Ajker Patrika

জেমস বন্ডের ৬০ বছর

আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২২, ১৬: ২২
জেমস বন্ডের ৬০ বছর

ইয়ান ফ্লেমিং নামের একজন লেখক, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ নেভাল ইনটেলিজেন্স বিভাগে কর্মরত ছিলেন, তিনি লেখালেখি শুরু করলেন। তৈরি করলেন জেমস বন্ড নামের এমন একটি চরিত্র, যে ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের একজন এজেন্ট। সালটা ১৯৫৩। প্রকাশিত হলো প্রথম উপন্যাস ‘ক্যাসিনো রয়্যাল’। এ চরিত্র নিয়ে প্রথম সিনেমা ‘ডক্টর নো’ তৈরি হয় ১৯৬২ সালে।

জেমস বন্ড এখন ৬০ বছরের তরুণ! দিন যত গড়িয়েছে, এ চরিত্র নিয়ে সারা বিশ্বের মানুষের আগ্রহ বেড়েছে তত। সিনেমার ইতিহাসে একটি চরিত্র নিয়ে মানুষের এত আগ্রহ, এত কৌতূহলের ঘটনা বিরলই বলা যায়।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে মুক্তি পায় জেমস বন্ড ফ্র্যাঞ্চাইজির ২৫তম সিনেমা ‘নো টাইম টু ডাই’। এটিই যে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির শেষ সিনেমা হতে চলেছে, সেটা আগেই জানতেন ড্যানিয়েল ক্রেগ। এ কারণে ২৩ নম্বর সিনেমা ‘স্কাইফল’ শেষ হওয়ার আগেই ক্রেগ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি আর বন্ড হবেন না। তবে প্রযোজকেরা শত অনুরোধ করে বিপুল অর্থের বিনিময়ে তাঁকে ২৫তম সিনেমা পর্যন্ত আটকে রাখেন।

এ সিনেমার মাধ্যমে শন কনারি থেকে ড্যানিয়েল ক্রেগ পর্যন্ত ছয়জন অভিনেতার জার্নি শেষ হয়ে গেল, এমনটাই মনে হয়েছিল সারা বিশ্বের বন্ড-প্রেমিকদের। ক্রেগকে জানানো হয়েছিল, ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বিবর্তিত হতে হতে বন্ড চরিত্রটি এমন এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে যে এই চরিত্রের আর কোনো বিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। ফলে ‘গুডবাই বন্ড’ করার জন্য আর মাত্র দুটি সিনেমার দরকার ছিল। সেভাবেই তৈরি হলো ‘স্পেক্টার’ ও ‘নো টাইম টু ডাই’।

শেষ সিনেমায় এসে জানা গেল, বন্ডের স্ত্রী ও কন্যা রয়েছে এবং তারা ভালোই আছে। মাঝখান থেকে চলে গেল বন্ড। বন্ডকে নিয়ে আর সিনেমা হবে না, এমনটাই যখন সবাই ধরে নিয়েছেন, তখন সবার সে ভাবনা দুলে উঠল গত মে মাসের একটি খবরে। শোনা গেল, অ্যান্টনি হ্যারোউটইজ নামের এক লেখকের ‘উইথ আ মাইন্ড টু কিল’ নাকি প্রযোজকদের বেশ পছন্দ হয়েছে। কিন্তু বন্ড তো মারা গেছে। তাহলে?

এরপর কী হবে, কীভাবে ফিরিয়ে আনা যাবে জেমস বন্ডকে—তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা শুরু হলো। ‘বন্ড এর আগে বহুবার মারা গেছে। আবার ফিরেও এসেছে’—এমন উদাহরণ দেন এক বিশেষজ্ঞ। প্রতিটি সিনেমা বিশ্লেষণ করে উদাহরণ দিয়ে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে কীভাবে বন্ড ফিরে এসেছে। ফলে ভিলেন সাফিনের মিসাইলের আঘাত সে সব পুরোনো ঘটনার তুলনায় সামান্য।

 অনেকে এমন উদাহরণও দিয়েছেন, খাড়া পাহাড়ের ওপর থেকে জলপ্রপাতের গা ঘেঁষে মরিয়ার্টির সঙ্গে মারামারি করতে করতে পড়ে গিয়েও শার্লক হোমস যদি ফিরে আসতে পারে, তা হলে জেমস বন্ড কেন নয়! প্রযোজক বারবারা ব্রকোলিও তেমনটাই মনে করেন। গত মাসে এক সাক্ষাৎকারে তিনি আশা দেখিয়েছেন, ‘বন্ড ফিরে আসতেই পারে। তবে কে বন্ড হবেন, সেটা এখনই ভাবার সময় নয়। কারণ, ড্যানিয়েল ক্রেগকে ভুলতে দর্শকদের অনেক সময় লাগবে। তবে দেখতে হবে, যিনি পরবর্তী বন্ড হবেন, তিনি যেন অন্তত ১৫ বছর এই চরিত্রের জন্য সময় দিতে পারেন।’

এখনই নতুন বন্ডের কাজ শুরু হবে, তেমনটি বলেননি বারবারা। তবে বলেছেন, ‘২০২৩ সালের শুরুর দিকেই আমরা ২৬ নম্বর বন্ড-অ্যাডভেঞ্চারের প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিতে পারব।’ বারবারার বক্তব্য বন্ড-ভক্তদের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। এ বছর জেমস বন্ডের ৬০ বছর উদ্‌যাপন করছেন ভক্তরা। আগামী বছরটা তাঁদের শুরু হবে নতুন বন্ডের অপেক্ষায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত