Ajker Patrika

রুয়েটের ১৩৭ শিক্ষক কর্মকর্তা চরম শঙ্কিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রুয়েটের ১৩৭ শিক্ষক কর্মকর্তা চরম শঙ্কিত

রাইসুল ইসলাম রোজ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সেকশন অফিসার। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০২১ সালের ১ জুন যোগ দিয়েছেন এ পদে। তারপর সব ঠিকঠাকই ছিল। হঠাৎ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে অনিশ্চয়তায় পড়েছে রোজের চাকরি। এখন চাকরি হারানোর শঙ্কায় চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটছে তাঁর।

রোজ একা নন, আরও ১৩৬ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর একই অবস্থা। তাঁদের সবার নিয়োগ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রুয়েটে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ৪ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম এই নির্দেশনা দিয়ে রুয়েটের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্যের কাছে চিঠি পাঠান।
ওই চিঠি আসার পরে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। এ নিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ করেছেন। এরপর ঈদের ছুটি শুরু হয়। এখন আবার তাঁরা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এই ১৩৭ জন রুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখের সময় নিয়োগ পেয়েছিলেন। নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন। এটি নিয়েই আপত্তি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি)।

অথচ রুয়েট অর্ডিন্যান্সে ১০ ধারার ৩ উপধারায় বলা আছে, উপাচার্যের পদ শূন্য হলে কিংবা ছুটি, অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে তিনি তাঁর দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত উপাচার্য কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা উপাচার্য পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত চ্যান্সেলরের ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত না থাকা সাপেক্ষে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (উপ-উপাচার্য) উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন। তবে ওই নিয়োগের সময় রুয়েটের উপ-উপাচার্যের পদটি শূন্য ছিল। তাই দায়িত্বে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। এ ক্ষেত্রে রুয়েটের আইনের ১১-এর ৮ উপধারায় বলা আছে, ভাইস চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে তাঁর যেকোনো ক্ষমতা ও দায়িত্ব সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তাকে দিতে পারবেন।

সেকশন অফিসার রাইসুল ইসলাম রোজ বলেন, ‘আমি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। আমার চাকরি হয়েছে। নিয়োগপ্রক্রিয়ায় কোনো অসংগতি থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জবাবদিহি করবে। কিন্তু মন্ত্রণালয় চাকরি বাতিল করে আমাদের ভুক্তভোগী করতে পারে না।’

আরেক সেকশন অফিসার মামুন-অর-রশীদ বলেন, ‘এখানে যোগ দেওয়ার পর আরও দু-এক জায়গা থেকে ডাক পেয়েছিলাম। যোগদান করিনি চাকরি হয়ে গেছে বলে। এখন সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে। এখন আমাদের চাকরি কেড়ে নেওয়া হলে এটা অবিচার করা হবে। আমরা কেন ভুক্তভোগী হব?’

ওই নিয়োগে সেকশন অফিসার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া আ ফ ম মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে একজন অতিরিক্ত সচিব আমাদের নিয়োগকে বৈধতা দিয়েছেন। সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে তিনি নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছেন। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ই নিয়োগ বাতিল করতে বলছে। কেন এই নিয়োগ বাতিলের নির্দেশনা, তা আমাদের বোধগম্য নয়। নিয়োগ বাতিলের বিষয়টি অমানবিকও। তাই আমরা এটি পুনর্বিবেচনার দাবি জানাই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেন বলেন, নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।

চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে রুয়েটের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসির এই বিষয়গুলো দেখার সুযোগ নেই। আমি সেটাই মনে করি। রুয়েটে নিয়মিত উপাচার্য নিয়োগ হবে, তারপর তিনিই এই চিঠির বিষয়টি দেখবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত