Ajker Patrika

বীর নিবাস

সম্পাদকীয়
বীর নিবাস

এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অপরিসীম। তাঁদের সীমাহীন দেশপ্রেম, অসীম সাহসিকতা এবং অপরিমেয় আত্মত্যাগ ছাড়া এ দেশ আজও পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেত না। এ জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বলা হয়। তাঁদের প্রতি রাষ্ট্রের দায় আছে।

বর্তমান সরকার ২০২১ সালে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সমস্যা নিরসনের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়। এই প্রকল্পের অধীনে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় বীর নিবাস তৈরির কাজ গ্রহণ করা হয়। ইতিমধ্যে অনেক বীর নিবাসের নির্মাণকাজ শেষে সুবিধাভোগীদের কাছে বুঝিয়েও দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ৩২টি বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হলেও এখনো তা অসমাপ্ত রয়ে গেছে। এ নিয়ে রোববার আজকের পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

ডিমলা উপজেলায় ২০২১-২২ অর্থবছরে শুরু হয় ‘বীর নিবাস’-এর নির্মাণকাজ। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের জুন মাসে। নতুন বাড়ি পাওয়ার আশায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জমির ভিটা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় তাঁদের এখন ঝুপড়িতে কিংবা ভাড়া বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। মূলত নতুন বাড়ি নির্মাণে ধীরগতিতে বিপাকে পড়েছে এসব পরিবার। এ ছাড়া নির্মাণকাজ যেটুকু হয়েছে, তাতেই ভবনের নানা স্থানে ফাটল ধরেছে। পরিবারগুলো এসব বীর নিবাসে ওঠা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে। নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় ঘর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।

মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রায় ৪ হাজার ১২২ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বিনা মূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা’ প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিল সরকার। আর সেটি বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব ছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওপর। এই প্রকল্পের অধীনে সারা দেশে ৩০ হাজার বাড়ি তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে তাদের নিজস্ব জমি থাকতে হবে, সেখানেই তৈরি হবে বাড়ি। এই বাড়ির নাম হবে ‘বীর নিবাস’।

২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই বৈঠকে বীর নিবাসের নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে এবং নির্মাণকাজ মানসম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য সেই কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছিল। কিন্তু এখনো অনেক জায়গায় উপকারভোগীরা তাঁদের বাড়ি পাননি। ডিমলার সেই বীর নিবাসের নির্মাণকাজ দ্রব্যমূল্য বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে ঠিকাদারেরা বন্ধ করে দিয়েছেন।

সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের যথার্থ সম্মান দেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা ভাতা চালু করেছে। একই সঙ্গে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এসবের জন্য সরকারকে সাধুবাদ। কিন্তু প্রকল্পটি যাঁদের জন্য, তাঁরাই যদি এর সুবিধা না পান, তাহলে প্রকল্প নেওয়ার অর্থ কী?

ডিমলার বীর নিবাসের বাড়িগুলো যথাসময়ে কেন তাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হলো না, সে বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায় আছে। তাঁকে আগে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত