মহিউদ্দিন খান মোহন

১৯৭৩ সালে প্রখ্যাত পরিচালক খান আতাউর রহমান নির্মাণ করেছিলেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রটি। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি হয়তো তাঁকে উদ্বিগ্ন করে থাকবে। তাঁর কাছে হয়তো এটা মনে হয়েছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হলে আমাদের আক্ষরিক অর্থেই মানুষ হয়ে উঠতে হবে।
আর সে জন্যই তিনি তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমে সেই আহ্বান জানিয়েছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ দশক পরেও আমাদের সমাজের কতিপয় মানুষের কিছু কর্মকাণ্ডে যে প্রশ্নটি সামনে এসে দাঁড়ায় তা হলো, আমরা কি মানুষ হয়েছি? কিংবা কবে আমরা মানুষ হব?
মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরের বিপদের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। বিপদগ্রস্ত মানুষের অসহায়ত্ব বা সময়-সুযোগের অপব্যবহার করে অনৈতিক স্বার্থ হাসিলে লিপ্ত হওয়া মানুষের কর্ম নয়। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা আমাদের গোচরে আসে, তখন মনে হয় আমরা মানুষ পদবাচ্যের অযোগ্য হয়ে পড়েছি। ৪ এপ্রিল স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে রাজধানীর ফুলবাড়িয়ার বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেটসহ আশপাশের সাতটি মার্কেট ও বিপণিবিতান। সেই অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের অন্তরাত্মা কেঁপে না উঠে পারেনি। আগুনের লেলিহান শিখা প্রায় ছয় হাজার ব্যবসায়ীকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে বেকার হলো পাঁচ হাজার দোকানের প্রায় ২৫ হাজার কর্মচারী।
সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা তাঁদের পণ্যের মজুত গড়ে তুলেছিলেন সর্বস্ব বিনিয়োগ করে। কর্মচারীরাও আশায় ছিলেন ঈদে বোনাস পাবেন। কিন্তু এক দিনেই সব শেষ। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি যখন ঘটছিল, ফায়ার সার্ভিস যখন আগুন নেভাতে গলদঘর্ম হচ্ছিল, সামরিক-বেসামরিক সব বাহিনী যখন আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করছিল, ঠিক তখন একদল লোককে দেখা গেল ভিন্ন কাজে। আগুনের গ্রাস থেকে যেসব মালামাল দোকানি ও কর্মচারীরা বাইরে রাখছিলেন, একদল লোক সেগুলো লুটে নিয়ে যাচ্ছিল। এ দৃশ্য যাঁরা টিভির পর্দায় দেখেছেন, বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়েছেন। মানুষের বিপদের সময় মানুষ এমন বিবেকহীনের ভূমিকায় নামতে পারে, তা ভাবনারও অতীত। কিন্তু আমরা যেটা ভাবতে পারি না, কল্পনা করতে পারি না, আমাদের মতোই দেখতে কিছু মানুষ তা অবলীলায় করে ফেলতে পারে। নাট্যব্যক্তিত্ব ও কলাম লেখক মামুনুর রশীদ ‘রুচির দুর্ভিক্ষের’ কথা বলে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন। আসলে দুর্ভিক্ষ আজ সর্বত্র। বিবেকের দুর্ভিক্ষ আজ আমাদের ভীষণভাবে পীড়িত করছে। এই দুর্ভিক্ষ কবে দূর হবে, কিংবা আদৌ দূর হবে কি না, আমরা জানি না। শুধু এটা জানি, যত দিন আমাদের বিবেক জাগ্রত না হবে, তত দিন এই সমাজ, এই রাষ্ট্র নিরুপদ্রব হবে না।
টিভির পর্দায় অগ্নিকাণ্ডের সরাসরি প্রচার দেখছিলাম। আকাশছোঁয়া আগুনের সর্বগ্রাসী শিখা সব ছাই করে দিচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ল কয়েকটি পরিচিত মুখের কথা। আমার গ্রামের তোফায়েল আহমদ তপন, আবদুস সাত্তার, আবদুল হক, আনোয়ার, আমার ছেলের বন্ধু রাহাত, তাদের সবার দোকান ছিল ওই মার্কেটে।
সবাইকে ফোন করলাম। কারও ফোনে রিং হলো, ধরল না। কারও ফোন বন্ধ। অনেক চেষ্টার পর তপনকে পেলাম। সে বলল, ‘দাদা, আমার সব শেষ।’ মার্কেটটির দোতলায় বেশ বড় একটি শাড়ির দোকান ছিল ওর। কমপক্ষে ৬০-৭০ লাখ টাকার মালামাল ছিল ওর দোকানে। এমন ক্ষতিগ্রস্ত সবাই। সকাল ছয়টার দিকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতেই লেগেছে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা। শুধু বঙ্গবাজার নয়, এর পাশের অ্যানেক্সকো টাওয়ার, ঢাকা মহানগর মার্কেট, গুলিস্তান হকার্স মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, মহানগর কমপ্লেক্স, আদর্শ মার্কেটও রেহাই পায়নি আগুনের রাক্ষুসে থাবা থেকে। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে দোকানি-কর্মচারীদের সব স্বপ্ন। অনেক কষ্টে তিল তিল করে গড়ে তোলা সম্পদ এক লহমায় পরিণত হলো ভস্মে। যদিও ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।
খুব সকালে আগুনের সূত্রপাত হওয়ায়, মার্কেটে সে সময় কেউ ছিল না। ফলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার ফাইটারসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আগুন লাগার কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যে কমিটি ইতিমধ্যেই কারণ অনুসন্ধানে নেমে পড়েছে। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকে এ ঘটনাকে নাশকতা বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, কেউ হয়তো ষড়যন্ত্র করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বঙ্গবাজার থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র এটি। তাঁরা আর কখনো হয়তো এখানকার দোকানে ফিরতে পারবেন না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, ব্যবসায়ীদের এই অভিযোগ ঠিক নয়। তারপরও তদন্ত করে দেখা হবে এটা নাশকতা, নাকি দুর্ঘটনা।
(আজকের পত্রিকা, ৫ এপ্রিল, ২০২৩)বঙ্গবাজারের এ মার্কেটটির জন্ম ফুলবাড়িয়ার কেন্দ্রস্থলে স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই। তখন মার্কেটটির অবস্থান ছিল বর্তমানে বিআরটিসির নগর টার্মিনালসংলগ্ন সুন্দরবন সুপার মার্কেটের উত্তরে। আশির দশকে সেখানে পাকা মার্কেট তৈরি করে সিটি করপোরেশন। সে সময় সেখানকার ব্যবসায়ীদের মার্কেট নির্মাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার সুবিধার্থে বর্তমান স্থানে তা স্থানান্তর করা হয়। পূর্বতন বঙ্গবাজার এখন বহুতলবিশিষ্ট মার্কেট। সেখানে আগের দোকানিরা দোকানও পেয়েছেন। কিন্তু নতুন বঙ্গবাজার তাঁরা আর ছেড়ে যাননি। ফলে দেখা যায়, যাঁরা আগের পাকা মার্কেটে দোকান পেয়েছেন, তাঁরা পুড়ে যাওয়া মার্কেটেও এক বা একাধিক দোকানের মালিক। তবে তাঁদের পাশাপাশি অনেক নতুন ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সেখানে দোকান তুলে নিয়েছিলেন।
মার্কেটটি ছিল টিন ও কাঠের তৈরি। কাঁচা অবকাঠামোর ওপরে তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণ করেছিলেন কেউ কেউ। মার্কেটটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সরু গলির মধ্যে ছোট ছোট খুপরি দোকান সারি সারি। গরমের সময় নিশ্বাস নেওয়াই কষ্টদায়ক। যাঁরা ওই মার্কেটে কেনাকাটা করতে গিয়েছেন, তাঁদের সেই অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলছে, এর আগে মার্কেটের কর্মকর্তাদের অন্তত ১০ বার সতর্ক করা হয়েছে অগ্নিঝুঁকি সম্পর্কে। কিন্তু তাঁরা তা আমলে নেননি। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেছেন, ভস্মীভূত মার্কেটের জায়গায় বহুতল পাকা মার্কেট নির্মাণ করবে সিটি করপোরেশন; যাতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা হবে। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। মার্কেট নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা কী করবেন? তাঁরা কোথায় যাবেন? বিষয়টি নগর কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রাখা উচিত।
আরেকটি বিষয় সবারই নজরে এসেছে। সেটা হলো আগুন নেভাতে পর্যাপ্ত পানির অভাব। ঢাকা মহানগরীতে এমন কোনো জলাধার নেই যেখান থেকে অগ্নিকাণ্ডের সময় জরুরি ভিত্তিতে পানি সরবরাহ করা যায়। সেদিন বঙ্গবাজারের আগুন নেভাতে হেলিকপ্টারযোগে হাতিরঝিল থেকে পানি এনে ওপর থেকে আগুনের মধ্যে ফেলাকে হাস্যকর মনে হচ্ছিল। আমাদের নগর-পরিকল্পনাবিদেরা নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নগরপিতারাও বলেন নানা কথা। কিন্তু নগরীর বাসিন্দাদের জানমাল রক্ষার বিজ্ঞানসম্মত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ এখনো পরিলক্ষিত হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাস্তার মোড়ে মোড়ে আপৎকালীন পানির পাম্প স্থাপন করা থাকে। মাটির নিচে থাকে পানির বিশাল জলাধার; যা পুরো নগরীতে সংযুক্ত থাকে। আমরা তো এখন পাতালরেল বানাতে ব্যস্ত। তার আগে নগরীর রাস্তাগুলোর তলদেশ দিয়ে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদকে সংযুক্ত করে প্রবহমান পানির একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায় কি না, ভেবে দেখা উচিত। বিষয়টি রাষ্ট্রের যারা কর্ণধার তাদের বিবেচনার ওপরই নির্ভর করে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

১৯৭৩ সালে প্রখ্যাত পরিচালক খান আতাউর রহমান নির্মাণ করেছিলেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রটি। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি হয়তো তাঁকে উদ্বিগ্ন করে থাকবে। তাঁর কাছে হয়তো এটা মনে হয়েছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হলে আমাদের আক্ষরিক অর্থেই মানুষ হয়ে উঠতে হবে।
আর সে জন্যই তিনি তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমে সেই আহ্বান জানিয়েছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ দশক পরেও আমাদের সমাজের কতিপয় মানুষের কিছু কর্মকাণ্ডে যে প্রশ্নটি সামনে এসে দাঁড়ায় তা হলো, আমরা কি মানুষ হয়েছি? কিংবা কবে আমরা মানুষ হব?
মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরের বিপদের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। বিপদগ্রস্ত মানুষের অসহায়ত্ব বা সময়-সুযোগের অপব্যবহার করে অনৈতিক স্বার্থ হাসিলে লিপ্ত হওয়া মানুষের কর্ম নয়। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা আমাদের গোচরে আসে, তখন মনে হয় আমরা মানুষ পদবাচ্যের অযোগ্য হয়ে পড়েছি। ৪ এপ্রিল স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে রাজধানীর ফুলবাড়িয়ার বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেটসহ আশপাশের সাতটি মার্কেট ও বিপণিবিতান। সেই অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের অন্তরাত্মা কেঁপে না উঠে পারেনি। আগুনের লেলিহান শিখা প্রায় ছয় হাজার ব্যবসায়ীকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে বেকার হলো পাঁচ হাজার দোকানের প্রায় ২৫ হাজার কর্মচারী।
সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা তাঁদের পণ্যের মজুত গড়ে তুলেছিলেন সর্বস্ব বিনিয়োগ করে। কর্মচারীরাও আশায় ছিলেন ঈদে বোনাস পাবেন। কিন্তু এক দিনেই সব শেষ। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি যখন ঘটছিল, ফায়ার সার্ভিস যখন আগুন নেভাতে গলদঘর্ম হচ্ছিল, সামরিক-বেসামরিক সব বাহিনী যখন আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করছিল, ঠিক তখন একদল লোককে দেখা গেল ভিন্ন কাজে। আগুনের গ্রাস থেকে যেসব মালামাল দোকানি ও কর্মচারীরা বাইরে রাখছিলেন, একদল লোক সেগুলো লুটে নিয়ে যাচ্ছিল। এ দৃশ্য যাঁরা টিভির পর্দায় দেখেছেন, বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়েছেন। মানুষের বিপদের সময় মানুষ এমন বিবেকহীনের ভূমিকায় নামতে পারে, তা ভাবনারও অতীত। কিন্তু আমরা যেটা ভাবতে পারি না, কল্পনা করতে পারি না, আমাদের মতোই দেখতে কিছু মানুষ তা অবলীলায় করে ফেলতে পারে। নাট্যব্যক্তিত্ব ও কলাম লেখক মামুনুর রশীদ ‘রুচির দুর্ভিক্ষের’ কথা বলে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন। আসলে দুর্ভিক্ষ আজ সর্বত্র। বিবেকের দুর্ভিক্ষ আজ আমাদের ভীষণভাবে পীড়িত করছে। এই দুর্ভিক্ষ কবে দূর হবে, কিংবা আদৌ দূর হবে কি না, আমরা জানি না। শুধু এটা জানি, যত দিন আমাদের বিবেক জাগ্রত না হবে, তত দিন এই সমাজ, এই রাষ্ট্র নিরুপদ্রব হবে না।
টিভির পর্দায় অগ্নিকাণ্ডের সরাসরি প্রচার দেখছিলাম। আকাশছোঁয়া আগুনের সর্বগ্রাসী শিখা সব ছাই করে দিচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ল কয়েকটি পরিচিত মুখের কথা। আমার গ্রামের তোফায়েল আহমদ তপন, আবদুস সাত্তার, আবদুল হক, আনোয়ার, আমার ছেলের বন্ধু রাহাত, তাদের সবার দোকান ছিল ওই মার্কেটে।
সবাইকে ফোন করলাম। কারও ফোনে রিং হলো, ধরল না। কারও ফোন বন্ধ। অনেক চেষ্টার পর তপনকে পেলাম। সে বলল, ‘দাদা, আমার সব শেষ।’ মার্কেটটির দোতলায় বেশ বড় একটি শাড়ির দোকান ছিল ওর। কমপক্ষে ৬০-৭০ লাখ টাকার মালামাল ছিল ওর দোকানে। এমন ক্ষতিগ্রস্ত সবাই। সকাল ছয়টার দিকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতেই লেগেছে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা। শুধু বঙ্গবাজার নয়, এর পাশের অ্যানেক্সকো টাওয়ার, ঢাকা মহানগর মার্কেট, গুলিস্তান হকার্স মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, মহানগর কমপ্লেক্স, আদর্শ মার্কেটও রেহাই পায়নি আগুনের রাক্ষুসে থাবা থেকে। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে দোকানি-কর্মচারীদের সব স্বপ্ন। অনেক কষ্টে তিল তিল করে গড়ে তোলা সম্পদ এক লহমায় পরিণত হলো ভস্মে। যদিও ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।
খুব সকালে আগুনের সূত্রপাত হওয়ায়, মার্কেটে সে সময় কেউ ছিল না। ফলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার ফাইটারসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আগুন লাগার কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যে কমিটি ইতিমধ্যেই কারণ অনুসন্ধানে নেমে পড়েছে। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকে এ ঘটনাকে নাশকতা বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, কেউ হয়তো ষড়যন্ত্র করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বঙ্গবাজার থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র এটি। তাঁরা আর কখনো হয়তো এখানকার দোকানে ফিরতে পারবেন না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, ব্যবসায়ীদের এই অভিযোগ ঠিক নয়। তারপরও তদন্ত করে দেখা হবে এটা নাশকতা, নাকি দুর্ঘটনা।
(আজকের পত্রিকা, ৫ এপ্রিল, ২০২৩)বঙ্গবাজারের এ মার্কেটটির জন্ম ফুলবাড়িয়ার কেন্দ্রস্থলে স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই। তখন মার্কেটটির অবস্থান ছিল বর্তমানে বিআরটিসির নগর টার্মিনালসংলগ্ন সুন্দরবন সুপার মার্কেটের উত্তরে। আশির দশকে সেখানে পাকা মার্কেট তৈরি করে সিটি করপোরেশন। সে সময় সেখানকার ব্যবসায়ীদের মার্কেট নির্মাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার সুবিধার্থে বর্তমান স্থানে তা স্থানান্তর করা হয়। পূর্বতন বঙ্গবাজার এখন বহুতলবিশিষ্ট মার্কেট। সেখানে আগের দোকানিরা দোকানও পেয়েছেন। কিন্তু নতুন বঙ্গবাজার তাঁরা আর ছেড়ে যাননি। ফলে দেখা যায়, যাঁরা আগের পাকা মার্কেটে দোকান পেয়েছেন, তাঁরা পুড়ে যাওয়া মার্কেটেও এক বা একাধিক দোকানের মালিক। তবে তাঁদের পাশাপাশি অনেক নতুন ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সেখানে দোকান তুলে নিয়েছিলেন।
মার্কেটটি ছিল টিন ও কাঠের তৈরি। কাঁচা অবকাঠামোর ওপরে তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণ করেছিলেন কেউ কেউ। মার্কেটটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সরু গলির মধ্যে ছোট ছোট খুপরি দোকান সারি সারি। গরমের সময় নিশ্বাস নেওয়াই কষ্টদায়ক। যাঁরা ওই মার্কেটে কেনাকাটা করতে গিয়েছেন, তাঁদের সেই অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলছে, এর আগে মার্কেটের কর্মকর্তাদের অন্তত ১০ বার সতর্ক করা হয়েছে অগ্নিঝুঁকি সম্পর্কে। কিন্তু তাঁরা তা আমলে নেননি। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেছেন, ভস্মীভূত মার্কেটের জায়গায় বহুতল পাকা মার্কেট নির্মাণ করবে সিটি করপোরেশন; যাতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা হবে। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। মার্কেট নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা কী করবেন? তাঁরা কোথায় যাবেন? বিষয়টি নগর কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রাখা উচিত।
আরেকটি বিষয় সবারই নজরে এসেছে। সেটা হলো আগুন নেভাতে পর্যাপ্ত পানির অভাব। ঢাকা মহানগরীতে এমন কোনো জলাধার নেই যেখান থেকে অগ্নিকাণ্ডের সময় জরুরি ভিত্তিতে পানি সরবরাহ করা যায়। সেদিন বঙ্গবাজারের আগুন নেভাতে হেলিকপ্টারযোগে হাতিরঝিল থেকে পানি এনে ওপর থেকে আগুনের মধ্যে ফেলাকে হাস্যকর মনে হচ্ছিল। আমাদের নগর-পরিকল্পনাবিদেরা নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নগরপিতারাও বলেন নানা কথা। কিন্তু নগরীর বাসিন্দাদের জানমাল রক্ষার বিজ্ঞানসম্মত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ এখনো পরিলক্ষিত হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাস্তার মোড়ে মোড়ে আপৎকালীন পানির পাম্প স্থাপন করা থাকে। মাটির নিচে থাকে পানির বিশাল জলাধার; যা পুরো নগরীতে সংযুক্ত থাকে। আমরা তো এখন পাতালরেল বানাতে ব্যস্ত। তার আগে নগরীর রাস্তাগুলোর তলদেশ দিয়ে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদকে সংযুক্ত করে প্রবহমান পানির একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায় কি না, ভেবে দেখা উচিত। বিষয়টি রাষ্ট্রের যারা কর্ণধার তাদের বিবেচনার ওপরই নির্ভর করে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক
মহিউদ্দিন খান মোহন

১৯৭৩ সালে প্রখ্যাত পরিচালক খান আতাউর রহমান নির্মাণ করেছিলেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রটি। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি হয়তো তাঁকে উদ্বিগ্ন করে থাকবে। তাঁর কাছে হয়তো এটা মনে হয়েছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হলে আমাদের আক্ষরিক অর্থেই মানুষ হয়ে উঠতে হবে।
আর সে জন্যই তিনি তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমে সেই আহ্বান জানিয়েছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ দশক পরেও আমাদের সমাজের কতিপয় মানুষের কিছু কর্মকাণ্ডে যে প্রশ্নটি সামনে এসে দাঁড়ায় তা হলো, আমরা কি মানুষ হয়েছি? কিংবা কবে আমরা মানুষ হব?
মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরের বিপদের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। বিপদগ্রস্ত মানুষের অসহায়ত্ব বা সময়-সুযোগের অপব্যবহার করে অনৈতিক স্বার্থ হাসিলে লিপ্ত হওয়া মানুষের কর্ম নয়। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা আমাদের গোচরে আসে, তখন মনে হয় আমরা মানুষ পদবাচ্যের অযোগ্য হয়ে পড়েছি। ৪ এপ্রিল স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে রাজধানীর ফুলবাড়িয়ার বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেটসহ আশপাশের সাতটি মার্কেট ও বিপণিবিতান। সেই অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের অন্তরাত্মা কেঁপে না উঠে পারেনি। আগুনের লেলিহান শিখা প্রায় ছয় হাজার ব্যবসায়ীকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে বেকার হলো পাঁচ হাজার দোকানের প্রায় ২৫ হাজার কর্মচারী।
সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা তাঁদের পণ্যের মজুত গড়ে তুলেছিলেন সর্বস্ব বিনিয়োগ করে। কর্মচারীরাও আশায় ছিলেন ঈদে বোনাস পাবেন। কিন্তু এক দিনেই সব শেষ। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি যখন ঘটছিল, ফায়ার সার্ভিস যখন আগুন নেভাতে গলদঘর্ম হচ্ছিল, সামরিক-বেসামরিক সব বাহিনী যখন আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করছিল, ঠিক তখন একদল লোককে দেখা গেল ভিন্ন কাজে। আগুনের গ্রাস থেকে যেসব মালামাল দোকানি ও কর্মচারীরা বাইরে রাখছিলেন, একদল লোক সেগুলো লুটে নিয়ে যাচ্ছিল। এ দৃশ্য যাঁরা টিভির পর্দায় দেখেছেন, বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়েছেন। মানুষের বিপদের সময় মানুষ এমন বিবেকহীনের ভূমিকায় নামতে পারে, তা ভাবনারও অতীত। কিন্তু আমরা যেটা ভাবতে পারি না, কল্পনা করতে পারি না, আমাদের মতোই দেখতে কিছু মানুষ তা অবলীলায় করে ফেলতে পারে। নাট্যব্যক্তিত্ব ও কলাম লেখক মামুনুর রশীদ ‘রুচির দুর্ভিক্ষের’ কথা বলে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন। আসলে দুর্ভিক্ষ আজ সর্বত্র। বিবেকের দুর্ভিক্ষ আজ আমাদের ভীষণভাবে পীড়িত করছে। এই দুর্ভিক্ষ কবে দূর হবে, কিংবা আদৌ দূর হবে কি না, আমরা জানি না। শুধু এটা জানি, যত দিন আমাদের বিবেক জাগ্রত না হবে, তত দিন এই সমাজ, এই রাষ্ট্র নিরুপদ্রব হবে না।
টিভির পর্দায় অগ্নিকাণ্ডের সরাসরি প্রচার দেখছিলাম। আকাশছোঁয়া আগুনের সর্বগ্রাসী শিখা সব ছাই করে দিচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ল কয়েকটি পরিচিত মুখের কথা। আমার গ্রামের তোফায়েল আহমদ তপন, আবদুস সাত্তার, আবদুল হক, আনোয়ার, আমার ছেলের বন্ধু রাহাত, তাদের সবার দোকান ছিল ওই মার্কেটে।
সবাইকে ফোন করলাম। কারও ফোনে রিং হলো, ধরল না। কারও ফোন বন্ধ। অনেক চেষ্টার পর তপনকে পেলাম। সে বলল, ‘দাদা, আমার সব শেষ।’ মার্কেটটির দোতলায় বেশ বড় একটি শাড়ির দোকান ছিল ওর। কমপক্ষে ৬০-৭০ লাখ টাকার মালামাল ছিল ওর দোকানে। এমন ক্ষতিগ্রস্ত সবাই। সকাল ছয়টার দিকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতেই লেগেছে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা। শুধু বঙ্গবাজার নয়, এর পাশের অ্যানেক্সকো টাওয়ার, ঢাকা মহানগর মার্কেট, গুলিস্তান হকার্স মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, মহানগর কমপ্লেক্স, আদর্শ মার্কেটও রেহাই পায়নি আগুনের রাক্ষুসে থাবা থেকে। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে দোকানি-কর্মচারীদের সব স্বপ্ন। অনেক কষ্টে তিল তিল করে গড়ে তোলা সম্পদ এক লহমায় পরিণত হলো ভস্মে। যদিও ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।
খুব সকালে আগুনের সূত্রপাত হওয়ায়, মার্কেটে সে সময় কেউ ছিল না। ফলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার ফাইটারসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আগুন লাগার কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যে কমিটি ইতিমধ্যেই কারণ অনুসন্ধানে নেমে পড়েছে। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকে এ ঘটনাকে নাশকতা বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, কেউ হয়তো ষড়যন্ত্র করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বঙ্গবাজার থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র এটি। তাঁরা আর কখনো হয়তো এখানকার দোকানে ফিরতে পারবেন না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, ব্যবসায়ীদের এই অভিযোগ ঠিক নয়। তারপরও তদন্ত করে দেখা হবে এটা নাশকতা, নাকি দুর্ঘটনা।
(আজকের পত্রিকা, ৫ এপ্রিল, ২০২৩)বঙ্গবাজারের এ মার্কেটটির জন্ম ফুলবাড়িয়ার কেন্দ্রস্থলে স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই। তখন মার্কেটটির অবস্থান ছিল বর্তমানে বিআরটিসির নগর টার্মিনালসংলগ্ন সুন্দরবন সুপার মার্কেটের উত্তরে। আশির দশকে সেখানে পাকা মার্কেট তৈরি করে সিটি করপোরেশন। সে সময় সেখানকার ব্যবসায়ীদের মার্কেট নির্মাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার সুবিধার্থে বর্তমান স্থানে তা স্থানান্তর করা হয়। পূর্বতন বঙ্গবাজার এখন বহুতলবিশিষ্ট মার্কেট। সেখানে আগের দোকানিরা দোকানও পেয়েছেন। কিন্তু নতুন বঙ্গবাজার তাঁরা আর ছেড়ে যাননি। ফলে দেখা যায়, যাঁরা আগের পাকা মার্কেটে দোকান পেয়েছেন, তাঁরা পুড়ে যাওয়া মার্কেটেও এক বা একাধিক দোকানের মালিক। তবে তাঁদের পাশাপাশি অনেক নতুন ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সেখানে দোকান তুলে নিয়েছিলেন।
মার্কেটটি ছিল টিন ও কাঠের তৈরি। কাঁচা অবকাঠামোর ওপরে তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণ করেছিলেন কেউ কেউ। মার্কেটটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সরু গলির মধ্যে ছোট ছোট খুপরি দোকান সারি সারি। গরমের সময় নিশ্বাস নেওয়াই কষ্টদায়ক। যাঁরা ওই মার্কেটে কেনাকাটা করতে গিয়েছেন, তাঁদের সেই অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলছে, এর আগে মার্কেটের কর্মকর্তাদের অন্তত ১০ বার সতর্ক করা হয়েছে অগ্নিঝুঁকি সম্পর্কে। কিন্তু তাঁরা তা আমলে নেননি। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেছেন, ভস্মীভূত মার্কেটের জায়গায় বহুতল পাকা মার্কেট নির্মাণ করবে সিটি করপোরেশন; যাতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা হবে। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। মার্কেট নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা কী করবেন? তাঁরা কোথায় যাবেন? বিষয়টি নগর কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রাখা উচিত।
আরেকটি বিষয় সবারই নজরে এসেছে। সেটা হলো আগুন নেভাতে পর্যাপ্ত পানির অভাব। ঢাকা মহানগরীতে এমন কোনো জলাধার নেই যেখান থেকে অগ্নিকাণ্ডের সময় জরুরি ভিত্তিতে পানি সরবরাহ করা যায়। সেদিন বঙ্গবাজারের আগুন নেভাতে হেলিকপ্টারযোগে হাতিরঝিল থেকে পানি এনে ওপর থেকে আগুনের মধ্যে ফেলাকে হাস্যকর মনে হচ্ছিল। আমাদের নগর-পরিকল্পনাবিদেরা নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নগরপিতারাও বলেন নানা কথা। কিন্তু নগরীর বাসিন্দাদের জানমাল রক্ষার বিজ্ঞানসম্মত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ এখনো পরিলক্ষিত হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাস্তার মোড়ে মোড়ে আপৎকালীন পানির পাম্প স্থাপন করা থাকে। মাটির নিচে থাকে পানির বিশাল জলাধার; যা পুরো নগরীতে সংযুক্ত থাকে। আমরা তো এখন পাতালরেল বানাতে ব্যস্ত। তার আগে নগরীর রাস্তাগুলোর তলদেশ দিয়ে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদকে সংযুক্ত করে প্রবহমান পানির একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায় কি না, ভেবে দেখা উচিত। বিষয়টি রাষ্ট্রের যারা কর্ণধার তাদের বিবেচনার ওপরই নির্ভর করে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

১৯৭৩ সালে প্রখ্যাত পরিচালক খান আতাউর রহমান নির্মাণ করেছিলেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রটি। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি হয়তো তাঁকে উদ্বিগ্ন করে থাকবে। তাঁর কাছে হয়তো এটা মনে হয়েছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হলে আমাদের আক্ষরিক অর্থেই মানুষ হয়ে উঠতে হবে।
আর সে জন্যই তিনি তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমে সেই আহ্বান জানিয়েছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ দশক পরেও আমাদের সমাজের কতিপয় মানুষের কিছু কর্মকাণ্ডে যে প্রশ্নটি সামনে এসে দাঁড়ায় তা হলো, আমরা কি মানুষ হয়েছি? কিংবা কবে আমরা মানুষ হব?
মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরের বিপদের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। বিপদগ্রস্ত মানুষের অসহায়ত্ব বা সময়-সুযোগের অপব্যবহার করে অনৈতিক স্বার্থ হাসিলে লিপ্ত হওয়া মানুষের কর্ম নয়। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা আমাদের গোচরে আসে, তখন মনে হয় আমরা মানুষ পদবাচ্যের অযোগ্য হয়ে পড়েছি। ৪ এপ্রিল স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে রাজধানীর ফুলবাড়িয়ার বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেটসহ আশপাশের সাতটি মার্কেট ও বিপণিবিতান। সেই অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের অন্তরাত্মা কেঁপে না উঠে পারেনি। আগুনের লেলিহান শিখা প্রায় ছয় হাজার ব্যবসায়ীকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে বেকার হলো পাঁচ হাজার দোকানের প্রায় ২৫ হাজার কর্মচারী।
সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা তাঁদের পণ্যের মজুত গড়ে তুলেছিলেন সর্বস্ব বিনিয়োগ করে। কর্মচারীরাও আশায় ছিলেন ঈদে বোনাস পাবেন। কিন্তু এক দিনেই সব শেষ। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি যখন ঘটছিল, ফায়ার সার্ভিস যখন আগুন নেভাতে গলদঘর্ম হচ্ছিল, সামরিক-বেসামরিক সব বাহিনী যখন আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করছিল, ঠিক তখন একদল লোককে দেখা গেল ভিন্ন কাজে। আগুনের গ্রাস থেকে যেসব মালামাল দোকানি ও কর্মচারীরা বাইরে রাখছিলেন, একদল লোক সেগুলো লুটে নিয়ে যাচ্ছিল। এ দৃশ্য যাঁরা টিভির পর্দায় দেখেছেন, বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়েছেন। মানুষের বিপদের সময় মানুষ এমন বিবেকহীনের ভূমিকায় নামতে পারে, তা ভাবনারও অতীত। কিন্তু আমরা যেটা ভাবতে পারি না, কল্পনা করতে পারি না, আমাদের মতোই দেখতে কিছু মানুষ তা অবলীলায় করে ফেলতে পারে। নাট্যব্যক্তিত্ব ও কলাম লেখক মামুনুর রশীদ ‘রুচির দুর্ভিক্ষের’ কথা বলে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন। আসলে দুর্ভিক্ষ আজ সর্বত্র। বিবেকের দুর্ভিক্ষ আজ আমাদের ভীষণভাবে পীড়িত করছে। এই দুর্ভিক্ষ কবে দূর হবে, কিংবা আদৌ দূর হবে কি না, আমরা জানি না। শুধু এটা জানি, যত দিন আমাদের বিবেক জাগ্রত না হবে, তত দিন এই সমাজ, এই রাষ্ট্র নিরুপদ্রব হবে না।
টিভির পর্দায় অগ্নিকাণ্ডের সরাসরি প্রচার দেখছিলাম। আকাশছোঁয়া আগুনের সর্বগ্রাসী শিখা সব ছাই করে দিচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ল কয়েকটি পরিচিত মুখের কথা। আমার গ্রামের তোফায়েল আহমদ তপন, আবদুস সাত্তার, আবদুল হক, আনোয়ার, আমার ছেলের বন্ধু রাহাত, তাদের সবার দোকান ছিল ওই মার্কেটে।
সবাইকে ফোন করলাম। কারও ফোনে রিং হলো, ধরল না। কারও ফোন বন্ধ। অনেক চেষ্টার পর তপনকে পেলাম। সে বলল, ‘দাদা, আমার সব শেষ।’ মার্কেটটির দোতলায় বেশ বড় একটি শাড়ির দোকান ছিল ওর। কমপক্ষে ৬০-৭০ লাখ টাকার মালামাল ছিল ওর দোকানে। এমন ক্ষতিগ্রস্ত সবাই। সকাল ছয়টার দিকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতেই লেগেছে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা। শুধু বঙ্গবাজার নয়, এর পাশের অ্যানেক্সকো টাওয়ার, ঢাকা মহানগর মার্কেট, গুলিস্তান হকার্স মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, মহানগর কমপ্লেক্স, আদর্শ মার্কেটও রেহাই পায়নি আগুনের রাক্ষুসে থাবা থেকে। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে দোকানি-কর্মচারীদের সব স্বপ্ন। অনেক কষ্টে তিল তিল করে গড়ে তোলা সম্পদ এক লহমায় পরিণত হলো ভস্মে। যদিও ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।
খুব সকালে আগুনের সূত্রপাত হওয়ায়, মার্কেটে সে সময় কেউ ছিল না। ফলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার ফাইটারসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আগুন লাগার কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যে কমিটি ইতিমধ্যেই কারণ অনুসন্ধানে নেমে পড়েছে। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকে এ ঘটনাকে নাশকতা বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, কেউ হয়তো ষড়যন্ত্র করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বঙ্গবাজার থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র এটি। তাঁরা আর কখনো হয়তো এখানকার দোকানে ফিরতে পারবেন না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, ব্যবসায়ীদের এই অভিযোগ ঠিক নয়। তারপরও তদন্ত করে দেখা হবে এটা নাশকতা, নাকি দুর্ঘটনা।
(আজকের পত্রিকা, ৫ এপ্রিল, ২০২৩)বঙ্গবাজারের এ মার্কেটটির জন্ম ফুলবাড়িয়ার কেন্দ্রস্থলে স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই। তখন মার্কেটটির অবস্থান ছিল বর্তমানে বিআরটিসির নগর টার্মিনালসংলগ্ন সুন্দরবন সুপার মার্কেটের উত্তরে। আশির দশকে সেখানে পাকা মার্কেট তৈরি করে সিটি করপোরেশন। সে সময় সেখানকার ব্যবসায়ীদের মার্কেট নির্মাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার সুবিধার্থে বর্তমান স্থানে তা স্থানান্তর করা হয়। পূর্বতন বঙ্গবাজার এখন বহুতলবিশিষ্ট মার্কেট। সেখানে আগের দোকানিরা দোকানও পেয়েছেন। কিন্তু নতুন বঙ্গবাজার তাঁরা আর ছেড়ে যাননি। ফলে দেখা যায়, যাঁরা আগের পাকা মার্কেটে দোকান পেয়েছেন, তাঁরা পুড়ে যাওয়া মার্কেটেও এক বা একাধিক দোকানের মালিক। তবে তাঁদের পাশাপাশি অনেক নতুন ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সেখানে দোকান তুলে নিয়েছিলেন।
মার্কেটটি ছিল টিন ও কাঠের তৈরি। কাঁচা অবকাঠামোর ওপরে তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণ করেছিলেন কেউ কেউ। মার্কেটটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সরু গলির মধ্যে ছোট ছোট খুপরি দোকান সারি সারি। গরমের সময় নিশ্বাস নেওয়াই কষ্টদায়ক। যাঁরা ওই মার্কেটে কেনাকাটা করতে গিয়েছেন, তাঁদের সেই অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলছে, এর আগে মার্কেটের কর্মকর্তাদের অন্তত ১০ বার সতর্ক করা হয়েছে অগ্নিঝুঁকি সম্পর্কে। কিন্তু তাঁরা তা আমলে নেননি। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেছেন, ভস্মীভূত মার্কেটের জায়গায় বহুতল পাকা মার্কেট নির্মাণ করবে সিটি করপোরেশন; যাতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা হবে। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। মার্কেট নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা কী করবেন? তাঁরা কোথায় যাবেন? বিষয়টি নগর কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রাখা উচিত।
আরেকটি বিষয় সবারই নজরে এসেছে। সেটা হলো আগুন নেভাতে পর্যাপ্ত পানির অভাব। ঢাকা মহানগরীতে এমন কোনো জলাধার নেই যেখান থেকে অগ্নিকাণ্ডের সময় জরুরি ভিত্তিতে পানি সরবরাহ করা যায়। সেদিন বঙ্গবাজারের আগুন নেভাতে হেলিকপ্টারযোগে হাতিরঝিল থেকে পানি এনে ওপর থেকে আগুনের মধ্যে ফেলাকে হাস্যকর মনে হচ্ছিল। আমাদের নগর-পরিকল্পনাবিদেরা নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নগরপিতারাও বলেন নানা কথা। কিন্তু নগরীর বাসিন্দাদের জানমাল রক্ষার বিজ্ঞানসম্মত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ এখনো পরিলক্ষিত হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাস্তার মোড়ে মোড়ে আপৎকালীন পানির পাম্প স্থাপন করা থাকে। মাটির নিচে থাকে পানির বিশাল জলাধার; যা পুরো নগরীতে সংযুক্ত থাকে। আমরা তো এখন পাতালরেল বানাতে ব্যস্ত। তার আগে নগরীর রাস্তাগুলোর তলদেশ দিয়ে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদকে সংযুক্ত করে প্রবহমান পানির একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায় কি না, ভেবে দেখা উচিত। বিষয়টি রাষ্ট্রের যারা কর্ণধার তাদের বিবেচনার ওপরই নির্ভর করে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

১৯৭৩ সালে প্রখ্যাত পরিচালক খান আতাউর রহমান নির্মাণ করেছিলেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রটি। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি হয়তো তাঁকে উদ্বিগ্ন করে থাকবে। তাঁর কাছে হয়তো এটা মনে হয়েছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হলে আমাদের আক্ষরিক অর্থেই মানুষ হয়ে উঠতে হবে।
০৯ এপ্রিল ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

১৯৭৩ সালে প্রখ্যাত পরিচালক খান আতাউর রহমান নির্মাণ করেছিলেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রটি। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি হয়তো তাঁকে উদ্বিগ্ন করে থাকবে। তাঁর কাছে হয়তো এটা মনে হয়েছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হলে আমাদের আক্ষরিক অর্থেই মানুষ হয়ে উঠতে হবে।
০৯ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

১৯৭৩ সালে প্রখ্যাত পরিচালক খান আতাউর রহমান নির্মাণ করেছিলেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রটি। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি হয়তো তাঁকে উদ্বিগ্ন করে থাকবে। তাঁর কাছে হয়তো এটা মনে হয়েছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হলে আমাদের আক্ষরিক অর্থেই মানুষ হয়ে উঠতে হবে।
০৯ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

১৯৭৩ সালে প্রখ্যাত পরিচালক খান আতাউর রহমান নির্মাণ করেছিলেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রটি। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি হয়তো তাঁকে উদ্বিগ্ন করে থাকবে। তাঁর কাছে হয়তো এটা মনে হয়েছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হলে আমাদের আক্ষরিক অর্থেই মানুষ হয়ে উঠতে হবে।
০৯ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫