Ajker Patrika

মুক্তি মেলেনি ছয় নাবিকের

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
মুক্তি মেলেনি ছয় নাবিকের

কলকাতার শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি বন্দরে কাত হয়ে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ মেরিনট্রাস্ট-১-এর ছয় নাবিকের দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা 
এখনো কাটেনি।কবে তাঁরা দেশে ফিরতে পারবেন, সেটি নিশ্চিত করে জানাতে পারছে না কেউ। জাহাজ কর্তৃপক্ষ বলছে, তাঁরা আটক নাবিকদে খোঁজখবর রাখছেন। তবে দীর্ঘ সাত মাসেও দেশে ফিরে আসতে না পারায় উৎকণ্ঠায় রয়েছে এসব নাবিকের পরিবার।

গত ২৪ মার্চ কনটেইনার বোঝাই করার সময় কলকাতায় শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি বন্দরের ৫ নম্বর বার্থে কাত হয়ে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজটি। এ সময় জাহাজটিতে ১৫ জন নাবিক ছিলেন। গত ২৯ আগস্ট ১৫ নাবিকের মধ্যে নয়জনকে মুক্তি দেয় কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাকি ছয়জন সাত মাস ধরে কলকাতার সিমেন্স হোস্টেলে আটক আছেন। দুর্ঘটনার তদন্ত স্বার্থে এবং জাহাজটির মালিকপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য এসব নাবিককে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ সেখানে আটক রাখে।

কলকাতার মেরিন ক্লাবে আটক থাকা নাবিকেরা হলেন ক্যাপ্টেন এ কে এম মুছা, মাস্টার মো. আসগর আলী, অনিমেষ সিকদার, ফাহিম ফয়সাল, শাহ পরান খান ও মো. ফরহাদ সিকদার। জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুর্ঘটনায় কাত হয়ে পড়া জাহাজটি উদ্ধার করা হয়। এখন সেটি দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু কবে সেই অনুমতি মিলবে বা আটক বাংলাদেশি নাবিকদের কবে মুক্তি মিলবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে পরিবারগুলো।

কলকাতার সিমেন্স হোস্টেলে আটক থাকা মেরিনট্রাস্ট-১-এর দ্বিতীয় প্রকৌশলী শাহ পরান খানের বড় ভাই নৌবাহিনীর কর্মকর্তা জুম্মান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ছোট ভাই সাত মাসের বেশি সময় ধরে কলকাতায় আটক আছে। কবে সে মুক্তি পাবে, তা নিয়ে আমার মা-বাবা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।’

দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ মেসার্স মেরিনট্রাস্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাকেবুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের জাহাজটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কলকাতায় আটকা পড়া বাকি ৬ জন নাবিককে কবে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে, তা বলা যাচ্ছে না। তাঁদের মুক্তি কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের ওপর নির্ভর করছে। আমরা কলকাতায় শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’
এ বিষয়ে গত ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশের নৌ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভারতের নৌ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর দেওয়া এক চিঠিতে বন্দী নাবিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। এরপর ১১ মে শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশি ডেপুটি হাইকমিশনারকে চিঠি দেওয়া হয়।

তিন পৃষ্ঠার ওই চিঠিতে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, জাহাজটির দুর্ঘটনার কারণে তাদের প্রতিদিন ৪৬ লাখ রুপি ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া জাহাজটি থেকে নিঃসরিত তেলে সেখানকার পরিবেশে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। ওই চিঠিতে জাহাজটি সরিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়।

এর আগে ২০ এপ্রিল আরেক চিঠিতে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজটির মালিক মেসার্স মেরিনট্রাস্ট লিমিটেডকে কলকাতা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, জাহাজটির দুর্ঘটনার কারণে সব দায় ও ক্ষতিপূরণ মালিককে পরিশোধ করতে হবে। ওই চিঠিতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাগাদা দেওয়া হয়েছিল।

২৪ মে কলকাতার শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি বন্দরের সচিব কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারকে দেওয়া চিঠিতে ১৫ জন নাবিকের মধ্যে ছয়জনকে রেখে দিয়ে নয়জনকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। সে অনুযায়ী মেরিনট্রাস্ট-১ কর্তৃপক্ষ শিপিং এজেন্টকে ব্যবস্থা নিতে ২ জুলাই চিঠি দেয়। পরে জাহাজ কর্তৃপক্ষ শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি বন্দরের ট্রাফিক বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে সব নাবিকের মুক্তি চেয়েছে।

কলকাতার মেরিন ক্লাবে থাকা  ক্যাপ্টেন এ কে এম মুছা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর থেকে প্রায় সাত মাসের বেশি সময় আমাদের কলকাতার মেরিন ক্লাবে রাখা হয়েছে। এখানে থাকা-খাওয়া নিয়ে আমাদের কোনো কষ্ট হচ্ছে না। তবে পরিবার-পরিজন ছাড়া এভাবে দূরে থাকা অনেক কষ্টের।  দুই দেশের মধ্যে আলোচনা করে আমাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত