Ajker Patrika

এত টিকিট যায় কোথায়

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২২, ১০: ০১
এত টিকিট যায় কোথায়

অনলাইনে কয়েক মিনিটেই ট্রেনের টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে যায়। আর কাউন্টারে কয়েক ঘণ্টা পরপরই টিকিট আর পাওয়া যায় না। সারা দেশে প্রায় ২৪ হাজার টিকিট এভাবে হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। টিকিটের দায়িত্ব সহজ লিমিটেড নেওয়ার পর এই ভোগান্তি আরও বেড়েছে। একদিকে অনলাইন বিড়ম্বনা, অন্যদিকে সার্ভার ডাউন—সব মিলিয়ে জগাখিচুড়ি অবস্থা রেলের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ বড় বড় বিভাগীয় স্টেশনে কাজ করছেন আগে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস লিমিটেডের (সিএনএস) দায়িত্ব পালন করা অপারেটররা। যাদের বিরুদ্ধে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিভিন্ন কোটায় টিকিট সংরক্ষণ করার পদ্ধতি বাতিল করা হলেও এই অপারেটররা নামে-বেনামে টিকিট সংরক্ষণ করে রাখছেন। ফলে টিকিট পেতে আগের মতোই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।

টিকিট না পাওয়ার ভোগান্তির সঙ্গে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে অনলাইন বিড়ম্বনা। যেমন-অনলাইনে টিকিট কাটার পর টাকা কেটে না রাখা, টাকা কাটলেও টিকিট না পাওয়া, এক টিকিটে দুবার টাকা কাটা, একই টিকিট দুজনকে বরাদ্দ দেওয়া ও সার্ভার ডাউনসহ বিভিন্ন অভিযোগ আসছে সহজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে।

গতকাল চট্টগ্রামে স্টেশনে দেখা যায়, অন্য দুদিনের তুলনায় টিকিট প্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড়। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য টিকিট কাটতে আসা আরমান উল ইসলাম বলেন, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টার পরও টিকিট কাটতে পারিনি। স্টেশনে সকাল ৮টার দিকে এসে দেখি দীর্ঘ লাইন। টিকিটও নাকি বেশি নেই, পাব কিনা জানি না।’ 
রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা সব বিষয়ে সহজকে বলেছি। তারা বলেছে, সার্ভারে কাজ চলার কারণে এমন সমস্যা তৈরি হয়েছে। ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে বলে জানান তারা।’

টিকিট কারা কাটছে তার তথ্য মনিটরিং করলে টিকিট কালোবাজারি অনেকাংশে কমবে বলে মনে করেন রেলওয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন।


মাহবুব কবির বলেন, কারা টিকিট কাটছে, তাদের তথ্যটাও তদারকি করা দরকার। কোথাও টিকিট ব্লক করে রাখা হয়েছে কিনা, সার্ভারে যারা দায়িত্বে আছেন তারা কেউ টিকিট সংরক্ষণ করে রাখছে কিনা-এসব তথ্য থাকলে টিকিট কালোবাজারি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এ ছাড়া বিভিন্ন স্টেশনে সরেজমিন মনিটরিং করলে টিকিট কালোবাজারি শূন্যের কোটায় নেমে আসবে।

দায়িত্ব পালন করার সময় নিজের উদ্যোগের কথা জানিয়ে বর্তমানে ইভ্যালির এই এমডি বলেন, টিকিট যার ভ্রমণ তার শুধু এটি তদারকি করলে টিকিট সিস্টেমে অনেক পরিবর্তন আসবে। আমি এমন একটি অ্যাপসের কথা বলছিলাম, যেখানে যাত্রীদের সব তথ্যই থাকবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে না চলতে পারলে সংকট আরও বাড়বে।

সহজ ডটকমের ব্যবস্থাপক ফারহাত আহমেদ (জনসংযোগ) বলেন, প্রতি মিনিটে ১০ লাখ মানুষ সার্ভার ভিজিট করছে। টিকিট থাকার পরিপ্রেক্ষিতে সবাই টিকিট পাচ্ছেন। যারা টিকিট পাচ্ছেন না, তারাই বিভিন্ন মিথ্যাচার করছে। সিএনএসের আগের অপারেটরদের কালোবাজারির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের সিস্টেমে টিকিট সংরক্ষণ করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি অতিরিক্ত টিকিট কাটে বা রাখে তাদের আমরা জিজ্ঞেসাবাদ করি। মোটকথা অনিয়মের কোনো সুযোগ আমরা রাখছি না।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, টিকিট ব্লক করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ প্রমাণ দিতে পারলে জড়িতদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত