মালিহা লোধি

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান ক্রমেই অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ছে। ফলে দেশটি নিজের স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তার আশপাশের কৌশলগত অবস্থানকে আকার দিতে অক্ষম। বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে দেশটি এখন আর আগের মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।
পাকিস্তান বেশ কয়েকটি ফ্রন্টে, বিশেষ করে কাশ্মীর ও আফগানিস্তানে ধরা খেয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে একসময়কার কূটনীতির এই পাকা খেলোয়াড়ের এখন প্রধান কাজ হলো ধনী আরব দেশগুলোর কাছ থেকে ঋণ চাওয়া। এমনকি চীনের সঙ্গে দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাকিস্তানের প্রাসঙ্গিকতা ক্রমে কমছে। এর কূটনৈতিক বিকল্পগুলো সংকুচিত হচ্ছে।
বেশ কয়েকটি বিষয়ের সমন্বিত ফল আজকের এই অবস্থার জন্য দায়ী। এর মধ্যে আছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অবিরাম অস্থিরতা, দুর্বল শাসনব্যবস্থা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় অব্যাহত হুমকি এবং কৌশলগত বিভ্রান্তি। এতৎসত্ত্বেও মূল প্রশ্নটি হলো, এই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে বেশ কিছু উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কেন দেশটি অতীতে কৌশলগতভাবে ‘প্রাসঙ্গিক’ ছিল?
এর জবাব হলো, বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির কারণে বাইরের বিষয়গুলো পাকিস্তানকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছিল। স্বাধীনতার দুই দশক পর পর্যন্ত শীতল যুদ্ধ অব্যাহত ছিল। এটা পাকিস্তানকে কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের প্রিয়ভাজন করে রেখেছিল। এই সময়ে পশ্চিমাদের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট থেকে পাকিস্তান বেশ ভালো রকম সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আক্রমণের ফলে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসেবে সম্মুখ সারিতে চলে আসে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পরাজয় ও বিচ্ছিন্নতার পর পাকিস্তানের ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব কমে গেলেও নাইন ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর এটি দ্রুত পাল্টে যায়। পাকিস্তান কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে আবারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় চলে আসে। ফলে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের দেশগুলোর আরও দুই দশক পাকিস্তানের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, যা এই সময়ে দেশটির ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব বিশেষভাবে বেড়ে যায়।
পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক গুরুত্বের মূলে ছিল বাইরের শক্তি, আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং বড় শক্তিগুলোর দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া। দেশটির আন্তর্জাতিক ভূমিকার এই পরিবর্তনের সব চালিকাশক্তিই বাইরের বিষয়। শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী যুগে যে বৈশ্বিক পরিবেশ রচিত হয়, সেখানে কোনো দেশকে নিজের গুরুত্ব নিজেকেই বোঝাতে হয়। ফলে পাকিস্তান পিছিয়ে পড়ে।
বহিরাগত বাড়তি গুরুত্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়কে খাটো করে দেখাই এত দিন পাকিস্তানের অতীত অগ্রাধিকার ও কর্মপন্থাকে ঠিক করে দিয়েছে। তবে সেটা আর টেকসই ছিল না। কিন্তু দেশটির সব সরকারই এটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে যে গোটা বিশ্বের আগাপাছতলা বদলে গেছে এবং ভূ-রাজনীতির সুযোগ নিয়ে অর্থ কামিয়ে বেঁচে থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে। অভিজাত শাসক শ্রেণি বুঝতে পারেনি যে দেশটির কৌশলগত গুরুত্বহীনতা মোকাবিলার একমাত্র উপায় হলো নিজেকে শক্তিশালী করা, ক্ষমতায়ন করা এবং নিজের ঘর সাজানো। কিন্তু পুরোনো অভ্যাসগুলো পুরোনো দৃষ্টান্তের মতোই টিকে ছিল।
পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বহিরাগত ও অভ্যন্তরীণ চাপের কারণে দেশটি বিপদে পড়েছে এবং সরকারের উচিত বিশ্ব পরিস্থিতির পরিবর্তনকে স্বীকার করে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া এবং নিজেকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা।
পাকিস্তানকে এখন পুরো পাল্টে যাওয়া আন্তর্জাতিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে। বিশ্বের সব রাষ্ট্রের মধ্যেই তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। পাকিস্তানকে এখন দক্ষতার সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নতি করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থাধারীরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা তাদের ভূ-রাজনীতি প্রভাবিত ও গঠন করার ক্ষমতা দেয়। যদিও তারা পরাশক্তি নয়, তবু তাদের শক্তিশালী অর্থনীতি ও কূটনৈতিক দক্ষতার কারণে তারা অনেক দেশে সম্পর্ক গড়ে তোলার এবং জাতীয় স্বার্থের ব্যাপারে সমর্থন আদায়ের ক্ষেত্রে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় ক্ষমতার কাঠামোগত পরিবর্তন ও বিচ্ছুরণ, ক্ষমতার মুদ্রায় পরিবর্তন এবং মধ্যম মানের ক্ষমতাধারীদের কূটনৈতিক সক্রিয়তা তাদের জন্যই আরও বড় প্রভাব বলয় তৈরি করতে এবং বৈশ্বিক খেলোয়াড় হয়ে উঠতে সাহায্য করে। মধ্যম শক্তির দেশগুলো তাদের দর-কষাকষির অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য মার্কিন-চীন দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে উভয় বৈশ্বিক শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চায়। তারা সেই দ্বন্দ্বের সূক্ষ্ম ফাঁস এড়াতে চেষ্টা করে কিন্তু এর থেকে সুবিধাটাও সুদে-আসলে তুলে নেয়।
মধ্যম শক্তিগুলোর কূটনৈতিক সক্রিয়তা এবং ক্ষমতার কাঠামোগত পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় একটি পরিবর্তিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মার্কিন-চীন প্রতিযোগিতা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে এবং উভয় শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে। এর ফলে, মধ্যম শক্তিগুলো তাদের কূটনৈতিক দর-কষাকষির অবস্থানকে উন্নত করতে পারছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয় দেশই তাদের প্রতি আরও মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়, যাতে তারা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীর শিবিরে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ না হয়।
গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ যেমন তুরস্ক, ভারত, সৌদি আরব, কাতার ও সিঙ্গাপুরের মতো মধ্যম শক্তির দেশগুলোর তালিকায় পাকিস্তান এখনো স্থান পায় নি। তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সেই অবস্থানে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। পাকিস্তানের শক্তি ও অবস্থানের উন্নতি করার জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
আন্তর্জাতিকভাবে প্রাসঙ্গিক হওয়ার জন্য পাকিস্তানকে প্রথমে একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিস্থাপক অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা বেলআউট ও ঋণের ওপর নির্ভরশীল নয়। এমন একটি অর্থনীতি তৈরি করতে হবে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে একীভূত হবে। তবে এ থেকে বর্তমানে পাকিস্তান অনেক দূরে। এর জন্য দরকার দক্ষ শাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং রাজনৈতিক কোন্দলের অবসান। অস্থিতিশীলতা ও কোন্দল দেশকে অস্থির, বিভ্রান্ত ও বিভক্ত অবস্থায় রাখে। এর জন্য একটি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ও কর্মিবাহিনীরও প্রয়োজন, যা বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে উদ্ভাবন এবং অবদান রাখার ক্ষমতা রাখে। এই সবই জাতীয় আত্মবিশ্বাসের জন্ম দেবে, যা দেশকে আশা দিয়ে শক্তিশালী করতে পারে।
অভ্যন্তরীণ শক্তি তৈরির পাশাপাশি দেশের কূটনৈতিক কৌশলে সফট পাওয়ার অন্তর্ভুক্ত করাও এর বৈশ্বিক অবস্থান ও সুনাম উন্নত করতে সহায়তা করবে। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি সফট পাওয়ারের উৎস রয়েছে, তা যদি চিহ্নিত করা হয় এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়, তবে দেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে।
সংক্ষেপে বলা যায়, পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিকতা এখন তার অভ্যন্তরীণ অবস্থান এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা, টেকসই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, উপযুক্ত শাসনব্যবস্থা প্রদান, জনগণের জন্য বিনিয়োগ এবং এর মানব সম্পদের উন্নয়নের ঘাটতি মেটানোর ওপর নির্ভরশীল। ফলে পাকিস্তানকে একটি সুসংগত এবং ভবিষ্যৎমুখী বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। এগুলো ছাড়া বিশ্বে পাকিস্তানের প্রভাব পুনরায় বাড়ানোর কোনো সহজ পথ নেই।
(পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত এবং ঈষৎ সংক্ষেপিত)
লেখক: মালিহা লোধি
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান ক্রমেই অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ছে। ফলে দেশটি নিজের স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তার আশপাশের কৌশলগত অবস্থানকে আকার দিতে অক্ষম। বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে দেশটি এখন আর আগের মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।
পাকিস্তান বেশ কয়েকটি ফ্রন্টে, বিশেষ করে কাশ্মীর ও আফগানিস্তানে ধরা খেয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে একসময়কার কূটনীতির এই পাকা খেলোয়াড়ের এখন প্রধান কাজ হলো ধনী আরব দেশগুলোর কাছ থেকে ঋণ চাওয়া। এমনকি চীনের সঙ্গে দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাকিস্তানের প্রাসঙ্গিকতা ক্রমে কমছে। এর কূটনৈতিক বিকল্পগুলো সংকুচিত হচ্ছে।
বেশ কয়েকটি বিষয়ের সমন্বিত ফল আজকের এই অবস্থার জন্য দায়ী। এর মধ্যে আছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অবিরাম অস্থিরতা, দুর্বল শাসনব্যবস্থা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় অব্যাহত হুমকি এবং কৌশলগত বিভ্রান্তি। এতৎসত্ত্বেও মূল প্রশ্নটি হলো, এই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে বেশ কিছু উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কেন দেশটি অতীতে কৌশলগতভাবে ‘প্রাসঙ্গিক’ ছিল?
এর জবাব হলো, বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির কারণে বাইরের বিষয়গুলো পাকিস্তানকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছিল। স্বাধীনতার দুই দশক পর পর্যন্ত শীতল যুদ্ধ অব্যাহত ছিল। এটা পাকিস্তানকে কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের প্রিয়ভাজন করে রেখেছিল। এই সময়ে পশ্চিমাদের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট থেকে পাকিস্তান বেশ ভালো রকম সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আক্রমণের ফলে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসেবে সম্মুখ সারিতে চলে আসে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পরাজয় ও বিচ্ছিন্নতার পর পাকিস্তানের ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব কমে গেলেও নাইন ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর এটি দ্রুত পাল্টে যায়। পাকিস্তান কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে আবারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় চলে আসে। ফলে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের দেশগুলোর আরও দুই দশক পাকিস্তানের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, যা এই সময়ে দেশটির ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব বিশেষভাবে বেড়ে যায়।
পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক গুরুত্বের মূলে ছিল বাইরের শক্তি, আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং বড় শক্তিগুলোর দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া। দেশটির আন্তর্জাতিক ভূমিকার এই পরিবর্তনের সব চালিকাশক্তিই বাইরের বিষয়। শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী যুগে যে বৈশ্বিক পরিবেশ রচিত হয়, সেখানে কোনো দেশকে নিজের গুরুত্ব নিজেকেই বোঝাতে হয়। ফলে পাকিস্তান পিছিয়ে পড়ে।
বহিরাগত বাড়তি গুরুত্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়কে খাটো করে দেখাই এত দিন পাকিস্তানের অতীত অগ্রাধিকার ও কর্মপন্থাকে ঠিক করে দিয়েছে। তবে সেটা আর টেকসই ছিল না। কিন্তু দেশটির সব সরকারই এটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে যে গোটা বিশ্বের আগাপাছতলা বদলে গেছে এবং ভূ-রাজনীতির সুযোগ নিয়ে অর্থ কামিয়ে বেঁচে থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে। অভিজাত শাসক শ্রেণি বুঝতে পারেনি যে দেশটির কৌশলগত গুরুত্বহীনতা মোকাবিলার একমাত্র উপায় হলো নিজেকে শক্তিশালী করা, ক্ষমতায়ন করা এবং নিজের ঘর সাজানো। কিন্তু পুরোনো অভ্যাসগুলো পুরোনো দৃষ্টান্তের মতোই টিকে ছিল।
পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বহিরাগত ও অভ্যন্তরীণ চাপের কারণে দেশটি বিপদে পড়েছে এবং সরকারের উচিত বিশ্ব পরিস্থিতির পরিবর্তনকে স্বীকার করে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া এবং নিজেকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা।
পাকিস্তানকে এখন পুরো পাল্টে যাওয়া আন্তর্জাতিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে। বিশ্বের সব রাষ্ট্রের মধ্যেই তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। পাকিস্তানকে এখন দক্ষতার সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নতি করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থাধারীরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা তাদের ভূ-রাজনীতি প্রভাবিত ও গঠন করার ক্ষমতা দেয়। যদিও তারা পরাশক্তি নয়, তবু তাদের শক্তিশালী অর্থনীতি ও কূটনৈতিক দক্ষতার কারণে তারা অনেক দেশে সম্পর্ক গড়ে তোলার এবং জাতীয় স্বার্থের ব্যাপারে সমর্থন আদায়ের ক্ষেত্রে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় ক্ষমতার কাঠামোগত পরিবর্তন ও বিচ্ছুরণ, ক্ষমতার মুদ্রায় পরিবর্তন এবং মধ্যম মানের ক্ষমতাধারীদের কূটনৈতিক সক্রিয়তা তাদের জন্যই আরও বড় প্রভাব বলয় তৈরি করতে এবং বৈশ্বিক খেলোয়াড় হয়ে উঠতে সাহায্য করে। মধ্যম শক্তির দেশগুলো তাদের দর-কষাকষির অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য মার্কিন-চীন দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে উভয় বৈশ্বিক শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চায়। তারা সেই দ্বন্দ্বের সূক্ষ্ম ফাঁস এড়াতে চেষ্টা করে কিন্তু এর থেকে সুবিধাটাও সুদে-আসলে তুলে নেয়।
মধ্যম শক্তিগুলোর কূটনৈতিক সক্রিয়তা এবং ক্ষমতার কাঠামোগত পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় একটি পরিবর্তিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মার্কিন-চীন প্রতিযোগিতা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে এবং উভয় শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে। এর ফলে, মধ্যম শক্তিগুলো তাদের কূটনৈতিক দর-কষাকষির অবস্থানকে উন্নত করতে পারছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয় দেশই তাদের প্রতি আরও মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়, যাতে তারা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীর শিবিরে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ না হয়।
গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ যেমন তুরস্ক, ভারত, সৌদি আরব, কাতার ও সিঙ্গাপুরের মতো মধ্যম শক্তির দেশগুলোর তালিকায় পাকিস্তান এখনো স্থান পায় নি। তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সেই অবস্থানে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। পাকিস্তানের শক্তি ও অবস্থানের উন্নতি করার জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
আন্তর্জাতিকভাবে প্রাসঙ্গিক হওয়ার জন্য পাকিস্তানকে প্রথমে একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিস্থাপক অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা বেলআউট ও ঋণের ওপর নির্ভরশীল নয়। এমন একটি অর্থনীতি তৈরি করতে হবে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে একীভূত হবে। তবে এ থেকে বর্তমানে পাকিস্তান অনেক দূরে। এর জন্য দরকার দক্ষ শাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং রাজনৈতিক কোন্দলের অবসান। অস্থিতিশীলতা ও কোন্দল দেশকে অস্থির, বিভ্রান্ত ও বিভক্ত অবস্থায় রাখে। এর জন্য একটি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ও কর্মিবাহিনীরও প্রয়োজন, যা বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে উদ্ভাবন এবং অবদান রাখার ক্ষমতা রাখে। এই সবই জাতীয় আত্মবিশ্বাসের জন্ম দেবে, যা দেশকে আশা দিয়ে শক্তিশালী করতে পারে।
অভ্যন্তরীণ শক্তি তৈরির পাশাপাশি দেশের কূটনৈতিক কৌশলে সফট পাওয়ার অন্তর্ভুক্ত করাও এর বৈশ্বিক অবস্থান ও সুনাম উন্নত করতে সহায়তা করবে। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি সফট পাওয়ারের উৎস রয়েছে, তা যদি চিহ্নিত করা হয় এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়, তবে দেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে।
সংক্ষেপে বলা যায়, পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিকতা এখন তার অভ্যন্তরীণ অবস্থান এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা, টেকসই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, উপযুক্ত শাসনব্যবস্থা প্রদান, জনগণের জন্য বিনিয়োগ এবং এর মানব সম্পদের উন্নয়নের ঘাটতি মেটানোর ওপর নির্ভরশীল। ফলে পাকিস্তানকে একটি সুসংগত এবং ভবিষ্যৎমুখী বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। এগুলো ছাড়া বিশ্বে পাকিস্তানের প্রভাব পুনরায় বাড়ানোর কোনো সহজ পথ নেই।
(পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত এবং ঈষৎ সংক্ষেপিত)
লেখক: মালিহা লোধি
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত
মালিহা লোধি

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান ক্রমেই অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ছে। ফলে দেশটি নিজের স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তার আশপাশের কৌশলগত অবস্থানকে আকার দিতে অক্ষম। বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে দেশটি এখন আর আগের মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।
পাকিস্তান বেশ কয়েকটি ফ্রন্টে, বিশেষ করে কাশ্মীর ও আফগানিস্তানে ধরা খেয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে একসময়কার কূটনীতির এই পাকা খেলোয়াড়ের এখন প্রধান কাজ হলো ধনী আরব দেশগুলোর কাছ থেকে ঋণ চাওয়া। এমনকি চীনের সঙ্গে দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাকিস্তানের প্রাসঙ্গিকতা ক্রমে কমছে। এর কূটনৈতিক বিকল্পগুলো সংকুচিত হচ্ছে।
বেশ কয়েকটি বিষয়ের সমন্বিত ফল আজকের এই অবস্থার জন্য দায়ী। এর মধ্যে আছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অবিরাম অস্থিরতা, দুর্বল শাসনব্যবস্থা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় অব্যাহত হুমকি এবং কৌশলগত বিভ্রান্তি। এতৎসত্ত্বেও মূল প্রশ্নটি হলো, এই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে বেশ কিছু উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কেন দেশটি অতীতে কৌশলগতভাবে ‘প্রাসঙ্গিক’ ছিল?
এর জবাব হলো, বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির কারণে বাইরের বিষয়গুলো পাকিস্তানকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছিল। স্বাধীনতার দুই দশক পর পর্যন্ত শীতল যুদ্ধ অব্যাহত ছিল। এটা পাকিস্তানকে কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের প্রিয়ভাজন করে রেখেছিল। এই সময়ে পশ্চিমাদের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট থেকে পাকিস্তান বেশ ভালো রকম সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আক্রমণের ফলে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসেবে সম্মুখ সারিতে চলে আসে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পরাজয় ও বিচ্ছিন্নতার পর পাকিস্তানের ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব কমে গেলেও নাইন ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর এটি দ্রুত পাল্টে যায়। পাকিস্তান কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে আবারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় চলে আসে। ফলে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের দেশগুলোর আরও দুই দশক পাকিস্তানের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, যা এই সময়ে দেশটির ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব বিশেষভাবে বেড়ে যায়।
পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক গুরুত্বের মূলে ছিল বাইরের শক্তি, আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং বড় শক্তিগুলোর দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া। দেশটির আন্তর্জাতিক ভূমিকার এই পরিবর্তনের সব চালিকাশক্তিই বাইরের বিষয়। শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী যুগে যে বৈশ্বিক পরিবেশ রচিত হয়, সেখানে কোনো দেশকে নিজের গুরুত্ব নিজেকেই বোঝাতে হয়। ফলে পাকিস্তান পিছিয়ে পড়ে।
বহিরাগত বাড়তি গুরুত্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়কে খাটো করে দেখাই এত দিন পাকিস্তানের অতীত অগ্রাধিকার ও কর্মপন্থাকে ঠিক করে দিয়েছে। তবে সেটা আর টেকসই ছিল না। কিন্তু দেশটির সব সরকারই এটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে যে গোটা বিশ্বের আগাপাছতলা বদলে গেছে এবং ভূ-রাজনীতির সুযোগ নিয়ে অর্থ কামিয়ে বেঁচে থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে। অভিজাত শাসক শ্রেণি বুঝতে পারেনি যে দেশটির কৌশলগত গুরুত্বহীনতা মোকাবিলার একমাত্র উপায় হলো নিজেকে শক্তিশালী করা, ক্ষমতায়ন করা এবং নিজের ঘর সাজানো। কিন্তু পুরোনো অভ্যাসগুলো পুরোনো দৃষ্টান্তের মতোই টিকে ছিল।
পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বহিরাগত ও অভ্যন্তরীণ চাপের কারণে দেশটি বিপদে পড়েছে এবং সরকারের উচিত বিশ্ব পরিস্থিতির পরিবর্তনকে স্বীকার করে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া এবং নিজেকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা।
পাকিস্তানকে এখন পুরো পাল্টে যাওয়া আন্তর্জাতিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে। বিশ্বের সব রাষ্ট্রের মধ্যেই তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। পাকিস্তানকে এখন দক্ষতার সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নতি করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থাধারীরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা তাদের ভূ-রাজনীতি প্রভাবিত ও গঠন করার ক্ষমতা দেয়। যদিও তারা পরাশক্তি নয়, তবু তাদের শক্তিশালী অর্থনীতি ও কূটনৈতিক দক্ষতার কারণে তারা অনেক দেশে সম্পর্ক গড়ে তোলার এবং জাতীয় স্বার্থের ব্যাপারে সমর্থন আদায়ের ক্ষেত্রে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় ক্ষমতার কাঠামোগত পরিবর্তন ও বিচ্ছুরণ, ক্ষমতার মুদ্রায় পরিবর্তন এবং মধ্যম মানের ক্ষমতাধারীদের কূটনৈতিক সক্রিয়তা তাদের জন্যই আরও বড় প্রভাব বলয় তৈরি করতে এবং বৈশ্বিক খেলোয়াড় হয়ে উঠতে সাহায্য করে। মধ্যম শক্তির দেশগুলো তাদের দর-কষাকষির অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য মার্কিন-চীন দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে উভয় বৈশ্বিক শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চায়। তারা সেই দ্বন্দ্বের সূক্ষ্ম ফাঁস এড়াতে চেষ্টা করে কিন্তু এর থেকে সুবিধাটাও সুদে-আসলে তুলে নেয়।
মধ্যম শক্তিগুলোর কূটনৈতিক সক্রিয়তা এবং ক্ষমতার কাঠামোগত পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় একটি পরিবর্তিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মার্কিন-চীন প্রতিযোগিতা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে এবং উভয় শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে। এর ফলে, মধ্যম শক্তিগুলো তাদের কূটনৈতিক দর-কষাকষির অবস্থানকে উন্নত করতে পারছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয় দেশই তাদের প্রতি আরও মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়, যাতে তারা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীর শিবিরে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ না হয়।
গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ যেমন তুরস্ক, ভারত, সৌদি আরব, কাতার ও সিঙ্গাপুরের মতো মধ্যম শক্তির দেশগুলোর তালিকায় পাকিস্তান এখনো স্থান পায় নি। তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সেই অবস্থানে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। পাকিস্তানের শক্তি ও অবস্থানের উন্নতি করার জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
আন্তর্জাতিকভাবে প্রাসঙ্গিক হওয়ার জন্য পাকিস্তানকে প্রথমে একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিস্থাপক অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা বেলআউট ও ঋণের ওপর নির্ভরশীল নয়। এমন একটি অর্থনীতি তৈরি করতে হবে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে একীভূত হবে। তবে এ থেকে বর্তমানে পাকিস্তান অনেক দূরে। এর জন্য দরকার দক্ষ শাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং রাজনৈতিক কোন্দলের অবসান। অস্থিতিশীলতা ও কোন্দল দেশকে অস্থির, বিভ্রান্ত ও বিভক্ত অবস্থায় রাখে। এর জন্য একটি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ও কর্মিবাহিনীরও প্রয়োজন, যা বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে উদ্ভাবন এবং অবদান রাখার ক্ষমতা রাখে। এই সবই জাতীয় আত্মবিশ্বাসের জন্ম দেবে, যা দেশকে আশা দিয়ে শক্তিশালী করতে পারে।
অভ্যন্তরীণ শক্তি তৈরির পাশাপাশি দেশের কূটনৈতিক কৌশলে সফট পাওয়ার অন্তর্ভুক্ত করাও এর বৈশ্বিক অবস্থান ও সুনাম উন্নত করতে সহায়তা করবে। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি সফট পাওয়ারের উৎস রয়েছে, তা যদি চিহ্নিত করা হয় এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়, তবে দেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে।
সংক্ষেপে বলা যায়, পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিকতা এখন তার অভ্যন্তরীণ অবস্থান এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা, টেকসই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, উপযুক্ত শাসনব্যবস্থা প্রদান, জনগণের জন্য বিনিয়োগ এবং এর মানব সম্পদের উন্নয়নের ঘাটতি মেটানোর ওপর নির্ভরশীল। ফলে পাকিস্তানকে একটি সুসংগত এবং ভবিষ্যৎমুখী বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। এগুলো ছাড়া বিশ্বে পাকিস্তানের প্রভাব পুনরায় বাড়ানোর কোনো সহজ পথ নেই।
(পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত এবং ঈষৎ সংক্ষেপিত)
লেখক: মালিহা লোধি
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান ক্রমেই অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ছে। ফলে দেশটি নিজের স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তার আশপাশের কৌশলগত অবস্থানকে আকার দিতে অক্ষম। বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে দেশটি এখন আর আগের মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।
পাকিস্তান বেশ কয়েকটি ফ্রন্টে, বিশেষ করে কাশ্মীর ও আফগানিস্তানে ধরা খেয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে একসময়কার কূটনীতির এই পাকা খেলোয়াড়ের এখন প্রধান কাজ হলো ধনী আরব দেশগুলোর কাছ থেকে ঋণ চাওয়া। এমনকি চীনের সঙ্গে দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাকিস্তানের প্রাসঙ্গিকতা ক্রমে কমছে। এর কূটনৈতিক বিকল্পগুলো সংকুচিত হচ্ছে।
বেশ কয়েকটি বিষয়ের সমন্বিত ফল আজকের এই অবস্থার জন্য দায়ী। এর মধ্যে আছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অবিরাম অস্থিরতা, দুর্বল শাসনব্যবস্থা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় অব্যাহত হুমকি এবং কৌশলগত বিভ্রান্তি। এতৎসত্ত্বেও মূল প্রশ্নটি হলো, এই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে বেশ কিছু উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কেন দেশটি অতীতে কৌশলগতভাবে ‘প্রাসঙ্গিক’ ছিল?
এর জবাব হলো, বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির কারণে বাইরের বিষয়গুলো পাকিস্তানকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছিল। স্বাধীনতার দুই দশক পর পর্যন্ত শীতল যুদ্ধ অব্যাহত ছিল। এটা পাকিস্তানকে কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের প্রিয়ভাজন করে রেখেছিল। এই সময়ে পশ্চিমাদের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট থেকে পাকিস্তান বেশ ভালো রকম সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আক্রমণের ফলে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসেবে সম্মুখ সারিতে চলে আসে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পরাজয় ও বিচ্ছিন্নতার পর পাকিস্তানের ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব কমে গেলেও নাইন ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর এটি দ্রুত পাল্টে যায়। পাকিস্তান কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে আবারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় চলে আসে। ফলে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের দেশগুলোর আরও দুই দশক পাকিস্তানের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, যা এই সময়ে দেশটির ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব বিশেষভাবে বেড়ে যায়।
পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক গুরুত্বের মূলে ছিল বাইরের শক্তি, আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং বড় শক্তিগুলোর দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া। দেশটির আন্তর্জাতিক ভূমিকার এই পরিবর্তনের সব চালিকাশক্তিই বাইরের বিষয়। শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী যুগে যে বৈশ্বিক পরিবেশ রচিত হয়, সেখানে কোনো দেশকে নিজের গুরুত্ব নিজেকেই বোঝাতে হয়। ফলে পাকিস্তান পিছিয়ে পড়ে।
বহিরাগত বাড়তি গুরুত্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়কে খাটো করে দেখাই এত দিন পাকিস্তানের অতীত অগ্রাধিকার ও কর্মপন্থাকে ঠিক করে দিয়েছে। তবে সেটা আর টেকসই ছিল না। কিন্তু দেশটির সব সরকারই এটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে যে গোটা বিশ্বের আগাপাছতলা বদলে গেছে এবং ভূ-রাজনীতির সুযোগ নিয়ে অর্থ কামিয়ে বেঁচে থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে। অভিজাত শাসক শ্রেণি বুঝতে পারেনি যে দেশটির কৌশলগত গুরুত্বহীনতা মোকাবিলার একমাত্র উপায় হলো নিজেকে শক্তিশালী করা, ক্ষমতায়ন করা এবং নিজের ঘর সাজানো। কিন্তু পুরোনো অভ্যাসগুলো পুরোনো দৃষ্টান্তের মতোই টিকে ছিল।
পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বহিরাগত ও অভ্যন্তরীণ চাপের কারণে দেশটি বিপদে পড়েছে এবং সরকারের উচিত বিশ্ব পরিস্থিতির পরিবর্তনকে স্বীকার করে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া এবং নিজেকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা।
পাকিস্তানকে এখন পুরো পাল্টে যাওয়া আন্তর্জাতিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে। বিশ্বের সব রাষ্ট্রের মধ্যেই তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। পাকিস্তানকে এখন দক্ষতার সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নতি করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থাধারীরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা তাদের ভূ-রাজনীতি প্রভাবিত ও গঠন করার ক্ষমতা দেয়। যদিও তারা পরাশক্তি নয়, তবু তাদের শক্তিশালী অর্থনীতি ও কূটনৈতিক দক্ষতার কারণে তারা অনেক দেশে সম্পর্ক গড়ে তোলার এবং জাতীয় স্বার্থের ব্যাপারে সমর্থন আদায়ের ক্ষেত্রে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় ক্ষমতার কাঠামোগত পরিবর্তন ও বিচ্ছুরণ, ক্ষমতার মুদ্রায় পরিবর্তন এবং মধ্যম মানের ক্ষমতাধারীদের কূটনৈতিক সক্রিয়তা তাদের জন্যই আরও বড় প্রভাব বলয় তৈরি করতে এবং বৈশ্বিক খেলোয়াড় হয়ে উঠতে সাহায্য করে। মধ্যম শক্তির দেশগুলো তাদের দর-কষাকষির অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য মার্কিন-চীন দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে উভয় বৈশ্বিক শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চায়। তারা সেই দ্বন্দ্বের সূক্ষ্ম ফাঁস এড়াতে চেষ্টা করে কিন্তু এর থেকে সুবিধাটাও সুদে-আসলে তুলে নেয়।
মধ্যম শক্তিগুলোর কূটনৈতিক সক্রিয়তা এবং ক্ষমতার কাঠামোগত পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় একটি পরিবর্তিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মার্কিন-চীন প্রতিযোগিতা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে এবং উভয় শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে। এর ফলে, মধ্যম শক্তিগুলো তাদের কূটনৈতিক দর-কষাকষির অবস্থানকে উন্নত করতে পারছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয় দেশই তাদের প্রতি আরও মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়, যাতে তারা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীর শিবিরে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ না হয়।
গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ যেমন তুরস্ক, ভারত, সৌদি আরব, কাতার ও সিঙ্গাপুরের মতো মধ্যম শক্তির দেশগুলোর তালিকায় পাকিস্তান এখনো স্থান পায় নি। তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সেই অবস্থানে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। পাকিস্তানের শক্তি ও অবস্থানের উন্নতি করার জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
আন্তর্জাতিকভাবে প্রাসঙ্গিক হওয়ার জন্য পাকিস্তানকে প্রথমে একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিস্থাপক অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা বেলআউট ও ঋণের ওপর নির্ভরশীল নয়। এমন একটি অর্থনীতি তৈরি করতে হবে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে একীভূত হবে। তবে এ থেকে বর্তমানে পাকিস্তান অনেক দূরে। এর জন্য দরকার দক্ষ শাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং রাজনৈতিক কোন্দলের অবসান। অস্থিতিশীলতা ও কোন্দল দেশকে অস্থির, বিভ্রান্ত ও বিভক্ত অবস্থায় রাখে। এর জন্য একটি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ও কর্মিবাহিনীরও প্রয়োজন, যা বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে উদ্ভাবন এবং অবদান রাখার ক্ষমতা রাখে। এই সবই জাতীয় আত্মবিশ্বাসের জন্ম দেবে, যা দেশকে আশা দিয়ে শক্তিশালী করতে পারে।
অভ্যন্তরীণ শক্তি তৈরির পাশাপাশি দেশের কূটনৈতিক কৌশলে সফট পাওয়ার অন্তর্ভুক্ত করাও এর বৈশ্বিক অবস্থান ও সুনাম উন্নত করতে সহায়তা করবে। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি সফট পাওয়ারের উৎস রয়েছে, তা যদি চিহ্নিত করা হয় এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়, তবে দেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে।
সংক্ষেপে বলা যায়, পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিকতা এখন তার অভ্যন্তরীণ অবস্থান এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা, টেকসই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, উপযুক্ত শাসনব্যবস্থা প্রদান, জনগণের জন্য বিনিয়োগ এবং এর মানব সম্পদের উন্নয়নের ঘাটতি মেটানোর ওপর নির্ভরশীল। ফলে পাকিস্তানকে একটি সুসংগত এবং ভবিষ্যৎমুখী বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। এগুলো ছাড়া বিশ্বে পাকিস্তানের প্রভাব পুনরায় বাড়ানোর কোনো সহজ পথ নেই।
(পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত এবং ঈষৎ সংক্ষেপিত)
লেখক: মালিহা লোধি
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান ক্রমেই অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ছে। ফলে দেশটি নিজের স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তার আশপাশের কৌশলগত অবস্থানকে আকার দিতে অক্ষম। বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে দেশটি এখন আর আগের মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান ক্রমেই অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ছে। ফলে দেশটি নিজের স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তার আশপাশের কৌশলগত অবস্থানকে আকার দিতে অক্ষম। বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে দেশটি এখন আর আগের মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান ক্রমেই অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ছে। ফলে দেশটি নিজের স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তার আশপাশের কৌশলগত অবস্থানকে আকার দিতে অক্ষম। বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে দেশটি এখন আর আগের মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান ক্রমেই অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ছে। ফলে দেশটি নিজের স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তার আশপাশের কৌশলগত অবস্থানকে আকার দিতে অক্ষম। বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে দেশটি এখন আর আগের মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫