Ajker Patrika

কাজ শেষ হওয়ার আগেই বাঁধে ফাটল

ফরিদ খান মিন্টু, শরণখোলা (বাগেরহাট)
কাজ শেষ হওয়ার আগেই বাঁধে ফাটল

শরণখোলা-মোরেলগঞ্জের ৬২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে। তিন বছরে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ বারবার বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ পঞ্চম দফা বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিন বছর মেয়াদি এই বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ আট বছরে গড়িয়েছে। চীনের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ করছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে তিন শ কোটি টাকা।

গত শুক্রবার বাগেরহাটের শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধের কাজ শেষ হওয়ার আগেই গাবতলায় বলেশ্বর নদের তীরে বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।

ফাটল এলাকা পরিদর্শনে গেলে শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ সাউথখালী (গাবতলা) গ্রামের বাসিন্দা আ. রশিদ হাওলাদার, সোবাহান হাওলাদার ও লিটন হাওলাদার বলেন, দুই-তিন দিন ধরে হঠাৎ করে বলেশ্বর নদীর তীরে নির্মিত নতুন ওয়াপদা বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।

প্রায় এক শ ফুট জায়গাজুড়ে বাঁধে ফাটল ধরায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে অন্তত ১০টি পরিবারের বসতঘর। বাঁধ নির্মাণে মাটির বদলে বেশির ভাগ বালু ব্যবহার এবং নদীশাসন না মানায় বাঁধে এই ফাটল দেখা দিয়েছে বলে গ্রামবাসীরা অভিযোগে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সাড়ে তিন শ কোটি টাকা ব্যয়ে শরণখোলা-মোরেলগঞ্জের ৩৫/১ পোল্ডারে ৬২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়। তিন বছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পের মেয়াদ ৫ দফা বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। চীনের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ করছে।

উপজেলার দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের গাবতলা এলাকার বাসিন্দা মো. মোশাররফ হোসেন খান, মোকসেদ আলী সরদার এবং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাকির হাওলাদার জানান, ফাটল ধরা এলাকার লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। ফাটলের জায়গা থেকে যেকোনো সময় ধসে বাঁধ-লাগোয়া বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত জুন মাসে বাঁধ হস্তান্তরের আগেই বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ায় তাঁদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, গাবতলাসহ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে মাঝেমধ্যে ফাটল ও দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। বেড়িবাঁধ 
নির্মাণে চরম দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন চেয়ারম্যান।

উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম মোবাইল ফোনে বলেন, শরণখোলার গাবতলায় বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নানা জটিলতায় তিন বছর মেয়াদি বেড়িবাঁধের কাজের মেয়াদ ৫ দফা বাড়িয়ে আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনরায় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে ওই নির্বাহী প্রকৌশলী স্বীকার করেছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত