Ajker Patrika

পাঁচ বছরে কাজ ৬৫ শতাংশ

নড়াইল প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৬: ১৯
পাঁচ বছরে কাজ ৬৫ শতাংশ

নবগঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন নড়াইলের বারইপাড়া সেতুতে চার মাস আগে বালুবোঝাই বাল্কহেডের ধাক্কায় হেলে যাওয়া ৯ নম্বর পিলারের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সওজ অধিদপ্তর জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পিলার দেখতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর একটি টেকনিক্যাল টিম নিয়ে নড়াইলে এসেছিলেন। মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। হেলে যাওয়া পিলারের নকশা সংশোধনের জন্য আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ফলে আগামী জুনের মধ্যে সেতু নির্মাণ এবং সেতুর ভবিষ্যৎ নিয়ে সাধারণের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর একটি বালুবোঝাই বাল্কহেড নির্মাণাধীন সেতুর ৯ নম্বর পিলারে আঘাত করলে পিলারটি হেলে যায়। এর আগে ২০২০ সালের ২০ জুন অপর একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় ওই পিলারটিই আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত দুই বছরে বিভিন্ন সময় বাল্কহেডের ধাক্কায় নির্মাণাধীন কয়েকটি পিলার আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং কয়েকটি বাল্কহেড পানিতে ডুবেও যায়। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত কালিয়া থানায় ৫টি জিডি এবং একটি মামলা হয়েছে।

সরেজমিন জানা গেছে, ৪ বছর আগে সেতু নির্মাণকাজের শুরু থেকেই সামান্য কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে প্রকল্প এলাকায় কাজ করানো হয়। মাঝে অনেক দিন কাজ বন্ধ ছিল। যে কারণে কাজ শেষ করতে এত দেরি হচ্ছে। বর্তমানে সেতু নির্মাণে প্রকল্প এলাকায় ২০-২৫ জন শ্রমিক কাজ করছে। এখন পিলারের ওপর গার্ডার ও স্ল্যাব বসানোর কাজ চলছে এবং দুপাশে সংযোগ সড়কের কাজ শুরু হয়েছে।

কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর ঘাটের বাসিন্দা সাফায়েত মোল্যা বলেন, ‘৫ বছর ধরে সেতুর কাজ শুরু হলেও এখনো তা শেষ হলোনা। যেভাবে বাল্কহেড একের পর এক সেতুর পিলারে ধাক্কা দিচ্ছে তাতে সেতুর ভবিষ্যৎ কি তা আল্লাহ জানেন।’

বারইপাড়া সেতু নির্মাণকাজের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. মিনহাজুল ইসলাম জানান, হেলে যাওয়া ৯ নম্বর পিলারের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ পর্যন্ত মূল কাজ ও সংযোগ সড়ক মিলে ৬৫ ভাগ শেষ হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে সম্পন্ন হতে পারে। তবে কাজের সময় বৃদ্ধির জন্য আরও এক বছর আবেদনের প্রস্তুতি চলছে।

নড়াইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ এম আতিকুল্লাহ সেতু নিয়ে কোনো শঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘হেলে যাওয়া পিলারটির স্থানে নকশা সংশোধনের জন্য আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের টিম কাজ করছে। আমরা আশাবাদী আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’

নড়াইল-১ আসনের সাংসদ কবিরুল হক মুক্তি জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে হেলে পড়া পিলারটি সম্পর্কে অবহিত করলে তাঁরা জানিয়েছেন ৯ নম্বর পিলারটি জায়গায় নকশা পরিবর্তন হবে। কিন্তু এখনো কিছু হলো না। আমি রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়ছি। আমি মনে করি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ দায়িত্ব পালন করেনি। তারপরও আশাবাদী কাজটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে।

উল্লেখ্য, নড়াইল শহর থেকে কালিয়া উপজেলা শহরের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার হলেও এ পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে দু ঘণ্টা। নবগঙ্গা নদী, কালিয়া পৌর ও উপজেলার ৮টি ইউনিয়নকে জেলার অন্যান্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের নবগঙ্গা নদী পার হয়ে অফিস-আদালত, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, ব্যবসাসহ বিভিন্ন কাজে যাতায়াত করতে বেগ পেতে হচ্ছে। এ সেতুটি চালু হলে নড়াইল-যশোরের সঙ্গে গোপালগঞ্জ, বরিশাল এবং বাগেরহাট জেলার যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত