Ajker Patrika

বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীর ঢল ট্রেনে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৩২
বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীর ঢল ট্রেনে

পাটকাঠির মতো শুকিয়ে যাওয়া দুই পায়ে ব্যান্ডেজ সোহেল রানার। সঙ্গী শাহিনেরও এক হাত অচল। এ অবস্থায় কী করে জনসমুদ্র ঠেলে ট্রেনে উঠবেন, ভেবে পাচ্ছিলেন না। তাই কমলাপুর স্টেশনের বাইরে রাজ্যের হতাশা নিয়ে বসে ছিলেন। কিন্তু দেবদূতের মতো দুজন এসে তাঁদের তুলে দেন রাজশাহী লোকালে।

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে। ফলে রাজধানী থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়েনি। এমনকি রাজধানীতেও বাস না চলায় বিপাকে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। এদিকে ঘর থেকে বের হওয়া দূরপাল্লার যাত্রীরা ভিড় করেন কমলাপুর স্টেশনে। ফলে কমলাপুর স্টেশন জনসমুদ্রে রূপ নেয়।

সোহেল পেশায় অটোচালক। দুর্ঘটনায় তাঁর দুই পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিকিৎসা চলছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অপারেশন করতে দরকার পাঁচ ব্যাগ রক্ত ও বেশ কিছু টাকা। কিন্তু কোনোভাবেই রক্ত ও টাকা জোগাড় করতে না পারায় ফিরছেন গাজীপুরের ভাড়া বাড়িতে। তাঁদের বাড়ি ময়মনসিংহে।

এদিকে, বারবার মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে আগামী সাত তারিখ পর্যন্ত কোনো ট্রেনের টিকিট নেই। তবু কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে হাজারো মানুষের ভিড়। তবে লোকাল ও কমিউটার ট্রেনে স্ট্যান্ডিং টিকিট পেয়েছেন যৎসামান্য সৌভাগ্যবান।

গতকাল যাত্রীর চাপ দেখে কমিউটার ট্রেনগুলো (চুক্তিভিত্তিক) স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করেছে। সেখানেও হামলে পড়েন যাত্রীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার্থী নিখিল পোদ্দার টিটিইকে অনেক অনুরোধের পর একটি স্ট্যান্ডিং টিকিট পেয়েছেন। তবে ৩৬০ টাকার টিকিটে তিনি যেতে পারবেন ঈশ্বরদী বাইপাস পর্যন্ত।

নিখিল বলেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সবকিছু বদলে গেল। সময়মতো পৌঁছাতে না পারলে পরীক্ষা দিতে পারব না। পরীক্ষা দিতে না পারলে এত দিনের পরিশ্রম বৃথা যাবে। রাজশাহীর পরীক্ষা শেষ করে আবার জাহাঙ্গীরনগরের পরীক্ষা ধরতে হবে। এখন কীভাবে কী হবে, ভাবতে পারছেন না।

স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা পাঁচ-সাতজন টিটিইর একজন কমল। সিল্কসিটির টিটিই দাবি করে তিনি বলেন, আমরা পরীক্ষার্থী ও ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বিশেষ বিবেচনায় স্ট্যান্ডিং টিকিট দিচ্ছি। রেলওয়ের ন্যূনতম ভাড়া হিসাব করে ভাড়া নিচ্ছি।

কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, কোনো বিশেষ ট্রেনসেবা নেই এবং স্ট্যান্ডিং টিকিটও ছাড়া হয়নি।

কমলাপুরের স্টেশন মাস্টার আফছার উদ্দীন বলেন, বাস ধর্মঘটের কারণে আজ (শুক্রবার) যাত্রীর সংখ্যা বেশি। স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু ট্রেন চুক্তিভিত্তিক চলে, সেগুলোর স্টাফরা স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

এপিএসের বেতন ১ বছরে বেড়েছে ১৮ বছরের সমান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত