মিলন উল্লাহ, কুষ্টিয়া
সন্ধ্যা নামলেই গা ছমছমে ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয় এখানে। মনে হয়, এই বুঝি কেউ এসে টিপে ধরল গলা! দরজা ভাঙা আর লাল ইটের দোতলা ভবন। পলেস্তারা খসে পড়ছে কোথাও। আলো নেই। এমন এক স্টেশন দেখলে কে বলবে, বর্তমান বাংলাদেশ ভূখণ্ডের প্রথম রেলস্টেশন এটি! কালো ধোঁয়া উড়িয়ে কয়লা পোড়ানো ট্রেন এখানেই দাঁড়িয়েছিল প্রথম। নাম তার জগতি। কুষ্টিয়ার জগতি।
১৫৮ বছরের যৌবন হারানো পরিত্যক্ত এক বাড়ি। এই অঞ্চলের পুরোনো মানুষজন এখনো স্মৃতিতাড়িত হয়ে জগতি স্টেশনের যৌবনের কথা মনে করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন।
এই রেলস্টেশনের কারণে একসময়কার অজপাড়াগাঁ জগতি সরগরম হয়ে উঠেছিল। এখানে জ্বলত বাতি। সারা দিন মানুষের ভিড় লেগে থাকত। ব্যবসা হতো। সময়-সময় ‘কুউউ’ শব্দে হুইসেল বাজিয়ে ঝিকঝিক করে ছুটে যেত ব্রিটেনে তৈরি বাষ্পচালিত ট্রেন, কলকাতা কিংবা গোয়ালন্দের উদ্দেশে। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য কুষ্টিয়া অঞ্চল বেশ গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বর্তমান কুষ্টিয়া শহর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে জগতিতে রেলপথ ও স্টেশন নির্মিত হয়। পরবর্তীকালে কুষ্টিয়া চিনিকল প্রতিষ্ঠিত হলে আখ সরবরাহসহ অর্থনৈতিক কাজে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এই জগতি স্টেশন।
এখন সেসব কেবলই ছবি। সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ জগতিতে দুটি লোকাল ট্রেন ছাড়া আর কোনো ট্রেন থামে না এখন। নেই ব্যস্ততা। যা কিছু আছে, পড়ে থেকে নষ্টের খাতায় চলে যাচ্ছে। অথচ ১৯৮৪ সালেও এখানে ২৬ জন কর্মকর্তা ছিলেন। এখন শুধু গেটম্যান আবদুল রাজ্জাক পাহারা দিয়ে রাখেন জগতিকে।
গত সাত বছর তাঁর কাঁধেই বর্তেছে এ ভার। রাজ্জাক জানান, সাত বছর আগেও এখানে ৬ জন স্টাফ ছিলেন। স্টেশনের পাশের রেলগেটটিও দেখতে হয় তাঁকে; সেই সঙ্গে ট্রেন এলে ঘণ্টা দেওয়া—সব একাই করেন রাজ্জাক। সন্ধ্যার পর এখানে ‘কুকুর বিড়াল’ও আসে না। বিদ্যুৎ নেই, বাথরুম, গোসলখানা নেই, হারিকেনে তেল থাকে না। সেই ভুতুড়ে পরিবেশে মাঝে মাঝে অন্ধকারে থাকেন তিনি একা।
মাদকসেবীসহ ছিঁচকে চোরেরা এটা-সেটা চুরি করে নিয়ে যায় প্রতিনিয়ত। রাজ্জাক জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তাঁরা বলেন, ইচ্ছে হলে চাকরি করেন, না হলে ছেড়ে দেন। এদিকে লোকবলের অভাবে জগতি রেলস্টেশনের জমিও দখল হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু বাংলাদেশের রেল ইতিহাসে ১৮৬২ সালে তৈরি এই স্টেশন হতে পারত হেরিটেজ। স্টেশনের পাশের একটি চা-দোকানে বসে ছিলেন হায়দার আলী। স্মৃতিচারণা করে অনেক কথাই বললেন তিনি। দাবি জানিয়ে বললেন, ‘সেই জমজমাট পরিবেশ আমরা ফিরে পেতে চাই।’ হতাশ হায়দার জানান, এখন এটি শুধুই ইতিহাস। একসময় এই ইতিহাসটুকুও মানুষ ভুলে যাবে। বাংলাদেশের রেলের ঐতিহ্য-ইতিহাস হিসেবে হলেও এটি টিকিয়ে রাখার দরকার ছিল।
বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. আমানুর আমানও জগতির কথা ভেবে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, ‘জগতি রেলস্টেশনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এটিকে হেরিটেজের অংশ করা উচিত ছিল।’
জগতি স্টেশন বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদের মুখে শোনা গেল বাস্তবতা ও আশ্বাসের কথা। তিনি জানান, ঐতিহ্য ছাড়া এই স্টেশনের আর কোনো গুরুত্ব নেই। তবে ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা বিবেচনা করে এই স্টেশনের যতটুকু সংরক্ষণ করা দরকার, ততটুকু করার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সন্ধ্যা নামলেই গা ছমছমে ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয় এখানে। মনে হয়, এই বুঝি কেউ এসে টিপে ধরল গলা! দরজা ভাঙা আর লাল ইটের দোতলা ভবন। পলেস্তারা খসে পড়ছে কোথাও। আলো নেই। এমন এক স্টেশন দেখলে কে বলবে, বর্তমান বাংলাদেশ ভূখণ্ডের প্রথম রেলস্টেশন এটি! কালো ধোঁয়া উড়িয়ে কয়লা পোড়ানো ট্রেন এখানেই দাঁড়িয়েছিল প্রথম। নাম তার জগতি। কুষ্টিয়ার জগতি।
১৫৮ বছরের যৌবন হারানো পরিত্যক্ত এক বাড়ি। এই অঞ্চলের পুরোনো মানুষজন এখনো স্মৃতিতাড়িত হয়ে জগতি স্টেশনের যৌবনের কথা মনে করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন।
এই রেলস্টেশনের কারণে একসময়কার অজপাড়াগাঁ জগতি সরগরম হয়ে উঠেছিল। এখানে জ্বলত বাতি। সারা দিন মানুষের ভিড় লেগে থাকত। ব্যবসা হতো। সময়-সময় ‘কুউউ’ শব্দে হুইসেল বাজিয়ে ঝিকঝিক করে ছুটে যেত ব্রিটেনে তৈরি বাষ্পচালিত ট্রেন, কলকাতা কিংবা গোয়ালন্দের উদ্দেশে। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য কুষ্টিয়া অঞ্চল বেশ গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বর্তমান কুষ্টিয়া শহর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে জগতিতে রেলপথ ও স্টেশন নির্মিত হয়। পরবর্তীকালে কুষ্টিয়া চিনিকল প্রতিষ্ঠিত হলে আখ সরবরাহসহ অর্থনৈতিক কাজে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এই জগতি স্টেশন।
এখন সেসব কেবলই ছবি। সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ জগতিতে দুটি লোকাল ট্রেন ছাড়া আর কোনো ট্রেন থামে না এখন। নেই ব্যস্ততা। যা কিছু আছে, পড়ে থেকে নষ্টের খাতায় চলে যাচ্ছে। অথচ ১৯৮৪ সালেও এখানে ২৬ জন কর্মকর্তা ছিলেন। এখন শুধু গেটম্যান আবদুল রাজ্জাক পাহারা দিয়ে রাখেন জগতিকে।
গত সাত বছর তাঁর কাঁধেই বর্তেছে এ ভার। রাজ্জাক জানান, সাত বছর আগেও এখানে ৬ জন স্টাফ ছিলেন। স্টেশনের পাশের রেলগেটটিও দেখতে হয় তাঁকে; সেই সঙ্গে ট্রেন এলে ঘণ্টা দেওয়া—সব একাই করেন রাজ্জাক। সন্ধ্যার পর এখানে ‘কুকুর বিড়াল’ও আসে না। বিদ্যুৎ নেই, বাথরুম, গোসলখানা নেই, হারিকেনে তেল থাকে না। সেই ভুতুড়ে পরিবেশে মাঝে মাঝে অন্ধকারে থাকেন তিনি একা।
মাদকসেবীসহ ছিঁচকে চোরেরা এটা-সেটা চুরি করে নিয়ে যায় প্রতিনিয়ত। রাজ্জাক জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তাঁরা বলেন, ইচ্ছে হলে চাকরি করেন, না হলে ছেড়ে দেন। এদিকে লোকবলের অভাবে জগতি রেলস্টেশনের জমিও দখল হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু বাংলাদেশের রেল ইতিহাসে ১৮৬২ সালে তৈরি এই স্টেশন হতে পারত হেরিটেজ। স্টেশনের পাশের একটি চা-দোকানে বসে ছিলেন হায়দার আলী। স্মৃতিচারণা করে অনেক কথাই বললেন তিনি। দাবি জানিয়ে বললেন, ‘সেই জমজমাট পরিবেশ আমরা ফিরে পেতে চাই।’ হতাশ হায়দার জানান, এখন এটি শুধুই ইতিহাস। একসময় এই ইতিহাসটুকুও মানুষ ভুলে যাবে। বাংলাদেশের রেলের ঐতিহ্য-ইতিহাস হিসেবে হলেও এটি টিকিয়ে রাখার দরকার ছিল।
বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. আমানুর আমানও জগতির কথা ভেবে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, ‘জগতি রেলস্টেশনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এটিকে হেরিটেজের অংশ করা উচিত ছিল।’
জগতি স্টেশন বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদের মুখে শোনা গেল বাস্তবতা ও আশ্বাসের কথা। তিনি জানান, ঐতিহ্য ছাড়া এই স্টেশনের আর কোনো গুরুত্ব নেই। তবে ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা বিবেচনা করে এই স্টেশনের যতটুকু সংরক্ষণ করা দরকার, ততটুকু করার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫