জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
আজ পঁচিশে বৈশাখ। বাঙালি সংস্কৃতির উজ্জ্বলতম পুরুষ রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয়েছিল এই দিনে। জাগতিক ক্রিয়াকর্মের জন্য এ দেশে বেছে নেওয়া হয়েছে খ্রিষ্টীয় পঞ্জিকা, কিন্তু কয়েকটি বাংলা তারিখ আজও মহীয়ান হয়ে আছে কিছু মানুষের কল্যাণে। পঁচিশে বৈশাখ তেমনই একটি বাংলা তারিখ।
রবীন্দ্রনাথ আমাদের দেখার চোখকে খুলে দিয়েছেন। চেতনার রঙে তিনি রাঙিয়েছেন বাঙালির হৃদয়। সংস্কৃতির বিভিন্ন পরতে তাই রবীন্দ্রনাথকে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে থাকতে দেখি।
রবীন্দ্রনাথের জীবিতকালেই তাঁকে অগ্রাহ্য করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বাংলা সাহিত্য। কিন্তু যাঁরা খুঁজেছেন সে নতুন পথ, তাঁদের হৃদয়ও ছিল রবীন্দ্রনাথের হৃদয়ের রঙেই রাঙা। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরও তাঁকে অবজ্ঞা করার প্রবণতা দেখা গেছে, এখনো যায়, কিন্তু তাঁকে ছুড়ে ফেলার মতো ঘটনা ঘটতে পারেনি স্রেফ এই কারণে যে রবীন্দ্রনাথ অনেক বেশি বাঙালি ছিলেন, অনেক বেশি মানবিক ছিলেন, অনেক বেশি বিশ্বমানব ছিলেন। ইতিহাস সাক্ষী, কাজী নজরুল ইসলাম, বুদ্ধদেব বসু, বিষ্ণু দে, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়দের লেখা পড়লেই রবীন্দ্র-বিরোধিতার স্বরূপ বোঝা যাবে এবং দেখা যাবে, এরা কতটা রবীন্দ্রময় হয়ে রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার পথ খুঁজেছেন।
রবীন্দ্রনাথ এখনো কতটা প্রাসঙ্গিক, সে প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক আছে। তাঁর সকল সৃষ্টি সবাইকে সমান আকৃষ্ট করে না। সাতচল্লিশের দেশভাগের পর রবীন্দ্রনাথকে অগ্রাহ্য করার চেষ্টা চলতে লাগল। বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই তাতে যোগ দিলেন। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা স্বীকৃতি পেল। এরই মধ্যে ১৯৫৬ সালেই পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনপ্রতিনিধিদের জন্য এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন সন্জীদা খাতুন। কে একজন তাঁর কাছে এসে আরজি জানালেন, শেখ মুজিবুর রহমানের ইচ্ছা, ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি যেন মঞ্চে গাওয়া হয়। পুরো পাঁচ স্তবকই গেয়েছিলেন শিল্পী। শেখ মুজিব যে সে সময় থেকেই তাঁর সুচিন্তিত পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন, এই ঘটনা তারই সাক্ষ্য দেয়।
কিন্তু ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন এসে যে দাপট দেখাল, তাতে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের মাধ্যমে যে অর্জন, ১৯৫৬ সালে বাঙালির সরকার গঠন ইত্যাদির কোনো চিহ্নই আর অবশিষ্ট থাকল না। এমনকি আইয়ুব খানের পতাকাতলে জড়ো হতে থাকল দেশের বুদ্ধিজীবীর দল। পাকিস্তান আর্ট কাউন্সিল, ন্যাশনাল ব্যুরো অব রিকনস্ট্রাকশন আর রাইটার্স গিল্ড তৈরি করে বিভিন্ন সময় বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের বশে আনার চেষ্টা করলেন আইয়ুব খান। আর সে রকম একটি সময়েই ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী এসে বাঙালিকে আবার আত্মপরিচয়ের মুখোমুখি করে তোলে।
দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তান নামক দেশটির পূর্ব অংশ বুঝতে শুরু করে, ধর্ম পরিচয়ের চেয়ে জাতি পরিচয়ের লক্ষ্যেই এখন নির্ধারিত হবে সংগ্রাম। আর সে পথ ধরেই এগিয়েছে স্বাধিকার আন্দোলন। বাঙালির আকাঙ্ক্ষার সর্বোত্তম সাংস্কৃতিক প্রকাশ দেখা যায় রবীন্দ্রনাথে। সে আন্দোলনের বড় প্রেরণা হয়ে ওঠেন রবীন্দ্রনাথ। এরই মধ্যে জাহেদুর রহিমের কণ্ঠে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি গাওয়া হতে থাকে সর্বত্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় রবীন্দ্রনাথের গান হয়ে ওঠে সংগ্রামের সাথি। কবিতা, গান, নাটক, প্রবন্ধ, উপন্যাস, ছোটগল্প, চিত্রশিল্পসহ কত বিচিত্র বিষয়েই না নিজেকে খুঁজেছেন রবীন্দ্রনাথ।
তাঁর স্বদেশচিন্তা, ব্যাংক ভাবনা, বিজ্ঞান ভাবনা, সমবায় চিন্তা—সবকিছুর পেছনেই রয়েছে দীর্ঘ সৃজনশীল অনুসন্ধানের প্রকাশ। রবীন্দ্রনাথকে খুঁজতে হলে খুঁজতে হবে ভেতর থেকে। বাইরে থেকে নয়। তাঁর বিশাল সৃষ্টিভান্ডার থেকে নিতে হবে সেটুকুই, যেটুকু প্রয়োজন। আলোকের ঝরনাধারার মতোই তিনি মিশে থাকেন প্রকৃতিতে, হাওয়ায় হাওয়ায়, মানুষে মানুষে—সবখানেই।
বৈশাখের পঁচিশ তারিখে যাঁর জন্ম হয়েছিল, তিনি যে আলো ছড়িয়েছেন, তা ব্যাপ্ত হয়ে আছে সর্বত্র। প্রেমে-দ্রোহে-প্রকৃতির আবিলতায় তাই তাঁকেই খুঁজে পায় এই বাংলাদেশ, বাংলা জানা মানুষের মানচিত্র। এবং সে মানচিত্র পেরিয়ে ১৮৬১ সালে জন্ম নেওয়া রবীন্দ্রনাথকে ছুঁতে পারে নতুন প্রজন্মের মানুষ, দেশে দেশে কালে কালে।
আজ পঁচিশে বৈশাখ। বাঙালি সংস্কৃতির উজ্জ্বলতম পুরুষ রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয়েছিল এই দিনে। জাগতিক ক্রিয়াকর্মের জন্য এ দেশে বেছে নেওয়া হয়েছে খ্রিষ্টীয় পঞ্জিকা, কিন্তু কয়েকটি বাংলা তারিখ আজও মহীয়ান হয়ে আছে কিছু মানুষের কল্যাণে। পঁচিশে বৈশাখ তেমনই একটি বাংলা তারিখ।
রবীন্দ্রনাথ আমাদের দেখার চোখকে খুলে দিয়েছেন। চেতনার রঙে তিনি রাঙিয়েছেন বাঙালির হৃদয়। সংস্কৃতির বিভিন্ন পরতে তাই রবীন্দ্রনাথকে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে থাকতে দেখি।
রবীন্দ্রনাথের জীবিতকালেই তাঁকে অগ্রাহ্য করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বাংলা সাহিত্য। কিন্তু যাঁরা খুঁজেছেন সে নতুন পথ, তাঁদের হৃদয়ও ছিল রবীন্দ্রনাথের হৃদয়ের রঙেই রাঙা। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরও তাঁকে অবজ্ঞা করার প্রবণতা দেখা গেছে, এখনো যায়, কিন্তু তাঁকে ছুড়ে ফেলার মতো ঘটনা ঘটতে পারেনি স্রেফ এই কারণে যে রবীন্দ্রনাথ অনেক বেশি বাঙালি ছিলেন, অনেক বেশি মানবিক ছিলেন, অনেক বেশি বিশ্বমানব ছিলেন। ইতিহাস সাক্ষী, কাজী নজরুল ইসলাম, বুদ্ধদেব বসু, বিষ্ণু দে, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়দের লেখা পড়লেই রবীন্দ্র-বিরোধিতার স্বরূপ বোঝা যাবে এবং দেখা যাবে, এরা কতটা রবীন্দ্রময় হয়ে রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার পথ খুঁজেছেন।
রবীন্দ্রনাথ এখনো কতটা প্রাসঙ্গিক, সে প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক আছে। তাঁর সকল সৃষ্টি সবাইকে সমান আকৃষ্ট করে না। সাতচল্লিশের দেশভাগের পর রবীন্দ্রনাথকে অগ্রাহ্য করার চেষ্টা চলতে লাগল। বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই তাতে যোগ দিলেন। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা স্বীকৃতি পেল। এরই মধ্যে ১৯৫৬ সালেই পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনপ্রতিনিধিদের জন্য এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন সন্জীদা খাতুন। কে একজন তাঁর কাছে এসে আরজি জানালেন, শেখ মুজিবুর রহমানের ইচ্ছা, ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি যেন মঞ্চে গাওয়া হয়। পুরো পাঁচ স্তবকই গেয়েছিলেন শিল্পী। শেখ মুজিব যে সে সময় থেকেই তাঁর সুচিন্তিত পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন, এই ঘটনা তারই সাক্ষ্য দেয়।
কিন্তু ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন এসে যে দাপট দেখাল, তাতে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের মাধ্যমে যে অর্জন, ১৯৫৬ সালে বাঙালির সরকার গঠন ইত্যাদির কোনো চিহ্নই আর অবশিষ্ট থাকল না। এমনকি আইয়ুব খানের পতাকাতলে জড়ো হতে থাকল দেশের বুদ্ধিজীবীর দল। পাকিস্তান আর্ট কাউন্সিল, ন্যাশনাল ব্যুরো অব রিকনস্ট্রাকশন আর রাইটার্স গিল্ড তৈরি করে বিভিন্ন সময় বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের বশে আনার চেষ্টা করলেন আইয়ুব খান। আর সে রকম একটি সময়েই ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী এসে বাঙালিকে আবার আত্মপরিচয়ের মুখোমুখি করে তোলে।
দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তান নামক দেশটির পূর্ব অংশ বুঝতে শুরু করে, ধর্ম পরিচয়ের চেয়ে জাতি পরিচয়ের লক্ষ্যেই এখন নির্ধারিত হবে সংগ্রাম। আর সে পথ ধরেই এগিয়েছে স্বাধিকার আন্দোলন। বাঙালির আকাঙ্ক্ষার সর্বোত্তম সাংস্কৃতিক প্রকাশ দেখা যায় রবীন্দ্রনাথে। সে আন্দোলনের বড় প্রেরণা হয়ে ওঠেন রবীন্দ্রনাথ। এরই মধ্যে জাহেদুর রহিমের কণ্ঠে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি গাওয়া হতে থাকে সর্বত্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় রবীন্দ্রনাথের গান হয়ে ওঠে সংগ্রামের সাথি। কবিতা, গান, নাটক, প্রবন্ধ, উপন্যাস, ছোটগল্প, চিত্রশিল্পসহ কত বিচিত্র বিষয়েই না নিজেকে খুঁজেছেন রবীন্দ্রনাথ।
তাঁর স্বদেশচিন্তা, ব্যাংক ভাবনা, বিজ্ঞান ভাবনা, সমবায় চিন্তা—সবকিছুর পেছনেই রয়েছে দীর্ঘ সৃজনশীল অনুসন্ধানের প্রকাশ। রবীন্দ্রনাথকে খুঁজতে হলে খুঁজতে হবে ভেতর থেকে। বাইরে থেকে নয়। তাঁর বিশাল সৃষ্টিভান্ডার থেকে নিতে হবে সেটুকুই, যেটুকু প্রয়োজন। আলোকের ঝরনাধারার মতোই তিনি মিশে থাকেন প্রকৃতিতে, হাওয়ায় হাওয়ায়, মানুষে মানুষে—সবখানেই।
বৈশাখের পঁচিশ তারিখে যাঁর জন্ম হয়েছিল, তিনি যে আলো ছড়িয়েছেন, তা ব্যাপ্ত হয়ে আছে সর্বত্র। প্রেমে-দ্রোহে-প্রকৃতির আবিলতায় তাই তাঁকেই খুঁজে পায় এই বাংলাদেশ, বাংলা জানা মানুষের মানচিত্র। এবং সে মানচিত্র পেরিয়ে ১৮৬১ সালে জন্ম নেওয়া রবীন্দ্রনাথকে ছুঁতে পারে নতুন প্রজন্মের মানুষ, দেশে দেশে কালে কালে।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫