Ajker Patrika

ধান ঘরে তুলতে ব্যয় দ্বিগুণ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ মে ২০২২, ১৪: ৫১
Thumbnail image

জয়পুরহাট সদর উপজেলাসহ পাঁচবিবি, কালাই, ক্ষেতলাল, আক্কেলপুর উপজেলার মাঠে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে শ্রমজীবীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে কয়েক দিনের কালবৈশাখীর কারণে পুরো জেলার প্রায় ২ হাজার ১৩ হেক্টর বোরো ধানখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চাষিদের ধান কাটতে হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। আর শ্রমিকেরা বলছেন, জমিতে পানি জমে থাকার কারণে বেশি দামে ধান কেটেও লাভ হচ্ছে না তাঁদের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটে চলতি ২০২১-২২ রবি ফসল উৎপাদন মৌসুমে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জেলায় এবার ৬৯ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৯ হাজার ৪২৫ হেক্টর। ১০-১৫ দিনের মধ্যে পুরোদমে বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কায়ছার ইকবাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক কালবৈশাখী ও বৃষ্টির কারণে জয়পুরহাট সদর উপজেলার প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর বোরো ধানখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৯০০ মেট্রিক টন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। আর এর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে দেড় কোটি টাকা।’

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল রোববার পর্যন্ত ১০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। তবে কয়েক দিন আগে যে বৈশাখী ঝড়বৃষ্টি হলো, তার প্রভাবে পুরো জেলার প্রায় ২ হাজার ১৩ হেক্টর বোরো ধানখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১ হাজার ৩৬৪ মেট্রিক টন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা।’

ধানচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি কালবৈশাখীর প্রভাবে বয়ে যাওয়া ঝড়বৃষ্টির কারণে তাঁদের পাকা এবং আধা পাকা ধানের গাছ জমিতে নুয়ে পড়েছে। কিছু কিছু নিচু জমিতে এখনো পানি জমে আছে। তাই ধান কেটে নিতে হচ্ছে চড়া দামে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রতি বিঘা ধান কাটা যেত ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। এখন সেই ধান কাটতে হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। এখন প্রতি বিঘা ধান কেটে নিতে হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায়।

এদিকে শ্রমজীবীরা জানান, বেশি দামে ধান কেটেও পড়তা হচ্ছে না তাঁদের। ধানগাছ নুয়ে না পড়লে এবং জমিতে পানি না জমে থাকলে, যে সময়ে তাঁরা তিন বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াই করতে পারতেন; এখন এক থেকে দেড় বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াই করতে তাঁদের সেই সময় লাগছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার কোমরগ্রামের কৃষক কাউছার রহমান জানান, তাঁর আট বিঘা জমির মধ্যে পাঁচ বিঘা জমিই বর্গা রেখেছেন তিনি। তিন বিঘা জমিতে আগাম জাতের বোরো ধান জিরাশাইল চাষ করেছেন। এক সপ্তাহ আগে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর কারণে পাকা ধানগাছ জমিতে নুয়ে পড়ছে। ৫ হাজার টাকা বিঘাদরে সে ধানগুলো কেটে দিচ্ছেন শ্রমিকেরা।

নীলফামারী জেলার ডোমার থেকে আসা শ্রমিক দলের সর্দার মোসলেম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, জমির ধান নুয়ে পড়ায় এবং জমিতে পানি জমে থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবে ধান কাটা যাচ্ছে না। তাই ৫ হাজার টাকা বিঘা দরে ধান কেটেও পড়তা হচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত