Ajker Patrika

জাতীয় সরকারের রূপরেখা দিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ মে ২০২২, ১৯: ৩৩
Thumbnail image

দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দুই বছরের জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শুধু তা-ই নয়, জাতীয় সরকার কেমন হবে, কারা কারা এতে থাকবেন, এসব নিয়ে একটি রূপরেখা দিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই রূপরেখা দেন তিনি।

জাতীয় সরকারের রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান অথবা সংবিধানপ্রণেতাদের অন্যতম ড. কামাল হোসেনের নাম প্রস্তাব করেন। সেই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসনের দায়িত্বসহ প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেন তিনি।

নিজের প্রস্তাবিত জাতীয় সরকারের রূপরেখায় প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতিনিধি রাখার কথা বলতে ভোলেননি রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে সব সময় সরব জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

জাতীয় সরকারে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার নাম প্রস্তাব করে তাঁকে মানবাধিকার ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করেন। দলটির আরেক নেতা মতিয়া চৌধুরীকে খাদ্য সরবরাহ ও রেশনিং মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে বলেন।

বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানের নাম প্রস্তাব করে তাঁকে নারী ও যুব উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার কথা সুপারিশ করেন।

জাতীয় সরকারের রূপরেখা দেওয়ার কারণ হিসেবে ড. জাফরুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে কোনো দলীয় সরকারের অধীন সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্ভব নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন নীতিতে আস্থা সৃষ্টি, সুশাসন করা এবং কয়েকটি ক্ষেত্রে সংবিধান পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ ও গণভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত দুই বছর মেয়াদি একটি সর্বদলীয় জাতীয় সরকার।

জাতীয় সরকারে রাজনীতিবিদদের মধ্যে পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক সম্পর্ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান চৌধুরী এবং প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ ছাড়া তিনি মন্ত্রী হিসেবে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমদ, অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এবং শিল্পপতি-মিডিয়া মালিক এ কে আজাদ, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদসহ অনেকের নাম প্রস্তাব করেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর প্রস্তাবে নতুন জাতীয় সরকারের জন্য কিছু কর্মপরিকল্পনাও সুপারিশ করেন। সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য তিনি আবার পৃথক পৃথক সময়ও নির্ধারণ করে দেন।

এতে প্রথম তিন মাসের প্রস্তাবিত কর্মকাণ্ডের মধ্যে নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচনী আইনের কিছু সংস্কার এবং ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতি কার্যকর করা, পরের ছয় মাসে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক কর্মী ও আলেমদের জামিন নিশ্চিত করে এক বছরের মধ্যে তাঁদের বিচার শেষ করে রায় কার্যকর করার সুপারিশ করেন। এ ছাড়া সুশাসনের জন্য বাংলাদেশকে ১৫ থেকে ১৭ প্রদেশে বিভক্ত করার কথা বলেন তিনি। পরের ৯ মাসের মধ্যে তিনি দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলেন।

বিবৃতিতে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, আদালতে প্রমাণিত অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। পেশাজীবী, বয়োজ্যেষ্ঠ অবসরপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ ও সরকারি-বেসরকারি ব্যক্তিদের নিয়ে জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। এ ছাড়া ভোট কারচুপি ঠেকাতে নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার বাতিলের সুপারিশ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত