Ajker Patrika

টিকা নিতে কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ২১
টিকা নিতে  কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড়

লক্ষ্যমাত্রা পূরণ ও টিকা গ্রহণে আগ্রহী করতে নিবন্ধন ও এসএমএস ছাড়া টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। একে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন টিকাপ্রত্যাশীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় টিকাকেন্দ্রগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। কোনো কোনো কেন্দ্রে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ টিকা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পা ফেলার জায়গা নেই। কোনো ধরনের কাগজ ছাড়াই টিকা নেওয়ার সুযোগ পেয়ে এসএমএসের অপেক্ষায় থাকা মানুষের পাশাপাশি যাঁদের কোনো নিবন্ধন, এমনকি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই, তাঁরাও টিকা নিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। ফলে টিকাদান কিছুটা বেগবান হয়েছে।

টিকা দেওয়ার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে সেভাবেই টিকা দেওয়া হচ্ছে।

২৬ ফেব্রুয়ারির পর প্রথম ডোজ না পাওয়ার ঘোষণায় টিকা নিতে অনেকের আগ্রহ বেড়েছে। যাঁরা এত দিন এসএমএস পাননি, টিকা নেবেন কি না দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছিলেন তাঁরাও সহজভাবে টিকা পাওয়ায় কেন্দ্রে চলে আসেন। ফলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরও যারাই কেন্দ্রে আসছেন প্রত্যেককে টিকা দেওয়া হচ্ছে, কাউকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে না।

গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা। রাজধানীর শ্যামলীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালে টিকাপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন। পুরুষের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নারীরাও। নিবন্ধন ছাড়াই টিকা নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৮)। এই রিকশাচালক বলেন, ‘টিকা নিতে চাইলেও নানা সমস্যায় হয় নাই। কালকে শুনেছি চলতি মাসের পর নাকি আর প্রথম ডোজের টিকা দেবে না। তাই আজ টিকা নিতে এসেছি।’

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে এই কেন্দ্রে ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে টিকা দেওয়া হতো। টিকা নিতে সহজ ব্যবস্থা হওয়ায় আজ (বৃহস্পতিবার) অনেক বেশি মানুষ টিকা নিতে এসেছেন।

এদিকে নিবন্ধন করলেও এখনো এসএমএস পাননি রাকিব হাসান। তাই বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের টিকাকেন্দ্রে আসেন। তাঁর মতো অনেককে টিকা নিতে দেখা যায়, যাঁদের কোনো নিবন্ধন নেই।

শুধু রাজধানী নয়, ঢাকার বাইরেও এদিন টিকাকেন্দ্রগুলোতে ভিড় দেখা গেছে। আগামী সপ্তাহে তা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, অনেকেই জানলেও বেশির ভাগই এখনো জানেন না। টিকাপ্রত্যাশীদের জন্য আমরা প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মসজিদ থেকে শুরু করে প্রশাসনিকভাবেও মানুষকে জানানোর চেষ্টা চলছে। সবাই যাতে টিকার আওতায় আসে সে জন্য যা করা দরকার আমরা করব।

দেশের ৭০ ভাগ জনগোষ্ঠী বা ১২ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় টিকাদান কার্যক্রম। এরই মধ্যে ১০ কোটি ১৪ লাখের বেশি মানুষ প্রথম ডোজের আওতায় চলে এসেছে। ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি জনগোষ্ঠীকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের। ২৬ ফেব্রুয়ারির পর টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।

বেড়েছে মৃত্যু, কমেছে শনাক্ত
টিকাদান কার্যক্রম জোরদার হলেও দেশে থামছে না করোনায় মৃত্যুর ঘটনা। কখনো কমছে, কখনো বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত বুধবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন করে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ১৫। ওমিক্রনের দাপটে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৫৩৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১২ দশমিক ২০ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত