
পুলিশে পদায়নের জায়গা নিয়ে সংকট থাকলেও পদোন্নতির কমতি নেই। কিন্তু এত পদের ভিড়েও মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি প্রশ্ন আছে পুলিশের অতিমাত্রায় প্রযুক্তিনির্ভরতা নিয়ে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষার বাইরে যেন অন্ধকারে তদন্তকারীরা। ফোনে কথোপকথন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কার্যক্রমকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ ও র্যাব। যদিও যেকোনো ঘটনার শুরুতেই ভুক্তভোগী ও অপরাধীদের ডিভাইসের দিকে নজর দেওয়া সময়ের প্রয়োজন বলেই অভিমত অনেক সাবেক কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকের। তবে প্রচলিত তদন্ত, সোর্স রক্ষা করার অবস্থান থেকে সরে আসাও দুর্বল দিক বলে তাঁরা মনে করেন।
তবে ঢাকা মহানগর কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক নয়। আমরা সব ধরনের পদ্ধতিই ব্যবহার করছি। তা ছাড়া, পৃথিবী এখন প্রযুক্তিনির্ভর। সেখানে পুলিশ সেটা না করলে পিছিয়ে যাবে। প্রযুক্তি এখন অনেক কিছুরই সমাধান দিচ্ছে, অপরাধের ক্ষেত্রে সেটা হবে না কেন?’
১০ ডিসেম্বরের আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে অনেকটা পুরোনো ধাঁচেই অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযান এবং পরবর্তী সময়ে বড় ভূমিকা পালন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এবং যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান। অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) এ কে এম হাফিজ আক্তারসহ সব কর্মকর্তাই ছিলেন মাঠে। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মাঠে থেকে নির্দেশনা দেওয়াটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু তাঁদেরই যদি সব করতে হয় তখন মাঠের কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। যদিও অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তারের দাবি, নয়াপল্টনে ডিসি, ওসিসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা হামলায় গুরুতর আহত হওয়ায় পরিস্থিতি সামলাতে দ্রুত যোগ দেন অন্যরাও।
সর্বাধিক সময় ডিএমপি কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা আসাদুজ্জামান মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাঠের বিষয় মাঠের কর্মকর্তারাই মোকাবিলা করবেন। এখন যাঁরা তদারকিতে আছেন, তাঁরা কীভাবে চান—এটা বড় বিষয়।
কিন্তু যার কাজ তাকেই করতে দেওয়া উচিত। ওপরের কর্মকর্তারা দেখভাল করতে পারেন—মাঠে যিনি আছেন, তিনি ঠিকমতো কাজটা করছেন কি না।’
বেশ কয়েক বছর আগে ডিএমপির অপরাধ বিভাগ দ্বিগুণ করা হয়। ২০২০ সালে গোয়েন্দা ও ট্রাফিকেও আটটি বিভাগ করা হয়। প্রতিটির দায়িত্বে আছেন একজন উপকমিশনার (ডিসি); তাঁর অধীনে ন্যূনতম তিনজন অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এবং একেকটি জোনে সহকারী কমিশনার (এসি)। এলাকাভেদে পাঁচ-ছয়জন এসি আছেন প্রতিটি অপরাধ বিভাগে। এ ছাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), বিট পুলিশ অফিসার, ফাঁড়ি ইনচার্জসহ নানা ভাগে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।
বিএনপির কার্যালয়ে অভিযানসহ ১০ ডিসেম্বর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডিএমপির কোনো অপরাধ বিভাগের ডিসিকে তেমন কার্যকর ভূমিকায় দেখা যায়নি। পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিএমপির কমিশনারসহ ডিসি পদে অনেকেই নতুন। কেউ কেউ এমন পদে ঢাকায় প্রথম। তাই বুঝে উঠতে কিছুটা সময় লাগছে। পুরোনো ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের ওপরেই ভরসা রাখতে হচ্ছে।
২০১৩-১৪ সালে মতিঝিল বিভাগের এডিসি থাকার সময় সরকারবিরোধী কর্মসূচি মোকাবিলায় শক্ত ভূমিকায় ছিলেন এস এম মেহেদী হাসান। মাঝে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর এখন তিনি ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক)। এ ছাড়া একসময় তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হারুন অর রশিদ বর্তমানে ডিবিপ্রধান এবং বিপ্লব কুমার সরকার সদর দপ্তরে অপারেশনস বিভাগের যুগ্ম কমিশনার। তাঁরা মূলত তদারকি কর্মকর্তা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যাঁদের মাঠে থাকার কথা সেই ডিসি, এডিসিদের ভূমিকা ম্রিয়মাণ।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘সংকট থাকলে তো মোকাবিলা করে দক্ষ হয়ে উঠবেন মাঠের এসি-ডিসিরা। তাঁরা না পারলে তাঁদের শেখাতে হবে। যদি সেই সুযোগে তদারকি কর্মকর্তারা মাঠে নেমে গেলে, একটা দূরত্ব তৈরি হবে। নির্দেশনা দেওয়া যাঁদের কাজ তাঁদের সেই কাজটাই করা উচিত। নতুনদের জানাশোনায় ফাঁক থাকলে তা শেখার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।’
ডিভাইস ব্যবহার না করায় অধরা! ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক জিয়াকে বহুদিন ধরেই খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ, র্যাব।
এ বিষয়ে সাবেক ডিএমপির কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যে পদ্ধতি ব্যবহার করে অপরাধী গ্রেপ্তার করি, তা তিনি (জিয়া) জানেন। সে কারণে তিনি কোনো ডিভাইস ব্যবহার করেন না। প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার করে তাঁকে ধরা যাচ্ছে না।’
ঢাকার আদালতপাড়া থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায়ও নাম আসে জিয়ার। তাঁর কোনো হদিসই নেই গোয়েন্দাদের কাছে। এ অবস্থায় জিয়া কোনো দিন ধরা পড়বেন কি না, সে প্রশ্ন অনেকের।
বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যু নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাব বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম তথ্য দেওয়ার পর এখন বলছে, ফারদিন সুলতানা কামাল সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন ফারদিনের বাবা ও সহপাঠীরা।
এর আগে তদন্ত সংস্থাগুলো প্রযুক্তির সহায়তায় ফারদিনের যাতায়াত, মোবাইল ফোনের অবস্থান, বান্ধবীর সঙ্গে আলাপ নিয়ে নানা ধরনের বক্তব্য দেয়। কিন্তু প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার না করে শুধু প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় ফারদিনের আত্মহত্যার তথ্য গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না।
গত বছরের মে মাসে কলাবাগানের একটি বাসায় চিকিৎসক কাজী সাবেরা রহমানের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ জানায়, এই চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে। তবে, থানা-পুলিশ থেকে ডিবি, তারপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে দেড় বছর পরও কোনো তথ্য নেই।
পুলিশের অনেক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, অবস্থা এমন হয়েছে যে, কোনো অপরাধী যদি নিজের ফোন বন্ধ করে অপরাধ করে আর সেখানে যদি কোনো সিসি ক্যামেরা না থাকে, তাহলে পুলিশের পক্ষ তাকে খুঁজে বের করা একেবারেই সম্ভব নয়। এর কারণও বলেছেন তাঁরা। সেটা হলো, সোর্স রাখার সনাতনি পদ্ধতি থেকে সরে এসে প্রযুক্তির প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে ওঠা। এ কারণে যেখানে প্রযুক্তি নেই, সেখানে অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছে পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ সদস্যদের কাজের প্রতি মনোযোগ কমে গেছে। তাঁরা তাকিয়ে আছেন রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, এই প্রবণতা তত বাড়ছে। আবার অনেকে পেশাদারির বাইরে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন—এমন অভিযোগও আছে।
উভয় পদ্ধতির সমন্বয়ের তাগিদ এ বিষয়ে এ কে এক শহীদুল হক বলেন, প্রযুক্তির যুগে তদন্ত সংস্থার কাছে ডিজিটাল তদন্ত অগ্রাধিকার পাবে, এটা স্বাভাবিক। সহজে তথ্যগুলো পাওয়া যায়। তবে কৌশলগত সোর্স, তদন্ত কর্মকর্তার বিচক্ষণতাও গুরুত্বপূর্ণ। তদন্তে প্রযুক্তি ও প্রচলিত পদ্ধতির সমন্বয় ঘটানো জরুরি।
ফারদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা রহমান বলেন, ‘প্রথমে দেখলাম লোকেশন, কথোপকথন ধরে নানা বক্তব্য। পরে জানানো হলো ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। আধুনিক যুগে প্রযুক্তি তদন্তের বড় অংশজুড়ে থাকে। কিন্তু ক্রাইম সিন (অপরাধস্থল) বাদ দিয়ে তদন্ত সম্ভব নয়। এ ছাড়া সোর্সের জন্য ভাতাও থাকে তদন্ত সংস্থাগুলোর। দুটোর মিলিত প্রচেষ্টায় সফল হওয়া সম্ভব। শুধু প্রযুক্তিনির্ভরতা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না। বড় ঘটনার ক্ষেত্রে মানুষের নজর থাকে সেটার তদন্ত যেন আস্থাপূর্ণ হয়।’

পুলিশে পদায়নের জায়গা নিয়ে সংকট থাকলেও পদোন্নতির কমতি নেই। কিন্তু এত পদের ভিড়েও মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি প্রশ্ন আছে পুলিশের অতিমাত্রায় প্রযুক্তিনির্ভরতা নিয়ে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষার বাইরে যেন অন্ধকারে তদন্তকারীরা। ফোনে কথোপকথন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কার্যক্রমকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ ও র্যাব। যদিও যেকোনো ঘটনার শুরুতেই ভুক্তভোগী ও অপরাধীদের ডিভাইসের দিকে নজর দেওয়া সময়ের প্রয়োজন বলেই অভিমত অনেক সাবেক কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকের। তবে প্রচলিত তদন্ত, সোর্স রক্ষা করার অবস্থান থেকে সরে আসাও দুর্বল দিক বলে তাঁরা মনে করেন।
তবে ঢাকা মহানগর কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক নয়। আমরা সব ধরনের পদ্ধতিই ব্যবহার করছি। তা ছাড়া, পৃথিবী এখন প্রযুক্তিনির্ভর। সেখানে পুলিশ সেটা না করলে পিছিয়ে যাবে। প্রযুক্তি এখন অনেক কিছুরই সমাধান দিচ্ছে, অপরাধের ক্ষেত্রে সেটা হবে না কেন?’
১০ ডিসেম্বরের আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে অনেকটা পুরোনো ধাঁচেই অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযান এবং পরবর্তী সময়ে বড় ভূমিকা পালন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এবং যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান। অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) এ কে এম হাফিজ আক্তারসহ সব কর্মকর্তাই ছিলেন মাঠে। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মাঠে থেকে নির্দেশনা দেওয়াটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু তাঁদেরই যদি সব করতে হয় তখন মাঠের কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। যদিও অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তারের দাবি, নয়াপল্টনে ডিসি, ওসিসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা হামলায় গুরুতর আহত হওয়ায় পরিস্থিতি সামলাতে দ্রুত যোগ দেন অন্যরাও।
সর্বাধিক সময় ডিএমপি কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা আসাদুজ্জামান মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাঠের বিষয় মাঠের কর্মকর্তারাই মোকাবিলা করবেন। এখন যাঁরা তদারকিতে আছেন, তাঁরা কীভাবে চান—এটা বড় বিষয়।
কিন্তু যার কাজ তাকেই করতে দেওয়া উচিত। ওপরের কর্মকর্তারা দেখভাল করতে পারেন—মাঠে যিনি আছেন, তিনি ঠিকমতো কাজটা করছেন কি না।’
বেশ কয়েক বছর আগে ডিএমপির অপরাধ বিভাগ দ্বিগুণ করা হয়। ২০২০ সালে গোয়েন্দা ও ট্রাফিকেও আটটি বিভাগ করা হয়। প্রতিটির দায়িত্বে আছেন একজন উপকমিশনার (ডিসি); তাঁর অধীনে ন্যূনতম তিনজন অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এবং একেকটি জোনে সহকারী কমিশনার (এসি)। এলাকাভেদে পাঁচ-ছয়জন এসি আছেন প্রতিটি অপরাধ বিভাগে। এ ছাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), বিট পুলিশ অফিসার, ফাঁড়ি ইনচার্জসহ নানা ভাগে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।
বিএনপির কার্যালয়ে অভিযানসহ ১০ ডিসেম্বর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডিএমপির কোনো অপরাধ বিভাগের ডিসিকে তেমন কার্যকর ভূমিকায় দেখা যায়নি। পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিএমপির কমিশনারসহ ডিসি পদে অনেকেই নতুন। কেউ কেউ এমন পদে ঢাকায় প্রথম। তাই বুঝে উঠতে কিছুটা সময় লাগছে। পুরোনো ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের ওপরেই ভরসা রাখতে হচ্ছে।
২০১৩-১৪ সালে মতিঝিল বিভাগের এডিসি থাকার সময় সরকারবিরোধী কর্মসূচি মোকাবিলায় শক্ত ভূমিকায় ছিলেন এস এম মেহেদী হাসান। মাঝে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর এখন তিনি ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক)। এ ছাড়া একসময় তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হারুন অর রশিদ বর্তমানে ডিবিপ্রধান এবং বিপ্লব কুমার সরকার সদর দপ্তরে অপারেশনস বিভাগের যুগ্ম কমিশনার। তাঁরা মূলত তদারকি কর্মকর্তা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যাঁদের মাঠে থাকার কথা সেই ডিসি, এডিসিদের ভূমিকা ম্রিয়মাণ।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘সংকট থাকলে তো মোকাবিলা করে দক্ষ হয়ে উঠবেন মাঠের এসি-ডিসিরা। তাঁরা না পারলে তাঁদের শেখাতে হবে। যদি সেই সুযোগে তদারকি কর্মকর্তারা মাঠে নেমে গেলে, একটা দূরত্ব তৈরি হবে। নির্দেশনা দেওয়া যাঁদের কাজ তাঁদের সেই কাজটাই করা উচিত। নতুনদের জানাশোনায় ফাঁক থাকলে তা শেখার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।’
ডিভাইস ব্যবহার না করায় অধরা! ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক জিয়াকে বহুদিন ধরেই খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ, র্যাব।
এ বিষয়ে সাবেক ডিএমপির কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যে পদ্ধতি ব্যবহার করে অপরাধী গ্রেপ্তার করি, তা তিনি (জিয়া) জানেন। সে কারণে তিনি কোনো ডিভাইস ব্যবহার করেন না। প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার করে তাঁকে ধরা যাচ্ছে না।’
ঢাকার আদালতপাড়া থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায়ও নাম আসে জিয়ার। তাঁর কোনো হদিসই নেই গোয়েন্দাদের কাছে। এ অবস্থায় জিয়া কোনো দিন ধরা পড়বেন কি না, সে প্রশ্ন অনেকের।
বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যু নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাব বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম তথ্য দেওয়ার পর এখন বলছে, ফারদিন সুলতানা কামাল সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন ফারদিনের বাবা ও সহপাঠীরা।
এর আগে তদন্ত সংস্থাগুলো প্রযুক্তির সহায়তায় ফারদিনের যাতায়াত, মোবাইল ফোনের অবস্থান, বান্ধবীর সঙ্গে আলাপ নিয়ে নানা ধরনের বক্তব্য দেয়। কিন্তু প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার না করে শুধু প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় ফারদিনের আত্মহত্যার তথ্য গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না।
গত বছরের মে মাসে কলাবাগানের একটি বাসায় চিকিৎসক কাজী সাবেরা রহমানের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ জানায়, এই চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে। তবে, থানা-পুলিশ থেকে ডিবি, তারপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে দেড় বছর পরও কোনো তথ্য নেই।
পুলিশের অনেক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, অবস্থা এমন হয়েছে যে, কোনো অপরাধী যদি নিজের ফোন বন্ধ করে অপরাধ করে আর সেখানে যদি কোনো সিসি ক্যামেরা না থাকে, তাহলে পুলিশের পক্ষ তাকে খুঁজে বের করা একেবারেই সম্ভব নয়। এর কারণও বলেছেন তাঁরা। সেটা হলো, সোর্স রাখার সনাতনি পদ্ধতি থেকে সরে এসে প্রযুক্তির প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে ওঠা। এ কারণে যেখানে প্রযুক্তি নেই, সেখানে অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছে পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ সদস্যদের কাজের প্রতি মনোযোগ কমে গেছে। তাঁরা তাকিয়ে আছেন রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, এই প্রবণতা তত বাড়ছে। আবার অনেকে পেশাদারির বাইরে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন—এমন অভিযোগও আছে।
উভয় পদ্ধতির সমন্বয়ের তাগিদ এ বিষয়ে এ কে এক শহীদুল হক বলেন, প্রযুক্তির যুগে তদন্ত সংস্থার কাছে ডিজিটাল তদন্ত অগ্রাধিকার পাবে, এটা স্বাভাবিক। সহজে তথ্যগুলো পাওয়া যায়। তবে কৌশলগত সোর্স, তদন্ত কর্মকর্তার বিচক্ষণতাও গুরুত্বপূর্ণ। তদন্তে প্রযুক্তি ও প্রচলিত পদ্ধতির সমন্বয় ঘটানো জরুরি।
ফারদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা রহমান বলেন, ‘প্রথমে দেখলাম লোকেশন, কথোপকথন ধরে নানা বক্তব্য। পরে জানানো হলো ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। আধুনিক যুগে প্রযুক্তি তদন্তের বড় অংশজুড়ে থাকে। কিন্তু ক্রাইম সিন (অপরাধস্থল) বাদ দিয়ে তদন্ত সম্ভব নয়। এ ছাড়া সোর্সের জন্য ভাতাও থাকে তদন্ত সংস্থাগুলোর। দুটোর মিলিত প্রচেষ্টায় সফল হওয়া সম্ভব। শুধু প্রযুক্তিনির্ভরতা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না। বড় ঘটনার ক্ষেত্রে মানুষের নজর থাকে সেটার তদন্ত যেন আস্থাপূর্ণ হয়।’

পুলিশে পদায়নের জায়গা নিয়ে সংকট থাকলেও পদোন্নতির কমতি নেই। কিন্তু এত পদের ভিড়েও মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি প্রশ্ন আছে পুলিশের অতিমাত্রায় প্রযুক্তিনির্ভরতা নিয়ে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষার বাইরে যেন অন্ধকারে তদন্তকারীরা। ফোনে কথোপকথন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কার্যক্রমকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ ও র্যাব। যদিও যেকোনো ঘটনার শুরুতেই ভুক্তভোগী ও অপরাধীদের ডিভাইসের দিকে নজর দেওয়া সময়ের প্রয়োজন বলেই অভিমত অনেক সাবেক কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকের। তবে প্রচলিত তদন্ত, সোর্স রক্ষা করার অবস্থান থেকে সরে আসাও দুর্বল দিক বলে তাঁরা মনে করেন।
তবে ঢাকা মহানগর কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক নয়। আমরা সব ধরনের পদ্ধতিই ব্যবহার করছি। তা ছাড়া, পৃথিবী এখন প্রযুক্তিনির্ভর। সেখানে পুলিশ সেটা না করলে পিছিয়ে যাবে। প্রযুক্তি এখন অনেক কিছুরই সমাধান দিচ্ছে, অপরাধের ক্ষেত্রে সেটা হবে না কেন?’
১০ ডিসেম্বরের আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে অনেকটা পুরোনো ধাঁচেই অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযান এবং পরবর্তী সময়ে বড় ভূমিকা পালন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এবং যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান। অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) এ কে এম হাফিজ আক্তারসহ সব কর্মকর্তাই ছিলেন মাঠে। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মাঠে থেকে নির্দেশনা দেওয়াটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু তাঁদেরই যদি সব করতে হয় তখন মাঠের কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। যদিও অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তারের দাবি, নয়াপল্টনে ডিসি, ওসিসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা হামলায় গুরুতর আহত হওয়ায় পরিস্থিতি সামলাতে দ্রুত যোগ দেন অন্যরাও।
সর্বাধিক সময় ডিএমপি কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা আসাদুজ্জামান মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাঠের বিষয় মাঠের কর্মকর্তারাই মোকাবিলা করবেন। এখন যাঁরা তদারকিতে আছেন, তাঁরা কীভাবে চান—এটা বড় বিষয়।
কিন্তু যার কাজ তাকেই করতে দেওয়া উচিত। ওপরের কর্মকর্তারা দেখভাল করতে পারেন—মাঠে যিনি আছেন, তিনি ঠিকমতো কাজটা করছেন কি না।’
বেশ কয়েক বছর আগে ডিএমপির অপরাধ বিভাগ দ্বিগুণ করা হয়। ২০২০ সালে গোয়েন্দা ও ট্রাফিকেও আটটি বিভাগ করা হয়। প্রতিটির দায়িত্বে আছেন একজন উপকমিশনার (ডিসি); তাঁর অধীনে ন্যূনতম তিনজন অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এবং একেকটি জোনে সহকারী কমিশনার (এসি)। এলাকাভেদে পাঁচ-ছয়জন এসি আছেন প্রতিটি অপরাধ বিভাগে। এ ছাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), বিট পুলিশ অফিসার, ফাঁড়ি ইনচার্জসহ নানা ভাগে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।
বিএনপির কার্যালয়ে অভিযানসহ ১০ ডিসেম্বর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডিএমপির কোনো অপরাধ বিভাগের ডিসিকে তেমন কার্যকর ভূমিকায় দেখা যায়নি। পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিএমপির কমিশনারসহ ডিসি পদে অনেকেই নতুন। কেউ কেউ এমন পদে ঢাকায় প্রথম। তাই বুঝে উঠতে কিছুটা সময় লাগছে। পুরোনো ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের ওপরেই ভরসা রাখতে হচ্ছে।
২০১৩-১৪ সালে মতিঝিল বিভাগের এডিসি থাকার সময় সরকারবিরোধী কর্মসূচি মোকাবিলায় শক্ত ভূমিকায় ছিলেন এস এম মেহেদী হাসান। মাঝে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর এখন তিনি ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক)। এ ছাড়া একসময় তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হারুন অর রশিদ বর্তমানে ডিবিপ্রধান এবং বিপ্লব কুমার সরকার সদর দপ্তরে অপারেশনস বিভাগের যুগ্ম কমিশনার। তাঁরা মূলত তদারকি কর্মকর্তা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যাঁদের মাঠে থাকার কথা সেই ডিসি, এডিসিদের ভূমিকা ম্রিয়মাণ।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘সংকট থাকলে তো মোকাবিলা করে দক্ষ হয়ে উঠবেন মাঠের এসি-ডিসিরা। তাঁরা না পারলে তাঁদের শেখাতে হবে। যদি সেই সুযোগে তদারকি কর্মকর্তারা মাঠে নেমে গেলে, একটা দূরত্ব তৈরি হবে। নির্দেশনা দেওয়া যাঁদের কাজ তাঁদের সেই কাজটাই করা উচিত। নতুনদের জানাশোনায় ফাঁক থাকলে তা শেখার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।’
ডিভাইস ব্যবহার না করায় অধরা! ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক জিয়াকে বহুদিন ধরেই খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ, র্যাব।
এ বিষয়ে সাবেক ডিএমপির কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যে পদ্ধতি ব্যবহার করে অপরাধী গ্রেপ্তার করি, তা তিনি (জিয়া) জানেন। সে কারণে তিনি কোনো ডিভাইস ব্যবহার করেন না। প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার করে তাঁকে ধরা যাচ্ছে না।’
ঢাকার আদালতপাড়া থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায়ও নাম আসে জিয়ার। তাঁর কোনো হদিসই নেই গোয়েন্দাদের কাছে। এ অবস্থায় জিয়া কোনো দিন ধরা পড়বেন কি না, সে প্রশ্ন অনেকের।
বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যু নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাব বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম তথ্য দেওয়ার পর এখন বলছে, ফারদিন সুলতানা কামাল সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন ফারদিনের বাবা ও সহপাঠীরা।
এর আগে তদন্ত সংস্থাগুলো প্রযুক্তির সহায়তায় ফারদিনের যাতায়াত, মোবাইল ফোনের অবস্থান, বান্ধবীর সঙ্গে আলাপ নিয়ে নানা ধরনের বক্তব্য দেয়। কিন্তু প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার না করে শুধু প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় ফারদিনের আত্মহত্যার তথ্য গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না।
গত বছরের মে মাসে কলাবাগানের একটি বাসায় চিকিৎসক কাজী সাবেরা রহমানের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ জানায়, এই চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে। তবে, থানা-পুলিশ থেকে ডিবি, তারপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে দেড় বছর পরও কোনো তথ্য নেই।
পুলিশের অনেক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, অবস্থা এমন হয়েছে যে, কোনো অপরাধী যদি নিজের ফোন বন্ধ করে অপরাধ করে আর সেখানে যদি কোনো সিসি ক্যামেরা না থাকে, তাহলে পুলিশের পক্ষ তাকে খুঁজে বের করা একেবারেই সম্ভব নয়। এর কারণও বলেছেন তাঁরা। সেটা হলো, সোর্স রাখার সনাতনি পদ্ধতি থেকে সরে এসে প্রযুক্তির প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে ওঠা। এ কারণে যেখানে প্রযুক্তি নেই, সেখানে অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছে পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ সদস্যদের কাজের প্রতি মনোযোগ কমে গেছে। তাঁরা তাকিয়ে আছেন রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, এই প্রবণতা তত বাড়ছে। আবার অনেকে পেশাদারির বাইরে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন—এমন অভিযোগও আছে।
উভয় পদ্ধতির সমন্বয়ের তাগিদ এ বিষয়ে এ কে এক শহীদুল হক বলেন, প্রযুক্তির যুগে তদন্ত সংস্থার কাছে ডিজিটাল তদন্ত অগ্রাধিকার পাবে, এটা স্বাভাবিক। সহজে তথ্যগুলো পাওয়া যায়। তবে কৌশলগত সোর্স, তদন্ত কর্মকর্তার বিচক্ষণতাও গুরুত্বপূর্ণ। তদন্তে প্রযুক্তি ও প্রচলিত পদ্ধতির সমন্বয় ঘটানো জরুরি।
ফারদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা রহমান বলেন, ‘প্রথমে দেখলাম লোকেশন, কথোপকথন ধরে নানা বক্তব্য। পরে জানানো হলো ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। আধুনিক যুগে প্রযুক্তি তদন্তের বড় অংশজুড়ে থাকে। কিন্তু ক্রাইম সিন (অপরাধস্থল) বাদ দিয়ে তদন্ত সম্ভব নয়। এ ছাড়া সোর্সের জন্য ভাতাও থাকে তদন্ত সংস্থাগুলোর। দুটোর মিলিত প্রচেষ্টায় সফল হওয়া সম্ভব। শুধু প্রযুক্তিনির্ভরতা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না। বড় ঘটনার ক্ষেত্রে মানুষের নজর থাকে সেটার তদন্ত যেন আস্থাপূর্ণ হয়।’

পুলিশে পদায়নের জায়গা নিয়ে সংকট থাকলেও পদোন্নতির কমতি নেই। কিন্তু এত পদের ভিড়েও মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি প্রশ্ন আছে পুলিশের অতিমাত্রায় প্রযুক্তিনির্ভরতা নিয়ে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষার বাইরে যেন অন্ধকারে তদন্তকারীরা। ফোনে কথোপকথন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কার্যক্রমকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ ও র্যাব। যদিও যেকোনো ঘটনার শুরুতেই ভুক্তভোগী ও অপরাধীদের ডিভাইসের দিকে নজর দেওয়া সময়ের প্রয়োজন বলেই অভিমত অনেক সাবেক কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকের। তবে প্রচলিত তদন্ত, সোর্স রক্ষা করার অবস্থান থেকে সরে আসাও দুর্বল দিক বলে তাঁরা মনে করেন।
তবে ঢাকা মহানগর কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক নয়। আমরা সব ধরনের পদ্ধতিই ব্যবহার করছি। তা ছাড়া, পৃথিবী এখন প্রযুক্তিনির্ভর। সেখানে পুলিশ সেটা না করলে পিছিয়ে যাবে। প্রযুক্তি এখন অনেক কিছুরই সমাধান দিচ্ছে, অপরাধের ক্ষেত্রে সেটা হবে না কেন?’
১০ ডিসেম্বরের আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে অনেকটা পুরোনো ধাঁচেই অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযান এবং পরবর্তী সময়ে বড় ভূমিকা পালন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এবং যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান। অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) এ কে এম হাফিজ আক্তারসহ সব কর্মকর্তাই ছিলেন মাঠে। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মাঠে থেকে নির্দেশনা দেওয়াটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু তাঁদেরই যদি সব করতে হয় তখন মাঠের কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। যদিও অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তারের দাবি, নয়াপল্টনে ডিসি, ওসিসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা হামলায় গুরুতর আহত হওয়ায় পরিস্থিতি সামলাতে দ্রুত যোগ দেন অন্যরাও।
সর্বাধিক সময় ডিএমপি কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা আসাদুজ্জামান মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাঠের বিষয় মাঠের কর্মকর্তারাই মোকাবিলা করবেন। এখন যাঁরা তদারকিতে আছেন, তাঁরা কীভাবে চান—এটা বড় বিষয়।
কিন্তু যার কাজ তাকেই করতে দেওয়া উচিত। ওপরের কর্মকর্তারা দেখভাল করতে পারেন—মাঠে যিনি আছেন, তিনি ঠিকমতো কাজটা করছেন কি না।’
বেশ কয়েক বছর আগে ডিএমপির অপরাধ বিভাগ দ্বিগুণ করা হয়। ২০২০ সালে গোয়েন্দা ও ট্রাফিকেও আটটি বিভাগ করা হয়। প্রতিটির দায়িত্বে আছেন একজন উপকমিশনার (ডিসি); তাঁর অধীনে ন্যূনতম তিনজন অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এবং একেকটি জোনে সহকারী কমিশনার (এসি)। এলাকাভেদে পাঁচ-ছয়জন এসি আছেন প্রতিটি অপরাধ বিভাগে। এ ছাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), বিট পুলিশ অফিসার, ফাঁড়ি ইনচার্জসহ নানা ভাগে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।
বিএনপির কার্যালয়ে অভিযানসহ ১০ ডিসেম্বর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডিএমপির কোনো অপরাধ বিভাগের ডিসিকে তেমন কার্যকর ভূমিকায় দেখা যায়নি। পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিএমপির কমিশনারসহ ডিসি পদে অনেকেই নতুন। কেউ কেউ এমন পদে ঢাকায় প্রথম। তাই বুঝে উঠতে কিছুটা সময় লাগছে। পুরোনো ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের ওপরেই ভরসা রাখতে হচ্ছে।
২০১৩-১৪ সালে মতিঝিল বিভাগের এডিসি থাকার সময় সরকারবিরোধী কর্মসূচি মোকাবিলায় শক্ত ভূমিকায় ছিলেন এস এম মেহেদী হাসান। মাঝে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর এখন তিনি ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক)। এ ছাড়া একসময় তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হারুন অর রশিদ বর্তমানে ডিবিপ্রধান এবং বিপ্লব কুমার সরকার সদর দপ্তরে অপারেশনস বিভাগের যুগ্ম কমিশনার। তাঁরা মূলত তদারকি কর্মকর্তা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যাঁদের মাঠে থাকার কথা সেই ডিসি, এডিসিদের ভূমিকা ম্রিয়মাণ।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘সংকট থাকলে তো মোকাবিলা করে দক্ষ হয়ে উঠবেন মাঠের এসি-ডিসিরা। তাঁরা না পারলে তাঁদের শেখাতে হবে। যদি সেই সুযোগে তদারকি কর্মকর্তারা মাঠে নেমে গেলে, একটা দূরত্ব তৈরি হবে। নির্দেশনা দেওয়া যাঁদের কাজ তাঁদের সেই কাজটাই করা উচিত। নতুনদের জানাশোনায় ফাঁক থাকলে তা শেখার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।’
ডিভাইস ব্যবহার না করায় অধরা! ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক জিয়াকে বহুদিন ধরেই খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ, র্যাব।
এ বিষয়ে সাবেক ডিএমপির কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যে পদ্ধতি ব্যবহার করে অপরাধী গ্রেপ্তার করি, তা তিনি (জিয়া) জানেন। সে কারণে তিনি কোনো ডিভাইস ব্যবহার করেন না। প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার করে তাঁকে ধরা যাচ্ছে না।’
ঢাকার আদালতপাড়া থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায়ও নাম আসে জিয়ার। তাঁর কোনো হদিসই নেই গোয়েন্দাদের কাছে। এ অবস্থায় জিয়া কোনো দিন ধরা পড়বেন কি না, সে প্রশ্ন অনেকের।
বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যু নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাব বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম তথ্য দেওয়ার পর এখন বলছে, ফারদিন সুলতানা কামাল সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন ফারদিনের বাবা ও সহপাঠীরা।
এর আগে তদন্ত সংস্থাগুলো প্রযুক্তির সহায়তায় ফারদিনের যাতায়াত, মোবাইল ফোনের অবস্থান, বান্ধবীর সঙ্গে আলাপ নিয়ে নানা ধরনের বক্তব্য দেয়। কিন্তু প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার না করে শুধু প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় ফারদিনের আত্মহত্যার তথ্য গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না।
গত বছরের মে মাসে কলাবাগানের একটি বাসায় চিকিৎসক কাজী সাবেরা রহমানের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ জানায়, এই চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে। তবে, থানা-পুলিশ থেকে ডিবি, তারপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে দেড় বছর পরও কোনো তথ্য নেই।
পুলিশের অনেক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, অবস্থা এমন হয়েছে যে, কোনো অপরাধী যদি নিজের ফোন বন্ধ করে অপরাধ করে আর সেখানে যদি কোনো সিসি ক্যামেরা না থাকে, তাহলে পুলিশের পক্ষ তাকে খুঁজে বের করা একেবারেই সম্ভব নয়। এর কারণও বলেছেন তাঁরা। সেটা হলো, সোর্স রাখার সনাতনি পদ্ধতি থেকে সরে এসে প্রযুক্তির প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে ওঠা। এ কারণে যেখানে প্রযুক্তি নেই, সেখানে অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছে পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ সদস্যদের কাজের প্রতি মনোযোগ কমে গেছে। তাঁরা তাকিয়ে আছেন রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, এই প্রবণতা তত বাড়ছে। আবার অনেকে পেশাদারির বাইরে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন—এমন অভিযোগও আছে।
উভয় পদ্ধতির সমন্বয়ের তাগিদ এ বিষয়ে এ কে এক শহীদুল হক বলেন, প্রযুক্তির যুগে তদন্ত সংস্থার কাছে ডিজিটাল তদন্ত অগ্রাধিকার পাবে, এটা স্বাভাবিক। সহজে তথ্যগুলো পাওয়া যায়। তবে কৌশলগত সোর্স, তদন্ত কর্মকর্তার বিচক্ষণতাও গুরুত্বপূর্ণ। তদন্তে প্রযুক্তি ও প্রচলিত পদ্ধতির সমন্বয় ঘটানো জরুরি।
ফারদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা রহমান বলেন, ‘প্রথমে দেখলাম লোকেশন, কথোপকথন ধরে নানা বক্তব্য। পরে জানানো হলো ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। আধুনিক যুগে প্রযুক্তি তদন্তের বড় অংশজুড়ে থাকে। কিন্তু ক্রাইম সিন (অপরাধস্থল) বাদ দিয়ে তদন্ত সম্ভব নয়। এ ছাড়া সোর্সের জন্য ভাতাও থাকে তদন্ত সংস্থাগুলোর। দুটোর মিলিত প্রচেষ্টায় সফল হওয়া সম্ভব। শুধু প্রযুক্তিনির্ভরতা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না। বড় ঘটনার ক্ষেত্রে মানুষের নজর থাকে সেটার তদন্ত যেন আস্থাপূর্ণ হয়।’

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

পুলিশে পদায়নের জায়গা নিয়ে সংকট থাকলেও পদোন্নতির কমতি নেই। কিন্তু এত পদের ভিড়েও মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি প্রশ্ন আছে পুলিশের অতিমাত্রায় প্রযুক্তিনির্ভরতা নিয়ে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষার বাইরে যেন অন্ধকারে তদন্তকারীরা।
২১ ডিসেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

পুলিশে পদায়নের জায়গা নিয়ে সংকট থাকলেও পদোন্নতির কমতি নেই। কিন্তু এত পদের ভিড়েও মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি প্রশ্ন আছে পুলিশের অতিমাত্রায় প্রযুক্তিনির্ভরতা নিয়ে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষার বাইরে যেন অন্ধকারে তদন্তকারীরা।
২১ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

পুলিশে পদায়নের জায়গা নিয়ে সংকট থাকলেও পদোন্নতির কমতি নেই। কিন্তু এত পদের ভিড়েও মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি প্রশ্ন আছে পুলিশের অতিমাত্রায় প্রযুক্তিনির্ভরতা নিয়ে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষার বাইরে যেন অন্ধকারে তদন্তকারীরা।
২১ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

পুলিশে পদায়নের জায়গা নিয়ে সংকট থাকলেও পদোন্নতির কমতি নেই। কিন্তু এত পদের ভিড়েও মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি প্রশ্ন আছে পুলিশের অতিমাত্রায় প্রযুক্তিনির্ভরতা নিয়ে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষার বাইরে যেন অন্ধকারে তদন্তকারীরা।
২১ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫