Ajker Patrika

খোকা রবীন্দ্রনাথ

সম্পাদকীয়
খোকা রবীন্দ্রনাথ

মংপুতে এসেছেন রবীন্দ্রনাথ, মৈত্রেয়ী দেবীর বাড়িতে। রসিকতায় ভরিয়ে রাখছেন পরিবেশ। মাঝে মাঝে অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ কথাও বলছেন, কিন্তু সেটা খুব প্রয়োজন পড়লে।

মৈত্রেয়ী দেবী নিরামিষ খাওয়াতে খাওয়াতে ক্লান্ত। একদিন তিনি একটি বাটি হাতে নিয়ে এসে বললেন, ‘এটা একটু খাবেন?’

রবীন্দ্রনাথ মৈত্রেয়ীর চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ও পদার্থটা কী?’

‘ব্রেইন।’

‘এই দেখো কাণ্ড! এ তো প্রায় অপমানের শামিল!

কী করে ধরে নিলে যে ওই পদার্থটার আমার প্রয়োজন হয়েছে? আজকাল কি আর ভালো লিখতে পারছিনে? বিশ্বকবির কবিত্বশক্তি হ্রাস হয়ে আসছে? যাক, সন্দেহ 
যখন একবার প্রকাশ করেই ফেলেছ, তখন শুরু করা যাক।…কিন্তু একটা কথা, বউমা কী মনে করবেন?

তাঁর কাছে কী কৈফিয়ত দেব বলো? তিনি যদি বলেন, “এত দিন আমি বলে বলে কিছুতেই আপনাকে মাংস খাওয়াতে পেরে উঠছিনে, আর যেই ওই কন্যাটি একবার বললে, আপনি অমনি একেবারে বাধ্য ছাত্রের মতো,

সুবোধ বালকের মতো…’”

কথা শেষ করতে দিলেন না মৈত্রেয়ী। বললেন, ‘মোটেই বউমা তা বলবেন না, আপনি খেলেই তিনি খুশি হবেন।’

‘তুমি দু-একটা সাইকোলজির বই সাজিয়ে রেখেছ বটে, কিন্তু তোমার সাইকোলজির জ্ঞান কিছুই হয়নি দেখছি—বউমার মন খুব উদার, তোমাকে তো খুবই স্নেহ করেন। আর এই বৃদ্ধ শিশুটির ওপর তো তাঁর স্নেহের অন্ত নেই। তাই কোনোকালে আমার যা ছিল না, এ বয়সে আমার তা হয়েছে। মনটা খোকা হয়ে উঠেছে। সর্বদাই মা মা করে মন। যখন তিনি কোথাও যান, তখন চারদিক শূন্য বোধ হয়। ওই যে তিনি খাবার সময় কাছটিতে এসে বসেন, আস্তে আস্তে বলেন, “এটা একটু খেয়ে দেখুন”—সে শুনতে আমার ভারি ভালো লাগে। এ রকম কিন্তু আমার ছিল না, মনের দিক থেকে, শরীরের দিক থেকে একেবারে স্বাধীন ছিলুম বরাবর।’

সূত্র: মৈত্রেয়ী দেবী, মংপুতে রবীন্দ্রনাথ, পৃষ্ঠা ১৫-১

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে অবতরণ করল প্রথম ফ্লাইট

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত