Ajker Patrika

নেছারাবাদে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ রাখার অভিযোগ

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ মে ২০২২, ১২: ৩৩
Thumbnail image

পিরোজপুরের নেছারাবাদে উত্তর-পূর্ব আরামকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় মিস্ত্রীকে বিদ্যালয়কক্ষে অবরুদ্ধ করে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার জলাবাড়ী ইউনিয়নের আরামকাঠিতে এ ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্রেণিকক্ষের চাবি সরানোর অপবাদ দিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। তবে প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে নাম না রাখায় ছাত্রীটির মাধ্যমে চাবি সরিয়ে শ্যামল মিত্রের লোকজন তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইউসুফ হোসেন ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মজনু মোল্লার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীটি বলে, ‘আমি সকালে বিদ্যালয়ে আসি। এমন সময় স্যার এসে আমাকে চাবি দিয়ে বিদ্যালয়ের রুম খুলতে বলেন। আমি শ্রেণিকক্ষের তালা খুলে প্রধান শিক্ষকের কাছে চাবি দিয়ে আসি। কিছুক্ষণ পর স্যার চাবি না পেয়ে চাবির কথা জিজ্ঞাসা করে আমাকে বলেন, তুমি তাড়াতাড়ি চাবি বের করে দাও। চাবি না পেলে তোমাকে পুলিশে দেব বলে ভয় দেখান।’

ওই ছাত্রীর মামা অপু বলেন, ‘আমার ভাগনি কান্না করতে করতে বাড়ি যাচ্ছিল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে ভাগনি জানায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে চাবি চুরির অপবাদ দিয়ে পুলিশের ভয় দেখিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছে। ওর কথা শুনে বিদ্যালয়ে যাই। গিয়ে দেখি শিক্ষক তার টেবিলের নিচে চাবি গুঁজে আমার ভাগনিকে চোর বলছে। পরে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে সেই চাবি প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে উদ্ধার করে।’

প্রধান শিক্ষক বিজয় মিস্ত্রী বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ে এসে মেয়েটিকে চাবি দিয়ে রুম খুলতে বলি। ও রুম খুলে আমাকে চাবি না দিয়ে অন্য একজনের কাছে দিয়ে দেয়। আমি চাবি না পেয়ে মেয়েটিকে একটু জিজ্ঞাসা করেছি মাত্র। এতে বিদ্যালয় কমিটির সাবেক সভাপতি শ্যামল মিত্রের লোকজন এসে জড়ো হয়ে আমাকে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রেখে নানান হুমকি দেন। কমিটিতে তাঁদের নাম রাখায় তাঁরা বিদ্যালয়ে এসে আমাকে ভয় দেখানোসহ হুমকি দিয়ে আসছিলেন।’

শ্যামল মিত্র বলেন, ‘আমি বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি। প্রধান শিক্ষক বিজয় মিস্ত্রী আমাকে না জানিয়ে কোনো রেজুলেশন ছাড়া তিনি একটি মনগড়া বিদ্যালয়ে কমিটি করেছেন। তিনি বিদ্যালয়ের উন্নয়নের টাকা দিয়ে যা ইচ্ছে তাই করছেন। আজকে আবার মেয়েটিকে চাবি চোর বানিয়ে আমার ওপর অভিযোগ করছেন। তাঁর কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁর তদন্ত হওয়া উচিত।’

সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মজনু মোল্লা বলেন, ‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ তদন্তের বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তারপরও তিনি যদি মেয়েটিকে খালি খালি চুরির অপবাদ দেন। তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইউসুফ হোসেন বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মজনু মোল্লাকে এর দায়িত্ব দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত