তানিম আহমেদ, ঢাকা

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা, নির্বাচন কমিশন গঠন, ডিজিটাল আইনসহ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে আবার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে বিএনপি। নির্বাচন কাছে এলে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ার আশঙ্কা। তাই এখন থেকে চাপ এড়ানোর কৌশল খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, বর্তমান সরকারের তিন বছর শেষ হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিকে ঘোলাটে করার জন্য বিএনপিসহ একটি পক্ষ চেষ্টা করছে। তারা পশ্চিমা ছাড়াও আওয়ামী লীগের বন্ধুদের কাজে লাগাতে চেষ্টা করছে। এ ছাড়া পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করতে পারে তারা।
তাই আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, রাজনীতি যাতে ঘোলাটে না হয় সে জন্য তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। সেখানে দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রকারীদের অপকর্ম তাঁদের জানানো হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার গেরো
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগ চাপে আছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারকে পিআর সংস্থা ও আইনজীবী নিয়োগের কথা বলা বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে মন্ত্রণালয় বলেছে, শ্রম আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। বৈঠকে বলা হয়, বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র যেসব পদক্ষেপ নেয়, তাদের ফলো করে কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ। তাই আগে থেকে সরকারকে তৎপর হতে হবে।
এরই অংশ হিসেবে নির্বাচনের আগে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতের সিমলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে মৈত্রী সম্মেলন। সেখানে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবারই আওয়ামী লীগ ও সরকারের একটি প্রতিনিধিদল সিমলা গিয়েছে। সেখানে ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাপান, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব আমাদের বন্ধু। এই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রেরও ভালো সম্পর্ক। তাদের মধ্যে আমাদের কথাগুলো ক্লিয়ার করা যেতে পারে। এই অনুযায়ী কাজ করার জন্য আমরা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছি।’
নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে
এক বছর ধরেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে। এক বছরে সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। একই সঙ্গে দাম বেড়েছে চাল, ডালসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের। সরকারি টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে ট্রাকে সাজানো পণ্য কিনতে ভিড় করেছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সেখানে চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজ—এ চারটি পণ্যের চাহিদা বেশি। নির্বাচনের আগে বিষয়টি বড় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে পারে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনি, ডাল, গম, চালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। যাতে করে সরকার অনেক ছাড় দেওয়ার পরেও দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এটা যে কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘জিনিসপত্রের যে দাম বেড়েছে, এই ব্যাপারে সরকার সতর্ক আছে। দল হিসেবে আমরাও চাই জিনিসপত্রের দাম কমুক। এই ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও নেবে।’
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে গত শুক্রবার রংপুর সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, ডাল, চিনির দাম বেড়েছে। সমুদ্রপথে বেড়েছে জাহাজের ভাড়া। এ কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারেও এসব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
তবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলছেন, পণ্যের দাম বাড়া কোনো রাজনৈতিক ইস্যু না। এই ব্যাপারে উচিত হলো, অন্যান্য দেশ যেভাবে ট্যাকেল করছে, অর্থাৎ সেখানে সব রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করে সমন্বয় করছে। এটা কোনো দেশ বা সরকারের ব্যক্তিগত না। সাধারণ জনগণের সমস্যা। তাই সবাইকে নিয়েই এটার সমাধান করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয়। করোনা-পরবর্তী সময়ে পৃথিবীব্যাপী অস্থির বাজার পরিস্থিতির ধকল সামাল দিতে আমাদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা বাজারের ওপর বিরতিহীন নজর রাখছি এবং সংকট উত্তরণের আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’
নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিতর্ক
নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ডিসেম্বর মাস থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি। এতে বিএনপিসহ আটটি দল অংশ নেয়নি। একইভাবে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটি নতুন ইসির জন্য নাম আহ্বান করলেও তাতে নাম দেননি বিএনপিসহ ১৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। দলগুলোর দাবি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে লাভ নেই। নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য তারা আন্দোলন করবে।
তবে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আন্দোলনকে ইস্যু হিসেবে মনে করছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, দেশের মানুষের দাবি ছিল ইসি একটি আইনের মাধ্যমে হতে হবে। সেই আইনটি সর্বসম্মতভাবে জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। যাতে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির সাংসদ সদস্যরাও ছিলেন। এখন নতুন কমিশন গঠন নিয়ে তাঁরা রাজনৈতিক ফায়দা তেমন তুলতে পারবে না।
কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
ফারুক খান বলেন, ‘সংসদে বিএনপির সাংসদরা আইনের পক্ষে কথা বলেছিল। এখন তারা আইনের বিরুদ্ধে বলছে। এটা তাদের চরিত্র। আমরা মনে করি দলটির উচিত হবে সার্চ কমিটিতে নাম দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়া।’
ডিজিটাল আইনের নতুন নীতিমালা
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়। এই আইন নিয়ে সমালোচনা করেন দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জন্য নতুন খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করেছে। খসড়া বিধি অনুযায়ী, বিধি লঙ্ঘনকারী কোনো বার্তা আদান-প্রদান করলে আদালত ও বিটিআরসির নির্দেশ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বার্তা প্রথম যিনি দিয়েছিলেন, তাঁকে শনাক্ত করে দিতে হবে। প্রথম ব্যক্তি যদি দেশের বাইরে অবস্থান করেন, তবে দেশে যিনি অবস্থান করবেন, তিনি ‘প্রথম’ বলে অভিযুক্ত হবেন।
নতুন এই নীতিমালাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নতুন সংস্করণ বলে দাবি করছেন অনেকেই। আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, এখানে স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। গণমাধ্যমকর্মীদের একটি জায়গা থাকা উচিত। কারণ, তাঁরা যাতে গণতন্ত্রের স্বার্থে জনগণকে সচেতন করতে পারেন। মানুষের ভিউ যাতে তুলে ধরতে পারেন, সেই সুযোগ থাকা উচিত। সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা উচিত।
ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন রেগুলেশন-২০২১ আইন না হওয়া এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি আওয়ামী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান। তিনি বলেন, ‘দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা রক্ষা এবং এর মাধ্যমে গুজব সৃষ্টি করার বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন হওয়া উচিত। এই ক্ষেত্রে সরকারেরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা, নির্বাচন কমিশন গঠন, ডিজিটাল আইনসহ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে আবার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে বিএনপি। নির্বাচন কাছে এলে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ার আশঙ্কা। তাই এখন থেকে চাপ এড়ানোর কৌশল খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, বর্তমান সরকারের তিন বছর শেষ হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিকে ঘোলাটে করার জন্য বিএনপিসহ একটি পক্ষ চেষ্টা করছে। তারা পশ্চিমা ছাড়াও আওয়ামী লীগের বন্ধুদের কাজে লাগাতে চেষ্টা করছে। এ ছাড়া পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করতে পারে তারা।
তাই আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, রাজনীতি যাতে ঘোলাটে না হয় সে জন্য তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। সেখানে দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রকারীদের অপকর্ম তাঁদের জানানো হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার গেরো
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগ চাপে আছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারকে পিআর সংস্থা ও আইনজীবী নিয়োগের কথা বলা বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে মন্ত্রণালয় বলেছে, শ্রম আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। বৈঠকে বলা হয়, বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র যেসব পদক্ষেপ নেয়, তাদের ফলো করে কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ। তাই আগে থেকে সরকারকে তৎপর হতে হবে।
এরই অংশ হিসেবে নির্বাচনের আগে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতের সিমলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে মৈত্রী সম্মেলন। সেখানে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবারই আওয়ামী লীগ ও সরকারের একটি প্রতিনিধিদল সিমলা গিয়েছে। সেখানে ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাপান, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব আমাদের বন্ধু। এই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রেরও ভালো সম্পর্ক। তাদের মধ্যে আমাদের কথাগুলো ক্লিয়ার করা যেতে পারে। এই অনুযায়ী কাজ করার জন্য আমরা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছি।’
নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে
এক বছর ধরেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে। এক বছরে সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। একই সঙ্গে দাম বেড়েছে চাল, ডালসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের। সরকারি টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে ট্রাকে সাজানো পণ্য কিনতে ভিড় করেছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সেখানে চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজ—এ চারটি পণ্যের চাহিদা বেশি। নির্বাচনের আগে বিষয়টি বড় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে পারে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনি, ডাল, গম, চালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। যাতে করে সরকার অনেক ছাড় দেওয়ার পরেও দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এটা যে কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘জিনিসপত্রের যে দাম বেড়েছে, এই ব্যাপারে সরকার সতর্ক আছে। দল হিসেবে আমরাও চাই জিনিসপত্রের দাম কমুক। এই ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও নেবে।’
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে গত শুক্রবার রংপুর সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, ডাল, চিনির দাম বেড়েছে। সমুদ্রপথে বেড়েছে জাহাজের ভাড়া। এ কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারেও এসব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
তবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলছেন, পণ্যের দাম বাড়া কোনো রাজনৈতিক ইস্যু না। এই ব্যাপারে উচিত হলো, অন্যান্য দেশ যেভাবে ট্যাকেল করছে, অর্থাৎ সেখানে সব রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করে সমন্বয় করছে। এটা কোনো দেশ বা সরকারের ব্যক্তিগত না। সাধারণ জনগণের সমস্যা। তাই সবাইকে নিয়েই এটার সমাধান করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয়। করোনা-পরবর্তী সময়ে পৃথিবীব্যাপী অস্থির বাজার পরিস্থিতির ধকল সামাল দিতে আমাদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা বাজারের ওপর বিরতিহীন নজর রাখছি এবং সংকট উত্তরণের আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’
নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিতর্ক
নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ডিসেম্বর মাস থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি। এতে বিএনপিসহ আটটি দল অংশ নেয়নি। একইভাবে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটি নতুন ইসির জন্য নাম আহ্বান করলেও তাতে নাম দেননি বিএনপিসহ ১৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। দলগুলোর দাবি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে লাভ নেই। নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য তারা আন্দোলন করবে।
তবে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আন্দোলনকে ইস্যু হিসেবে মনে করছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, দেশের মানুষের দাবি ছিল ইসি একটি আইনের মাধ্যমে হতে হবে। সেই আইনটি সর্বসম্মতভাবে জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। যাতে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির সাংসদ সদস্যরাও ছিলেন। এখন নতুন কমিশন গঠন নিয়ে তাঁরা রাজনৈতিক ফায়দা তেমন তুলতে পারবে না।
কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
ফারুক খান বলেন, ‘সংসদে বিএনপির সাংসদরা আইনের পক্ষে কথা বলেছিল। এখন তারা আইনের বিরুদ্ধে বলছে। এটা তাদের চরিত্র। আমরা মনে করি দলটির উচিত হবে সার্চ কমিটিতে নাম দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়া।’
ডিজিটাল আইনের নতুন নীতিমালা
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়। এই আইন নিয়ে সমালোচনা করেন দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জন্য নতুন খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করেছে। খসড়া বিধি অনুযায়ী, বিধি লঙ্ঘনকারী কোনো বার্তা আদান-প্রদান করলে আদালত ও বিটিআরসির নির্দেশ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বার্তা প্রথম যিনি দিয়েছিলেন, তাঁকে শনাক্ত করে দিতে হবে। প্রথম ব্যক্তি যদি দেশের বাইরে অবস্থান করেন, তবে দেশে যিনি অবস্থান করবেন, তিনি ‘প্রথম’ বলে অভিযুক্ত হবেন।
নতুন এই নীতিমালাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নতুন সংস্করণ বলে দাবি করছেন অনেকেই। আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, এখানে স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। গণমাধ্যমকর্মীদের একটি জায়গা থাকা উচিত। কারণ, তাঁরা যাতে গণতন্ত্রের স্বার্থে জনগণকে সচেতন করতে পারেন। মানুষের ভিউ যাতে তুলে ধরতে পারেন, সেই সুযোগ থাকা উচিত। সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা উচিত।
ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন রেগুলেশন-২০২১ আইন না হওয়া এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি আওয়ামী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান। তিনি বলেন, ‘দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা রক্ষা এবং এর মাধ্যমে গুজব সৃষ্টি করার বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন হওয়া উচিত। এই ক্ষেত্রে সরকারেরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’

তানিম আহমেদ, ঢাকা

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা, নির্বাচন কমিশন গঠন, ডিজিটাল আইনসহ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে আবার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে বিএনপি। নির্বাচন কাছে এলে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ার আশঙ্কা। তাই এখন থেকে চাপ এড়ানোর কৌশল খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, বর্তমান সরকারের তিন বছর শেষ হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিকে ঘোলাটে করার জন্য বিএনপিসহ একটি পক্ষ চেষ্টা করছে। তারা পশ্চিমা ছাড়াও আওয়ামী লীগের বন্ধুদের কাজে লাগাতে চেষ্টা করছে। এ ছাড়া পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করতে পারে তারা।
তাই আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, রাজনীতি যাতে ঘোলাটে না হয় সে জন্য তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। সেখানে দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রকারীদের অপকর্ম তাঁদের জানানো হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার গেরো
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগ চাপে আছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারকে পিআর সংস্থা ও আইনজীবী নিয়োগের কথা বলা বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে মন্ত্রণালয় বলেছে, শ্রম আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। বৈঠকে বলা হয়, বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র যেসব পদক্ষেপ নেয়, তাদের ফলো করে কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ। তাই আগে থেকে সরকারকে তৎপর হতে হবে।
এরই অংশ হিসেবে নির্বাচনের আগে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতের সিমলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে মৈত্রী সম্মেলন। সেখানে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবারই আওয়ামী লীগ ও সরকারের একটি প্রতিনিধিদল সিমলা গিয়েছে। সেখানে ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাপান, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব আমাদের বন্ধু। এই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রেরও ভালো সম্পর্ক। তাদের মধ্যে আমাদের কথাগুলো ক্লিয়ার করা যেতে পারে। এই অনুযায়ী কাজ করার জন্য আমরা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছি।’
নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে
এক বছর ধরেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে। এক বছরে সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। একই সঙ্গে দাম বেড়েছে চাল, ডালসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের। সরকারি টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে ট্রাকে সাজানো পণ্য কিনতে ভিড় করেছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সেখানে চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজ—এ চারটি পণ্যের চাহিদা বেশি। নির্বাচনের আগে বিষয়টি বড় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে পারে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনি, ডাল, গম, চালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। যাতে করে সরকার অনেক ছাড় দেওয়ার পরেও দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এটা যে কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘জিনিসপত্রের যে দাম বেড়েছে, এই ব্যাপারে সরকার সতর্ক আছে। দল হিসেবে আমরাও চাই জিনিসপত্রের দাম কমুক। এই ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও নেবে।’
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে গত শুক্রবার রংপুর সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, ডাল, চিনির দাম বেড়েছে। সমুদ্রপথে বেড়েছে জাহাজের ভাড়া। এ কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারেও এসব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
তবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলছেন, পণ্যের দাম বাড়া কোনো রাজনৈতিক ইস্যু না। এই ব্যাপারে উচিত হলো, অন্যান্য দেশ যেভাবে ট্যাকেল করছে, অর্থাৎ সেখানে সব রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করে সমন্বয় করছে। এটা কোনো দেশ বা সরকারের ব্যক্তিগত না। সাধারণ জনগণের সমস্যা। তাই সবাইকে নিয়েই এটার সমাধান করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয়। করোনা-পরবর্তী সময়ে পৃথিবীব্যাপী অস্থির বাজার পরিস্থিতির ধকল সামাল দিতে আমাদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা বাজারের ওপর বিরতিহীন নজর রাখছি এবং সংকট উত্তরণের আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’
নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিতর্ক
নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ডিসেম্বর মাস থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি। এতে বিএনপিসহ আটটি দল অংশ নেয়নি। একইভাবে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটি নতুন ইসির জন্য নাম আহ্বান করলেও তাতে নাম দেননি বিএনপিসহ ১৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। দলগুলোর দাবি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে লাভ নেই। নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য তারা আন্দোলন করবে।
তবে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আন্দোলনকে ইস্যু হিসেবে মনে করছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, দেশের মানুষের দাবি ছিল ইসি একটি আইনের মাধ্যমে হতে হবে। সেই আইনটি সর্বসম্মতভাবে জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। যাতে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির সাংসদ সদস্যরাও ছিলেন। এখন নতুন কমিশন গঠন নিয়ে তাঁরা রাজনৈতিক ফায়দা তেমন তুলতে পারবে না।
কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
ফারুক খান বলেন, ‘সংসদে বিএনপির সাংসদরা আইনের পক্ষে কথা বলেছিল। এখন তারা আইনের বিরুদ্ধে বলছে। এটা তাদের চরিত্র। আমরা মনে করি দলটির উচিত হবে সার্চ কমিটিতে নাম দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়া।’
ডিজিটাল আইনের নতুন নীতিমালা
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়। এই আইন নিয়ে সমালোচনা করেন দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জন্য নতুন খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করেছে। খসড়া বিধি অনুযায়ী, বিধি লঙ্ঘনকারী কোনো বার্তা আদান-প্রদান করলে আদালত ও বিটিআরসির নির্দেশ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বার্তা প্রথম যিনি দিয়েছিলেন, তাঁকে শনাক্ত করে দিতে হবে। প্রথম ব্যক্তি যদি দেশের বাইরে অবস্থান করেন, তবে দেশে যিনি অবস্থান করবেন, তিনি ‘প্রথম’ বলে অভিযুক্ত হবেন।
নতুন এই নীতিমালাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নতুন সংস্করণ বলে দাবি করছেন অনেকেই। আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, এখানে স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। গণমাধ্যমকর্মীদের একটি জায়গা থাকা উচিত। কারণ, তাঁরা যাতে গণতন্ত্রের স্বার্থে জনগণকে সচেতন করতে পারেন। মানুষের ভিউ যাতে তুলে ধরতে পারেন, সেই সুযোগ থাকা উচিত। সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা উচিত।
ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন রেগুলেশন-২০২১ আইন না হওয়া এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি আওয়ামী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান। তিনি বলেন, ‘দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা রক্ষা এবং এর মাধ্যমে গুজব সৃষ্টি করার বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন হওয়া উচিত। এই ক্ষেত্রে সরকারেরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা, নির্বাচন কমিশন গঠন, ডিজিটাল আইনসহ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে আবার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে বিএনপি। নির্বাচন কাছে এলে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ার আশঙ্কা। তাই এখন থেকে চাপ এড়ানোর কৌশল খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, বর্তমান সরকারের তিন বছর শেষ হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিকে ঘোলাটে করার জন্য বিএনপিসহ একটি পক্ষ চেষ্টা করছে। তারা পশ্চিমা ছাড়াও আওয়ামী লীগের বন্ধুদের কাজে লাগাতে চেষ্টা করছে। এ ছাড়া পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করতে পারে তারা।
তাই আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, রাজনীতি যাতে ঘোলাটে না হয় সে জন্য তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। সেখানে দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রকারীদের অপকর্ম তাঁদের জানানো হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার গেরো
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগ চাপে আছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারকে পিআর সংস্থা ও আইনজীবী নিয়োগের কথা বলা বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে মন্ত্রণালয় বলেছে, শ্রম আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। বৈঠকে বলা হয়, বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র যেসব পদক্ষেপ নেয়, তাদের ফলো করে কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ। তাই আগে থেকে সরকারকে তৎপর হতে হবে।
এরই অংশ হিসেবে নির্বাচনের আগে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতের সিমলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে মৈত্রী সম্মেলন। সেখানে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবারই আওয়ামী লীগ ও সরকারের একটি প্রতিনিধিদল সিমলা গিয়েছে। সেখানে ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাপান, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব আমাদের বন্ধু। এই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রেরও ভালো সম্পর্ক। তাদের মধ্যে আমাদের কথাগুলো ক্লিয়ার করা যেতে পারে। এই অনুযায়ী কাজ করার জন্য আমরা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছি।’
নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে
এক বছর ধরেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে। এক বছরে সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। একই সঙ্গে দাম বেড়েছে চাল, ডালসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের। সরকারি টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে ট্রাকে সাজানো পণ্য কিনতে ভিড় করেছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সেখানে চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজ—এ চারটি পণ্যের চাহিদা বেশি। নির্বাচনের আগে বিষয়টি বড় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে পারে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনি, ডাল, গম, চালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। যাতে করে সরকার অনেক ছাড় দেওয়ার পরেও দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এটা যে কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘জিনিসপত্রের যে দাম বেড়েছে, এই ব্যাপারে সরকার সতর্ক আছে। দল হিসেবে আমরাও চাই জিনিসপত্রের দাম কমুক। এই ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও নেবে।’
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে গত শুক্রবার রংপুর সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, ডাল, চিনির দাম বেড়েছে। সমুদ্রপথে বেড়েছে জাহাজের ভাড়া। এ কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারেও এসব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
তবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলছেন, পণ্যের দাম বাড়া কোনো রাজনৈতিক ইস্যু না। এই ব্যাপারে উচিত হলো, অন্যান্য দেশ যেভাবে ট্যাকেল করছে, অর্থাৎ সেখানে সব রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করে সমন্বয় করছে। এটা কোনো দেশ বা সরকারের ব্যক্তিগত না। সাধারণ জনগণের সমস্যা। তাই সবাইকে নিয়েই এটার সমাধান করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয়। করোনা-পরবর্তী সময়ে পৃথিবীব্যাপী অস্থির বাজার পরিস্থিতির ধকল সামাল দিতে আমাদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা বাজারের ওপর বিরতিহীন নজর রাখছি এবং সংকট উত্তরণের আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’
নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিতর্ক
নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ডিসেম্বর মাস থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি। এতে বিএনপিসহ আটটি দল অংশ নেয়নি। একইভাবে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটি নতুন ইসির জন্য নাম আহ্বান করলেও তাতে নাম দেননি বিএনপিসহ ১৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। দলগুলোর দাবি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে লাভ নেই। নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য তারা আন্দোলন করবে।
তবে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আন্দোলনকে ইস্যু হিসেবে মনে করছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, দেশের মানুষের দাবি ছিল ইসি একটি আইনের মাধ্যমে হতে হবে। সেই আইনটি সর্বসম্মতভাবে জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। যাতে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির সাংসদ সদস্যরাও ছিলেন। এখন নতুন কমিশন গঠন নিয়ে তাঁরা রাজনৈতিক ফায়দা তেমন তুলতে পারবে না।
কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
ফারুক খান বলেন, ‘সংসদে বিএনপির সাংসদরা আইনের পক্ষে কথা বলেছিল। এখন তারা আইনের বিরুদ্ধে বলছে। এটা তাদের চরিত্র। আমরা মনে করি দলটির উচিত হবে সার্চ কমিটিতে নাম দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়া।’
ডিজিটাল আইনের নতুন নীতিমালা
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়। এই আইন নিয়ে সমালোচনা করেন দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জন্য নতুন খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করেছে। খসড়া বিধি অনুযায়ী, বিধি লঙ্ঘনকারী কোনো বার্তা আদান-প্রদান করলে আদালত ও বিটিআরসির নির্দেশ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বার্তা প্রথম যিনি দিয়েছিলেন, তাঁকে শনাক্ত করে দিতে হবে। প্রথম ব্যক্তি যদি দেশের বাইরে অবস্থান করেন, তবে দেশে যিনি অবস্থান করবেন, তিনি ‘প্রথম’ বলে অভিযুক্ত হবেন।
নতুন এই নীতিমালাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নতুন সংস্করণ বলে দাবি করছেন অনেকেই। আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, এখানে স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। গণমাধ্যমকর্মীদের একটি জায়গা থাকা উচিত। কারণ, তাঁরা যাতে গণতন্ত্রের স্বার্থে জনগণকে সচেতন করতে পারেন। মানুষের ভিউ যাতে তুলে ধরতে পারেন, সেই সুযোগ থাকা উচিত। সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা উচিত।
ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন রেগুলেশন-২০২১ আইন না হওয়া এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি আওয়ামী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান। তিনি বলেন, ‘দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা রক্ষা এবং এর মাধ্যমে গুজব সৃষ্টি করার বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন হওয়া উচিত। এই ক্ষেত্রে সরকারেরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’


গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।


নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা, নির্বাচন কমিশন গঠন, ডিজিটাল আইনসহ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে আবার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে বিএনপি। নির্বাচন কাছে এলে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ার আশঙ্কা। তাই এখন থেকে চাপ এড়ানোর কৌশল খুঁজছে
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]


নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা, নির্বাচন কমিশন গঠন, ডিজিটাল আইনসহ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে আবার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে বিএনপি। নির্বাচন কাছে এলে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ার আশঙ্কা। তাই এখন থেকে চাপ এড়ানোর কৌশল খুঁজছে
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।


নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা, নির্বাচন কমিশন গঠন, ডিজিটাল আইনসহ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে আবার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে বিএনপি। নির্বাচন কাছে এলে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ার আশঙ্কা। তাই এখন থেকে চাপ এড়ানোর কৌশল খুঁজছে
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।


নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা, নির্বাচন কমিশন গঠন, ডিজিটাল আইনসহ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে আবার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে বিএনপি। নির্বাচন কাছে এলে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ার আশঙ্কা। তাই এখন থেকে চাপ এড়ানোর কৌশল খুঁজছে
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫