Ajker Patrika

জৈন্তাপুরে জ্বালানির চাহিদা মেটাচ্ছে গোবরের লাঠি

রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর 
Thumbnail image

জৈন্তাপুর উপজেলায় জ্বালানি হিসেবে কাঠের বিকল্প হিসেবে গোবরের লাঠির চাহিদা বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলে শুকনো মৌসুমে গোবর লাঠিতে পেঁচিয়ে শুকিয়ে সারা বছর ব্যবহার করা যায় এই লাঠি।

জৈন্তাপুর উপজেলার ঘিলারতৈল, ডিবিরহাওর, গোয়াবাড়ী, কমলাবাড়ী, লক্ষ্মীপ্রসাদ, কামরাঙ্গীখেল, বালীদাঁড়া, লামাবস্তি, হাটিরগ্রাম, গাতীগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, ঝিঙ্গাবাড়ী, কাঞ্জর, সেনগ্রাম, কাঠালবাড়ী, আমবাড়ীসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে গোবরের লাঠি তৈরি করতে দেখা গেছে। সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত গোবরের লাঠি তৈরি করা হয়। গরুর গোবরের সঙ্গে তুষ মিশিয়ে সেগুলো বাঁশের কঞ্চির সঙ্গে পেঁচিয়ে রোদে শুকিয়ে তৈরি হয় এই লাঠি।

একসময় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ হাওরের বনাঞ্চল থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করে নিজেদের চাহিদা মেটাতেন। দিন দিন বনাঞ্চল কমে যাওয়ায় জ্বালানি কাঠের সংকট তীব্র হতে থাকে। এ ছাড়া বাজারেও জ্বালানি কাঠের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছে গ্রামের মানুষকে। তা ছাড়া গ্যাস কিনে ব্যবহার করাও সম্ভব নয় সবার পক্ষে। এই সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে গোবরের লাঠির প্রতি ঝুঁকছেন গ্রামের বাসিন্দারা।

জৈন্তাপুর উপজেলার হাটিরগ্রামের বাসিন্দা রাম দাশ, অনিতা বালা বিশ্বাস, গাতী গ্রামের ঝুটন দাশ, কৃষ্ণ বিশ্বাস, বিজয় বিশ্বাস বলেন, একসময় মানুষ হাওর-বাঁওড়ের বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা থেকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করে নিজেদের চাহিদা মেটাত। বর্তমানে হাওর-বাঁওড়ে কোনো ধরনের বন জঙ্গল নেই। এ ছাড়া বাজার থেকেও অতি উচ্চমূল্যে কাঠ সংগ্রহ করতে হয়। সিলিন্ডার গ্যাসের দাম হু-হু করে বাড়ছে। মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ রান্নার কাজে কাঠ কিংবা সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করলেও নিম্নবিত্তদের বিপদ। তারা না পারে কাঠ কিনতে, না পারে গ্যাস ব্যবহার করতে।

তাঁরা আরও বলেন, গ্রামের বউ-ঝিয়েরা সন্তানদের নিয়ে অবসর সময়ে তুষ কিংবা খড়ের সঙ্গে গোবর মিশিয়ে বাঁশের কঞ্চির সঙ্গে জড়িয়ে গোবরের লাঠি তৈরি করে ১০-১২ দিন রোদে শুকান। রোদে শুকানোর পর গোবরের গন্ধ চলে যায় এবং লাঠিগুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়। এগুলো তৈরিতে পরিশ্রম হলেও খরচ কম পড়ে। গোবরের লাঠি সারা বছর গোয়ালঘরে কিংবা যে কোনো শুকনো স্থানে মজুত করে রাখা যায়। ঝড়-বৃষ্টির দিনে প্রয়োজন মতো এগুলো দিয়ে চুলায় রান্না করা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত