Ajker Patrika

বীর নিবাস নির্মাণে বিস্তর অভিযোগ

মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮: ৪০
বীর নিবাস নির্মাণে বিস্তর অভিযোগ

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর বীর নিবাস নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজে ইচ্ছেমতো নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বীর নিবাস নির্মাণের জন্য ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৪ হাজার ৫৮৪ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যার প্রতিটি ঘর নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয় ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচিত হন বরগুনার বেতাগীর মেসার্স আছিয়া এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার মো. বেলায়েত হোসেন খোকন।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর কার্যাদেশ পেয়ে বীর নিবাস ঘরের কাজ শুরু করেন ওই ঠিকাদার। শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিডিউল মোতাবেক কাজ না করে নিম্নমানের ইট, বালু ব্যবহার করছেন এবং পরিমাণমতো সিমেন্ট দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ বীর নিবাস পাওয়া পরিবারগুলোর। বীর নিবাস পরিবারের লোকজন জানান, উল্টো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন তাঁদের ইচ্ছেমতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

দেউলি গ্রামের বাসিন্দা মো. রিয়াদ হোসেন বলেন, ‘যাঁরা নিজের জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন, সেই মুক্তিযোদ্ধার ঘরের কাজের মান যদি এতটাই নিম্নমানের হয়—এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

দেউলি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সেকান্দর আলী মাস্টারের স্ত্রী মোসা. সামসুর নাহার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের ঘর দিয়েছেন। এ ঘর পেয়ে আমরা অনেক খুশি। কিন্তু ঘর নির্মাণের শুরু থেকেই ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছেন।’

দক্ষিণ কাকড়াবুনিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বীরাঙ্গনা মোসা. আলেয়া বেগম বলেন, ‘ঘরের কাজে লাগানো ইট ভালো না। যে বালু ব্যবহার করেছে তা কাদাকাদা। আমি এসব খারাপ মালামাল দিয়ে কাজ করতে নিষেধ করলেও তাঁরা আমার কথা শুনছেন না।’

ঠিকাদার মো. বেলায়েত হোসেন খোকন বলেন, শিডিউল মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। তবে ভালো ইটের সঙ্গে কিছু খারাপ ইট যেতে পারে। সেগুলো রাজমিস্ত্রিকে ঘরে লাগাতে নিষেধ করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় উপসহকারী প্রকৌশলী পটুয়াখালী অঞ্চলের আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমি অসুস্থতার কারণে ঘরগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করতে পারেনি। শিগগির কাজের মান পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. তানিয়া ফেরদৌস সাংবাদিকদের বলেন, ‘বীর নিবাস নির্মাণে একটি ঘরে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেয়ে সেটি সমাধান করে দিয়েছি। অন্য কোনো ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত