Ajker Patrika

সুনামগঞ্জে ৫০ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২২, ১৭: ৫২
Thumbnail image

সুনামগঞ্জে বছরে ছয় মাস অনাবাদি থাকছে ৫০ হাজার হেক্টর জমি। সরকারি সহায়তা ও কৃষি বিভাগের পরামর্শের অভাবে এই জমি চাষাবাদ হচ্ছে না। অনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে পরামর্শের পাশাপাশি প্রণোদনাও চাইছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, সুনামগঞ্জে ২ লাখ ৮২ হাজার ১৪৫ হেক্টর জমি রয়েছে। প্রতিবছর আবাদ করা হয় ২ লাখ ২০ হাজার হেক্টরের বেশি। রবি মৌসুমে অনাবাদি জমির পরিমাণ ২৮ হাজার হেক্টর, আর অন্য সময়ে ২৫ হাজার হেক্টর জমি।

এর মধ্যে সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে প্রতিবছর ২ লাখ ২০ থেকে ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। এই মৌসুমে ৫০ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। অনাবাদি অধিকাংশ জমি উঁচু স্থানে। এসব জমি সরকারের সহায়তায় ধান ছাড়াও অন্য ফসল চাষের উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারবে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। তবে প্রধান বাধা হচ্ছে অর্থের সংকট। সরকারি প্রণোদনা ও সহযোগিতা কামনা করছেন কৃষকেরা।

সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের কৃষক নরেন্দ্র পাল বলেন, ‘আমরা চাই পতিত জমি কাজে লাগায় চাষাবাদ করি। ধান ছাড়া অন্য ফসল আবাদ করি। কিন্তু টাকার অভাবে আর কুলিয়ে উঠতে পারি না।’

অর্থের সংকট ছাড়াও রয়েছে সেচের সংকট। সমতল থেকে পতিত জমি উঁচু হওয়ায় সেচের সুবিধা নেই। সদর উপজেলার বড়ঘাট গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমরার অনেক জমি আছে, যেখানে চাষাবাদের মূল সমস্যা হলো পানির সংকট। জমিতে ঠিকমতো পানি দিতে না পারলে আবাদ করা প্রায় অসম্ভব।’

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বোরো ফসল ঘরে তোলার পর বছরের একটা সময় অধিকাংশ জমি অনাবাদি থাকে। এসব জমিতে আবাদ করার জন্য দরকার সরকারি সহযোগিতা।’

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতাদের দাবি, সুনামগঞ্জের অনাবাদি জমিগুলো আবাদযোগ্য করে গড়ে তুলতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে। হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন দাবির মধ্যে এটাও অন্যতম দাবি। অনাবাদি জমিগুলো চাষের উপযোগী করে তোলার জন্য সরকারি সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই।’

তবে কৃষি বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে, অনাবাদি জমি চাষযোগ্য করতে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে দেওয়া হয়েছে প্রণোদনাও।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফরিদুল হাসান বলেন, ‘সুনামগঞ্জের অনাবাদি জমিগুলো ধানের পাশাপাশি গম, ভুট্টা, তরমুজ চাষের জন্য কৃষকদের সব সময় পরামর্শ দিচ্ছি। কিছু কিছু এলাকায় পতিত জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। তবে কৃষকেরা যদি উৎসাহী হন আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত