Ajker Patrika

বাহারি নামে বাজারে ভেজাল ঘি

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ১২: ২৪
বাহারি নামে বাজারে ভেজাল ঘি

ডালডা আর পাম অয়েলের সঙ্গে সামান্য পরিমাণে ঘি, ফ্লেভার আর রং মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে ঘি। আর বাহারি নাম দিয়ে এই ঘি কৌটাজাত করা হচ্ছে। এরপর বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) নকল সিল লাগিয়ে অবাধে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিভিন্ন নামে বাজারজাত করা হচ্ছে এই ভেজাল ঘি।

জানা যায়, অন্য সময়ের চেয়ে রমজানে ঘিয়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় একটি অসাধু চক্র প্রতিবছর ভেজাল ঘি তৈরি করে বাজারজাত করে আসছে। এই ভেজাল ঘিতে সয়লাব রাঙ্গুনিয়ার প্রতিটি বাজার। দোকানিরাও এসব ঘি ‘খাঁটি গাওয়া ঘি’ হিসেবে ক্রেতাদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন। এতে দোকানিরা আর্থিকভাবে লাভবান হলেও ঠকছে সাধারণ মানুষ। বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা তাঁদের ব্যবসা ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলার রোয়াজার হাট, মরিয়মনগর চৌমুহনী, লিচুবাগান, দোভাষি বাজার, গোচরা বাজার, শান্তির হাট, ক্ষেত্র বাজার, ধামাইর হাট, রাণীর হাট, রাজার হাট, ব্যুহচক্র হাটসহ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় প্রতিটি স্টেশনে ছোট-বড় সব মনিহারি দোকানে দেদার বিক্রি হচ্ছে ভেজাল ঘি। সান অস্ট্রেলিয়ান, বাঘাবাড়ী স্পেশাল, অস্ট্রেলিয়ান স্পেশাল, থ্রি স্টার ঘি, ভিআইপি ঘি, শাহি স্পেশাল গাওয়া ঘি, অনিল বাঘাবাড়ী স্পেশাল ঘি, মনোরমা ঘিসহ অন্তত ২০টি ভুঁইফোড় ও অবৈধ কোম্পানির ঘি বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে।

এসবের মধ্যে কয়েকটি কোম্পানির বৈধতা থাকলেও ভেজালকারীরা ওসব কোম্পানির লেবেল ও বিএসটিআইয়ের নকল সিল ব্যবহার করে সরবরাহ করছেন। অথচ এসব ঘিয়ের প্রতিটি কৌটায় ‘১০০ ভাগ খাঁটি ঘি’ বাক্যটি লেখা। ঘিয়ের নামসংবলিত কাগজে বিএসটিআইয়ের নকল সিল মুদ্রণ করে রাখা হয়েছে। তবে সে কাগজের কোনো কোনোটিতে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ নেই। ফলে সাধারণ ক্রেতার সঙ্গে ঠকছে কোম্পানিও।

দোকানিরা প্রশাসনের চোখ এড়াতে দোকানের তাকগুলোতে কয়েকটি পরিচিত কোম্পানির ঘি সাজিয়ে রাখলেও নকল ও ভেজাল ঘিয়ের কৌটাগুলো রাখা হয় আড়ালে। অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি রমজান ঘিরে ঘিয়ের বাজারও চড়া। সাধারণ ক্রেতারা তুলনামূলক কম দামের ঘিয়ের খোঁজ করেন বেশি। সেই সুযোগে অতিরিক্ত লাভের আশায় দোকানিরা এসব নকল ঘি বিক্রিতে ঝুঁকে পড়েছেন। সুযোগ বুঝে এসব ঘি উচ্চমূল্যেও বিক্রি করতে দেখা যায়।

উপজেলার বৃহত্তম বাজার রোয়াজার হাটের একজন মুদিদোকানি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রমজানে ঘিয়ের চাহিদা বেড়ে যায় প্রায় দ্বিগুণ। এ সুযোগে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ঘিয়ের পাশাপাশি নিম্নমানের ঘিও বিক্রি করা হয়। এক সময় দোকানিদের নগর থেকে পণ্য এনে বিক্রি করতে হতো। এখন কোম্পানির লোকজনই পণ্য দোকানে এসে দিয়ে যায়।

ইউএনও ইফতেখার বলেন, উপজেলার বাজারগুলোতে বেশি দামে পণ্য বিক্রি, দোকানে মূল্যতালিকা না টাঙানো, ভেজাল পণ্য বিক্রিসহ নানান অনিয়ম প্রতিরোধে প্রশাসন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। এ অভিযান পুরো রমজান মাসে চলবে। যেখানেই ভেজাল পণ্য পাওয়া যাবে সঙ্গে সঙ্গে জব্দ ও জরিমানা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত