Ajker Patrika

আজ কোটি টিকা দিতে চায় সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯: ২২
আজ কোটি টিকা দিতে চায় সরকার

দেশের ৭০ শতাংশ তথা ১২ কোটির বেশি মানুষকে টিকা আওতায় আনতে তৃতীয় দফায় আজ শনিবার বিশেষ টিকা ক্যাম্পেইন করবে সরকার। যেখানে চলবে কেবল প্রথম ডোজের টিকাদান। সারা দেশের শহর-গ্রামাঞ্চলের সাড়ে ২৪ হাজার কেন্দ্রে এক কোটির বেশি টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

১৬ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধন ও এসএমএস ছাড়াই মোবাইল নম্বর দিয়ে টিকা নেওয়া যাবে বলে ঘোষণা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরদিন থেকে টানা নয় দিন নিবন্ধনের পাশাপাশি অঘোষিত গণটিকাও চলছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এখনো টিকার বাইরে দেড় কোটির বেশি মানুষ। টিকা মজুত থাকা সত্ত্বেও প্রথম ডোজ পিছিয়ে থাকায় দ্বিতীয় ডোজ ও বুস্টার ডোজে ঠিকমতো এগোতে পারছে না। ফলে দ্রুত সবার প্রথম ডোজের টিকা নিশ্চিতকরণে এবার এক দিনে এক কোটি এমনকি সাড়া পেলে দেড় কোটি টিকাও দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

বিশেষ এই কর্মসূচিতে সারা দেশের গ্রাম, শহরসহ সব এলাকায় একযোগে টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনসহ জেলা শহর এলাকায় মোট সাড়ে ৮ হাজার এবং গ্রামীণ এলাকায় ১৬ হাজার টিকা কেন্দ্র থাকবে। অন্যান্য দিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হলেও ক্যাম্পেইনকে ঘিরে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে টিকাদান।

গণ টিকা দিতে বেশ জোরালোভাবে প্রচারণা চালিয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি করে কেন্দ্রে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মানুষের টিকার প্রতি আগ্রহ অনেক বেড়েছে। কেন্দ্রে এখন হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। এক সপ্তাহ ধরেই গণ টিকা চলছে। আগামীকালের (আজ) ক্যাম্পেইন উপলক্ষে মসজিদ-মন্দিরে, পাড়া-মহল্লায় মাইকিং করে এমনকি বাসায় বাসায় গিয়ে প্রচার চালানো হয়েছে। ঢাকার বাইরেও প্রতিটি শহর ও গ্রামে টিকা নিতে স্থানীয় প্রশাসন প্রচারণা চালিয়েছে।

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনেও প্রথমবারের মতো টিকা দিয়েছে সরকার। দিনের শুরুতে বেশির ভাগ কেন্দ্র ফাঁকা দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রগুলোতে টিকা প্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। তবে প্রচার করলে আরও লোক টিকা নিতে আসতেন মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

রাজধানীর শ্যামলীর ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতালে গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টিকা নিতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। হাসপাতালে সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী শুক্রবার ছুটির দিনেও টিকাকেন্দ্র খুলে রাখা হয়। সকালের দিকে কিছুটা কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টিকা প্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

একই চিত্র পাওয়া যায় ঢাকার বাইরেও। উত্তরের জেলা দিনাজপুরের হিলিতে শুক্রবার করোনার টিকা কেন্দ্রগুলোতে ছিল চোখে পড়ার মতো।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে এখন পর্যন্ত ২৮ কোটির মতো টিকা এসেছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ১৯ কোটি ৩৭ লাখ ৬৭ হাজার ৪৫৭ ডোজ। এর মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে ১০ কোটি ৮৪ লাখ ৪৮ হাজার ৬১০ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৮ কোটি ১৭ লাখ ৭০ হাজার ১৩৫ জন। এ ছাড়া বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে ৩৫ লাখ ৪৮ হাজার ৭১২ জনকে।

এদিকে দেশে গত একদিনে আগের দিনের তুলনায় করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্তের হার কমেছে। তবে বেড়েছে মৃত্যু। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) এক হাজার ৪০৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ১১ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত