Ajker Patrika

মাস না যেতেই সড়ক বেহাল

মনিরামপুর প্রতিনিধি
মাস না যেতেই সড়ক বেহাল

মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কটিকে উপজেলার সবচেয়ে ভালো সড়ক বলে দাবি করতেন এলাকাবাসী। এ বছরের মার্চ মাসে সড়কের হোগলাডাঙা থেকে হাজিরহাট পর্যন্ত সড়কটির সংস্কারকাজ শেষ হয়। কিন্তু সংস্কারের ১ মাস না যেতেই সড়কটির পাঁচ থেকে ছয় জায়গা দেবে যায়। সেই থেকে প্রায় ৯ মাস উপজেলার সবচেয়ে ভালো এ সড়কটি বেহাল হয়ে পড়ে আছে।

   সড়কের একাধিক জায়গা গভীর হয়ে দেবে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে যাত্রী ও ছোটবড় যানবাহনগুলোকে। সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করে জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের দুই-তৃতীয়াংশ দেবে যাওয়ায় ভালো অংশ দিয়ে দুই ও তিন চাকার যান চলাচল করতে পারলেও বিপাকে পড়ছেন চার চাকার চালক ও যাত্রীরা। ঝুঁকি নিয়ে গর্ত মাড়িয়ে পার হতে হচ্ছে বড় যানবাহনগুলোকে। আবার প্রাণের ভয়ে বাহন থেকে নেমে ভাঙা অংশ পার হতে হচ্ছে যাত্রীদের। গর্তগুলো সংস্কার না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারীরা। গেল ৯ মাস সড়কটি এমন বেহাল হলেও তা সংস্কারে উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। সড়কের এমন দশায় প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মনিরামপুরের ব্যস্ততম সড়কগুলোর মধ্যে অন্যতম মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়ক। বহু বছর সড়কটি অবহেলিত ছিল। পুরোনো পিচ ও খোয়া উঠে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল সড়কটি। তবে সর্বশেষ আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির ৩ দশমিক ২ কিলোমিটারের কাজ শুরু হয়। কাজের দায়িত্ব পান শাহারুল ইসলাম নামে যশোরের এক ঠিকাদার।

এদিকে সড়কের নতুন কাজ হওয়ায় খুশি হয়েছিলেন পথচারী ও স্থানীয় জনসাধারণ। তবে মাস না যেতেই সড়কের কয়েক স্থান দেবে বড় গর্ত হওয়ায় আবার ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। 
সড়কটির হোগলাডাঙা থেকে হাজিরহাট বাজার অংশে রাস্তার দুই ধারে বেশ কয়েকটি ডোবা রয়েছে। অভিযোগ উঠছে, কংক্রিট দিয়ে ডোবাগুলোর পাড় বাধাই না করে রাস্তার কাজ করা হয়েছে। রাস্তার দুপাশ বাধাতে গিয়ে পাশের মাটি কেটে আবার রাস্তায় ফেলা হয়েছে। সংস্কারকাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের খোয়া। ফলে সড়ক দেবে গেছে। এদিকে কাজ শেষের এক মাসের মাথায় রাস্তা ধসে যাওয়ার খবর শুনে তড়িঘড়ি মাটি দিয়ে ভাঙা অংশ ভরাট করা হয়। সেই অংশগুলো এখন ভেঙে বড় হচ্ছে। পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারের লোকজন ইচ্ছেমতো কাজ করেছে। নিম্ন মানের খোয়া দিয়ে রাতের বেলায় কাজ করেছে। বাধা দিয়েও সুফল মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে অভিযোগ জানালেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সংস্কারকাজ চলাকালে সংশ্লিষ্ট কেউ সড়কটি দেখতেও আসেননি। 
হরিদাসকাটি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রনব বিশ্বাস বলেন, ‘সড়কটির হাজিরহাট বাজারের একটু দূরে, পাঁচবাড়িয়া কলেজের সামনে ও পাঁচবাড়িয়া বাজারসহ কয়েক জায়গায় ভেঙে বড় গর্ত হয়েছে। রাস্তার এ অংশগুলো ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হচ্ছে।’

এদিকে গত ৬ সেপ্টেম্বর ‘মাস না যেতেই দেবে গেল’ শিরোনামে হোগলাডাঙা বাজার-হাজিরহাট সড়কের ভাঙা অংশ নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। তখন ঠিকাদারসহ উপজেলা প্রকৌশলী অফিস দ্রুত সড়ক সংস্কার করে দেওয়ার কথা বলেন। পরে আর সংস্কার কাজ করতে দেখা যায়নি। 
সংস্কারকাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) নেয়ামত আলী বলেন, ‘এ এলাকার মধ্যে এ সড়কের  কাজ সবচেয়ে ভালো হয়েছিল। পুকুরের পাড় বাঁধাইয়ের কাজও করা হয়েছিল। তারপরও মাটি ধসে সড়কটির কিছু জায়গা দেবে গেছে।’

 আরও বলেন, ‘ঠিকাদারের জামানতের মেয়াদ এখনো আছে। তাঁকে দুবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। জামানত তোলার আগে ধসে যাওয়া স্থানগুলো সংস্কার করা হবে। তবে এ ব্যাপারে ঠিকাদার শাহারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। 
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, ‘আমি নিজে রাস্তার গর্তগুলো দেখেছি। গাড়ি নিয়ে পারাপারের সময় আমিও নেমে পার হয়েছি। দ্রুত গর্ত সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোররাতে হাঁসের মাংস খেতে ৩০০ ফুটে যান আসিফ মাহমুদ, না পেয়ে যান ওয়েস্টিনে

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ভুলভাবে কথা বলেছেন: প্রেস সচিব

নীলা মার্কেটের হাঁসের মাংস নাকি ওয়েস্টিনের—কোনটি সেরা

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শিবির নেতা, ছাত্রলীগ সন্দেহে মারধর করল ছাত্রদল

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ: ভাতা দ্বিগুণ হয়ে ১২০০, ঘণ্টায় সম্মানী ২৫০০ থেকে বেড়ে ৩৬০০ টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত