Ajker Patrika

অগ্রিম বেতন দিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে নারী পাচার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ৫২
অগ্রিম বেতন দিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে নারী পাচার

প্রথমে বিদেশে লাখ টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেয় চক্রটি। রাজি হতেই অগ্রিম বেতন হিসেবে ব্যাংকে দেয় ৩০-৪০ হাজার টাকা। যখন বিশ্বাস করতে শুরু করেন, তখনই পাঠানোর বন্দোবস্ত করে। আর সেখানে পৌঁছানোর পর ড্যান্স ক্লাবে রেখে অসামাজিক কার্যকলাপে বাধ্য করে। এই কৌশলেই দুবাই, সিঙ্গাপুর ও ভারতে শতাধিক তরুণীকে পাচার করেছে চক্রটি। হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। গতকাল সোমবার রাজধানীর পল্টন থেকে মানব পাচারকারী চক্রের হোতা জিয়া সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ শামসুদ্দিনকে গ্রেপ্তারের পর এমনটাই জানিয়েছে র‍্যাব।

সংস্থাটি বলছে, বিদেশে যেতে ইচ্ছুক পুরুষদের কাছে থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে সেই টাকা দিয়ে নারীদের প্রলোভন দেখাত তারা। গতকাল বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন বলেন, গ্রেপ্তারের সময় শামসুদ্দিনের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, ১০টি পাসপোর্ট, একটি বিএমইটি কার্ড জব্দ করা হয়। উদ্ধার করা হয় একজন নারী ও তিনজন পুরুষ ভুক্তভোগীকে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মানব পাচারকারী এই চক্রের সদস্য ১০-১৫ জন। পাচারের কৌশল হিসেবে যেসব নারী বিদেশে যেতে ইচ্ছুক তাঁদের জনপ্রতি অগ্রিম ৩০-৪০ হাজার টাকা দেয় তারা। তবে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক পুরুষদের কাছ থেকে নিত তিন-চার লাখ টাকা। পরে ওই দেশগুলোতে পৌঁছানোর পর জোরপূর্বক ডিজে পার্টি, যৌনতাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়াতে বাধ্য করা হয়। তা ছাড়া চক্রটি কোনো ফিঙ্গারপ্রিন্ট ছাড়াই জাল বিএমইটি কার্ড (নিয়োগপত্র কার্ড) তৈরি করে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন বলেন, এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী এক তরুণী জানান, তাঁর পরিচিত এক নারী দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। তিনিই তাঁকে মোটা অঙ্কের বেতনে দুবাইয়ে যেতে বলেন। তাঁর আশ্বাসেই এ চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর। প্রথমে তাঁকে ঢাকায় এনে পাসপোর্ট ও বিএমইটি কার্ড করে দেওয়া হয়। পরে চারবার দুবাইয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসেন।

এই ভুক্তভোগী বলেন, চক্রটি তাঁকে অগ্রিম টাকা দিত। প্রতিবার জোরপূর্বক তাঁকে দুবাই পাঠানোর চেষ্টা করা হতো। কিন্তু তিনি দুবাই যেতে রাজি ছিলেন না। তখন তাঁকে বলা হয়, তাঁর পেছনে তাঁদের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তাই তাঁকে যেতেই হবে। না যেতে চাইলে তাঁকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত