Ajker Patrika

খাদ্যের সন্ধানে টিলা চষছে হাতির পাল, আতঙ্কে মানুষ

হালুয়াঘাট প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১: ৪৭
খাদ্যের সন্ধানে টিলা চষছে হাতির পাল, আতঙ্কে মানুষ

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে এক টিলা থেকে অন্য টিলা চষে বেড়াচ্ছে পাহাড়ি বন্য হাতির পাল। এক সপ্তাহ ধরে ৩০-৩৫টি হাতির দল টিলা চষে বেড়ায়।

এতে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে এলাকাবাসীর। সন্ধ্যা হলেই এসব হাতি নেমে আসে লোকালয়ে। হানা দিয়ে নষ্ট করছে ফসল। বন বিভাগের কর্মকর্তারা হালুয়াঘাটের সীমান্তে হাতির পাল লোকালয়ে প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে সরকারের বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

ময়মনসিংহ বন বিভাগ ও কয়েকজন এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার সীমান্তবর্তী কড়ইতলী, লক্ষ্মীকুড়া, বানাইচিরিঙ্গিপাড়া, পার্শ্ববর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি সীমান্তে প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকা চষে বেড়ায় ৩০-৩৫টি বন্য হাতির দল।

এতে মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেই হাতির পাল নেমে আসে লোকালয়ে। নষ্ট করে আমন ধান ও সবজিখেত। অর্ধেক খেয়ে এবং পা দিয়ে পৃষ্ট করে ধান ও সবজিখেত নষ্ট করে। তখন এলাকাবাসী ফসল ও বাড়িঘর রক্ষা করতে মশাল জ্বালিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে হইহুল্লোড় করে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন; কিন্তু কয়েকদিন ধরে তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল রক্ষা করতে গিয়ে হাতির পায়ে পৃষ্ট হয়ে নওশের আলী নামের এক কৃষক মারা গেছেন। এ নিয়ে এ বছর শেরপুরের নালিতাবাড়ী ও হালুয়াঘাট সীমান্তে হাতির পায়ে পৃষ্ট হয়ে তিনজন মারা গেছেন। এ ছাড়াও গত বছর এই দিনে অপূর্ব চাম্বুগং নামের একজন হাতির পায়ে পৃষ্ট হয়ে মারা যান।

কোচপাড়া এলাকার কৃষক হুসেন আলী, হোসেন ও ইসাক আলী বলেন, এক সপ্তাহে এলাকার ৩০-৪০ জন কৃষকের ১০ একর জমিতে থাকা লাউ, ঝিঙা, করলাখেত খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে দিছে। অনেকে ধারদেনা করে সবজি আবাদ করেছেন।

কাজিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রত্যেক বছর এ সময়ে বন্য হাতিগুলাইন বেশি অত্যাচার করে। আগে তো মশাল জ্বলাইলে ভয় পাইত। এহন আত্তি আর ভয় পায় না।’

কড়ইতলী এলাকার কৃষক জয়নাল মিয়া বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে আমরা আতঙ্কে আছি। সারারাত জাইগা পাহারা দিয়েও ফসল রক্ষা করতে পারতেছি না। হাতি-আতঙ্ক পিছু ছাড়ছেই না। ’

এ ব্যপারে স্থানীয় ভূবনকুড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান এম সুরুজ মিয়া বলেন, হাতি তাড়াতে পরিষদ থেকে এলাকার কৃষকদের বিভিন্ন সময় ডিজেল, টর্চলাইট দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বন বিভাগের গোপালপুর শাখার বিটকর্মকর্তা মো. মাহজারুল হক বলেন, কয়েকদিন ধরে হালুয়াঘাটের সীমান্তে হাতির পাল লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এ ব্যপারে সরকারের বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত