Ajker Patrika

৩৮ দিনে মারা গেছেন ৯ জন

গুরুদাসপুর (নাটোর) ও নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ০৭
Thumbnail image

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত রোগী বেড়েই চলেছে। গত ৩৮ দিনে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮ হাজার ৯৭ জন রোগী। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন ৯ জন। এদিকে নওগাঁর নিয়ামতপুরে শীতের তীব্রতায় নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে শিশুরা।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত রোগে ভর্তি হওয়া অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। তবে গত ৮ দিনেই ৫৪ জন রোগী ডায়রিয়াসহ শীতকালীন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে গত রোববার পর্যন্ত ৫৪ জন রোগী ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৬ জন ভর্তি হয়েছেন। এসব রোগীর মধ্যে ৫ বছরের নিচের বয়সী ৩০ শিশু রয়েছে। বাকি ২৪ জন বিভিন্ন বয়সের। তবে গত ৮ দিনে ৫৪ জনের মধ্যে ১ জন রোগী মারা গেছেন।

হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাসে হাসপাতালের বহির্বিভাগে ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬ হাজার ৪৩৯ জন রোগী। এর মধ্যে বিভিন্ন বয়সের নারী রয়েছেন ৩ হাজার ৭৬৭, পুরুষ ১ হাজার ২১৯ এবং শিশু ১ হাজার ৪৫৭ জন। এ ছাড়া নারী-শিশু ও পুরুষসহ ১৬৬ জন রোগী ডিসেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এঁদের প্রত্যেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। এর মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের নিচের শিশু ছিল ৮৯ জন। এদিকে ডিসেম্বরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫৭৭ জন। এর মধ্যে নারী ১৬৭ ও পুরুষ রোগী ৪১০ জন।

হাসপাতালের নার্স ফিরোজা আক্তার জানান, ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৫৪ জন রোগী ঠান্ডাজনিত রোগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে শূন্য থেকে ৫ বছরের নিচে শিশু ৩০ জন। নিউমোনিয়া, জ্বর-সর্দি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বেশির ভাগ রোগী হাসপাতালে আসছেন। এসব রোগী পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হতে লাগছে দুই থেকে পাঁচ দিন।

পরিসংখ্যান বলছে, জানুয়ারির এই ৮ দিনে ভর্তি থাকা ৫৪ রোগী বাদেও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও ৮৬১ জন।

সাড়ে ৪ মাস বয়সী শিশু আরিফাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকা আসমা বেগম বলেন, তাঁর শিশুটি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। শুক্রবার রাতে তাঁরা শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চিকিৎসকেরা সেবা দিলেও শিশুটির অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে।

গুরুদাসপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, শীতকালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর-সর্দি, চর্মরোগ, চুলকানিসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ দেখা দেয়। ডিসেম্বরের চেয়ে চলতি মাসে ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে বেশি রোগী হাসপাতালে আসছেন। বিশেষ করে শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

নওগাঁর নিয়ামতপুরে শীতের তীব্রতায় বৃদ্ধি পেয়েছে শিশু রোগ। হঠাৎ শিশুরা অসুস্থ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকেরা।

ততিপুর বালুকাপাড়া গ্রামের রিনা বলেন, ‘আমার ১৩ মাস বয়সের মেয়ে গত সোমবার সকালে হঠাৎ বমি করতে শুরু করে। শীতে গরম কাপড় ব্যবহার করেও বাচ্চার ডায়রিয়া দেখা দেওয়ায় দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়েছি।’

নিয়ামতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রণব বলেন, শীতের কারণে প্রতিদিন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। শিশুদের ডায়রিয়ার প্রকোপ হ্রাসে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহবুব উল আলম বলেন, তীব্র শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। চিকিৎসক ও নার্স সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত