Ajker Patrika

খরস্রোতা সুরিয়া নদীর ভরাট বুকে সবুজ ফসলের মাঠ

আরিফ আহম্মেদ, গৌরীপুর
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৩৪
খরস্রোতা সুরিয়া নদীর ভরাট বুকে সবুজ ফসলের মাঠ

ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার সীমান্তবর্তী নদী সুরিয়া। একসময় এ নদী সারা বছর থাকত পানিতে টইটম্বুর। নদীর বুকে পাল তুলে চলত ছোট-বড় নৌকা। চলত বজরাও। দুই পাড়ের কৃষকেরা হাজার হাজার একর ফসলি জমিতে সেচ দিতেন এ নদী থেকে।

সেই সুরিয়া নদী নাব্যতা হারিয়েছে অনেক আগেই। এখন দখল ও দূষণে অস্তিত্বের সংকটে রয়েছে। স্রোতস্বিনী সুরিয়ার সেই জৌলুশ আর নেই। নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় নদীর বুকে এখন ধানসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হচ্ছে। এ ছাড়া বর্ষায় নদীতে বাঁধ দিয়ে করা হয় মাছ শিকার। ফলে মরে যাচ্ছে নদীটি। এই অবস্থায় নদীটি খনন ও দখলমুক্ত করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

নদীর দুই পারের বাসিন্দারা জানান, একসময় সুরিয়া নদীতে পর্যাপ্ত পানিপ্রবাহ ছিল। এ পানি দিয়ে চাষাবাদ করার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ করা যেত। আর বোরো ফসলের মাঠে সেচ দেওয়ার কোনো চিন্তা করতে হতো না। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে মাছ পাওয়া যেত নদী থেকে।

এখন আর জমিতে সেচ দেওয়ার মতো পানি নেই। দীর্ঘদিন ধরে খনন না হওয়ায় তলদেশে পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। দুই তীরে যাঁদের জমি রয়েছে, তাঁদের অনেকে নদীটি দখলে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া যাঁদের জমি নেই, তাঁরাও বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে নদী দখল করছেন।

গৌরীপুর উপজেলার অচিন্ত্যপুর ও মাওহা ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানান, নদীর যেটুকু অস্তিত্ব রয়েছে, তা এখন দখল ও দূষণের কবলে। পুরো নদীটি ধানের জমিতে পরিণত হয়েছে। তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ না থাকায় সুরিয়ার এই অবস্থা। নদীটি ড্রেজিং করা হয়নি কখনো।

সুরিয়া নদী গৌরীপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নেত্রকোনা জেলার হাওর অঞ্চলের ধনু নদীতে গিয়ে মিশেছে। অভিযোগ উঠেছে, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বর্ষায় বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার ও শুকনো মৌসুমে ধান চাষের কারণে সুরিয়া এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।

মাওহা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আল ফারুক বলেন, ‘ছোটবেলায় দেখেছি, নদীটি অনেক গভীর ছিল। এটি খনন করা না হলে কয়েক বছর পর হয়তো আগামী প্রজন্ম বিশ্বাসই করতে চাইবে না, সুরিয়া নামে এখানে একটি নদী ছিল। বর্তমানে ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হচ্ছে।’ এ সময় নদীটি পুনর্খননের দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলার পরবর্তী সমন্বয় সভায় নদী খনন বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত