Ajker Patrika

তাঁদের চোখে নতুন দিনের স্বপ্ন

আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০৮: ৪৪
তাঁদের চোখে নতুন দিনের স্বপ্ন

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে নেমেছিলেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় উত্তাল হয়ে ওঠে দেশ। কোটা সংস্কার থেকে সেই দাবি গড়ায় সরকার পতনের এক দফায়। গতকাল তাঁদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। অফলাইন ও অনলাইনে সমর্থন জানিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন শোবিজ অঙ্গনের তারকারা। এই বিজয়ের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁরা। অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে সরাসরি। অনেকে তাঁদের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন অনুভূতি। অনুলিখনে এম এস রানা, খায়রুল বাসার নির্ঝর ও শিহাব আহমেদ।

বিজয়ের আনন্দ অবশ্যই করব, কিন্তু এখন সময় সংযমের 
—মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নির্মাতা
স্বাধীন দেশে স্বাগত! কী করে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের স্থপতির কন্যা থেকে পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম এবং নিষ্ঠুরতম স্বৈরশাসকে পরিণত হলো শেখ হাসিনা। এটা ভবিষ্যতে ইতিহাসের ছাত্ররা মনোযোগ দিয়ে পাঠ করবেন। এবং রাজনীতিকেরা শিক্ষা নেবেন আশা করি। বিজয়ের আনন্দ অবশ্যই করব! কিন্তু এখন সময় সংযমের, চোখ-কান খোলা রাখার। আমরা ২০ বছর প্রতিহিংসার রাজনীতি দেখেছি। প্রতিহিংসার উত্তর দিব আমরা কাইন্ডনেস এবং এমপ্যাথি দিয়ে। পাশাপাশি আমরা চোখ খোলা রাখব আগামী দু-তিন দিন। নিশ্চয়ই আমরা একটা মানবিক গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের দিকে এগিয়ে যাব। লাস্টলি, স্যালুট টু বাংলাদেশি ইয়ুথ অ্যান্ড পিপল ফ্রম অল ওয়াকস। টুগেদার উই স্ট্যান্ড টল। এই আন্দোলন রাজনীতিবিদদের জন্য অ্যালার্ট 
—আসিফ, সংগীতশিল্পী
একটা স্বৈরাচারের পতন হলো। যেভাবে দেশ চলছিল, সেভাবে আসলে দেশ চলে না। শেষ পর্যন্ত আমাদের ছাত্রসমাজ বিজয়ী হয়েছে। প্রমাণিত হয়ে গেল, বাংলাদেশে ১৯৫২, ৬৯, ৯০ এবং ২০২৪—ছাত্ররা কখনো ব্যর্থ হয়নি। এখন নতুন বাংলাদেশ হবে। আগের মতো লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি হবে না, এটাই প্রত্যাশা। প্রতিটি দল থেকে গণতন্ত্রচর্চা শুরু করতে হবে। তাহলে দেশের গণতন্ত্র দৃঢ় থাকবে। এই আন্দোলন রাজনীতিবিদদের জন্য অ্যালার্ট। ভবিষ্যতে ভুল করলে এমন পরিণতি ভোগ করতে হবে। স্বজনপ্রীতি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি আর চলবে না। নতুন প্রজন্ম জেগে উঠেছে। তারা আর সহিংসতাভিত্তিক দলের সঙ্গে থাকবে না। প্রতিহিংসা ভুলে সবাই আমরা নতুন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলব।ভবিষ্যতে কেমন বাংলাদেশ চাই, এটা ছাত্ররাই ঠিক করবে
—অমিতাভ রেজা চৌধুরী, নির্মাতা 
এটা নতুন প্রজন্মের জয়। ফার্মগেটে দাঁড়িয়ে ছাত্রদের সংহতি জানিয়ে বলেছিলাম, ওরাই রাষ্ট্র ঠিক করবে। ভবিষ্যতে কেমন বাংলাদেশ চাই, এটা ছাত্ররাই ঠিক করবে। সুতরাং নতুন সরকারে তাদের অংশগ্রহণ যেন থাকে। সংবিধানে যেখানে পরিবর্তন প্রয়োজন, সেখানেও যেন তারা অংশগ্রহণ করে। গণতন্ত্র রিস্টার্টের এটা মাত্র শুরু। আমাদের টিচার্স নেটওয়ার্ক থেকে যে রূপরেখা দেওয়া হয়েছে, সেটা যেন পালন করা হয়।বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীন হলো
—আলম আরা মিনু, সংগীতশিল্পী
আজকের স্বাধীনতা, এই দেশ, ছাত্র-ছাত্রীদের দান। যারা বুকের তাজা প্রাণ, তাজা রক্ত অকাতরে দান করল, তাদের জন্যই আজ আমরা মুক্তির স্বাদ পেলাম। বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীন হলো। এবার দেশটাকে নতুন রূপে দেখার আশায় থাকলাম। এখনো আরও অনেক বড় পরীক্ষা বাকি। সামনের দিনগুলো আরও বড় পরীক্ষার। অনেক বড় দায়িত্ব এখন দেশকে সুন্দর করে সাজাবার। কোনোভাবেই আর এই স্বাধীনতাকে বিক্রি করা যাবে না। আমরা শান্তি চাই।তোমাদের রক্ত যেন বৃথা না যায়
—রোবেনা রেজা জুঁই, অভিনেত্রী
বেঁচে থাকতে স্বাধীনতা দেখতে পারব, একসময় সেই আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। কিছু বলতে, কিছু লিখতে গিয়ে গুম, খুন, মানসিক হয়রানির শিকার হবার আতঙ্ক কাজ করবে না, লিখতে বসে বারবার মুছে ফেলব না স্ট্যাটাস—এই রকম স্বাধীনতা জীবদ্দশায় উপভোগ করব—কল্পনাতেও আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। 
আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, কখনো সার্টিফিকেট নেওয়া, সুবিধা নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। বাবার মুখে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনেছি আর এবার নিজ সন্তানদের যুদ্ধক্ষেত্রে জয়ী হতে দেখলাম। আমরা দুই যুগের মুক্তিযোদ্ধাদের সংস্পর্শ পেলাম। আমাদের যেই বাচ্চারা যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদ হয়েছ, আহত হয়েছ, তোমাদের রক্ত যেন বৃথা না যায়। তোমাদের দেখানো আত্মত্যাগের পথে যেন আমাদের আগামীর বাচ্চারা চলতে পারে, নতুনভাবে স্বাধীন দেশকে গড়তে, পরিচালিত করতে পারে, সেই দোয়া করি।আর যেন কোনো অন্যায়, কোনো অবিচার না হয় এই দেশে
—নাজনীন হাসান চুমকি, অভিনেত্রী 
বাংলাদেশের বাঙালিরা ন্যায্য দাবি করলে তাঁরা যে সেটা আদায় করতে জানে, সেটাই প্রমাণিত হলো আবার। অন্যায়কে অন্যায় বলার মতো বাঙালি এখনো আছে, এটা ভেবে খুব ভালো লাগছে। এ বিজয় যেন বিষাদে পরিণত না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

এখন একটা বিশৃঙ্খলা হতে পারে, সেটা যেন না হয়। আর যেন কোনো অন্যায়, কোনো অবিচার না হয় এই দেশে। এই দেশটায় আমরা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। এই দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের ওই স্বাধীনতাটা যেন থাকে।

একটি বিষয় খুবই জরুরি। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে এতগুলো হত্যা হলো, এতগুলো প্রাণ ঝরে গেল, এগুলোর সঠিক বিচার যেন হয়। সরকার পরিচালনায় যে-ই আসুক, এই বিচার করতেই হবে। BADHON-(2)আসুন, আমরা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করি
—আজমেরী হক বাঁধন, অভিনেত্রী
এখনই সহিংসতা বন্ধ করার ডাক দিচ্ছি। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার খবর গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন হবে, যদি আমাদের হিন্দু ভাইবোন এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করা হয়। আমরা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু সহিংসতা নিন্দনীয়। এই বিপ্লব অযৌক্তিক আক্রমণের কারণে কলঙ্কিত হতে দেওয়া যাবে না। আমরা অনুরোধ করছি, শান্ত থাকুন এবং সেনাবাহিনীকে ছাত্রদের সাথে সরাসরি আলোচনা করতে দিন, যারা আবারও আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে। আসুন, আমরা এক সাথে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করি। দয়া করে সকল ধরনের সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করুন।PRINCE-MAHMUDধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে হবে
—প্রিন্স মাহমুদ, গীতিকার ও সুরকার
এই বিজয় ছাত্রদের, এই বিজয় জনতার বিজয়।  মনে রাখা উচিত, সহিংসতার রাজনীতি আর নয়, একেবারেই নয়। এ প্রজন্ম লড়াই করেছে ন্যায্য অধিকার, আর বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। এটা আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। হানাহানি আর ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। তাজা প্রাণের এই বলিদানকে মনে রাখতে হবে। এই বলিদান যেন ব্যর্থ না হয়। সংযম চাই, শৃঙ্খলা চাই, মানবিক গণতান্ত্রিক একটা দেশ চাই।

দলীয়করণের পরিণাম আমরা দেখেছি। চাটুকারিতার পরিণাম আমরা দেখেছি। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার পরিণাম আমরা দেখেছি। এ থেকে আমাদের অবশ্যই শিক্ষা নেওয়া উচিত। কিছুদিন পরেই যেন আমরা এসব ভুলে না যাই। পুরোনো কিছুর মতো নয়, বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ চাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত