Ajker Patrika

হুমায়ুন আজাদ স্মরণ

অর্চি হক, ঢাকা
হুমায়ুন আজাদ স্মরণ

অন্য প্রকাশের স্টলে দাঁড়িয়ে হ‌ুমায়ূন আহমেদের বই দেখছিলেন অপর্ণা হাই তন্দ্রা। তিনি সন্তানসম্ভবা। ব্যাপক ভিড়ের মধ্যেও তাঁর জন্য কিছুটা জায়গা করে দিচ্ছিলেন দর্শনার্থীদের কেউ কেউ। আগে বইমেলায় আসতে না পারলেও একেবারে শেষ বেলায় আর না এসে থাকতে পারেননি অপর্ণা। এমন অনেক ঘটনাকে সাক্ষী রেখে আজ শেষ হতে চলেছে এবারের বইমেলা।

গতকাল সোমবার প্রায় সব স্টলে ছিল বইপ্রেমীদের ভিড়। প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা জানান, স্বাভাবিকভাবে মেলার শেষ দিকে বইপ্রেমীদের ভিড় বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও।

তিন বছর পর মেলায় যে পরিমাণ বই বিক্রি হওয়ার আশা ছিল, সে তুলনায় বিক্রি কিছুটা কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্বেষা প্রকাশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতিমা বুলবুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে টার্গেট ছিল, সেটা ফুলফিল হয়েছে।’

একই রকম কথা জানান অন্যপ্রকাশের স্টলের দায়িত্বে থাকা তৌহিদুর ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এ বছরও আমাদের স্টলে হ‌ুমায়ূন আহমেদ স্যারের বইগুলো দেদার বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সব মিলিয়ে দর্শনার্থীর তুলনায় বিক্রি কম।’

সোমবার ২৭তম দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ১৫৮টি। বিকেলে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বিশ্ব বাঙালির সাহিত্য’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠান নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন জাহিদ মুস্তাফা, মুমিত আল রশিদ, ফরিদ আহমদ দুলাল ও আরফিন রব।

বইমেলার এই শেষ সময়ে শারীরিকভাবে না থেকেও বিপুলভাবে মেলায় উপস্থিত ছিলেন বহুমাত্রিক লেখক হ‌ুমায়ুন আজাদ। ‘হ‌ুমায়ুন আজাদ দিবসের ডাক, পাইরেসিমুক্ত বইমেলা চাই’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাঁকে স্মরণ করা হয় গতকাল। বর্ধমান হাউসের তথ্যকেন্দ্রের সামনে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কবি আসলাম সানী, কবি মোহন রায়হান, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ এ অনুষ্ঠানে হ‌ুমায়ুন আজাদের জীবন, দর্শন ও কর্মের ওপর বক্তব্য দেন। বক্তারা তাঁর হত্যাচেষ্টার বিচার অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবি জানান। এ বিচারের মাধ্যমে তাঁকে যথাযোগ্যভাবে স্মরণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন তাঁরা।

আজ সমাপনী দিনে মেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২, কবি জসীমউদ্‌দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ এবং বিভিন্ন গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে।

২০২২ সালে প্রকাশিত বিষয় ও মানসম্মত সর্বাধিকসংখ্যক বই প্রকাশের জন্য আগামী প্রকাশনীকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০২৩ দেওয়া হবে। ২০২২ সালে প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে শৈল্পিক ও মান বিচারে সেরা বই বিভাগে আহমদ রফিকের ‘বিচ্ছিন্ন ভাবনা’ প্রকাশের জন্য জার্নিম্যান বুকস, মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদের ‘বাংলা একাডেমি, আমার বাংলা একাডেমি’ বইয়ের জন্য ঐতিহ্য এবং হাবিবুর রহমানের ‘ঠার: বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা’ প্রকাশের জন্য পাঞ্জেরী পাবলিকেশনসকে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৩ দেওয়া হবে। ২০২২ সালে প্রকাশিত সর্বাধিক মানসম্মত শিশুতোষ বই প্রকাশের জন্য ময়ূরপঙ্খীকে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০২৩ দেওয়া হবে। এ বছর অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুথি নিলয়, নবান্ন প্রকাশনী, উড়কিকে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত