নৌকার পক্ষে কাজ না করায় হামলা, আহত ৫

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ না করায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর পাঁচ সমর্থকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা উলিপুর-রাজারহাট সড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার দুপুরে উত্তর দলদলিয়া ক্ষত্রিয়পাড়া এলাকায়।

দলদলিয়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকে লিয়াকত আলী ও বিদ্রোহী হিসেবে ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান মুন্সি রানা মোটরসাইকেল প্রতীকে নির্বাচন করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী রাশেদুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা ও বিটু কুমার জানান, গতকাল সকালে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাঈদুল ইসলাম ও নৌকার প্রার্থী লিয়াকত আলীর ভাতিজা হাসানুর ইসলামের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন যুবক উত্তর দলদলিয়া ক্ষত্রিয়পাড়া এলাকায় একটি চায়ের দোকানে এসে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ না করার অভিযোগ তুলে মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মী নিখিল চন্দ্র রায়ের ওপর হামলা চালান। এ সময় নিখিলকে বাঁচানোর জন্য তাঁর পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে এলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচ আহত ব্যক্তি হলেন ব্রজেন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে নিখিল চন্দ্র রায়, হরিশ চন্দ্রের স্ত্রী কল্পনা রানী, ছেলে বাসু দেব, গিরিশ চন্দ্রের স্ত্রী সৌধা রানী, ছেলে রথীন্দ্র নাথ। তাঁরা সবাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকেরা ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে উলিপুর-রাজারহাট সড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যানবাহন আটকে রেখে সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে শান্ত করলে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।

দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ১০ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। চতুর্থ ধাপে আগামী ২৬ ডিসেম্বর উলিপুর উপজেলার ১৩টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, দলদলিয়া ইউনিয়নের আহত চারজন হাসপাতালে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অপর দুজন কল্পনা রানী ও রথিন্দ্র নাথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুজ্জামান মুন্সি রানা বলেন, ‘নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও কর্মীরা সাধারণ ভোটারদের শুরু থেকেই হুমকি দিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার তারা আমার কর্মী সমর্থকের ওপর হামলা চালিয়েছে।’

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী লিয়াকত আলী বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ওই এলাকার তাঁরা ভোটারদের মাঝে সকালের নাশতার চিরকুট বিতরণ করছিলেন। এ সময় আমার সমর্থকদের সঙ্গে সামান্য হাতাহাতি হয়। বিষয়টি আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা তারিফুর রহমান সরকার জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।