নৌকার অফিসে ভাঙচুর, আগুন

আর মাত্র তিন দিন পর তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন। ভোট সামনে রেখে এখন চলছে জোর প্রচার। গত সোমবার রাতে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ও বগুড়ার ধুনটে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উল্লাপাড়ার ১৩ ইউপিতে আগামী রোববার ভোট হবে। এসব ইউপিতে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন একজন করে। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন মোট ৩৬ জন। এর মধ্যে রামকৃষ্ণপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এই প্রেক্ষাপটে নৌকার প্রার্থী রফিকুল ইসলাম হিরো বলেন, সোমবার সকাল থেকেই জামায়াত-বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর (ঘোড়া) লোকজন তাঁর কর্মীদের ওপরে হামলা করেন। তাঁর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং কর্মীদের ভয় দেখানো হয়। একই দিন রাত ১১টার দিকে তাঁর নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফারণের ঘটনা ঘটে। তবে এ সময় নির্বাচনী অফিসে তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা ছিলেন না।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (ঘোড়া) প্রার্থী মোন্জেল হক সাগর বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’

সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ককটেল বিস্ফোরণের আলমত পেয়েছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে সোমবার রাতে ধুনট উপজেলার গোপালনগর ইউপির মহিশুরা ও কালিতলা বাজারে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর নৌকার তোরণে আগুন ও নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী শাহ আলমের অভিযোগ, স্বতন্ত্র (আনারস) প্রার্থী বিএনপি নেতা আনোয়ারুল ইসলামের সমর্থকদের দেওয়া আগুনে কালিতলা বাজারে নৌকার তোরণ ও এর ওপরে থাকা নৌকার কিছু অংশ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া দুটি নির্বাচনী কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে।

উপজেলার ১০টি ইউপিতে ভোট হবে ২৮ নভেম্বর। এসব ইউপিতে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন একজন করে। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন মোট আটজন। উপজেলার গোপালনগর ইউপির নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী (আনারস) সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম।

দুজনই জোর প্রচার চালাচ্ছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত নৌকার প্রতীকের মহিশুরা ও কালিতলা বাজারে দুটি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে এবং কালিতলা বাজার এলাকায় তোরণে আগুন ধরিয়ে দেয়।

তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নৌকার প্রার্থী ভোটের মাঠে হয়রানি করার জন্যই এসব ষড়যন্ত্র করছেন। মূলত নৌকার প্রার্থীর সমর্থকেরা তাঁর (আনোরুল) নির্বাচনী কার্যালয় ও প্রচারের মাইক ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনায় থানায় মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জানতে চাইলে ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।