Ajker Patrika

স্বস্তিতে টিকা পেয়ে উচ্ছ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৫০
স্বস্তিতে টিকা পেয়ে উচ্ছ্বাস

আগের দুই দিন টিকাদানে নানা অব্যবস্থাপনা থাকলেও তৃতীয় দিনে বেশ স্বস্তি নিয়ে টিকা পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। নিবন্ধন প্রক্রিয়া যাচাই থেকে শুরু করে টিকা পুশ করা পর্যন্ত ছিল সুশৃঙ্খল ও গোছাল। ফলে টিকা পেয়ে উচ্ছ্বসিত তারা। তবে, বসার জায়গা না থাকায় অধিকাংশ কেন্দ্রে এ দিনও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে অভিভাবকদের।

গতকাল বুধবার রাজধানীর কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়। বেলা ১১টার দিকে বসুন্ধরা এলাকায় হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, বেশ সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকার অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা। বিশাল মাঠের একপাশে ছেলেরা, অন্যপাশে মেয়েরা। স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি শিক্ষকেরাও দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। নিবন্ধন প্রক্রিয়া যাচাই করে ভেতরে পাঠানো হচ্ছে। দুই তলায় মেয়েদের, তিন তলায় দেওয়া হচ্ছে ছেলেদের টিকা।

ওই কেন্দ্রে এ দিন রওশন আরা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, আব্দুল খালেক মোমেন উচ্চবিদ্যালয়, খিলাড়ির টেক ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়, এ কে এম রহমত উল্লাহ কলেজ ও মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে দুই শিফটে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম চারটিকে সকাল ৯টা-দুপুর ১২টা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় শিফটে বাকি একটি প্রতিষ্ঠানের টিকাদান। সব মিলিয়ে ২ হাজার টিকা দেওয়া হয় এ কেন্দ্রে।

লাইনে দাঁড়িয়ে টিকার অপেক্ষায় থাকা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী মাহির ফয়সাল জানায়, ‘টিকা পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। স্যারেরা আমাদের টিকার ব্যবস্থা করেছেন। তবে আসতে কষ্ট হয়েছে। নিজ প্রতিষ্ঠানে দিলে ভালো হতো।’

রওশন আরা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকালই আমাকে জানানো হয়েছে। পরে দ্রুত নিবন্ধন করে ৫৭২ জনকে আজ (বুধবার) টিকার জন্য আনা হয়েছে। এত তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে দিলে ভালো হতো। অনেকেই নিবন্ধন করতে পারেনি। যে তালিকা দিয়েছি, সেখান থেকে অনেকে বাদ পড়েছে।’

বাড্ডা থানা একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুল মোমেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকায় গতকাল (মঙ্গলবার) কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে এখন সবকিছু গোছাল রয়েছে।

এদিকে ঢাকা কমার্স কলেজে টিকাদানে শৃঙ্খলা দেখা গেলেও চরম বিড়ম্বনায় পড়েন অভিভাবকেরা। কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকতে না দেওয়ায় তপ্ত রোদ মাথায় নিয়েই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অভিভাবকদের। ব্যাহত হয় যান চলাচল।

কল্যাণপুর সেন্ট জোসেফ হাইস্কুলের শিক্ষার্থী আবিরকে নিয়ে এসেছেন তাঁর মা। এই অভিভাবক বলেন, একসঙ্গে সবার টিকা দেওয়া হচ্ছে। অথচ কোনো নিয়ম নেই। স্কুল থেকে শিক্ষার্থীদের আনা হলে এমন ভোগান্তি হতো না।

এ কেন্দ্রে আগের দিন ২ হাজার ৩৫০ জনকে টিকা দেওয়া হলেও গতকাল ১০টি বুথে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আবু মাসুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, অভিভাবকদের ভেতরে আনাই যায়, কিন্তু শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এটি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী টিকা দিতে আমরা ২৫টি বুথ প্রস্তুত করেছি। কিন্তু অধিদপ্তর থেকেই টিকাদানের পরিধি বাড়ানো হচ্ছে না। প্রথম দিন সামান্য জটিলতা হলেও এখন কোনো সমস্যা নেই। তাই, ৫ হাজার টিকা দেওয়া কঠিন কিছু না।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তথ্য বলছে, ঢাকায় ৭০০টি প্রতিষ্ঠানে ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থী আছে ৬ লাখের মতো। এর মধ্যে ৪ লাখ শিক্ষার্থীর তথ্য সংগ্রহ করা গেছে। কিন্তু নিবন্ধন করেছে মাত্র ১ লাখ। সেটি বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এদিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নিবন্ধনের বাইরে এখনো মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। কবে নাগাদ তারা টিকা পাবে জানা নেই কারও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। মাত্র শুরু হলো, পর্যায়ক্রমে বাড়বে। ৪০ হাজার কেন, আরও বাড়ানো যাবে। ফাইজারের টিকা অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম কিংবা মডার্নার মতো নয়। এই টিকা সংরক্ষণে বাড়তি সুবিধা দরকার। সেটি না হলে তো আর সম্ভব নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

এপিএসের বেতন ১ বছরে বেড়েছে ১৮ বছরের সমান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত