক্ষেত্র আলাদা। পড়াশোনা, চাকরিবাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কারণে ছেলেমেয়েদের আলাদা জায়গায় বসবাস করতে হচ্ছে। অনেকে আবার বার্ধক্যে এসে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করার সুযোগ পান না। কেউ একজন আগে মরে গিয়ে ‘একজন’ হয়ে পড়েন। সেই একজন গরিব হলে অসুখ-বিসুখ, অভাব-অনটন মোকাবিলা করতে না পেরে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।
আবার যাঁদের টাকাপয়সা থাকে, তাঁরা সেবাযত্ন, খাবার-দাবার, চিকিৎসা সময়মতো পান। অধিক বয়সী প্রবীণদের জীবনে ভয়ংকর নিঃসঙ্গতা জেঁকে বসে।
এই নিঃসঙ্গতা ভয়ংকর নিষ্ঠুর হয় যদি তিনি শারীরিক বা মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হন। মানুষ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, দায়িত্ব-কর্তব্য, প্রেম-ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা এক পাশে সরিয়ে রেখে টিকে থাকার সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়। কী করলে টিকে থাকা যাবে, সেই পথ খুঁজে বের করতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
এই টিকে থাকার জন্য তার সামনে যা কিছু বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তা অপসারণে চরম মূল্য দিতে কোনো দ্বিধা করে না। সমাজ বিকাশের বিভিন্ন স্তরে এসে মানুষ সভ্যতা-সংস্কৃতি, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ তৈরি যেমন করেছে, তেমনি আবার ভেঙে ফেলেছে যখন তা বিরক্তিকর ও কষ্টকর হয়ে সামনে দাঁড়িয়েছে।
আমাদের প্রবীণেরা বেশির ভাগই শৈশব-কৈশোর কাটিয়েছেন যৌথ পরিবারে। যৌথ পরিবারের উত্তাপ, মায়া-মমতা, স্নেহ-ভালোবাসায় তাঁর মনোজগৎ গড়ে উঠেছে। যৌথ পরিবার ভাঙার জন্য যেসব যুবক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, আজ তাঁদের অনেকেই যৌথ পরিবারের জন্য আক্ষেপ করছেন।
অপেক্ষাকৃত দুর্বল ভাইবোন, আত্মীয়স্বজনকে বোঝা মনে করে একদল মানুষ নিজের ক্যারিয়ারের জন্য যৌথ পরিবার থেকে নিজেকে কার্যত সরিয়ে এনেছিলেন। ৩০-৪০ বছর আগেও বিয়ে করে স্ত্রীকে মা-বাবার কাছে রেখে আসার রেওয়াজ ছিল। তারপর খাওয়ার কষ্ট, ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ, পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ, শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে স্ত্রীকে নিজের কর্মক্ষেত্রে নিয়ে আসা অথবা আলাদা সংসার করার রেওয়াজ চালু হয়।
পৃথিবীর ইতিহাস হলো সামনে এগিয়ে যাওয়া। অতীতে ফিরে যাওয়া নয়। অতীতের নানা ঘটনা-স্মৃতি মানুষকে নতুন করে অনেক কিছু ভাবতে শেখায়। নতুন নতুন সিদ্ধান্ত নিতে রসদ জোগায় কিন্তু অতীতে বসবাস করার সুযোগ দেয় না।
মানুষ তার অতীত ঐতিহ্য জাদুঘরে সংরক্ষণ করে। সময়-সুযোগ করে পরিবার-পরিজনসহ দেখে আসে।
মানুষ বসবাস করে বর্তমানে। অতীত শুধু বর্তমানকে এগিয়ে নিতে প্রেরণা দেয়। যৌথ পরিবার আর ফিরে আসবে না। একক পরিবারে চলছে ভাঙনের সুর। ৫০ বছর পর পরিবারের ধরন পাল্টে যেতে পারে। সেটা আমরা এই মুহূর্তে কল্পনাও করতে পারছি না। তবে মানুষের এই উপলব্ধি তৈরি হয়েছে একা একা, বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়বে। একদিন মানুষ আলাদা বাড়িঘর তৈরি করার জন্য উদ্গ্রীব ছিল, তুচ্ছ ঘটনায় যৌথ পরিবারের মাঝ উঠানে দেয়াল টেনেছে, দালান তুলে অপেক্ষাকৃত দুর্বলকে কোণঠাসা করে দিয়েছে। শহরে নিজের একটা বাড়ি করার জন্য কেউ কেউ মূল্যবোধ বিসর্জন দিতে দ্বিধা বোধ করেনি। অবশেষে ফ্ল্যাট বাড়ির ধারণা তৈরি হলে দ্রুত তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ফ্ল্যাট বাড়ি মানে একই দালানে বেশ কয়েকটি পরিবারের বসবাস। গড়ে ওঠা ফ্ল্যাট মালিক সমিতি কল্যাণমূলক কর্মসূচি নিচ্ছে। সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কনডোমনিয়াম। যেখানে শত শত পরিবার একত্রে বসবাস করে। ভেতরে থাকে শপিং মল, সুইমিংপুল, জিমনেসিয়াম, খেলার মাঠ, এটিএম বুথ, কমিউনিটি সেন্টারসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা।
মানুষ যেমন একদিন পরস্পরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল, তেমনি আবার একত্র হওয়ার তোড়জোড় চলছে। শহরের মানুষ চিন্তা-চেতনায়, রুচি-সংস্কৃতিতে তুলনামূলকভাবে এগিয়ে থাকায় শহরেই যৌথ জীবনের চর্চা শুরু হয়েছে।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) সামাজিক এসব পরিবর্তনকে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে ধরতে পেরেছে। এ প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশের দেড় কোটি প্রবীণের জীবনমান উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩, পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন, ২০১৩, প্রবীণদের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সিনিয়র সিটিজেন ঘোষণা, ৫০ লাখ মানুষকে বয়স্ক ভাতার আওতাভুক্ত করা।
আমাদের নীতিনির্ধারক মহল বিদেশের আদলে বৃদ্ধাশ্রম, প্রবীণ নিবাস তৈরি করেছিল। এতে প্রবীণদের মতামত, সামাজিক-ধর্মীয় মূল্যবোধ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে প্রয়োজন থাকলেও বৃদ্ধাশ্রম বা প্রবীণ নিবাসে থাকার লোকজন তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় ভিক্ষা করে, নির্যাতন-অপমান সয়ে পরিবারের সঙ্গে থাকার দার্শনিক ব্যাখ্যা আমরা করতে পারিনি। আমরা বিবেচনায় নিয়েছি প্রবীণের থাকা-খাওয়া আর চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয়।
আবেগিক সম্পর্ক, মর্যাদা, সামাজিক কর্মকাণ্ড, স্বাধীনতা, পরিবারে অবস্থান, বিনোদন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ-প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকে আমরা বিবেচনায় নিতে চাইনি। এগুলো মামুলি ব্যাপার বলে এড়িয়ে গিয়েছি। পিকেএসএফ এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রবীণের জন্য গড়ে তুলেছে প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র। দেশের ৬১ জেলার ১৫৩ উপজেলায় ২১৮টি ইউনিয়নে সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। পিকেএসএফ প্রবীণদের জন্য বয়স্ক ভাতা, প্রবীণদের সম্মাননা প্রদান, সেবা প্রদানকারী সন্তানকে শ্রেষ্ঠ সন্তান সম্মান প্রদান, অতিদরিদ্র ও সক্ষম প্রবীণকে প্রশিক্ষণ ও বিশেষ ঋণ প্রদান, প্রবীণ ব্যক্তি ও পরিবারের জন্য জীবন-সহায়ক সামগ্রী প্রদান করে।
প্রবীণকল্যাণে গড়ে উঠেছে ইউনিয়ন কমিটি, ওয়ার্ড কমিটি। কমিটিগুলো প্রবীণের চলমান সমস্যা নিরসনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমি নিজে ৪০টি প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। প্রবীণদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলেছি। তাঁদের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার কথা শুনেছি। দেখলাম, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত প্রবীণ কেন্দ্রে প্রবীণেরা উপস্থিত হয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, দাবা, লুডু, ক্যারম খেলছেন। ঝগড়া-বিবাদ মীমাংসা করে দিচ্ছেন, যাতে করে বাদী-বিবাদী উভয়েই সন্তুষ্ট হচ্ছেন। প্রত্যেক মানুষের সম্মান-মর্যাদাকে বিবেচনায় নিয়ে কেন্দ্রে নেতারা কাজ করছেন। কমিটির নেতারা সরকারের বিভিন্ন মহলে নিজেদের প্রয়োজনীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। প্রবীণেরা যেন কোনোভাবেই নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার না হন, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। যেসব ছেলেমেয়ে মা-বাবাকে কষ্ট দিচ্ছেন, তাঁদের বুঝিয়ে বা চাপ সৃষ্টি করে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। প্রবীণেরা দল বেঁধে বেড়াতে যাচ্ছেন, এতে স্থানীয় জনসাধারণ সমর্থন-সহযোগিতা করছে।
প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে তাদের সক্রিয় রাখার চেষ্টা করছে। বাতের ব্যথা থেকে খানিকটা রেহাই পেতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাসেবা প্রদানের প্রশংসনীয় উদ্যোগও রয়েছে।
প্রবীণেরা জীবনের শেষ দিনগুলো পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজনের সান্নিধ্যে কাটাতে চান। এখান থেকে সরিয়ে নিলে তাঁদের ওপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। যাঁদের থাকা-খাওয়া, দেখাশোনা, চিকিৎসাসেবা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, তাঁদের অবশ্যই বিশেষ ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। নানা কারণে জীবনের শেষ দিনগুলোতে মানুষ একা হয়ে পড়েন। একা মানুষটি পরিচিত পরিবেশে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে থাকলে ভালো থাকেন।
প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র স্বস্তিদায়ক, শান্তিপূর্ণ প্রবীণ জীবনের জন্য কাজ করছে। এ মডেলটি নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্রের সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের এগিয়ে আসা জরুরি হয়ে পড়েছে।

সমাজের প্রয়োজনে একদিন গড়ে উঠেছিল পরিবার। পরিবার ছিল বিপদে আশ্রয়, ক্ষুধায় খাবার, সন্তান জন্মদান ও লালনপালনের কেন্দ্র হিসেবে। মূলত গোষ্ঠীকেন্দ্রিক জীবন বিকশিত হয়ে যৌথ পরিবারে রূপ নেয়। সমাজের বিশেষ পরিস্থিতিতে যৌথ পরিবার ভেঙে গিয়ে একক পরিবারে রূপ নিয়েছে। সেই একক পরিবারও হালে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে নিয়ে যে একক পরিবার ছিল, সেটি এখন ভাঙনের কবলে পড়েছে। স্বামী-স্ত্রীর কর্মক্ষেত্র আলাদা। পড়াশোনা, চাকরিবাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কারণে ছেলেমেয়েদের আলাদা জায়গায় বসবাস করতে হচ্ছে। অনেকে আবার বার্ধক্যে এসে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করার সুযোগ পান না। কেউ একজন আগে মরে গিয়ে ‘একজন’ হয়ে পড়েন। সেই একজন গরিব হলে অসুখ-বিসুখ, অভাব-অনটন মোকাবিলা করতে না পেরে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।
আবার যাঁদের টাকাপয়সা থাকে, তাঁরা সেবাযত্ন, খাবার-দাবার, চিকিৎসা সময়মতো পান। অধিক বয়সী প্রবীণদের জীবনে ভয়ংকর নিঃসঙ্গতা জেঁকে বসে।
এই নিঃসঙ্গতা ভয়ংকর নিষ্ঠুর হয় যদি তিনি শারীরিক বা মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হন। মানুষ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, দায়িত্ব-কর্তব্য, প্রেম-ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা এক পাশে সরিয়ে রেখে টিকে থাকার সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়। কী করলে টিকে থাকা যাবে, সেই পথ খুঁজে বের করতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
এই টিকে থাকার জন্য তার সামনে যা কিছু বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তা অপসারণে চরম মূল্য দিতে কোনো দ্বিধা করে না। সমাজ বিকাশের বিভিন্ন স্তরে এসে মানুষ সভ্যতা-সংস্কৃতি, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ তৈরি যেমন করেছে, তেমনি আবার ভেঙে ফেলেছে যখন তা বিরক্তিকর ও কষ্টকর হয়ে সামনে দাঁড়িয়েছে।
আমাদের প্রবীণেরা বেশির ভাগই শৈশব-কৈশোর কাটিয়েছেন যৌথ পরিবারে। যৌথ পরিবারের উত্তাপ, মায়া-মমতা, স্নেহ-ভালোবাসায় তাঁর মনোজগৎ গড়ে উঠেছে। যৌথ পরিবার ভাঙার জন্য যেসব যুবক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, আজ তাঁদের অনেকেই যৌথ পরিবারের জন্য আক্ষেপ করছেন।
অপেক্ষাকৃত দুর্বল ভাইবোন, আত্মীয়স্বজনকে বোঝা মনে করে একদল মানুষ নিজের ক্যারিয়ারের জন্য যৌথ পরিবার থেকে নিজেকে কার্যত সরিয়ে এনেছিলেন। ৩০-৪০ বছর আগেও বিয়ে করে স্ত্রীকে মা-বাবার কাছে রেখে আসার রেওয়াজ ছিল। তারপর খাওয়ার কষ্ট, ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ, পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ, শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে স্ত্রীকে নিজের কর্মক্ষেত্রে নিয়ে আসা অথবা আলাদা সংসার করার রেওয়াজ চালু হয়।
পৃথিবীর ইতিহাস হলো সামনে এগিয়ে যাওয়া। অতীতে ফিরে যাওয়া নয়। অতীতের নানা ঘটনা-স্মৃতি মানুষকে নতুন করে অনেক কিছু ভাবতে শেখায়। নতুন নতুন সিদ্ধান্ত নিতে রসদ জোগায় কিন্তু অতীতে বসবাস করার সুযোগ দেয় না।
মানুষ তার অতীত ঐতিহ্য জাদুঘরে সংরক্ষণ করে। সময়-সুযোগ করে পরিবার-পরিজনসহ দেখে আসে।
মানুষ বসবাস করে বর্তমানে। অতীত শুধু বর্তমানকে এগিয়ে নিতে প্রেরণা দেয়। যৌথ পরিবার আর ফিরে আসবে না। একক পরিবারে চলছে ভাঙনের সুর। ৫০ বছর পর পরিবারের ধরন পাল্টে যেতে পারে। সেটা আমরা এই মুহূর্তে কল্পনাও করতে পারছি না। তবে মানুষের এই উপলব্ধি তৈরি হয়েছে একা একা, বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়বে। একদিন মানুষ আলাদা বাড়িঘর তৈরি করার জন্য উদ্গ্রীব ছিল, তুচ্ছ ঘটনায় যৌথ পরিবারের মাঝ উঠানে দেয়াল টেনেছে, দালান তুলে অপেক্ষাকৃত দুর্বলকে কোণঠাসা করে দিয়েছে। শহরে নিজের একটা বাড়ি করার জন্য কেউ কেউ মূল্যবোধ বিসর্জন দিতে দ্বিধা বোধ করেনি। অবশেষে ফ্ল্যাট বাড়ির ধারণা তৈরি হলে দ্রুত তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ফ্ল্যাট বাড়ি মানে একই দালানে বেশ কয়েকটি পরিবারের বসবাস। গড়ে ওঠা ফ্ল্যাট মালিক সমিতি কল্যাণমূলক কর্মসূচি নিচ্ছে। সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কনডোমনিয়াম। যেখানে শত শত পরিবার একত্রে বসবাস করে। ভেতরে থাকে শপিং মল, সুইমিংপুল, জিমনেসিয়াম, খেলার মাঠ, এটিএম বুথ, কমিউনিটি সেন্টারসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা।
মানুষ যেমন একদিন পরস্পরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল, তেমনি আবার একত্র হওয়ার তোড়জোড় চলছে। শহরের মানুষ চিন্তা-চেতনায়, রুচি-সংস্কৃতিতে তুলনামূলকভাবে এগিয়ে থাকায় শহরেই যৌথ জীবনের চর্চা শুরু হয়েছে।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) সামাজিক এসব পরিবর্তনকে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে ধরতে পেরেছে। এ প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশের দেড় কোটি প্রবীণের জীবনমান উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩, পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন, ২০১৩, প্রবীণদের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সিনিয়র সিটিজেন ঘোষণা, ৫০ লাখ মানুষকে বয়স্ক ভাতার আওতাভুক্ত করা।
আমাদের নীতিনির্ধারক মহল বিদেশের আদলে বৃদ্ধাশ্রম, প্রবীণ নিবাস তৈরি করেছিল। এতে প্রবীণদের মতামত, সামাজিক-ধর্মীয় মূল্যবোধ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে প্রয়োজন থাকলেও বৃদ্ধাশ্রম বা প্রবীণ নিবাসে থাকার লোকজন তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় ভিক্ষা করে, নির্যাতন-অপমান সয়ে পরিবারের সঙ্গে থাকার দার্শনিক ব্যাখ্যা আমরা করতে পারিনি। আমরা বিবেচনায় নিয়েছি প্রবীণের থাকা-খাওয়া আর চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয়।
আবেগিক সম্পর্ক, মর্যাদা, সামাজিক কর্মকাণ্ড, স্বাধীনতা, পরিবারে অবস্থান, বিনোদন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ-প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকে আমরা বিবেচনায় নিতে চাইনি। এগুলো মামুলি ব্যাপার বলে এড়িয়ে গিয়েছি। পিকেএসএফ এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রবীণের জন্য গড়ে তুলেছে প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র। দেশের ৬১ জেলার ১৫৩ উপজেলায় ২১৮টি ইউনিয়নে সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। পিকেএসএফ প্রবীণদের জন্য বয়স্ক ভাতা, প্রবীণদের সম্মাননা প্রদান, সেবা প্রদানকারী সন্তানকে শ্রেষ্ঠ সন্তান সম্মান প্রদান, অতিদরিদ্র ও সক্ষম প্রবীণকে প্রশিক্ষণ ও বিশেষ ঋণ প্রদান, প্রবীণ ব্যক্তি ও পরিবারের জন্য জীবন-সহায়ক সামগ্রী প্রদান করে।
প্রবীণকল্যাণে গড়ে উঠেছে ইউনিয়ন কমিটি, ওয়ার্ড কমিটি। কমিটিগুলো প্রবীণের চলমান সমস্যা নিরসনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমি নিজে ৪০টি প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। প্রবীণদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলেছি। তাঁদের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার কথা শুনেছি। দেখলাম, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত প্রবীণ কেন্দ্রে প্রবীণেরা উপস্থিত হয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, দাবা, লুডু, ক্যারম খেলছেন। ঝগড়া-বিবাদ মীমাংসা করে দিচ্ছেন, যাতে করে বাদী-বিবাদী উভয়েই সন্তুষ্ট হচ্ছেন। প্রত্যেক মানুষের সম্মান-মর্যাদাকে বিবেচনায় নিয়ে কেন্দ্রে নেতারা কাজ করছেন। কমিটির নেতারা সরকারের বিভিন্ন মহলে নিজেদের প্রয়োজনীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। প্রবীণেরা যেন কোনোভাবেই নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার না হন, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। যেসব ছেলেমেয়ে মা-বাবাকে কষ্ট দিচ্ছেন, তাঁদের বুঝিয়ে বা চাপ সৃষ্টি করে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। প্রবীণেরা দল বেঁধে বেড়াতে যাচ্ছেন, এতে স্থানীয় জনসাধারণ সমর্থন-সহযোগিতা করছে।
প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে তাদের সক্রিয় রাখার চেষ্টা করছে। বাতের ব্যথা থেকে খানিকটা রেহাই পেতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাসেবা প্রদানের প্রশংসনীয় উদ্যোগও রয়েছে।
প্রবীণেরা জীবনের শেষ দিনগুলো পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজনের সান্নিধ্যে কাটাতে চান। এখান থেকে সরিয়ে নিলে তাঁদের ওপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। যাঁদের থাকা-খাওয়া, দেখাশোনা, চিকিৎসাসেবা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, তাঁদের অবশ্যই বিশেষ ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। নানা কারণে জীবনের শেষ দিনগুলোতে মানুষ একা হয়ে পড়েন। একা মানুষটি পরিচিত পরিবেশে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে থাকলে ভালো থাকেন।
প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্র স্বস্তিদায়ক, শান্তিপূর্ণ প্রবীণ জীবনের জন্য কাজ করছে। এ মডেলটি নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রবীণ সামাজিক কেন্দ্রের সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের এগিয়ে আসা জরুরি হয়ে পড়েছে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

সমাজের প্রয়োজনে একদিন গড়ে উঠেছিল পরিবার। পরিবার ছিল বিপদে আশ্রয়, ক্ষুধায় খাবার, সন্তান জন্মদান ও লালনপালনের কেন্দ্র হিসেবে। মূলত গোষ্ঠীকেন্দ্রিক জীবন বিকশিত হয়ে যৌথ পরিবারে রূপ নেয়। সমাজের বিশেষ পরিস্থিতিতে যৌথ পরিবার ভেঙে গিয়ে একক পরিবারে রূপ নিয়েছে। সেই একক পরিবারও হালে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বামী-
০১ অক্টোবর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

সমাজের প্রয়োজনে একদিন গড়ে উঠেছিল পরিবার। পরিবার ছিল বিপদে আশ্রয়, ক্ষুধায় খাবার, সন্তান জন্মদান ও লালনপালনের কেন্দ্র হিসেবে। মূলত গোষ্ঠীকেন্দ্রিক জীবন বিকশিত হয়ে যৌথ পরিবারে রূপ নেয়। সমাজের বিশেষ পরিস্থিতিতে যৌথ পরিবার ভেঙে গিয়ে একক পরিবারে রূপ নিয়েছে। সেই একক পরিবারও হালে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বামী-
০১ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

সমাজের প্রয়োজনে একদিন গড়ে উঠেছিল পরিবার। পরিবার ছিল বিপদে আশ্রয়, ক্ষুধায় খাবার, সন্তান জন্মদান ও লালনপালনের কেন্দ্র হিসেবে। মূলত গোষ্ঠীকেন্দ্রিক জীবন বিকশিত হয়ে যৌথ পরিবারে রূপ নেয়। সমাজের বিশেষ পরিস্থিতিতে যৌথ পরিবার ভেঙে গিয়ে একক পরিবারে রূপ নিয়েছে। সেই একক পরিবারও হালে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বামী-
০১ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

সমাজের প্রয়োজনে একদিন গড়ে উঠেছিল পরিবার। পরিবার ছিল বিপদে আশ্রয়, ক্ষুধায় খাবার, সন্তান জন্মদান ও লালনপালনের কেন্দ্র হিসেবে। মূলত গোষ্ঠীকেন্দ্রিক জীবন বিকশিত হয়ে যৌথ পরিবারে রূপ নেয়। সমাজের বিশেষ পরিস্থিতিতে যৌথ পরিবার ভেঙে গিয়ে একক পরিবারে রূপ নিয়েছে। সেই একক পরিবারও হালে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বামী-
০১ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫