Ajker Patrika

খাল পুনরুদ্ধার

সম্পাদকীয়
খাল পুনরুদ্ধার

চারপাশে এত বেশি হতাশাজনক খবর ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছে যে সেই ডামাডোলের মধ্যে সত্যিকারের ইতিবাচক সংবাদ প্রায় চোখেই পড়ে না। বৃহস্পতিবারের আজকের পত্রিকার সপ্তম পাতার একেবারে নিচের দিকে দুই কলামে যে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে, সেটি সত্যি আশা জাগায় মনে।

খাল দখল আমাদের দেশে খুব অপরিচিত বিষয় নয়। খালকে হত্যা করার চেষ্টা বহুবার হয়েছে এবং প্রভাবশালীদের কল্যাণে খাল দখলের বেশির ভাগ চেষ্টাই সফল হয়েছে। ফলে খাল মরে গেছে এবং এর চারপাশে কিংবা মাটি ফেলে খালের ভেতরেও স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহুবার উচ্ছেদের লম্বা লম্বা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু মূলত সেগুলো ছিল শুধুই ফাঁকা বুলি, যাকে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার সঙ্গে তুলনা করলে ভুল হবে না। এতে ইতিবাচক কিছু ঘটেনি।

ব্যতিক্রমী একটি কাজ দেখা গেল চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চর পাথরঘাটা এলাকায় বাদামতল খালের ব্যাপারে। কেউ বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, দখল হয়ে যাওয়া এ খালটি উদ্ধার করা হয়েছে। গত বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে খাল দখল করে নির্মাণ করা অবৈধ স্থাপনাগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। এ থেকে প্রমাণ হয় সদিচ্ছা থাকলে পেশিশক্তিও পিছু হটে।

নানাভাবে রাজনৈতিক কিংবা অর্থনৈতিক ক্ষমতার মাধ্যমে এ ধরনের আগাছারা প্রবলভাবে পরিবেশবিরোধী তৎপরতা চালিয়ে যেতে থাকে। যখন এরা দখলদারি কায়েম করে, তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কেন শীতঘুম দেন, সে কথাও নিশ্চয়ই বুঝিয়ে বলতে হবে না। দিনের পর দিন এ অন্যায় ঘটতে ঘটতে একসময় এমন হয়েছে যে এই অনাচারকেও মনে হয়েছে খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। জনগণ বুঝে নিয়েছে, এই দখলদারির সঙ্গে যারা আঁতাত করেছে, অপতৎপরতায় বাধা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তাদেরই। এ কথাও আমাদের মনে হয়, নির্দিষ্ট খাল দখল করার সময়ও তো সে এলাকায় সচেতন মানুষেরা থাকেন, পুরো এলাকার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা থাকেন, তাঁরা কেন সময়মতো প্রতিরোধ গড়ে তোলেন না?

আমরা জানি না, কর্ণফুলী উপজেলার উদ্ধার করা খাল একটি ইতিবাচক ঘটনার উদাহরণ হিসেবে টিকে থাকবে কি না। যদি টিকে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে এ পথ ধরেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দখলি জমিগুলো উদ্ধারের একটা সুযোগ আছে। দখলমুক্ত জায়গা পুনর্দখল যেন না হয়, সে জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে। এ কাজটি করার জন্য প্রয়োজন হয় সত্যিকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং পেশিশক্তির শাসনে রাখার প্রজ্ঞা।

আমাদের খালগুলো ভালো নেই। দেশের সর্বত্রই অনেক খাল নিজের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলা হয়েছে। এই দখলদারির অবসান না হলে বিপদ বাড়তেই থাকবে। আমরা আশা করব, প্রকৃতিকে প্রকৃতির মতো থাকতে দেওয়ার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য কঠোর হবে সরকার। আগের অকৃত্রিম চেহারায় ফিরে এসেছে একটি খাল, এ সত্যিই বড় সুসংবাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শ্বশুরকে জামাতার ফোন: ‘আপনার মেয়েকে মাইরা ফেলছি, লাশ নিয়ে যান’

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ দুদক: আইনজীবী

স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে গেলেন ইমামতি করতে

ঢাবির সিন্ডিকেটে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের চূড়ান্ত অনুমোদন

ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি বাতিল করল পাকিস্তান, এর প্রভাব কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত