Ajker Patrika

‘বাড়ি বুঝি ভাইঙা পড়ে নদে’

আমিনুল হক, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) 
আপডেট : ২৭ মে ২০২২, ১৭: ০২
‘বাড়ি বুঝি ভাইঙা পড়ে নদে’

‘সারা রাত ঘুম ধরে না, সবসময় আতঙ্কে থাকি বাড়ি বুঝি ভাইঙা পড়ে নদে, এখনো বানের (বন্যার) সময় হয় নাই, তাতেই যেভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে, বান এলে বাড়িভিটা রক্ষা হবে না, পরিবার-পরিজন নিয়ে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গা নেই, খুবই দুশ্চিন্তা হচ্ছে।’ ব্রহ্মপুত্রের তীরে বসতভিটায় দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন গাইবান্ধা ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের দাড়িয়ারভিটা গ্রামের আনোয়ারা বেগম (৪৬)।

কই ধরনের কথা বলেন, ওই গ্রামের আব্দুল আজিজ, শামছুল আলম, আবু বক্কর, জাহিদুল ইসলাম ও ছকু মিয়াসহ অনেকে।

উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়ারভিটা গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, এলাকাটিতে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন বেড়ে গেছে। বাড়িঘর ভেঙে ও গাছপালা কেটে নিয়ে এলাকা ছাড়ছেন তীরের বাসিন্দারা।

জানা গেছে, উপজেলার সাত ইউনিয়নেই প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বন্যা ও নদীভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে সর্বহারা হন নদীপাড়ের শত শত পরিবার। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। স্থানীয়ভাবে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়।

ভাঙনে নদেরগর্ভে বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর, গাছপালা ও আবাদি জমি। সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে, উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়ারভিটা, ভুষিরভিটা, দাড়িয়ারভিটা, এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের জিগাবাড়ী, সন্ন্যাসীর চর, আনন্দবাড়ী, চর চৌমহন, ধলী পাটাধোয়া, গজারিয়া ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া, গলনা ও জিয়াডাঙ্গা গ্রামে।

এ ছাড়া ফুলছড়ি ও ফজলুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ বছর ভাঙনের শিকার হয়ে এরই মধ্যে দুই শতাধিক পরিবার তাঁদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। ভাঙনে হুমকিতে রয়েছে উড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাবিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর-কালাসোনা সরকারি প্রাথমিক, দাড়িয়ারভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকার বহু ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।

গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলী খান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পভুক্ত মুন্সিপাড়ায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার সঠিক সময়ে কাজ না করায় এ পরিস্থিতি। মুন্সিপাড়া এলাকা রক্ষায় জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লকের কাজ করার কথা। কিন্তু ঠিকাদার এখনো জিও ব্যাগের কাজই করতে পারেনি। প্রকল্পের কাজটি দ্রুত শেষ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় উপপ্রকৌশলী মজিবর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নদীভাঙনরোধে উড়িয়ার কটিয়ারভিটা থেকে ভূষিরভিটা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ৬৫০ মিটার এলাকায় ৬৫ হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। প্রকল্প এলাকা ভাঙনমুক্ত হলেও আশপাশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পানি বৃদ্ধির কারণে মুন্সিপাড়া এলাকার প্রকল্পের কাজ কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

বিএনপির ক্লাবঘরে হামলা: জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ভাঙচুর

এলাকার খবর
Loading...