Ajker Patrika

সৈকতে ভাঙন, হতাশ পর্যটক

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৪: ৩৪
Thumbnail image

বৈরী আবহাওয়ায় প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সাগর উত্তাল রয়েছে। তিন দিন ধরে পূর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে পর্যটন জোনের কলাতলী হোটেল-মোটেল এলাকার বালিয়াড়ি বিলীন হয়ে ভাঙন লোকালয়ে চলে আসছে। জিও টিউব ব্যাগ দিয়েও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। সাগরের এই রুদ্র রূপ দেখে স্থানীয় মতো পর্যটকেরাও হতাশ।

কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত। সৈকতের সবচেয়ে বেশি পর্যটক সমাগম হয় শহরের লাবণী থেকে কলাতলীর ৩ কিলোমিটার জায়গায়। এ এলাকাজুড়েই গড়ে উঠেছে পর্যটন জোন। এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের প্রায় সাড়ে ৪০০ হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্ট রয়েছে।

গতকাল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘু চাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে সাগর ছিল প্রচণ্ড উত্তাল। 
গতকাল দুপুর ১২টায় লাবণী পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, জেলা প্রশাসনের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি ভাঙন চলে এসেছে। সেখানে বসানো জিও টিউব ব্যাগ ছিঁড়ে গেছে। একেকটি ঢেউ জিও ব্যাগ উপচে বালিয়াড়িতে এসে পড়ছে।

ইতিমধ্যে লাবণী পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিউটি ঘর, বেশ কিছু ভ্রাম্যমাণ দোকান বিলীন হয়ে গেছে। ঝিনুক মার্কেট, বিজিবির নির্মাণাধীন রেস্ট হাউস, আর্মি ওয়েলফেয়ার রেস্ট হাউসের সীমানা প্রাচীরের কাছাকাছি চলে এসেছে ভাঙন।

সৈকতের কিটকট (চেয়ার-ছাতা) ব্যবসায়ী সাইফুদ্দিন (৩০) বলেন, ‘তিন দিনে ভাঙনে কোথাও ১৫০ ফুট, কোথাও ২০০ ফুট বিলীন হয়ে গেছে। এখন কিটকট বসানোর জায়গা নেই।’
কলাতলী এলাকার বাসিন্দা আবু বক্কর (৬৫) বলেন, ‘সাগরের ভাঙা-গড়া দেখে দেখেই বড় হয়েছি। কিন্তু এবারের মতো ভাঙন দেখিনি। একসময় বালিয়াড়িতে সাগর লতাসহ নানা লতা-গুল্ম ছিল, ফলে ভাঙন রোধে কাজ দিত। এখন সাগরতীরে গড়ে উঠেছে নানা স্থাপনা।’

পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা চট্টগ্রামের লালখান বাজারের ব্যবসায়ী সাইমুন মাহমুদ বলেন, ‘বেড়ানোর জন্য কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতই আমাদের পছন্দের জায়গা। কিন্তু এবার এসে সাগরের ভাঙন দেখে হতাশ হয়ে পড়েছি। সাগরের শ্রী হারিয়ে গেছে।’

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার আজকের পত্রিকাকে জানান, এবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার পর্যটক এসেছেন। তিনি বলেন, ‘সৈকতের ভাঙন রোধে জিও টিউব ব্যাগ বসানো অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। সাগর বর্ষা মৌসুমে একটু ভাঙে, শুষ্ক মৌসুমে আবারও গড়ে। এটাই সাগরের নিয়ম। কিন্তু জিও টিউব বসিয়ে সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্যহানি করা হচ্ছে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, সমুদ্রতীরে বালিয়াড়ি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের ফলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। এখন প্রাকৃতিকভাবেই দখলমুক্ত করা হচ্ছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, ভাঙনরোধে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০০ মিটার জায়গায় জিও টিউব ব্যাগ বসানো হয়েছে।

গত শুক্রবার সমুদ্রসৈকতের ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার। তিনি বলেন, কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক থেকে কলাতলী পর্যন্ত ভাঙন স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য ৩ হাজার ১৪০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি একনেকে পাস হলেই দরপত্র আহ্বান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত