
কদিন আগে এক পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এক কাউন্সিলর নাজমুল হাসান পাপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর বক্তব্য শুরুই করলেন চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোর দিয়ে। শুধু পাপন কেন, এই স্কোর বিসিবির সব দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তির কাছেই ছিল অস্বস্তিদায়ক। তবে বিসিবি সভাপতি এজিএমে নিয়মিত কাউন্সিলরদের কাছে টেস্ট উন্নতিতে লিখিত আকারে বাস্তবধর্মী সুপারিশ আহ্বান করেন।
টেস্ট আঙিনায় দিনের পর দিন বাংলাদেশের হোঁচট খেতে দেখে কেউ কেউ নিজের আগ্রহে সুপারিশ করেও থাকেন। ২০২২ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টেস্ট সিরিজে বাজেভাবে হারের পর ক্রিকেটারদের কল্যাণ সংগঠন কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক ২০টি সুপারিশ পাঠিয়েছিলেন বিসিবিতে। তাঁর বেশির ভাগ সুপারিশই ছিল যুক্তিযুক্ত ও বাস্তবধর্মী। সে সব সুপারিশ ই-মেইলের কর্তাদের ইনবক্সেই হয়তো পড়ে আছে বা ডিলিটও হয়ে যেতে পারে!
টেস্টে বছরের পর বছর ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার তির কম সইতে হয়নি মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে। ২০২১ সালে বিসিবির প্রধান নির্বাচক হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কাঠামো ঢেলে সাজাতে বিসিবি সভাপতিকে অনেকগুলো প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। তাঁর প্রস্তাবপত্রে ছিল বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কাঠামো আমূল বদলে ফেলার অনেকগুলো যুগোপযোগী সুপারিশ। টিম ম্যানেজমেন্টে কারা থাকবেন, কীভাবে কাজ করবে এই ম্যানেজমেন্ট, কী কী সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফ, ম্যাচ ফি, বেতন, দল গঠনের প্রক্রিয়া, কখন শুরু হবে, খেলার ধরন কেমন হবে, ম্যাচের পয়েন্ট পদ্ধতি, ম্যাচের বল, উইকেট—সবকিছু ছিল নান্নুর সুপারিশে।
সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়া প্রসঙ্গে নান্নু কাল আজকের পত্রিকাকে বলছিলেন, ‘(বাস্তবায়ন) হবে হবে আর করে হয়নি।’ দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের কাঠামো নিয়ে স্পষ্টতই হতাশা তাঁর কণ্ঠে, ‘একমাত্র টেস্ট খেলুড়ে জাতি, যেখানে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ভালো কাঠামো নেই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ভালো এস্টাবলিশড হলেই না আপনি টেস্ট ভালো খেলবেন।’
সাবেক ক্রিকেটার তুষার ইমরান সামনে আনলেন আরেকটি বিষয়, ‘জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যদি খেলত, তখন উন্নতি হতো। ক্রিকেট বোর্ড তো আর বলে দেয় না এ খেলবে, সে খেলবে না। খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানোর মূল কাজ ক্রিকেটারদের।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যে ব্যস্ত সূচি, তাতে ফাঁকা সময় থাকলেও খেলা বেশির ভাগ তারকা ক্রিকেটার খুব একটা আগ্রহ পান না প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার। ক্রিকেট বোর্ডও খেলোয়াড়দের ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্ট সামনে এনে তাঁদের চাপ দিতে চায় না। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা নিয়ে একবার এই প্রতিবেদককে সাকিব আল হাসান অকপটেই বলেছিলেন, ‘আমাদের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেললে সামান্যতম উন্নতি হবে, সেটা বিশ্বাস করি না।’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের পারফরম্যান্স যে জাতীয় দলে সুযোগ পেতে খুব বেশি কাজে দেয় না, সে অভিযােগ ঘরোয়া ক্রিকেটের এক নিয়মিত মুখের। তিনি বলছিলেন, ‘জাতীয় দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই তো অটো চয়েস, তারা কেন জাতীয় লিগ, বিসিএল খেলবে? আর এখানে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে কী, কেউ তো মনোযোগ দিয়ে ক্রিকেট খেলে না। চার দিন খেলে ৫০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। সর্বোচ্চ বেতন ৩৫ হাজার টাকা, যেটা পায় ২০ ক্রিকেটার। এই বেতন দিয়ে গাড়ির তেলের খরচও হয় না! যে কোচিং স্টাফ থাকে, তাঁরাও যুগোপযোগী নন। সালাহউদ্দিন স্যার, সুজন ভাইয়ের (খালেদ মাহমুদ) মতো সফল কোচরা প্রিমিয়ার লিগে ৩০-৩৫ লাখ টাকা নেন। তাঁরা কি এখানে ১-২ লাখ টাকার জন্য আসবেন?’
২০১৯ সালে ক্রিকেটারদের আন্দোলনের পর বিসিবি অবশ্য ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচ ফি, বেতন, সুযোগ-সুবিধা আগের তুলনায় কিছুটা বাড়িয়েছে। এখানে বিসিবির বরাদ্দও বেড়েছে। জাতীয় লিগে ২০২৩ সালেই খরচ হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। যদিও এই খরচ ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের অধীনে থাকা বিদেশি কোচদের বেতনের সমান।
তাঁরা কী ভাবছেন
টেস্টে বাংলাদেশ খারাপ খেললে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মান নিয়ে কথা ওঠে। ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামো ঢেলে সাজানোর দাবি ওঠে। বিচ্ছিন্নভাবে সুপারিশও আসে। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন হয় কি? কিংবা কী করা উচিত। সাবেক তারকা কিংবা ক্রিকেট সংগঠকেরা কী ভাবছেন—
যে দোষ চাপানো হচ্ছে অনেকাংশে সত্য
আহমেদ সাজ্জাদুল আলম, চেয়ারম্যান, টুর্নামেন্ট কমিটি,আহমেদ সাজ্জাদুল আলম
গত তিন বছরে কিছুটা এগিয়ে নিয়েছি। খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি বা অন্যান্য যে টাকাপয়সার ব্যাপার আছে, আম্পায়ারসহ—অনেক বাড়িয়েছি, যাতে সবাই লংগার ভার্সন ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহী হয়। ভালো আউটফিল্ড, ভালো উইকেট দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ডিউক, এসজি, কোকাবুরা—তিন ধরনের বলই দিয়েছি। থাকা-যাতায়াতের ভালো ব্যবস্থার চেষ্টা করেছি।
একটা জায়গায় মিসিং হচ্ছে, সেটা দর্শক ও সংবাদমাধ্যমে প্রচার। মিডিয়া গেলে কিন্তু মানুষের আগ্রহ বাড়ে, পৃষ্ঠপোষকেরাও আসে।
টেস্টের চ্যালেঞ্জ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দিতে হলে কী চাই? ভালো প্রতিপক্ষ। আমি কীভাবে ভালো প্রতিপক্ষ দেব? এখানে তারাই খেলেছে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে। পার্থক্য হচ্ছে, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যখন তারা খেলছে, তারা ভালো প্রতিপক্ষ মোকাবিলা করছে। আমি শ্রীলঙ্কার মানের ক্রিকেটার কোত্থেকে দেব? হয়তো খেলার একটা পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারব।
তারা যে ঘরোয়া ক্রিকেটের ওপর দোষ চাপাচ্ছে, এটা অনেকাংশে সত্য। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানো সমাধান কিসে সেটাও যদি জানা যেত তাহলে ভালো হতো। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যা করার তা তো করছি। খেলার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানো তাদেরও দায়িত্ব। টাকাপয়সা আরও বাড়ানোর ইচ্ছে আমাদের। কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে মিল থাকতে হবে। তবে আমি মোটেও সন্তুষ্ট নই। অনেক কাজ বাকি থেকে গেছে। মাঠ যদি আরও উন্নত করতে পারতাম, আমাদের মৌসুমও ছোট। তবে তারকা খেলোয়াড়দের যদি আরও বেশি পাওয়া যেত, তাহলে খেলা আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতো। তাদের ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্টের বিষয়টিও অবশ্য দেখতে হবে।
গতি বাড়াতে হবে জেলা পর্যায় থেকে
গাজী আশরাফ হোসেন
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট নিয়ে আমার এর আগে ছিল দূর থেকে পর্যবেক্ষণ, আগামী বছরের পর আমার পর্যবেক্ষণ আরও পরিষ্কার হবে। এখন তুলনামূলক আগের চেয়ে ভালো উইকেটে খেলা হচ্ছে। ম্যাচ ফি অনেক বেড়েছে, তবে সেটি পর্যাপ্ত কি না জানি না। বিসিএলে ডিউক বলে খেলা হয়, এটা একটা ভালো ব্যাপার।
কোচিং স্টাফরা কতটুকু সময় পান একটা টুর্নামেন্টের জন্য দল প্রস্তুত করতে, এটা আমি নিশ্চিত না। খেলোয়াড়দেরও টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বার্তা দেওয়া উচিত ব্যক্তিগতভাবে প্রস্তুত থাকতে। টুর্নামেন্ট কমিটি ও গ্রাউন্ডস বিভাগের সঙ্গে একটা সমন্বয় থাকা উচিত ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের। ক্রিকেট ক্যালেন্ডার মাথায় রেখে যদি ভেঙে আয়োজন করা যায় প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট, ভালো ক্রিকেট খেলার সুযোগ হবে। এতে হয়তো কিছুটা ছন্দ নষ্ট হতে পারে। আঞ্চলিক ক্রিকেট কাঠামো দাঁড় করাচ্ছে বোর্ড, সেটারও সমন্বয় হবে।
জেলা পর্যায়ের ক্রিকেট যদি গতি পায়, তাহলে বিভাগীয় ক্রিকেটও গতি পাবে। বিভাগীয় ক্রিকেট গতি পেলে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও গতি আসবে। কোচদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা দরকার, সংগঠকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা দরকার, খেলোয়াড়দের মধ্যে থাকবে। প্রথম শ্রেণির কোচদের সঙ্গে জাতীয় দলের কোচিং স্টাফদেরও যোগসূত্র থাকা দরকার।
সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো জরুরি
রাজিন সালেহ
সবার আগে ট্রু উইকেট দিতে হবে। ঘরোয়া লিগে আম্পায়ারিং নিয়ে সব সময় বিতর্ক হয়, থার্ড আম্পায়ার রাখাও দরকার। ডিআরএস লাগে না। চার পাশে চারটি ভালো ক্যামেরা দিলেই হবে। বিরতিতে জাতীয় দলের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা বাধ্যতামূলক করা উচিত। মুশফিকুর রহিম-মুমিনুল হকসহ দু-তিনজন খেলোয়াড় ছাড়া বেশির ভাগই চার দিনের ম্যাচ খেলতে আগ্রহ দেখায় না।
খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের বেতন, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো জরুরি। খেলোয়াড়েরা চিন্তা করে এত কম টাকা এখানে, এর চেয়ে আমি বিশ্রাম নেব, শরীরের যত্ন নেব—ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলব, এর চেয়ে বেশি টাকা পাব। একজন কোচ যদি পায় এক-দেড় লাখ টাকা, ওই কোচের মূল্য কী থাকে? অন্তত ৭-৮ লাখ টাকা পাওয়া উচিত। তাহলে কোচদের কাজের মান, দায়িত্ব আরও বেড়ে যাবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে চালু করা উচিত। তখন ম্যাচের সংখ্যাও দ্বিগুণ হবে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সিনিয়র টিম বা ‘এ’ দল ‘বি’ দলের টুর্নামেন্ট করা উচিত।
বর্তমান-ভবিষ্যৎ একসঙ্গে ভাবা দরকার
নাঈম ইসলাম
চাইলেই অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো ফার্স্ট উইকেট বানানো সম্ভব নয় আমার। চাইলেই ওরকম বাউন্স, সুইংয়ের উইকেট বানানো সম্ভব নয়। আমাদের যা আছে, সেটা থেকে ভালো কিছুর চেষ্টা করা উচিত। এখন উইকেট সবুজও থাকে। প্রতিটি দলে ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করতে পারে, এমন তিনজন করে বোলার দরকার।
তাসকিনদের গতি আছে, ওরা তো ঘরোয়া লিগে খেলে না। টেস্টের খেলোয়াড় যদি উন্নতি করতে চান, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের এমন একটা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া উচিত, সে ১১টা ম্যাচ খেলবে এনসিএল ও বিসিএল মিলিয়ে—যেখান থেকে পুরো এক বছরের ভরণপোষণের অর্থ যেন সে পায়। তখন সে শুধু এদিকেই মনোনিবেশ করবে।
আমরা সব সময় শুধু ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে গিয়ে বর্তমানের কথা ভুলে যাই। নতুন খেলোয়াড়দের কথা চিন্তা করি, সে আমাদের ১০ বছর সার্ভিস দেবে। কিন্তু দেখা গেল বিনিয়োগ করতে করতে ৩-৪ বছর চলে গেল। পরে ওই খেলোয়াড়ও ভালো করল না। বর্তমানে যারা পারফর্ম করছে তাদের কথা চিন্তা করা উচিত। আমাদের বর্তমানও দরকার, ভবিষ্যৎও দরকার।

কদিন আগে এক পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এক কাউন্সিলর নাজমুল হাসান পাপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর বক্তব্য শুরুই করলেন চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোর দিয়ে। শুধু পাপন কেন, এই স্কোর বিসিবির সব দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তির কাছেই ছিল অস্বস্তিদায়ক। তবে বিসিবি সভাপতি এজিএমে নিয়মিত কাউন্সিলরদের কাছে টেস্ট উন্নতিতে লিখিত আকারে বাস্তবধর্মী সুপারিশ আহ্বান করেন।
টেস্ট আঙিনায় দিনের পর দিন বাংলাদেশের হোঁচট খেতে দেখে কেউ কেউ নিজের আগ্রহে সুপারিশ করেও থাকেন। ২০২২ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টেস্ট সিরিজে বাজেভাবে হারের পর ক্রিকেটারদের কল্যাণ সংগঠন কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক ২০টি সুপারিশ পাঠিয়েছিলেন বিসিবিতে। তাঁর বেশির ভাগ সুপারিশই ছিল যুক্তিযুক্ত ও বাস্তবধর্মী। সে সব সুপারিশ ই-মেইলের কর্তাদের ইনবক্সেই হয়তো পড়ে আছে বা ডিলিটও হয়ে যেতে পারে!
টেস্টে বছরের পর বছর ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার তির কম সইতে হয়নি মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে। ২০২১ সালে বিসিবির প্রধান নির্বাচক হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কাঠামো ঢেলে সাজাতে বিসিবি সভাপতিকে অনেকগুলো প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। তাঁর প্রস্তাবপত্রে ছিল বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কাঠামো আমূল বদলে ফেলার অনেকগুলো যুগোপযোগী সুপারিশ। টিম ম্যানেজমেন্টে কারা থাকবেন, কীভাবে কাজ করবে এই ম্যানেজমেন্ট, কী কী সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফ, ম্যাচ ফি, বেতন, দল গঠনের প্রক্রিয়া, কখন শুরু হবে, খেলার ধরন কেমন হবে, ম্যাচের পয়েন্ট পদ্ধতি, ম্যাচের বল, উইকেট—সবকিছু ছিল নান্নুর সুপারিশে।
সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়া প্রসঙ্গে নান্নু কাল আজকের পত্রিকাকে বলছিলেন, ‘(বাস্তবায়ন) হবে হবে আর করে হয়নি।’ দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের কাঠামো নিয়ে স্পষ্টতই হতাশা তাঁর কণ্ঠে, ‘একমাত্র টেস্ট খেলুড়ে জাতি, যেখানে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ভালো কাঠামো নেই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ভালো এস্টাবলিশড হলেই না আপনি টেস্ট ভালো খেলবেন।’
সাবেক ক্রিকেটার তুষার ইমরান সামনে আনলেন আরেকটি বিষয়, ‘জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যদি খেলত, তখন উন্নতি হতো। ক্রিকেট বোর্ড তো আর বলে দেয় না এ খেলবে, সে খেলবে না। খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানোর মূল কাজ ক্রিকেটারদের।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যে ব্যস্ত সূচি, তাতে ফাঁকা সময় থাকলেও খেলা বেশির ভাগ তারকা ক্রিকেটার খুব একটা আগ্রহ পান না প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার। ক্রিকেট বোর্ডও খেলোয়াড়দের ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্ট সামনে এনে তাঁদের চাপ দিতে চায় না। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা নিয়ে একবার এই প্রতিবেদককে সাকিব আল হাসান অকপটেই বলেছিলেন, ‘আমাদের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেললে সামান্যতম উন্নতি হবে, সেটা বিশ্বাস করি না।’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের পারফরম্যান্স যে জাতীয় দলে সুযোগ পেতে খুব বেশি কাজে দেয় না, সে অভিযােগ ঘরোয়া ক্রিকেটের এক নিয়মিত মুখের। তিনি বলছিলেন, ‘জাতীয় দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই তো অটো চয়েস, তারা কেন জাতীয় লিগ, বিসিএল খেলবে? আর এখানে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে কী, কেউ তো মনোযোগ দিয়ে ক্রিকেট খেলে না। চার দিন খেলে ৫০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। সর্বোচ্চ বেতন ৩৫ হাজার টাকা, যেটা পায় ২০ ক্রিকেটার। এই বেতন দিয়ে গাড়ির তেলের খরচও হয় না! যে কোচিং স্টাফ থাকে, তাঁরাও যুগোপযোগী নন। সালাহউদ্দিন স্যার, সুজন ভাইয়ের (খালেদ মাহমুদ) মতো সফল কোচরা প্রিমিয়ার লিগে ৩০-৩৫ লাখ টাকা নেন। তাঁরা কি এখানে ১-২ লাখ টাকার জন্য আসবেন?’
২০১৯ সালে ক্রিকেটারদের আন্দোলনের পর বিসিবি অবশ্য ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচ ফি, বেতন, সুযোগ-সুবিধা আগের তুলনায় কিছুটা বাড়িয়েছে। এখানে বিসিবির বরাদ্দও বেড়েছে। জাতীয় লিগে ২০২৩ সালেই খরচ হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। যদিও এই খরচ ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের অধীনে থাকা বিদেশি কোচদের বেতনের সমান।
তাঁরা কী ভাবছেন
টেস্টে বাংলাদেশ খারাপ খেললে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মান নিয়ে কথা ওঠে। ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামো ঢেলে সাজানোর দাবি ওঠে। বিচ্ছিন্নভাবে সুপারিশও আসে। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন হয় কি? কিংবা কী করা উচিত। সাবেক তারকা কিংবা ক্রিকেট সংগঠকেরা কী ভাবছেন—
যে দোষ চাপানো হচ্ছে অনেকাংশে সত্য
আহমেদ সাজ্জাদুল আলম, চেয়ারম্যান, টুর্নামেন্ট কমিটি,আহমেদ সাজ্জাদুল আলম
গত তিন বছরে কিছুটা এগিয়ে নিয়েছি। খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি বা অন্যান্য যে টাকাপয়সার ব্যাপার আছে, আম্পায়ারসহ—অনেক বাড়িয়েছি, যাতে সবাই লংগার ভার্সন ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহী হয়। ভালো আউটফিল্ড, ভালো উইকেট দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ডিউক, এসজি, কোকাবুরা—তিন ধরনের বলই দিয়েছি। থাকা-যাতায়াতের ভালো ব্যবস্থার চেষ্টা করেছি।
একটা জায়গায় মিসিং হচ্ছে, সেটা দর্শক ও সংবাদমাধ্যমে প্রচার। মিডিয়া গেলে কিন্তু মানুষের আগ্রহ বাড়ে, পৃষ্ঠপোষকেরাও আসে।
টেস্টের চ্যালেঞ্জ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দিতে হলে কী চাই? ভালো প্রতিপক্ষ। আমি কীভাবে ভালো প্রতিপক্ষ দেব? এখানে তারাই খেলেছে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে। পার্থক্য হচ্ছে, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যখন তারা খেলছে, তারা ভালো প্রতিপক্ষ মোকাবিলা করছে। আমি শ্রীলঙ্কার মানের ক্রিকেটার কোত্থেকে দেব? হয়তো খেলার একটা পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারব।
তারা যে ঘরোয়া ক্রিকেটের ওপর দোষ চাপাচ্ছে, এটা অনেকাংশে সত্য। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানো সমাধান কিসে সেটাও যদি জানা যেত তাহলে ভালো হতো। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যা করার তা তো করছি। খেলার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানো তাদেরও দায়িত্ব। টাকাপয়সা আরও বাড়ানোর ইচ্ছে আমাদের। কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে মিল থাকতে হবে। তবে আমি মোটেও সন্তুষ্ট নই। অনেক কাজ বাকি থেকে গেছে। মাঠ যদি আরও উন্নত করতে পারতাম, আমাদের মৌসুমও ছোট। তবে তারকা খেলোয়াড়দের যদি আরও বেশি পাওয়া যেত, তাহলে খেলা আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতো। তাদের ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্টের বিষয়টিও অবশ্য দেখতে হবে।
গতি বাড়াতে হবে জেলা পর্যায় থেকে
গাজী আশরাফ হোসেন
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট নিয়ে আমার এর আগে ছিল দূর থেকে পর্যবেক্ষণ, আগামী বছরের পর আমার পর্যবেক্ষণ আরও পরিষ্কার হবে। এখন তুলনামূলক আগের চেয়ে ভালো উইকেটে খেলা হচ্ছে। ম্যাচ ফি অনেক বেড়েছে, তবে সেটি পর্যাপ্ত কি না জানি না। বিসিএলে ডিউক বলে খেলা হয়, এটা একটা ভালো ব্যাপার।
কোচিং স্টাফরা কতটুকু সময় পান একটা টুর্নামেন্টের জন্য দল প্রস্তুত করতে, এটা আমি নিশ্চিত না। খেলোয়াড়দেরও টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বার্তা দেওয়া উচিত ব্যক্তিগতভাবে প্রস্তুত থাকতে। টুর্নামেন্ট কমিটি ও গ্রাউন্ডস বিভাগের সঙ্গে একটা সমন্বয় থাকা উচিত ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের। ক্রিকেট ক্যালেন্ডার মাথায় রেখে যদি ভেঙে আয়োজন করা যায় প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট, ভালো ক্রিকেট খেলার সুযোগ হবে। এতে হয়তো কিছুটা ছন্দ নষ্ট হতে পারে। আঞ্চলিক ক্রিকেট কাঠামো দাঁড় করাচ্ছে বোর্ড, সেটারও সমন্বয় হবে।
জেলা পর্যায়ের ক্রিকেট যদি গতি পায়, তাহলে বিভাগীয় ক্রিকেটও গতি পাবে। বিভাগীয় ক্রিকেট গতি পেলে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও গতি আসবে। কোচদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা দরকার, সংগঠকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা দরকার, খেলোয়াড়দের মধ্যে থাকবে। প্রথম শ্রেণির কোচদের সঙ্গে জাতীয় দলের কোচিং স্টাফদেরও যোগসূত্র থাকা দরকার।
সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো জরুরি
রাজিন সালেহ
সবার আগে ট্রু উইকেট দিতে হবে। ঘরোয়া লিগে আম্পায়ারিং নিয়ে সব সময় বিতর্ক হয়, থার্ড আম্পায়ার রাখাও দরকার। ডিআরএস লাগে না। চার পাশে চারটি ভালো ক্যামেরা দিলেই হবে। বিরতিতে জাতীয় দলের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা বাধ্যতামূলক করা উচিত। মুশফিকুর রহিম-মুমিনুল হকসহ দু-তিনজন খেলোয়াড় ছাড়া বেশির ভাগই চার দিনের ম্যাচ খেলতে আগ্রহ দেখায় না।
খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের বেতন, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো জরুরি। খেলোয়াড়েরা চিন্তা করে এত কম টাকা এখানে, এর চেয়ে আমি বিশ্রাম নেব, শরীরের যত্ন নেব—ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলব, এর চেয়ে বেশি টাকা পাব। একজন কোচ যদি পায় এক-দেড় লাখ টাকা, ওই কোচের মূল্য কী থাকে? অন্তত ৭-৮ লাখ টাকা পাওয়া উচিত। তাহলে কোচদের কাজের মান, দায়িত্ব আরও বেড়ে যাবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে চালু করা উচিত। তখন ম্যাচের সংখ্যাও দ্বিগুণ হবে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সিনিয়র টিম বা ‘এ’ দল ‘বি’ দলের টুর্নামেন্ট করা উচিত।
বর্তমান-ভবিষ্যৎ একসঙ্গে ভাবা দরকার
নাঈম ইসলাম
চাইলেই অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো ফার্স্ট উইকেট বানানো সম্ভব নয় আমার। চাইলেই ওরকম বাউন্স, সুইংয়ের উইকেট বানানো সম্ভব নয়। আমাদের যা আছে, সেটা থেকে ভালো কিছুর চেষ্টা করা উচিত। এখন উইকেট সবুজও থাকে। প্রতিটি দলে ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করতে পারে, এমন তিনজন করে বোলার দরকার।
তাসকিনদের গতি আছে, ওরা তো ঘরোয়া লিগে খেলে না। টেস্টের খেলোয়াড় যদি উন্নতি করতে চান, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের এমন একটা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া উচিত, সে ১১টা ম্যাচ খেলবে এনসিএল ও বিসিএল মিলিয়ে—যেখান থেকে পুরো এক বছরের ভরণপোষণের অর্থ যেন সে পায়। তখন সে শুধু এদিকেই মনোনিবেশ করবে।
আমরা সব সময় শুধু ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে গিয়ে বর্তমানের কথা ভুলে যাই। নতুন খেলোয়াড়দের কথা চিন্তা করি, সে আমাদের ১০ বছর সার্ভিস দেবে। কিন্তু দেখা গেল বিনিয়োগ করতে করতে ৩-৪ বছর চলে গেল। পরে ওই খেলোয়াড়ও ভালো করল না। বর্তমানে যারা পারফর্ম করছে তাদের কথা চিন্তা করা উচিত। আমাদের বর্তমানও দরকার, ভবিষ্যৎও দরকার।

কদিন আগে এক পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এক কাউন্সিলর নাজমুল হাসান পাপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর বক্তব্য শুরুই করলেন চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোর দিয়ে। শুধু পাপন কেন, এই স্কোর বিসিবির সব দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তির কাছেই ছিল অস্বস্তিদায়ক। তবে বিসিবি সভাপতি এজিএমে নিয়মিত কাউন্সিলরদের কাছে টেস্ট উন্নতিতে লিখিত আকারে বাস্তবধর্মী সুপারিশ আহ্বান করেন।
টেস্ট আঙিনায় দিনের পর দিন বাংলাদেশের হোঁচট খেতে দেখে কেউ কেউ নিজের আগ্রহে সুপারিশ করেও থাকেন। ২০২২ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টেস্ট সিরিজে বাজেভাবে হারের পর ক্রিকেটারদের কল্যাণ সংগঠন কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক ২০টি সুপারিশ পাঠিয়েছিলেন বিসিবিতে। তাঁর বেশির ভাগ সুপারিশই ছিল যুক্তিযুক্ত ও বাস্তবধর্মী। সে সব সুপারিশ ই-মেইলের কর্তাদের ইনবক্সেই হয়তো পড়ে আছে বা ডিলিটও হয়ে যেতে পারে!
টেস্টে বছরের পর বছর ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার তির কম সইতে হয়নি মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে। ২০২১ সালে বিসিবির প্রধান নির্বাচক হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কাঠামো ঢেলে সাজাতে বিসিবি সভাপতিকে অনেকগুলো প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। তাঁর প্রস্তাবপত্রে ছিল বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কাঠামো আমূল বদলে ফেলার অনেকগুলো যুগোপযোগী সুপারিশ। টিম ম্যানেজমেন্টে কারা থাকবেন, কীভাবে কাজ করবে এই ম্যানেজমেন্ট, কী কী সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফ, ম্যাচ ফি, বেতন, দল গঠনের প্রক্রিয়া, কখন শুরু হবে, খেলার ধরন কেমন হবে, ম্যাচের পয়েন্ট পদ্ধতি, ম্যাচের বল, উইকেট—সবকিছু ছিল নান্নুর সুপারিশে।
সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়া প্রসঙ্গে নান্নু কাল আজকের পত্রিকাকে বলছিলেন, ‘(বাস্তবায়ন) হবে হবে আর করে হয়নি।’ দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের কাঠামো নিয়ে স্পষ্টতই হতাশা তাঁর কণ্ঠে, ‘একমাত্র টেস্ট খেলুড়ে জাতি, যেখানে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ভালো কাঠামো নেই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ভালো এস্টাবলিশড হলেই না আপনি টেস্ট ভালো খেলবেন।’
সাবেক ক্রিকেটার তুষার ইমরান সামনে আনলেন আরেকটি বিষয়, ‘জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যদি খেলত, তখন উন্নতি হতো। ক্রিকেট বোর্ড তো আর বলে দেয় না এ খেলবে, সে খেলবে না। খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানোর মূল কাজ ক্রিকেটারদের।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যে ব্যস্ত সূচি, তাতে ফাঁকা সময় থাকলেও খেলা বেশির ভাগ তারকা ক্রিকেটার খুব একটা আগ্রহ পান না প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার। ক্রিকেট বোর্ডও খেলোয়াড়দের ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্ট সামনে এনে তাঁদের চাপ দিতে চায় না। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা নিয়ে একবার এই প্রতিবেদককে সাকিব আল হাসান অকপটেই বলেছিলেন, ‘আমাদের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেললে সামান্যতম উন্নতি হবে, সেটা বিশ্বাস করি না।’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের পারফরম্যান্স যে জাতীয় দলে সুযোগ পেতে খুব বেশি কাজে দেয় না, সে অভিযােগ ঘরোয়া ক্রিকেটের এক নিয়মিত মুখের। তিনি বলছিলেন, ‘জাতীয় দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই তো অটো চয়েস, তারা কেন জাতীয় লিগ, বিসিএল খেলবে? আর এখানে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে কী, কেউ তো মনোযোগ দিয়ে ক্রিকেট খেলে না। চার দিন খেলে ৫০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। সর্বোচ্চ বেতন ৩৫ হাজার টাকা, যেটা পায় ২০ ক্রিকেটার। এই বেতন দিয়ে গাড়ির তেলের খরচও হয় না! যে কোচিং স্টাফ থাকে, তাঁরাও যুগোপযোগী নন। সালাহউদ্দিন স্যার, সুজন ভাইয়ের (খালেদ মাহমুদ) মতো সফল কোচরা প্রিমিয়ার লিগে ৩০-৩৫ লাখ টাকা নেন। তাঁরা কি এখানে ১-২ লাখ টাকার জন্য আসবেন?’
২০১৯ সালে ক্রিকেটারদের আন্দোলনের পর বিসিবি অবশ্য ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচ ফি, বেতন, সুযোগ-সুবিধা আগের তুলনায় কিছুটা বাড়িয়েছে। এখানে বিসিবির বরাদ্দও বেড়েছে। জাতীয় লিগে ২০২৩ সালেই খরচ হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। যদিও এই খরচ ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের অধীনে থাকা বিদেশি কোচদের বেতনের সমান।
তাঁরা কী ভাবছেন
টেস্টে বাংলাদেশ খারাপ খেললে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মান নিয়ে কথা ওঠে। ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামো ঢেলে সাজানোর দাবি ওঠে। বিচ্ছিন্নভাবে সুপারিশও আসে। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন হয় কি? কিংবা কী করা উচিত। সাবেক তারকা কিংবা ক্রিকেট সংগঠকেরা কী ভাবছেন—
যে দোষ চাপানো হচ্ছে অনেকাংশে সত্য
আহমেদ সাজ্জাদুল আলম, চেয়ারম্যান, টুর্নামেন্ট কমিটি,আহমেদ সাজ্জাদুল আলম
গত তিন বছরে কিছুটা এগিয়ে নিয়েছি। খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি বা অন্যান্য যে টাকাপয়সার ব্যাপার আছে, আম্পায়ারসহ—অনেক বাড়িয়েছি, যাতে সবাই লংগার ভার্সন ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহী হয়। ভালো আউটফিল্ড, ভালো উইকেট দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ডিউক, এসজি, কোকাবুরা—তিন ধরনের বলই দিয়েছি। থাকা-যাতায়াতের ভালো ব্যবস্থার চেষ্টা করেছি।
একটা জায়গায় মিসিং হচ্ছে, সেটা দর্শক ও সংবাদমাধ্যমে প্রচার। মিডিয়া গেলে কিন্তু মানুষের আগ্রহ বাড়ে, পৃষ্ঠপোষকেরাও আসে।
টেস্টের চ্যালেঞ্জ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দিতে হলে কী চাই? ভালো প্রতিপক্ষ। আমি কীভাবে ভালো প্রতিপক্ষ দেব? এখানে তারাই খেলেছে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে। পার্থক্য হচ্ছে, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যখন তারা খেলছে, তারা ভালো প্রতিপক্ষ মোকাবিলা করছে। আমি শ্রীলঙ্কার মানের ক্রিকেটার কোত্থেকে দেব? হয়তো খেলার একটা পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারব।
তারা যে ঘরোয়া ক্রিকেটের ওপর দোষ চাপাচ্ছে, এটা অনেকাংশে সত্য। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানো সমাধান কিসে সেটাও যদি জানা যেত তাহলে ভালো হতো। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যা করার তা তো করছি। খেলার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানো তাদেরও দায়িত্ব। টাকাপয়সা আরও বাড়ানোর ইচ্ছে আমাদের। কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে মিল থাকতে হবে। তবে আমি মোটেও সন্তুষ্ট নই। অনেক কাজ বাকি থেকে গেছে। মাঠ যদি আরও উন্নত করতে পারতাম, আমাদের মৌসুমও ছোট। তবে তারকা খেলোয়াড়দের যদি আরও বেশি পাওয়া যেত, তাহলে খেলা আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতো। তাদের ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্টের বিষয়টিও অবশ্য দেখতে হবে।
গতি বাড়াতে হবে জেলা পর্যায় থেকে
গাজী আশরাফ হোসেন
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট নিয়ে আমার এর আগে ছিল দূর থেকে পর্যবেক্ষণ, আগামী বছরের পর আমার পর্যবেক্ষণ আরও পরিষ্কার হবে। এখন তুলনামূলক আগের চেয়ে ভালো উইকেটে খেলা হচ্ছে। ম্যাচ ফি অনেক বেড়েছে, তবে সেটি পর্যাপ্ত কি না জানি না। বিসিএলে ডিউক বলে খেলা হয়, এটা একটা ভালো ব্যাপার।
কোচিং স্টাফরা কতটুকু সময় পান একটা টুর্নামেন্টের জন্য দল প্রস্তুত করতে, এটা আমি নিশ্চিত না। খেলোয়াড়দেরও টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বার্তা দেওয়া উচিত ব্যক্তিগতভাবে প্রস্তুত থাকতে। টুর্নামেন্ট কমিটি ও গ্রাউন্ডস বিভাগের সঙ্গে একটা সমন্বয় থাকা উচিত ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের। ক্রিকেট ক্যালেন্ডার মাথায় রেখে যদি ভেঙে আয়োজন করা যায় প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট, ভালো ক্রিকেট খেলার সুযোগ হবে। এতে হয়তো কিছুটা ছন্দ নষ্ট হতে পারে। আঞ্চলিক ক্রিকেট কাঠামো দাঁড় করাচ্ছে বোর্ড, সেটারও সমন্বয় হবে।
জেলা পর্যায়ের ক্রিকেট যদি গতি পায়, তাহলে বিভাগীয় ক্রিকেটও গতি পাবে। বিভাগীয় ক্রিকেট গতি পেলে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও গতি আসবে। কোচদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা দরকার, সংগঠকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা দরকার, খেলোয়াড়দের মধ্যে থাকবে। প্রথম শ্রেণির কোচদের সঙ্গে জাতীয় দলের কোচিং স্টাফদেরও যোগসূত্র থাকা দরকার।
সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো জরুরি
রাজিন সালেহ
সবার আগে ট্রু উইকেট দিতে হবে। ঘরোয়া লিগে আম্পায়ারিং নিয়ে সব সময় বিতর্ক হয়, থার্ড আম্পায়ার রাখাও দরকার। ডিআরএস লাগে না। চার পাশে চারটি ভালো ক্যামেরা দিলেই হবে। বিরতিতে জাতীয় দলের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা বাধ্যতামূলক করা উচিত। মুশফিকুর রহিম-মুমিনুল হকসহ দু-তিনজন খেলোয়াড় ছাড়া বেশির ভাগই চার দিনের ম্যাচ খেলতে আগ্রহ দেখায় না।
খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের বেতন, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো জরুরি। খেলোয়াড়েরা চিন্তা করে এত কম টাকা এখানে, এর চেয়ে আমি বিশ্রাম নেব, শরীরের যত্ন নেব—ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলব, এর চেয়ে বেশি টাকা পাব। একজন কোচ যদি পায় এক-দেড় লাখ টাকা, ওই কোচের মূল্য কী থাকে? অন্তত ৭-৮ লাখ টাকা পাওয়া উচিত। তাহলে কোচদের কাজের মান, দায়িত্ব আরও বেড়ে যাবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে চালু করা উচিত। তখন ম্যাচের সংখ্যাও দ্বিগুণ হবে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সিনিয়র টিম বা ‘এ’ দল ‘বি’ দলের টুর্নামেন্ট করা উচিত।
বর্তমান-ভবিষ্যৎ একসঙ্গে ভাবা দরকার
নাঈম ইসলাম
চাইলেই অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো ফার্স্ট উইকেট বানানো সম্ভব নয় আমার। চাইলেই ওরকম বাউন্স, সুইংয়ের উইকেট বানানো সম্ভব নয়। আমাদের যা আছে, সেটা থেকে ভালো কিছুর চেষ্টা করা উচিত। এখন উইকেট সবুজও থাকে। প্রতিটি দলে ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করতে পারে, এমন তিনজন করে বোলার দরকার।
তাসকিনদের গতি আছে, ওরা তো ঘরোয়া লিগে খেলে না। টেস্টের খেলোয়াড় যদি উন্নতি করতে চান, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের এমন একটা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া উচিত, সে ১১টা ম্যাচ খেলবে এনসিএল ও বিসিএল মিলিয়ে—যেখান থেকে পুরো এক বছরের ভরণপোষণের অর্থ যেন সে পায়। তখন সে শুধু এদিকেই মনোনিবেশ করবে।
আমরা সব সময় শুধু ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে গিয়ে বর্তমানের কথা ভুলে যাই। নতুন খেলোয়াড়দের কথা চিন্তা করি, সে আমাদের ১০ বছর সার্ভিস দেবে। কিন্তু দেখা গেল বিনিয়োগ করতে করতে ৩-৪ বছর চলে গেল। পরে ওই খেলোয়াড়ও ভালো করল না। বর্তমানে যারা পারফর্ম করছে তাদের কথা চিন্তা করা উচিত। আমাদের বর্তমানও দরকার, ভবিষ্যৎও দরকার।

কদিন আগে এক পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এক কাউন্সিলর নাজমুল হাসান পাপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর বক্তব্য শুরুই করলেন চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোর দিয়ে। শুধু পাপন কেন, এই স্কোর বিসিবির সব দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তির কাছেই ছিল অস্বস্তিদায়ক। তবে বিসিবি সভাপতি এজিএমে নিয়মিত কাউন্সিলরদের কাছে টেস্ট উন্নতিতে লিখিত আকারে বাস্তবধর্মী সুপারিশ আহ্বান করেন।
টেস্ট আঙিনায় দিনের পর দিন বাংলাদেশের হোঁচট খেতে দেখে কেউ কেউ নিজের আগ্রহে সুপারিশ করেও থাকেন। ২০২২ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টেস্ট সিরিজে বাজেভাবে হারের পর ক্রিকেটারদের কল্যাণ সংগঠন কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক ২০টি সুপারিশ পাঠিয়েছিলেন বিসিবিতে। তাঁর বেশির ভাগ সুপারিশই ছিল যুক্তিযুক্ত ও বাস্তবধর্মী। সে সব সুপারিশ ই-মেইলের কর্তাদের ইনবক্সেই হয়তো পড়ে আছে বা ডিলিটও হয়ে যেতে পারে!
টেস্টে বছরের পর বছর ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার তির কম সইতে হয়নি মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে। ২০২১ সালে বিসিবির প্রধান নির্বাচক হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কাঠামো ঢেলে সাজাতে বিসিবি সভাপতিকে অনেকগুলো প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। তাঁর প্রস্তাবপত্রে ছিল বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কাঠামো আমূল বদলে ফেলার অনেকগুলো যুগোপযোগী সুপারিশ। টিম ম্যানেজমেন্টে কারা থাকবেন, কীভাবে কাজ করবে এই ম্যানেজমেন্ট, কী কী সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফ, ম্যাচ ফি, বেতন, দল গঠনের প্রক্রিয়া, কখন শুরু হবে, খেলার ধরন কেমন হবে, ম্যাচের পয়েন্ট পদ্ধতি, ম্যাচের বল, উইকেট—সবকিছু ছিল নান্নুর সুপারিশে।
সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়া প্রসঙ্গে নান্নু কাল আজকের পত্রিকাকে বলছিলেন, ‘(বাস্তবায়ন) হবে হবে আর করে হয়নি।’ দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের কাঠামো নিয়ে স্পষ্টতই হতাশা তাঁর কণ্ঠে, ‘একমাত্র টেস্ট খেলুড়ে জাতি, যেখানে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ভালো কাঠামো নেই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ভালো এস্টাবলিশড হলেই না আপনি টেস্ট ভালো খেলবেন।’
সাবেক ক্রিকেটার তুষার ইমরান সামনে আনলেন আরেকটি বিষয়, ‘জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যদি খেলত, তখন উন্নতি হতো। ক্রিকেট বোর্ড তো আর বলে দেয় না এ খেলবে, সে খেলবে না। খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানোর মূল কাজ ক্রিকেটারদের।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যে ব্যস্ত সূচি, তাতে ফাঁকা সময় থাকলেও খেলা বেশির ভাগ তারকা ক্রিকেটার খুব একটা আগ্রহ পান না প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার। ক্রিকেট বোর্ডও খেলোয়াড়দের ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্ট সামনে এনে তাঁদের চাপ দিতে চায় না। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা নিয়ে একবার এই প্রতিবেদককে সাকিব আল হাসান অকপটেই বলেছিলেন, ‘আমাদের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেললে সামান্যতম উন্নতি হবে, সেটা বিশ্বাস করি না।’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের পারফরম্যান্স যে জাতীয় দলে সুযোগ পেতে খুব বেশি কাজে দেয় না, সে অভিযােগ ঘরোয়া ক্রিকেটের এক নিয়মিত মুখের। তিনি বলছিলেন, ‘জাতীয় দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই তো অটো চয়েস, তারা কেন জাতীয় লিগ, বিসিএল খেলবে? আর এখানে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে কী, কেউ তো মনোযোগ দিয়ে ক্রিকেট খেলে না। চার দিন খেলে ৫০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। সর্বোচ্চ বেতন ৩৫ হাজার টাকা, যেটা পায় ২০ ক্রিকেটার। এই বেতন দিয়ে গাড়ির তেলের খরচও হয় না! যে কোচিং স্টাফ থাকে, তাঁরাও যুগোপযোগী নন। সালাহউদ্দিন স্যার, সুজন ভাইয়ের (খালেদ মাহমুদ) মতো সফল কোচরা প্রিমিয়ার লিগে ৩০-৩৫ লাখ টাকা নেন। তাঁরা কি এখানে ১-২ লাখ টাকার জন্য আসবেন?’
২০১৯ সালে ক্রিকেটারদের আন্দোলনের পর বিসিবি অবশ্য ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচ ফি, বেতন, সুযোগ-সুবিধা আগের তুলনায় কিছুটা বাড়িয়েছে। এখানে বিসিবির বরাদ্দও বেড়েছে। জাতীয় লিগে ২০২৩ সালেই খরচ হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। যদিও এই খরচ ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের অধীনে থাকা বিদেশি কোচদের বেতনের সমান।
তাঁরা কী ভাবছেন
টেস্টে বাংলাদেশ খারাপ খেললে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মান নিয়ে কথা ওঠে। ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামো ঢেলে সাজানোর দাবি ওঠে। বিচ্ছিন্নভাবে সুপারিশও আসে। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন হয় কি? কিংবা কী করা উচিত। সাবেক তারকা কিংবা ক্রিকেট সংগঠকেরা কী ভাবছেন—
যে দোষ চাপানো হচ্ছে অনেকাংশে সত্য
আহমেদ সাজ্জাদুল আলম, চেয়ারম্যান, টুর্নামেন্ট কমিটি,আহমেদ সাজ্জাদুল আলম
গত তিন বছরে কিছুটা এগিয়ে নিয়েছি। খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি বা অন্যান্য যে টাকাপয়সার ব্যাপার আছে, আম্পায়ারসহ—অনেক বাড়িয়েছি, যাতে সবাই লংগার ভার্সন ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহী হয়। ভালো আউটফিল্ড, ভালো উইকেট দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ডিউক, এসজি, কোকাবুরা—তিন ধরনের বলই দিয়েছি। থাকা-যাতায়াতের ভালো ব্যবস্থার চেষ্টা করেছি।
একটা জায়গায় মিসিং হচ্ছে, সেটা দর্শক ও সংবাদমাধ্যমে প্রচার। মিডিয়া গেলে কিন্তু মানুষের আগ্রহ বাড়ে, পৃষ্ঠপোষকেরাও আসে।
টেস্টের চ্যালেঞ্জ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দিতে হলে কী চাই? ভালো প্রতিপক্ষ। আমি কীভাবে ভালো প্রতিপক্ষ দেব? এখানে তারাই খেলেছে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে। পার্থক্য হচ্ছে, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যখন তারা খেলছে, তারা ভালো প্রতিপক্ষ মোকাবিলা করছে। আমি শ্রীলঙ্কার মানের ক্রিকেটার কোত্থেকে দেব? হয়তো খেলার একটা পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারব।
তারা যে ঘরোয়া ক্রিকেটের ওপর দোষ চাপাচ্ছে, এটা অনেকাংশে সত্য। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানো সমাধান কিসে সেটাও যদি জানা যেত তাহলে ভালো হতো। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যা করার তা তো করছি। খেলার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানো তাদেরও দায়িত্ব। টাকাপয়সা আরও বাড়ানোর ইচ্ছে আমাদের। কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে মিল থাকতে হবে। তবে আমি মোটেও সন্তুষ্ট নই। অনেক কাজ বাকি থেকে গেছে। মাঠ যদি আরও উন্নত করতে পারতাম, আমাদের মৌসুমও ছোট। তবে তারকা খেলোয়াড়দের যদি আরও বেশি পাওয়া যেত, তাহলে খেলা আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতো। তাদের ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্টের বিষয়টিও অবশ্য দেখতে হবে।
গতি বাড়াতে হবে জেলা পর্যায় থেকে
গাজী আশরাফ হোসেন
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট নিয়ে আমার এর আগে ছিল দূর থেকে পর্যবেক্ষণ, আগামী বছরের পর আমার পর্যবেক্ষণ আরও পরিষ্কার হবে। এখন তুলনামূলক আগের চেয়ে ভালো উইকেটে খেলা হচ্ছে। ম্যাচ ফি অনেক বেড়েছে, তবে সেটি পর্যাপ্ত কি না জানি না। বিসিএলে ডিউক বলে খেলা হয়, এটা একটা ভালো ব্যাপার।
কোচিং স্টাফরা কতটুকু সময় পান একটা টুর্নামেন্টের জন্য দল প্রস্তুত করতে, এটা আমি নিশ্চিত না। খেলোয়াড়দেরও টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বার্তা দেওয়া উচিত ব্যক্তিগতভাবে প্রস্তুত থাকতে। টুর্নামেন্ট কমিটি ও গ্রাউন্ডস বিভাগের সঙ্গে একটা সমন্বয় থাকা উচিত ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের। ক্রিকেট ক্যালেন্ডার মাথায় রেখে যদি ভেঙে আয়োজন করা যায় প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট, ভালো ক্রিকেট খেলার সুযোগ হবে। এতে হয়তো কিছুটা ছন্দ নষ্ট হতে পারে। আঞ্চলিক ক্রিকেট কাঠামো দাঁড় করাচ্ছে বোর্ড, সেটারও সমন্বয় হবে।
জেলা পর্যায়ের ক্রিকেট যদি গতি পায়, তাহলে বিভাগীয় ক্রিকেটও গতি পাবে। বিভাগীয় ক্রিকেট গতি পেলে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও গতি আসবে। কোচদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা দরকার, সংগঠকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা দরকার, খেলোয়াড়দের মধ্যে থাকবে। প্রথম শ্রেণির কোচদের সঙ্গে জাতীয় দলের কোচিং স্টাফদেরও যোগসূত্র থাকা দরকার।
সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো জরুরি
রাজিন সালেহ
সবার আগে ট্রু উইকেট দিতে হবে। ঘরোয়া লিগে আম্পায়ারিং নিয়ে সব সময় বিতর্ক হয়, থার্ড আম্পায়ার রাখাও দরকার। ডিআরএস লাগে না। চার পাশে চারটি ভালো ক্যামেরা দিলেই হবে। বিরতিতে জাতীয় দলের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা বাধ্যতামূলক করা উচিত। মুশফিকুর রহিম-মুমিনুল হকসহ দু-তিনজন খেলোয়াড় ছাড়া বেশির ভাগই চার দিনের ম্যাচ খেলতে আগ্রহ দেখায় না।
খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের বেতন, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো জরুরি। খেলোয়াড়েরা চিন্তা করে এত কম টাকা এখানে, এর চেয়ে আমি বিশ্রাম নেব, শরীরের যত্ন নেব—ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলব, এর চেয়ে বেশি টাকা পাব। একজন কোচ যদি পায় এক-দেড় লাখ টাকা, ওই কোচের মূল্য কী থাকে? অন্তত ৭-৮ লাখ টাকা পাওয়া উচিত। তাহলে কোচদের কাজের মান, দায়িত্ব আরও বেড়ে যাবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে চালু করা উচিত। তখন ম্যাচের সংখ্যাও দ্বিগুণ হবে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সিনিয়র টিম বা ‘এ’ দল ‘বি’ দলের টুর্নামেন্ট করা উচিত।
বর্তমান-ভবিষ্যৎ একসঙ্গে ভাবা দরকার
নাঈম ইসলাম
চাইলেই অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো ফার্স্ট উইকেট বানানো সম্ভব নয় আমার। চাইলেই ওরকম বাউন্স, সুইংয়ের উইকেট বানানো সম্ভব নয়। আমাদের যা আছে, সেটা থেকে ভালো কিছুর চেষ্টা করা উচিত। এখন উইকেট সবুজও থাকে। প্রতিটি দলে ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করতে পারে, এমন তিনজন করে বোলার দরকার।
তাসকিনদের গতি আছে, ওরা তো ঘরোয়া লিগে খেলে না। টেস্টের খেলোয়াড় যদি উন্নতি করতে চান, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের এমন একটা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া উচিত, সে ১১টা ম্যাচ খেলবে এনসিএল ও বিসিএল মিলিয়ে—যেখান থেকে পুরো এক বছরের ভরণপোষণের অর্থ যেন সে পায়। তখন সে শুধু এদিকেই মনোনিবেশ করবে।
আমরা সব সময় শুধু ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে গিয়ে বর্তমানের কথা ভুলে যাই। নতুন খেলোয়াড়দের কথা চিন্তা করি, সে আমাদের ১০ বছর সার্ভিস দেবে। কিন্তু দেখা গেল বিনিয়োগ করতে করতে ৩-৪ বছর চলে গেল। পরে ওই খেলোয়াড়ও ভালো করল না। বর্তমানে যারা পারফর্ম করছে তাদের কথা চিন্তা করা উচিত। আমাদের বর্তমানও দরকার, ভবিষ্যৎও দরকার।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

কদিন আগে এক পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এক কাউন্সিলর নাজমুল হাসান পাপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর বক্তব্য শুরুই করলেন চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোর দিয়ে। শুধু পাপন কেন, এই স্কোর বিসিবির সব দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তির কাছেই ছিল অস্বস্তিদায়ক। তবে বিসিব
০৫ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

কদিন আগে এক পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এক কাউন্সিলর নাজমুল হাসান পাপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর বক্তব্য শুরুই করলেন চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোর দিয়ে। শুধু পাপন কেন, এই স্কোর বিসিবির সব দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তির কাছেই ছিল অস্বস্তিদায়ক। তবে বিসিব
০৫ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

কদিন আগে এক পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এক কাউন্সিলর নাজমুল হাসান পাপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর বক্তব্য শুরুই করলেন চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোর দিয়ে। শুধু পাপন কেন, এই স্কোর বিসিবির সব দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তির কাছেই ছিল অস্বস্তিদায়ক। তবে বিসিব
০৫ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

কদিন আগে এক পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এক কাউন্সিলর নাজমুল হাসান পাপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর বক্তব্য শুরুই করলেন চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোর দিয়ে। শুধু পাপন কেন, এই স্কোর বিসিবির সব দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তির কাছেই ছিল অস্বস্তিদায়ক। তবে বিসিব
০৫ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫