Ajker Patrika

কাঁচা সড়ক পাকা হচ্ছে স্বস্তিতে ১০ গ্রামের মানুষ

শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ২২
Thumbnail image

তারাগঞ্জের ইকরচালী থেকে মুকুলের বাজার পর্যন্ত সড়কের বাদ থাকা এক কিলোমিটার অংশে অবশেষে পাকাকরণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে দুই ইউনিয়নের ১০ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

এই সড়কে চলাচলের দুর্ভোগ নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এখন পাকা করার কাজ শেষ হলে দুর্দশা লাঘব হবে। যাতায়াতে কমবে কষ্ট। উৎপাদিত ফসল সহজে বাজারজাত করে ন্যায্যমূল্য মিলবে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইকরচালী-মুকুলের বাজার রাস্তাটি তিন কিলোমিটার। এর দুই পাশে দুই কিলোমিটার অংশ পাকা করা হয়। কিন্তু পালপাড়া মন্দির থেকে বরাতি বাজার পর্যন্ত মাঝখানের এক কিলোমিটার অংশ পাকা না করায় একটু বৃষ্টিতেই তা কাদাপানিতে একাকার হয়ে যেত। এ ছাড়া বর্ষার সময় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ত। এতে হাড়িয়ারকুঠি ও ইকরচালী ইউনিয়নের বাসিন্দাদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছিল।

নারায়ণজন গ্রামের সামাদ মিয়া বলেন, ‘বহুদিন পর এই রাস্তা কোনার কাম শুরু হইছে। কয়া বুঝির পামো না, হামরা কী খুশি। বান হোক আর বাইষ্যা হোক হামার যাইতে আসতে কোনো সমস্যা হবার নেয়। শেষ বয়সোত শান্তিতে রাস্তা কোনা দিয়া চলাফেরা কইরার পাইম।’

পালপাড়া গ্রামের ভারতী রানী জানান, এই রাস্তায় বর্ষা আসলে এক হাঁটু কাদা জমে থাকে। শুষ্ক মৌসুমে ধুলার জন্য হাঁটা যায় না। রাস্তার এমন দশার জন্য গ্রামের ছেলেমেয়ের বিয়ের ভালো সম্বন্ধ আসছিল না। এখন সড়ক পাকা হলে আর কোনো কষ্ট থাকবে না।

সড়কে কথা হয় জলুবার গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রিকশাভ্যান তো দূরের কথা, ওই এক কিলোমিটার রাস্তাত হাঁটি যাওয়া খুব কষ্টের ছিল। রাস্তাটা পাকা বানার জন্যে যায় আশ্বাস দেয় তাকে ভোট দিয়া মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমপি বানাই। বহু জাগাত ধরনা দিছি তাও রাস্তা হয় নাই। এবার সরকার হামার দিকে মুখ তুলি চাইছে। ওই জন্যে রাস্তা কোনা পাকা বানাওছে। সরকারোক হামার গ্রামবাসীর পক্ষ থাকি ধন্যবাদ। হামরা এখন ধান, পাট, সবজি কম খরচে তারাগঞ্জ হাটোত নিগি বেচপার পামো।’

ইকরচালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রবিউল ইসলাম মতে, সড়ক পাকা হওয়ার মাধ্যমে হাজারো মানুষের কষ্ট লাঘব হতে যাচ্ছে। কৃষকের পণ্য পরিবহন, শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত খুব সহজ হবে। নিয়মিত রিকশা, ইজিবাইক, সাইকেল, মোটরসাইকেল চলবে। বিশেষ করে ১০ গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে।

সড়কটি নিয়ে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকায় ‘কাদার গ্রাম পালপাড়া’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মেদ হায়দার জামান বলেন, ‘প্রকাশিত সংবাদটি আমাদের নজরে আসে। বিষয়টি স্থানীয় সাংসদকে জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য পেপার কাটিংসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানো হয়। বরাদ্দ আসার পর দরপত্রের মাধ্যমে রাস্তাটির কাজ শুরু করা হয়। কাজ শেষ হলে আশপাশের হাজারো মানুষের কষ্ট দূর হবে।’

রাস্তার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার গোলাম রব্বানী জানান, এখানে ৭৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করা হয়, তা দ্রুত চলছে। জুন মাসের আগেই কাজ শেষ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত