Ajker Patrika

শীতলীকরণ কেন্দ্র না থাকায় লোকসানে গরুর খামারিরা

নীলফামারী ও ডিমলা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭: ৩৯
শীতলীকরণ কেন্দ্র না থাকায় লোকসানে গরুর খামারিরা

নীলফামারীর ডিমলায় দুধ শীতলীকরণ কেন্দ্র না থাকায় খামারিদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার চরাঞ্চলের প্রান্তিক পর্যায়ে দুধের দাম আশানুরূপ না পাওয়ায় গাভি পালনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন তাঁরা। বন্ধ হয়ে গেছে অন্তত ৪০টি খামার। ফলে এর সঙ্গে যুক্ত পাঁচ শতাধিক শ্রমিক এখন বেকার।

প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৪৫০টি দুগ্ধ খামার ও চরাঞ্চলের প্রান্তিক পর্যায়ে শতাধিক ছোট-বড় খামার রয়েছে। সব মিলে দেশি গাভি ৯৫ হাজার ৪৯৯টি ও খামারগুলোতে উন্নত সংকর জাতের ৪২ হাজার ৩৩৯ টিসহ মোট ৩১ হাজার ৭৬৮টি গাভি রয়েছে। এ ছাড়া একটি-দুটি করে গাভি পালনকারী ব্যক্তির সংখ্যা পাঁচ শর বেশি।

খামারিরা জানান, উপজেলায় প্রতিদিন প্রায় ৬০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত দুধ বাজারে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু শীতলীকরণ কেন্দ্র না থাকায় ক্রেতা ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা হোটেল ও মিষ্টির দোকানগুলোতে প্রতি লিটার দুধ পাইকারি বিক্রি করেন ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ টাকায়। অথচ সিলিং সেন্টারে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। খড়, ভুসিসহ দানাদার খাদ্য ও ওষুধের দাম অতিমাত্রায় বৃদ্ধি হলেও সে তুলনায় দুধের দাম বাড়ছে না।

একই অবস্থা চরাঞ্চলের গাভির মালিকদের। তাঁরা গাভি পালনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। বছরদশেক আগে বেসরকারি একটি সংস্থা ব্র্যাক সিলিং সেন্টার স্থাপন করে দীর্ঘদিন ধরে খামার ও প্রান্তিক গাভি পালন মালিকদের কাছ থেকে দুধ কিনত। সিলিং সেন্টারকে কেন্দ্র করে প্রচুর খামার গড়ে ওঠে। কিন্তু ২০১৪ সালে সিলিং সেন্টারটি প্রত্যাহার করে নিলে দুধের বাজার মারাত্মক হ্রাস পায়। বন্ধ হয়ে যায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা দুগ্ধবতী গাভির খামার।

ডাঙ্গারহাট গ্রামের ছোঁয়া ডেইরি খামারের মালিক ওমর ফারুক বলেন, খামারে ৩০০টি উন্নত সংকর জাতের গাভি রয়েছে তাঁর। প্রতিদিন গড়ে ৪০০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। প্রতি লিটার দুধ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করেন। তাঁর মতে, প্রতি লিটার দুধে কমপক্ষে ২০ টাকা কম ধরে বিক্রি করতে হচ্ছে। শীতলীকরণ কেন্দ্র না থাকায় খামারিরা দুধের বাজারমূল্য পাচ্ছেন না।

শহিদুল ডেইরি ফার্মের মালিক শহিদুল ইসলাম জানান, তাঁর খামারে ১৪টি উন্নত সংকর জাতের গাভি আছে। প্রতিদিন ১০০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। কিন্তু এখানে দুধ ক্রয় বা শীতলীকরণ কেন্দ্র না থাকায় ছানা তৈরি করে বিভিন্ন হোটেলে বিক্রি করছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. সাইদুর রহমান জানান, উপজেলায় গাভি পালনের অনেক সম্ভাবনা থাকলেও দুধ শীতলীকরণ কেন্দ্র না থাকায় সে সম্ভাবনা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি দুধের বাজারে ধস নামায় গাভির খামার ও ব্যক্তিপর্যায়ে গাভি পালনে উৎসাহ হারাচ্ছেন তাঁরা।

সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আফতাব উদ্দিন সরকার জানান, উপজেলায় সিলিং সেন্টার না থাকায় দুগ্ধ খামারিদের দুর্দশার কথা জাতীয় সংসদে তুলে ধরেছেন। তিনি এ উপজেলায় সরকারিভাবে একটি দুধ শীতলীকরণ কেন্দ্র স্থাপনে জোর দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোবাইল হাতে ধোঁয়ার ভেতর থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসেন রমেশ, ভিডিও প্রকাশ

ইরানের জন্য ইসরায়েলকে বিসর্জন দেবে রাশিয়া?

রাস্তায় নারীকে চড় মেরে বাইকচালক বললেন, ‘নিজের দেশে ফিরে যাও!’

নেতানিয়াহু বাংকারে লুকিয়ে, ট্রাম্পের একটি ফোনকলই যথেষ্ট: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইরানের ভান্ডারে কত ক্ষেপণাস্ত্র আছে—কত দিন যুদ্ধ চলবে এতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত