Ajker Patrika

বন্যার পানি বাড়ছেই সংকট খাবারের

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জুন ২০২২, ১৫: ২৩
বন্যার পানি বাড়ছেই সংকট খাবারের

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গত এক সপ্তাহে মেঘনা ও তিতাস নদীতে প্রায় পাঁচ ফুট পানি বেড়েছে। এখনো পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এতে বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া উপজেলায় প্রায় দশ হাজার হেক্টর জমির ধান, ১ হাজার হেক্টর জমির পাট খেত ও মৌসুমি শাক-সবজি পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে স্থানীয়দের দাবি। অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ত্রাণ ও ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় বন্যার পরিস্থিতি অবনতি হয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহে তিতাস ও মেঘনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনটি সেতু ভেঙে গেছে এবং বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়ে উপজেলায় প্রায় ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা তলিয়ে গেছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলার প্রায় ৭০০ পুকুর, প্রায় ১২ হাজার ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ৬০০ মৎস্য খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

বন্যা দুর্গতের আশ্রয়ের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলায় ৯২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬৫টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাঁচ হাজার মানুষকে জরুরি পরি সেবার মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ থাকায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

সরেজমিন উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, নিচু এলাকার প্রায় ৮০ ভাগ বসতভিটা প্লাবিত হয়ে গেছে। এর মধ্যে উপজেলার বেশ কয়েকটি বন্যা আশ্রয়ণকেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক মানুষ।

ভলাকুট ইউনিয়নের খাগালিয়া গ্রামের আলফু মিয়া বলেন, ‘আমি একজন কৃষক। কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য ৪টি গরু কিনেছিলাম। কিন্তু নিজেই খেয়ে বাঁচতে পারব কি না এই চিন্তায় আছি। এখন যেভাবে পানি বাড়ছে আমার গরু ও পরিবারের ছেলে-মেয়ে নিয়ে বড় সমস্যায় আছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাইদ তারেক বলেন, ‘১৩টি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও বন্যার্তদের দেওয়া তথ্য মতে প্রায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমির বোনা আমন, ৩০ হেক্টর জমির রোপা আমন, ২০ হেক্টর জমির সবজি ও ২০ হেক্টর জমির পাট খেতের ক্ষতি হয়েছ।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. নুরে আলম সিদ্দিক বলেন, ‘উপজেলায় বন্যার কারণে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত পাঁচ শ কেজি গো-খাদ্য সহায়তা দিয়েছে।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান খান শাওন বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ত্রাণ ও ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত