Ajker Patrika

একই গল্পে বন্দী দ. আফ্রিকা

বোরহান জাবেদ
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৩২
একই গল্পে বন্দী দ. আফ্রিকা

আরেকটি বিশ্বকাপ। আরেকবার ‘এত কাছে, তবু এত দূরের’ আফসোস! আরেকবার যদি-কিন্তুর ফাঁক রেখে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রোটিয়াদের এই অসম্পূর্ণ গল্পগুলোর শুরুটা ১৯৯২ বিশ্বকাপ দিয়ে। যে গল্প ২০২১ সালে এসেও প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি, আসলে হারাতে দেয়নি তারা নিজেরাই।

দক্ষিণ আফ্রিকার এবারের বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল হার দিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার কাছে সেই হারের পর দেশটির পুরোনো ‘বর্ণবাদী’ বিতর্ক নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছিল। এ ঘটনায় উইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগে টিম বাসেই একাদশ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানান কুইন্টন ডি কক। তবে কোনো কিছুই পরের চার ম্যাচে প্রোটিয়াদের জয় আটকাতে পারেনি। এরপরও নেট রান রেটের জটিল মারপ্যাঁচে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের। তাতে আফসোসের গল্পটা হয়েছে আরও সমৃদ্ধ।

সে যা-ই হোক, ১৯৯২-এ ইংল্যান্ড (আসলে বৃষ্টি), ১৯৯৬-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ১৯৯৯-এ অস্ট্রেলিয়ার পর এবার দক্ষিণ আফ্রিকার ভাগ্যবিপর্যয়ে জড়িয়ে গেল বাংলাদেশের নাম। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮৪ রানের লক্ষ্য পেরোতে ১৩.৩ ওভার খেলাটাই সাদা চোখে তাদের কাল হয়েছে। অথচ মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকদের ৭৩ রানে অলআউট করার পর ম্যাচ জিততে অস্ট্রেলিয়া নেয় ৬.৩ ওভার। শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতে অস্ট্রেলিয়ার সমান পয়েন্ট হলেও বাংলাদেশ ম্যাচের নেট রেটের মারপ্যাঁচে বিশ্বকাপ-ভাগ্য থমকে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার।

পরশু রাতে ম্যাচ শেষে প্রোটিয়া কোচ মার্ক বাউচারকে এবার ভাগ্যবিপর্যয়ের প্রশ্নটির মুখোমুখি হতে হলো। এই গল্পে প্রথমবার যখন দক্ষিণ আফ্রিকার নাম যোগ হয়, তখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ৬ বছর দূরে বাউচার।

১৯৯২ সালের সেই বিশ্বকাপে ২১ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই রূপকথার পথে ছিল প্রোটিয়ারা। কিন্তু সেমিফাইনালে বৃষ্টি-ভাগ্যের কাছে হার মানতে হয় তাদের। ইংলিশদের ২৫২ রানের জবাবে একপর্যায়ে ৬ উইকেটে ২০৬ রান ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। বৃষ্টিতে প্রথমে নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ বলে ২২। আরেক দফা বৃষ্টি সেই লক্ষ্যকেই বানিয়ে দেয় ১ বলে ২২! এরপর কী হয়েছে, সেটা তো জানাই।

সেই যে শুরু, তারপর ১৯৯৯ থেকে ২০২১ সব ধরনের আইসিসি ইভেন্টে একই গল্প তাড়া করেছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। মাঝে ১৯৯৮ সালে ঢাকায় মিনি বিশ্বকাপে (এখনকার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি) একবার গল্পের ভিন্ন প্রেক্ষাপট দাঁড়িয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার হতাশার গল্পগুলোর কোনোটা হয়তো মেনে নেওয়ার মতো নয়, কোনোটা মেনে নেওয়ার মতো। তবে সবকিছুর সঙ্গেই মানিয়ে নিয়েছে তারা। যেমন করে আরেকবার মেনে নেওয়ার কথা জানালেন বাউচার, ‘এখন এই যদি-কিন্তুর গল্প করে লাভ নেই।’ বাউচার একদিক দিয়ে ঠিকই বলেছেন। এসব শুনতে শুনতেই তো খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টেনে এখন কোচিং পেশায় তিনি। তবে বাউচার চাইলেও কি এসব একদম পাশ কাটিয়ে যাওয়া যাচ্ছে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত