Ajker Patrika

যানজট কমছে নগরে

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২২, ১২: ০১
Thumbnail image

বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহে দীর্ঘদিন ধরেই সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় দুর্ভোগের কারণ যানজট। এতে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের প্রতিদিন মূলবান কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। অনেক ধরনের উদ্যোগ নিয়েও তা তেমন কাজে আসেনি। এবার যানজট নিরসনে প্লাস্টিকের বিভাজক বসিয়েছে পুলিশ। এতে কয়েকটি সড়কে সাময়িক স্বস্তি ফিরেছে বলে জানিয়েছেন নগরীর বাসিন্দারা। তবে যানজট নিরসনে স্থায়ী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তাঁদের।

এ বিষয়ে জেলা জনউদ্যোগের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, ‘যানজট নিরসনে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। হয়তো সাময়িক কিছুটা স্বস্তি হয়েছে। স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। রাস্তা প্রশস্ত করার পাশাপাশি লেভেল ক্রসিংগুলোতে ওভারব্রিজ করতে হবে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে (মসিক) প্রায় আট লাখ মানুষের বসবাস। ছোট এ শহরটির সবচেয়ে বড় সমস্যা যানজট। সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, শহরে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রয়েছে ১৭ হাজার। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা হবে ২২ হাজারের মতো হবে বলে জানা গেছে। শহরের মধ্য দিয়ে রয়েছে ১০টি লেভেল ক্রসিং। এ লেভেল ক্রসিং দিয়ে সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অন্তত ৪৭ বার ট্রেন যাতায়াত করে। এর ফলে সৃষ্টি হয় চরম যানজটের।

এ পরিস্থিতিতে সম্প্রতি নগরীর গাঙ্গিনারপাড়, নতুন বাজার, জিলা স্কুল রোড, বদরের মোড়, তাজমহল এলাকায় রাস্তার মাঝে প্লাস্টিকের বিভাজক দিয়ে যানজট নিরসনের চেষ্টা শুরু করেছে ট্রাফিক পুলিশ। এর ফলে ওই সড়কগুলোয় যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। মানুষ রিকশা অথবা ইজিবাইক নিয়ে কিছু পথ ঘুরে নির্দিষ্ট স্থানে যাওয়ায় এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে।

ব্যবসায়ী হাসিবুর রহমান বলেন, ‘পুলিশের এমন উদ্যোগ আরও আগে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। তবে মূল কথা হচ্ছে, ইজিবাইক এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শহর থেকে কমাতে হবে।’

নারী নেত্রী গুলশান আরা বলেন, ‘ডিভাইডার দেওয়ার ফলে এখন সি কে ঘোষ রোড থেকে সরাসরি দুর্গাবাড়ি রোড কিংবা গাঙ্গিনারপাড় যাওয়া যায় না। একটু ঘুরে তারপর যেতে হয়। ঘুরে গেলেও যানজটে বসে থাকার চেয়ে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে।’

গাঙ্গিনারপাড় মোড়ে কথা হয় ট্রাফিক পুলিশের সদস্য আব্দুল মালেকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি শহরে যানজট অনেকটা কমেছে। এমন উদ্যোগে শহরবাসীর মধ্যে স্বস্তির পাশাপাশি আমরাও একটু শান্তিতে কাজ করতে পারছি।’

এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের সহকারী শহর উপপরিদর্শক শাহ জালাল বলেন, ‘প্লাস্টিকের বিভাজক দেওয়ার ফলে স্বস্তি মিলেছে গাঙ্গিনারপাড়, নতুন বাজার, জিলা স্কুল মোড়সহ বেশ কয়েকটি রোডে। এর ফলে যানবাহন নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে চলাচল করছে। তবে রাতে শহরে বড় গাড়ি ঢোকে। ফলে বিভাজকগুলো রাতে তুলে অন্যত্র রাখা হয়। মাঝে মধ্যে কেউ কেউ একটু ঘুরে যেতে হওয়ায় রাগ করেন। তবে এর ফলে মানুষের কষ্ট ও সময় অনেকটাই লাঘব হয়েছে।’

ময়মনসিংহ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউলুপ কার্যক্রমে কমেছে যানজট। এ পদ্ধতিতে নেত্রকোনা ও যশোর থাকাকালে যানজট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। ময়মনসিংহে পুলিশ সুপারের নির্দেশে গাঙ্গিনারপাড়, নতুন বাজার এবং জিলা স্কুল মোড়ে প্লাস্টিকের বিভাজক দিয়ে যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পরবর্তীতে চরপাড়া মোড় এবং পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ে বিভাজক দেওয়া হবে।’

জেলা পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য। শহর পরিকল্পিতভাবে ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন। যানজটের পাশাপাশি অনেক সমস্যা রয়েছে। এগুলো সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমাধান করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত