৩০০ টাকা মজুরির দাবি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২২, ১০: ২১
Thumbnail image

ন্যূনতম ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেন মৌলভীবাজারের ৯২টি চা-বাগানের চা-শ্রমিকেরা। একই সঙ্গে কর্মসূচি পালন করেছেন দেশের ১৬৭টি চা-বাগানসহ ফাঁড়ি বাগানগুলোর শ্রমিকেরা। সারা দেশে একযোগে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়ে তিন দিনের এ কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।

বর্তমানে ১২০ টাকা মজুরির সঙ্গে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা প্রস্তাব করলে এর বিরোধিতা করে আন্দোলন শুরু করেন চা-শ্রমিকেরা।

এ সময় শ্রমিকেরা বলেন, ‘আমাদের শ্রম আর ঘামে চা-শিল্পের উন্নয়ন। অথচ আমাদের খাওয়া, চিকিৎসা, কাপড়, লেখাপড়া সর্বোপরি জীবনযাপন করা অনেক কষ্টের। এ সময়ের মধ্যে মজুরি বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে পরবর্তীতে পূর্ণদিবসসহ সড়ক অবরোধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। যদি এর মধ্যে বেতন বাড়ানোর বিষয় কর্তৃপক্ষ মেনে নেয়, তবে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে।

জুড়ী উপজেলার সোনারুপা চা-বাগানের বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি মতি রুদ্রপাল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ৩০০ টাকা মজুরির জন্য আমরা আন্দোলন করে আসছি। মজুরি বোর্ডে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের এ আন্দোলন। ১২০ থেকে ১৪ টাকা আমাদের হাজিরি বাড়ানোর প্রস্তাব আনা হয়েছিল; যা দিয়ে কোনো শ্রমিকের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানো অসম্ভব।’

সোনারুপা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক নাহিদ ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ‘চা-শ্রমিকের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চা-সংসদের প্রতিনিধিরা চা-বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করেন। বাগানে কর্মবিরতি করতে হলে বোর্ড লিখিতভাবে আমাদের জানায়। এ বাগানে লিখিত কোনো কাগজ পাইনি। চা-শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণভাবে এ কর্মসূচি পালনের জন্য মৌখিকভাবে আমাকে জানান।’

মজুরি বাড়ানোর দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বিভিন্ন বাগানে গিয়ে অংশ নেন।

এ ছাড়া শমশেরনগর চা-বাগান কারখানার সামনে মনু-দলই ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক নির্মল পাইনকার নেতৃত্বে বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি-সম্পাদকসহ নেতারা কর্মবিরতিতে অংশ নেন। নির্মল পাইকার বলেন, ‘সারা দেশের চা-শ্রমিক ও নেতারা ঐক্যবদ্ধ। আমাদের দাবি মালিকপক্ষকে মানতে হবে।’

চা-শ্রমিক ইউনিয়নের বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, ‘প্রতিবছর মজুরি বাড়ানোর কথা থাকলেও তিন বছর ধরে বাড়ানো হচ্ছে না। তিন দিনের মধ্যে দাবি না মানা হলে দেশের সব বাগান একসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

সিলেট বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চা-শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর বিষয়টি মালিকপক্ষ ও চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে হয়। সেখানে আমাদের হস্তক্ষেপের সুযোগ কম। তাঁরা আসলে সেক্ষেত্রে দুপক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করতে পারি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত