Ajker Patrika

দেড় মাস বন্ধ টেকনাফ স্থলবন্দর, ক্ষতি ১৫০ কোটি টাকা

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
Thumbnail image

কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি দেড় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় দেড় শ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা। এ ছাড়া কবে নাগাদ আবার বাণিজ্য চালু হবে, তা-ও বলা যাচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজ্যে আন্দোলন চলছে। কোনো কোনো রাজ্যে একাধিক স্বাধীনতাকামী সংগঠন জোট গঠন করে জান্তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে। দেশটির রাখাইন রাজ্যে চলছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘর্ষ। এ সংঘর্ষের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের আমদানি-রপ্তানিতে।

রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের অবস্থান টেকনাফের উল্টো পাশে নাফ নদীর ওপারে। আর টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে শহরটির দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। এই শহরে আরাকান আর্মির সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হচ্ছে।

টেকনাফ স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুর রহমান বলেন, গত ১৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের আকিয়াব শহরে কারফিউ জারি করা হয়। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংঘর্ষ চলছে। স্থানীয় প্রশাসন আকিয়াব শহরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এর প্রভাব পড়ে আমদানি-রপ্তানিতে। মূলত সংঘর্ষের জেরেই ১৩ নভেম্বর থেকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়।

টেকনাফ কাস্টমস সূত্র জানায়, মাছ, কাঠ, আদা, নারকেল, আচার, সুপারি, শুঁটকিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয় এ বন্দর দিয়ে। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বন্দরের জেটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কোনো কার্গো ট্রলার বা জাহাজ নেই সেখানে।

কার্যক্রম না থাকায় বন্দরের কর্মরত শ্রমিকেরা অলস সময় পার করছেন। নাফ নদীতেও নেই পণ্যবোঝাই ট্রলার-জাহাজ। বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৩ নভেম্বরের পর ২০ নভেম্বর তিনটি ও ২১ নভেম্বর দুটি বোট পণ্য নিয়ে টেকনাফে এসেছিল। এরপর মিয়ানমার থেকে আর কোনো পণ্য আসেনি।

টেকনাফ শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা এ এস এম মোশাররফ হোসেন বলেন, এই বন্দরে দৈনিক ৩ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হয়। সে হিসাবে দেড় মাসে টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে প্রায় দেড় শ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলো না।

টেকনাফ-মংডু সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন এই বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুর রহমান বলেন, আমদানি-রপ্তানি আবার কবে নাগাদ চালু হবে তাও বলা যাচ্ছে না। এতে করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। স্থলবন্দরের মালপত্র ওঠানামার কাজের জন্য ছয় শতাধিক শ্রমিক রয়েছেন। গত দেড় মাস কাজ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন এই শ্রমিকেরাও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত