সাইফুল মাসুম, ঢাকা
‘সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের ইটেও টাকা চায়। ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। যাঁরা আসেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আসেন। এখানে ফেরেশতা আসলেও টাকা দিতে হবে।’ ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা আশরাফুল হায়দার খন্দকার। তিনি জানান, তাঁর শ্বশুর মঞ্জুরুল ইসলাম তিন মেয়ের নামে বিরুলিয়া এলাকার সাড়ে চার কাঠা জমি লিখে দেবেন। নিষ্কণ্টক জমি, তারপরও সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য আলাদা করে ৫ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছেন সাইদুল নামের একজন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, জমির ক্রেতা-বিক্রেতা, দলিল লেখক আর দালালের প্রচণ্ড ভিড় ভেতরে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দালালেরা নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে সহজেই জমি নিবন্ধনের কাজ করিয়ে দেন। কাগজপত্রে সমস্যা থাকলেও ঠিকমতো যাচাই করা হয় না। আর দালাল ছাড়া গেলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সাভারের সাব-রেজিস্ট্রার মাইকেল মহিউদ্দীন আব্দুল্লাহ পরিচয় জানার পর কিছু বলতে রাজি হননি।
ঢাকার পাশের কেরানীগঞ্জ, রূপগঞ্জসহ দেশের বেশ কিছু সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে খোঁজ নিয়েও একই চিত্র পাওয়া গেছে। অনেক সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে জাল দলিল তৈরির চক্রও সক্রিয়।
দেশে ভূমি হস্তান্তর দলিল নিবন্ধন হচ্ছে ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইনে। এ আইন অনুযায়ী ভূমি নিবন্ধনের দায়িত্ব সাব-রেজিস্ট্রারের। সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়-গুলো দেখভাল করে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা নিবন্ধন অধিদপ্তর।
সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কিছু অনিয়ম হয় বলে স্বীকার করলেও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মনে করেন না যে দেশে ব্যাপক অনিয়ম হয়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মনে হয় না সারা দেশে অনেক অনিয়ম হয়, তাহলে আমি জানতাম। যদি এমন কিছু হয়, অবশ্যই আইনি পদক্ষেপ নেব। তবে কিছু কিছু অনিয়ম বন্ধের চেষ্টাও আমরা করছি।’
অন্যদিকে নিবন্ধন অধিদপ্তরের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রারদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসে। তবে তদন্তে কিছু পাওয়া যায় না।’ আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। জিয়াউল হক বলেন, ‘নৈতিকতার বিষয়ে এখন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।’
ঘুষ আদায়ের অলিখিত নিয়ম
দেশের অধিকাংশ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে ঘুষ আদায়ের নিজস্ব কিছু নিয়মও বানানো হয়েছে। যেমন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অলিখিত নিয়ম রয়েছে, ভূমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকারি ফির বাইরেও জমির মূল্যের দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ দিতে হবে সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য। অর্থাৎ জমির মূল্য ১ কোটি টাকা হলে ৫০ হাজার টাকা সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য আলাদা দিতে হবে। দলিল লেখকদের কাছ থেকে ওই টাকা আদায়ের জন্য আবু ও কমল নামে দুজনকে নির্ধারিত করে দিয়েছেন সাব-রেজিস্ট্রার। ওই দুজন সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মী নন। কিন্তু প্রতিদিন অফিস সময়ে তাঁরা টেবিল পেতে বসেন কমিশন আদায় করতে। তবে সাব-রেজিস্ট্রার মো. শাহাজাহান আলী কমিশন আদায়ের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আবু ও কমলকে আমি চিনি না। তবে তাঁদের কথা শুনেছি। জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁদের বিষয়ে যাচাই করতে যাইনি।’
এ ছাড়া দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের আওতাধীন তেঘরিয়া, বেয়ারা, পশ্চিমদী, পূর্বদী ও বাক্তা মৌজার কয়েক শ দাগের জমি নিবন্ধন বন্ধ রাখা হয়েছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। ভুক্তভোগীদের দাবি, এসব মৌজায় প্রভাবশালী এক নেতার হাউজিং প্রকল্প থাকায় ভূমি নিবন্ধন করা হচ্ছে না। এর জন্য সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিবন্ধন বন্ধ রাখার বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রারের দাবি, উল্লিখিত মৌজাগুলো থেকে খুব কমসংখ্যক দলিল রেজিস্ট্রি হয়।
অভিযোগ আছে, রংপুরের বদরগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান কাজীকে ১ হাজার ২০০ টাকা ঘুষ না দিলে দলিল নিবন্ধন হয় না। দলিল লেখকদের কাছ থেকে ঘুষের টাকা তোলার জন্য তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন নকলনবিশ আনোয়ার হোসেনকে। দলিল লেখকদের কাছে গিয়ে আনোয়ারের টাকা আদায় করার একটি ভিডিও চিত্র আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। বদরগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান কাজী অবশ্য ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
ঘুষের বিনিময়ে রাজস্ব ফাঁকি
পাবনা, বরগুনা, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, পঞ্চগড় এলাকার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতেও জমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ঘুষ আদায়ের পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ আছে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে এবং বাজারমূল্য কম দেখিয়ে দলিল নিবন্ধন করে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করার অভিযোগ ওই সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে। জমির প্রকৃত দামের চেয়ে কম দাম দেখিয়ে নিবন্ধন করায় নিবন্ধন ফি কম দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সরকার যথাযথ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
নিবন্ধন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, প্রতিবছর গড়ে ৩৫ লাখের বেশি দলিল নিবন্ধন হয়। এতে রাজস্ব আয় হয় বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ঘুষের টাকা ভাগাভাগি
দলিল নিবন্ধনে ঘুষ বাবদ আদায় করা অর্থ ভাগ করে নেন সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, দলিল লেখক ও সংশ্লিষ্ট দালালেরা। অভিযোগ আছে, কুমিল্লা সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখকেরাই দলিল করার সময় অফিস খরচের অজুহাতে বাড়তি টাকা নেন। জানা যায়, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়ন্ত্রণ অফিস সহকারী খোশনেহার বেগমের হাতে। ঘুষের ২৫ শতাংশই নেন তিনি। ৫০ শতাংশ দেন সাব-রেজিস্ট্রারকে, বাকি ২৫ শতাংশ ভাগাভাগি হয় অন্যদের মধ্যে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মো. হানিফ ব্যস্ততার কথা বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ
জমির দলিল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দলিল লেখকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দেশের ৫০১টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে প্রায় ৯৮ হাজার নিবন্ধিত দলিল লেখক আছেন। তাঁরা জমির ক্রেতা-বিক্রেতার চাহিদা অনুসারে দলিল লেখেন। এর জন্য নির্ধারিত হারে পারিশ্রমিক নেওয়ার কথা। ১৯৯৪ সালে আইন মন্ত্রণালয় থেকে দলিল লেখকদের পারিশ্রমিকের হার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু দলিল লেখকেরা সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে সেবাগ্রহীতাদের থেকে ইচ্ছেমতো টাকা নেন। না দিলে নানাভাবে হয়রানি করেন। অনেক সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়ন্ত্রকও দলিল লেখকেরাই। নোয়াখালী সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের এজলাসে সাব-রেজিস্ট্রারের পাশে দাঁড়িয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন দলিল লেখক সমিতির নেতারা। জমির শ্রেণিসহ কাগজে গরমিল থাকলেও ঘুষের বিনিময়ে দ্রুত রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা করেন তাঁরা। একাধিক দলিল লেখক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, প্রতিটি সাব-কবলা দলিল রেজিস্ট্রি করতে প্রথমে সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য ২ হাজার টাকা, বঙ্গবন্ধু দলিল লেখক সমিতির নামে ১ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হয়। প্রতি হেবা দলিলে সরকারি চার্জ ১ হাজার ৫০০ টাকা হলেও নেওয়া হয় ৭-৮ হাজার টাকা।
বেড়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে দলিলপ্রতি লাখে ১ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ আছে। সমিতির নেতারা এই টাকা আদায় করেন। অভিযোগ রয়েছে, নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে নির্ধারিত অর্থের চেয়ে দ্বিগুণ টাকা দিতে হয় দলিল লেখকদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাব-রেজিস্ট্রার বলেন, ‘দলিল লেখকের পারিশ্রমিকের বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা অনেক আগের, সেটা আপডেট না করায় তাঁরা ইচ্ছেমতো টাকা নেন।’
বাড়তি টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ বলেন, ‘দলিল লেখকেরা কাজের পারিশ্রমিক তো অবশ্যই নেবেন। কাজ অনুসারে কত টাকা পাবেন, তা নির্ধারিত নেই। খুশি হয়ে পার্টি যা দেয়।’
ডিজিটালাইজেশন করার পরামর্শ
২০১৯ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় বলা হয়, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতে দলিল নিবন্ধনের জন্য সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়তি নেওয়া হয়। এর ১০-৫০ শতাংশ সাব-রেজিস্ট্রার এবং বাকি অংশ অন্যদের মধ্যে বণ্টন হয়। একটি অংশ জেলা রেজিস্ট্রার অফিস, নিবন্ধন অধিদপ্তর পর্যন্ত যাওয়ার অভিযোগ আছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘গবেষণার পরবর্তী সময়েও অবস্থার উন্নতি হয়নি। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতি অব্যাহত আছে। এসবের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশন করতে হবে। তাতে হয়তো দুর্নীতি অনেকটা কমে আসবে।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন কুমিল্লা, পাবনা, বরগুনা, নোয়াখালী, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, পঞ্চগড়, বাগাতিপাড়া, বেড়া, বদরগঞ্জ, পীরগাছা, ফুলবাড়ী, ডিমলা, কমলগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ ও সাভার প্রতিনিধি]
‘সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের ইটেও টাকা চায়। ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। যাঁরা আসেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আসেন। এখানে ফেরেশতা আসলেও টাকা দিতে হবে।’ ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা আশরাফুল হায়দার খন্দকার। তিনি জানান, তাঁর শ্বশুর মঞ্জুরুল ইসলাম তিন মেয়ের নামে বিরুলিয়া এলাকার সাড়ে চার কাঠা জমি লিখে দেবেন। নিষ্কণ্টক জমি, তারপরও সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য আলাদা করে ৫ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছেন সাইদুল নামের একজন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, জমির ক্রেতা-বিক্রেতা, দলিল লেখক আর দালালের প্রচণ্ড ভিড় ভেতরে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দালালেরা নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে সহজেই জমি নিবন্ধনের কাজ করিয়ে দেন। কাগজপত্রে সমস্যা থাকলেও ঠিকমতো যাচাই করা হয় না। আর দালাল ছাড়া গেলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সাভারের সাব-রেজিস্ট্রার মাইকেল মহিউদ্দীন আব্দুল্লাহ পরিচয় জানার পর কিছু বলতে রাজি হননি।
ঢাকার পাশের কেরানীগঞ্জ, রূপগঞ্জসহ দেশের বেশ কিছু সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে খোঁজ নিয়েও একই চিত্র পাওয়া গেছে। অনেক সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে জাল দলিল তৈরির চক্রও সক্রিয়।
দেশে ভূমি হস্তান্তর দলিল নিবন্ধন হচ্ছে ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইনে। এ আইন অনুযায়ী ভূমি নিবন্ধনের দায়িত্ব সাব-রেজিস্ট্রারের। সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়-গুলো দেখভাল করে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা নিবন্ধন অধিদপ্তর।
সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কিছু অনিয়ম হয় বলে স্বীকার করলেও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মনে করেন না যে দেশে ব্যাপক অনিয়ম হয়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মনে হয় না সারা দেশে অনেক অনিয়ম হয়, তাহলে আমি জানতাম। যদি এমন কিছু হয়, অবশ্যই আইনি পদক্ষেপ নেব। তবে কিছু কিছু অনিয়ম বন্ধের চেষ্টাও আমরা করছি।’
অন্যদিকে নিবন্ধন অধিদপ্তরের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রারদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসে। তবে তদন্তে কিছু পাওয়া যায় না।’ আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। জিয়াউল হক বলেন, ‘নৈতিকতার বিষয়ে এখন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।’
ঘুষ আদায়ের অলিখিত নিয়ম
দেশের অধিকাংশ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে ঘুষ আদায়ের নিজস্ব কিছু নিয়মও বানানো হয়েছে। যেমন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অলিখিত নিয়ম রয়েছে, ভূমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকারি ফির বাইরেও জমির মূল্যের দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ দিতে হবে সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য। অর্থাৎ জমির মূল্য ১ কোটি টাকা হলে ৫০ হাজার টাকা সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য আলাদা দিতে হবে। দলিল লেখকদের কাছ থেকে ওই টাকা আদায়ের জন্য আবু ও কমল নামে দুজনকে নির্ধারিত করে দিয়েছেন সাব-রেজিস্ট্রার। ওই দুজন সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মী নন। কিন্তু প্রতিদিন অফিস সময়ে তাঁরা টেবিল পেতে বসেন কমিশন আদায় করতে। তবে সাব-রেজিস্ট্রার মো. শাহাজাহান আলী কমিশন আদায়ের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আবু ও কমলকে আমি চিনি না। তবে তাঁদের কথা শুনেছি। জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁদের বিষয়ে যাচাই করতে যাইনি।’
এ ছাড়া দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের আওতাধীন তেঘরিয়া, বেয়ারা, পশ্চিমদী, পূর্বদী ও বাক্তা মৌজার কয়েক শ দাগের জমি নিবন্ধন বন্ধ রাখা হয়েছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। ভুক্তভোগীদের দাবি, এসব মৌজায় প্রভাবশালী এক নেতার হাউজিং প্রকল্প থাকায় ভূমি নিবন্ধন করা হচ্ছে না। এর জন্য সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিবন্ধন বন্ধ রাখার বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রারের দাবি, উল্লিখিত মৌজাগুলো থেকে খুব কমসংখ্যক দলিল রেজিস্ট্রি হয়।
অভিযোগ আছে, রংপুরের বদরগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান কাজীকে ১ হাজার ২০০ টাকা ঘুষ না দিলে দলিল নিবন্ধন হয় না। দলিল লেখকদের কাছ থেকে ঘুষের টাকা তোলার জন্য তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন নকলনবিশ আনোয়ার হোসেনকে। দলিল লেখকদের কাছে গিয়ে আনোয়ারের টাকা আদায় করার একটি ভিডিও চিত্র আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। বদরগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান কাজী অবশ্য ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
ঘুষের বিনিময়ে রাজস্ব ফাঁকি
পাবনা, বরগুনা, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, পঞ্চগড় এলাকার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতেও জমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ঘুষ আদায়ের পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ আছে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে এবং বাজারমূল্য কম দেখিয়ে দলিল নিবন্ধন করে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করার অভিযোগ ওই সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে। জমির প্রকৃত দামের চেয়ে কম দাম দেখিয়ে নিবন্ধন করায় নিবন্ধন ফি কম দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সরকার যথাযথ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
নিবন্ধন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, প্রতিবছর গড়ে ৩৫ লাখের বেশি দলিল নিবন্ধন হয়। এতে রাজস্ব আয় হয় বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ঘুষের টাকা ভাগাভাগি
দলিল নিবন্ধনে ঘুষ বাবদ আদায় করা অর্থ ভাগ করে নেন সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, দলিল লেখক ও সংশ্লিষ্ট দালালেরা। অভিযোগ আছে, কুমিল্লা সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখকেরাই দলিল করার সময় অফিস খরচের অজুহাতে বাড়তি টাকা নেন। জানা যায়, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়ন্ত্রণ অফিস সহকারী খোশনেহার বেগমের হাতে। ঘুষের ২৫ শতাংশই নেন তিনি। ৫০ শতাংশ দেন সাব-রেজিস্ট্রারকে, বাকি ২৫ শতাংশ ভাগাভাগি হয় অন্যদের মধ্যে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মো. হানিফ ব্যস্ততার কথা বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ
জমির দলিল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দলিল লেখকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দেশের ৫০১টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে প্রায় ৯৮ হাজার নিবন্ধিত দলিল লেখক আছেন। তাঁরা জমির ক্রেতা-বিক্রেতার চাহিদা অনুসারে দলিল লেখেন। এর জন্য নির্ধারিত হারে পারিশ্রমিক নেওয়ার কথা। ১৯৯৪ সালে আইন মন্ত্রণালয় থেকে দলিল লেখকদের পারিশ্রমিকের হার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু দলিল লেখকেরা সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে সেবাগ্রহীতাদের থেকে ইচ্ছেমতো টাকা নেন। না দিলে নানাভাবে হয়রানি করেন। অনেক সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়ন্ত্রকও দলিল লেখকেরাই। নোয়াখালী সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের এজলাসে সাব-রেজিস্ট্রারের পাশে দাঁড়িয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন দলিল লেখক সমিতির নেতারা। জমির শ্রেণিসহ কাগজে গরমিল থাকলেও ঘুষের বিনিময়ে দ্রুত রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা করেন তাঁরা। একাধিক দলিল লেখক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, প্রতিটি সাব-কবলা দলিল রেজিস্ট্রি করতে প্রথমে সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য ২ হাজার টাকা, বঙ্গবন্ধু দলিল লেখক সমিতির নামে ১ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হয়। প্রতি হেবা দলিলে সরকারি চার্জ ১ হাজার ৫০০ টাকা হলেও নেওয়া হয় ৭-৮ হাজার টাকা।
বেড়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে দলিলপ্রতি লাখে ১ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ আছে। সমিতির নেতারা এই টাকা আদায় করেন। অভিযোগ রয়েছে, নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে নির্ধারিত অর্থের চেয়ে দ্বিগুণ টাকা দিতে হয় দলিল লেখকদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাব-রেজিস্ট্রার বলেন, ‘দলিল লেখকের পারিশ্রমিকের বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা অনেক আগের, সেটা আপডেট না করায় তাঁরা ইচ্ছেমতো টাকা নেন।’
বাড়তি টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ বলেন, ‘দলিল লেখকেরা কাজের পারিশ্রমিক তো অবশ্যই নেবেন। কাজ অনুসারে কত টাকা পাবেন, তা নির্ধারিত নেই। খুশি হয়ে পার্টি যা দেয়।’
ডিজিটালাইজেশন করার পরামর্শ
২০১৯ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় বলা হয়, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতে দলিল নিবন্ধনের জন্য সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়তি নেওয়া হয়। এর ১০-৫০ শতাংশ সাব-রেজিস্ট্রার এবং বাকি অংশ অন্যদের মধ্যে বণ্টন হয়। একটি অংশ জেলা রেজিস্ট্রার অফিস, নিবন্ধন অধিদপ্তর পর্যন্ত যাওয়ার অভিযোগ আছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘গবেষণার পরবর্তী সময়েও অবস্থার উন্নতি হয়নি। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতি অব্যাহত আছে। এসবের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশন করতে হবে। তাতে হয়তো দুর্নীতি অনেকটা কমে আসবে।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন কুমিল্লা, পাবনা, বরগুনা, নোয়াখালী, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, পঞ্চগড়, বাগাতিপাড়া, বেড়া, বদরগঞ্জ, পীরগাছা, ফুলবাড়ী, ডিমলা, কমলগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ ও সাভার প্রতিনিধি]
সাইফুল মাসুম, ঢাকা
‘সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের ইটেও টাকা চায়। ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। যাঁরা আসেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আসেন। এখানে ফেরেশতা আসলেও টাকা দিতে হবে।’ ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা আশরাফুল হায়দার খন্দকার। তিনি জানান, তাঁর শ্বশুর মঞ্জুরুল ইসলাম তিন মেয়ের নামে বিরুলিয়া এলাকার সাড়ে চার কাঠা জমি লিখে দেবেন। নিষ্কণ্টক জমি, তারপরও সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য আলাদা করে ৫ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছেন সাইদুল নামের একজন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, জমির ক্রেতা-বিক্রেতা, দলিল লেখক আর দালালের প্রচণ্ড ভিড় ভেতরে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দালালেরা নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে সহজেই জমি নিবন্ধনের কাজ করিয়ে দেন। কাগজপত্রে সমস্যা থাকলেও ঠিকমতো যাচাই করা হয় না। আর দালাল ছাড়া গেলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সাভারের সাব-রেজিস্ট্রার মাইকেল মহিউদ্দীন আব্দুল্লাহ পরিচয় জানার পর কিছু বলতে রাজি হননি।
ঢাকার পাশের কেরানীগঞ্জ, রূপগঞ্জসহ দেশের বেশ কিছু সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে খোঁজ নিয়েও একই চিত্র পাওয়া গেছে। অনেক সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে জাল দলিল তৈরির চক্রও সক্রিয়।
দেশে ভূমি হস্তান্তর দলিল নিবন্ধন হচ্ছে ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইনে। এ আইন অনুযায়ী ভূমি নিবন্ধনের দায়িত্ব সাব-রেজিস্ট্রারের। সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়-গুলো দেখভাল করে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা নিবন্ধন অধিদপ্তর।
সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কিছু অনিয়ম হয় বলে স্বীকার করলেও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মনে করেন না যে দেশে ব্যাপক অনিয়ম হয়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মনে হয় না সারা দেশে অনেক অনিয়ম হয়, তাহলে আমি জানতাম। যদি এমন কিছু হয়, অবশ্যই আইনি পদক্ষেপ নেব। তবে কিছু কিছু অনিয়ম বন্ধের চেষ্টাও আমরা করছি।’
অন্যদিকে নিবন্ধন অধিদপ্তরের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রারদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসে। তবে তদন্তে কিছু পাওয়া যায় না।’ আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। জিয়াউল হক বলেন, ‘নৈতিকতার বিষয়ে এখন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।’
ঘুষ আদায়ের অলিখিত নিয়ম
দেশের অধিকাংশ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে ঘুষ আদায়ের নিজস্ব কিছু নিয়মও বানানো হয়েছে। যেমন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অলিখিত নিয়ম রয়েছে, ভূমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকারি ফির বাইরেও জমির মূল্যের দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ দিতে হবে সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য। অর্থাৎ জমির মূল্য ১ কোটি টাকা হলে ৫০ হাজার টাকা সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য আলাদা দিতে হবে। দলিল লেখকদের কাছ থেকে ওই টাকা আদায়ের জন্য আবু ও কমল নামে দুজনকে নির্ধারিত করে দিয়েছেন সাব-রেজিস্ট্রার। ওই দুজন সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মী নন। কিন্তু প্রতিদিন অফিস সময়ে তাঁরা টেবিল পেতে বসেন কমিশন আদায় করতে। তবে সাব-রেজিস্ট্রার মো. শাহাজাহান আলী কমিশন আদায়ের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আবু ও কমলকে আমি চিনি না। তবে তাঁদের কথা শুনেছি। জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁদের বিষয়ে যাচাই করতে যাইনি।’
এ ছাড়া দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের আওতাধীন তেঘরিয়া, বেয়ারা, পশ্চিমদী, পূর্বদী ও বাক্তা মৌজার কয়েক শ দাগের জমি নিবন্ধন বন্ধ রাখা হয়েছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। ভুক্তভোগীদের দাবি, এসব মৌজায় প্রভাবশালী এক নেতার হাউজিং প্রকল্প থাকায় ভূমি নিবন্ধন করা হচ্ছে না। এর জন্য সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিবন্ধন বন্ধ রাখার বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রারের দাবি, উল্লিখিত মৌজাগুলো থেকে খুব কমসংখ্যক দলিল রেজিস্ট্রি হয়।
অভিযোগ আছে, রংপুরের বদরগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান কাজীকে ১ হাজার ২০০ টাকা ঘুষ না দিলে দলিল নিবন্ধন হয় না। দলিল লেখকদের কাছ থেকে ঘুষের টাকা তোলার জন্য তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন নকলনবিশ আনোয়ার হোসেনকে। দলিল লেখকদের কাছে গিয়ে আনোয়ারের টাকা আদায় করার একটি ভিডিও চিত্র আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। বদরগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান কাজী অবশ্য ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
ঘুষের বিনিময়ে রাজস্ব ফাঁকি
পাবনা, বরগুনা, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, পঞ্চগড় এলাকার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতেও জমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ঘুষ আদায়ের পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ আছে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে এবং বাজারমূল্য কম দেখিয়ে দলিল নিবন্ধন করে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করার অভিযোগ ওই সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে। জমির প্রকৃত দামের চেয়ে কম দাম দেখিয়ে নিবন্ধন করায় নিবন্ধন ফি কম দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সরকার যথাযথ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
নিবন্ধন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, প্রতিবছর গড়ে ৩৫ লাখের বেশি দলিল নিবন্ধন হয়। এতে রাজস্ব আয় হয় বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ঘুষের টাকা ভাগাভাগি
দলিল নিবন্ধনে ঘুষ বাবদ আদায় করা অর্থ ভাগ করে নেন সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, দলিল লেখক ও সংশ্লিষ্ট দালালেরা। অভিযোগ আছে, কুমিল্লা সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখকেরাই দলিল করার সময় অফিস খরচের অজুহাতে বাড়তি টাকা নেন। জানা যায়, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়ন্ত্রণ অফিস সহকারী খোশনেহার বেগমের হাতে। ঘুষের ২৫ শতাংশই নেন তিনি। ৫০ শতাংশ দেন সাব-রেজিস্ট্রারকে, বাকি ২৫ শতাংশ ভাগাভাগি হয় অন্যদের মধ্যে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মো. হানিফ ব্যস্ততার কথা বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ
জমির দলিল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দলিল লেখকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দেশের ৫০১টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে প্রায় ৯৮ হাজার নিবন্ধিত দলিল লেখক আছেন। তাঁরা জমির ক্রেতা-বিক্রেতার চাহিদা অনুসারে দলিল লেখেন। এর জন্য নির্ধারিত হারে পারিশ্রমিক নেওয়ার কথা। ১৯৯৪ সালে আইন মন্ত্রণালয় থেকে দলিল লেখকদের পারিশ্রমিকের হার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু দলিল লেখকেরা সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে সেবাগ্রহীতাদের থেকে ইচ্ছেমতো টাকা নেন। না দিলে নানাভাবে হয়রানি করেন। অনেক সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়ন্ত্রকও দলিল লেখকেরাই। নোয়াখালী সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের এজলাসে সাব-রেজিস্ট্রারের পাশে দাঁড়িয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন দলিল লেখক সমিতির নেতারা। জমির শ্রেণিসহ কাগজে গরমিল থাকলেও ঘুষের বিনিময়ে দ্রুত রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা করেন তাঁরা। একাধিক দলিল লেখক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, প্রতিটি সাব-কবলা দলিল রেজিস্ট্রি করতে প্রথমে সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য ২ হাজার টাকা, বঙ্গবন্ধু দলিল লেখক সমিতির নামে ১ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হয়। প্রতি হেবা দলিলে সরকারি চার্জ ১ হাজার ৫০০ টাকা হলেও নেওয়া হয় ৭-৮ হাজার টাকা।
বেড়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে দলিলপ্রতি লাখে ১ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ আছে। সমিতির নেতারা এই টাকা আদায় করেন। অভিযোগ রয়েছে, নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে নির্ধারিত অর্থের চেয়ে দ্বিগুণ টাকা দিতে হয় দলিল লেখকদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাব-রেজিস্ট্রার বলেন, ‘দলিল লেখকের পারিশ্রমিকের বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা অনেক আগের, সেটা আপডেট না করায় তাঁরা ইচ্ছেমতো টাকা নেন।’
বাড়তি টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ বলেন, ‘দলিল লেখকেরা কাজের পারিশ্রমিক তো অবশ্যই নেবেন। কাজ অনুসারে কত টাকা পাবেন, তা নির্ধারিত নেই। খুশি হয়ে পার্টি যা দেয়।’
ডিজিটালাইজেশন করার পরামর্শ
২০১৯ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় বলা হয়, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতে দলিল নিবন্ধনের জন্য সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়তি নেওয়া হয়। এর ১০-৫০ শতাংশ সাব-রেজিস্ট্রার এবং বাকি অংশ অন্যদের মধ্যে বণ্টন হয়। একটি অংশ জেলা রেজিস্ট্রার অফিস, নিবন্ধন অধিদপ্তর পর্যন্ত যাওয়ার অভিযোগ আছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘গবেষণার পরবর্তী সময়েও অবস্থার উন্নতি হয়নি। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতি অব্যাহত আছে। এসবের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশন করতে হবে। তাতে হয়তো দুর্নীতি অনেকটা কমে আসবে।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন কুমিল্লা, পাবনা, বরগুনা, নোয়াখালী, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, পঞ্চগড়, বাগাতিপাড়া, বেড়া, বদরগঞ্জ, পীরগাছা, ফুলবাড়ী, ডিমলা, কমলগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ ও সাভার প্রতিনিধি]
‘সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের ইটেও টাকা চায়। ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। যাঁরা আসেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আসেন। এখানে ফেরেশতা আসলেও টাকা দিতে হবে।’ ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা আশরাফুল হায়দার খন্দকার। তিনি জানান, তাঁর শ্বশুর মঞ্জুরুল ইসলাম তিন মেয়ের নামে বিরুলিয়া এলাকার সাড়ে চার কাঠা জমি লিখে দেবেন। নিষ্কণ্টক জমি, তারপরও সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য আলাদা করে ৫ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছেন সাইদুল নামের একজন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, জমির ক্রেতা-বিক্রেতা, দলিল লেখক আর দালালের প্রচণ্ড ভিড় ভেতরে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দালালেরা নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে সহজেই জমি নিবন্ধনের কাজ করিয়ে দেন। কাগজপত্রে সমস্যা থাকলেও ঠিকমতো যাচাই করা হয় না। আর দালাল ছাড়া গেলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সাভারের সাব-রেজিস্ট্রার মাইকেল মহিউদ্দীন আব্দুল্লাহ পরিচয় জানার পর কিছু বলতে রাজি হননি।
ঢাকার পাশের কেরানীগঞ্জ, রূপগঞ্জসহ দেশের বেশ কিছু সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে খোঁজ নিয়েও একই চিত্র পাওয়া গেছে। অনেক সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে জাল দলিল তৈরির চক্রও সক্রিয়।
দেশে ভূমি হস্তান্তর দলিল নিবন্ধন হচ্ছে ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইনে। এ আইন অনুযায়ী ভূমি নিবন্ধনের দায়িত্ব সাব-রেজিস্ট্রারের। সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়-গুলো দেখভাল করে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা নিবন্ধন অধিদপ্তর।
সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কিছু অনিয়ম হয় বলে স্বীকার করলেও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মনে করেন না যে দেশে ব্যাপক অনিয়ম হয়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মনে হয় না সারা দেশে অনেক অনিয়ম হয়, তাহলে আমি জানতাম। যদি এমন কিছু হয়, অবশ্যই আইনি পদক্ষেপ নেব। তবে কিছু কিছু অনিয়ম বন্ধের চেষ্টাও আমরা করছি।’
অন্যদিকে নিবন্ধন অধিদপ্তরের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রারদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসে। তবে তদন্তে কিছু পাওয়া যায় না।’ আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। জিয়াউল হক বলেন, ‘নৈতিকতার বিষয়ে এখন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।’
ঘুষ আদায়ের অলিখিত নিয়ম
দেশের অধিকাংশ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে ঘুষ আদায়ের নিজস্ব কিছু নিয়মও বানানো হয়েছে। যেমন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অলিখিত নিয়ম রয়েছে, ভূমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকারি ফির বাইরেও জমির মূল্যের দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ দিতে হবে সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য। অর্থাৎ জমির মূল্য ১ কোটি টাকা হলে ৫০ হাজার টাকা সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য আলাদা দিতে হবে। দলিল লেখকদের কাছ থেকে ওই টাকা আদায়ের জন্য আবু ও কমল নামে দুজনকে নির্ধারিত করে দিয়েছেন সাব-রেজিস্ট্রার। ওই দুজন সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মী নন। কিন্তু প্রতিদিন অফিস সময়ে তাঁরা টেবিল পেতে বসেন কমিশন আদায় করতে। তবে সাব-রেজিস্ট্রার মো. শাহাজাহান আলী কমিশন আদায়ের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আবু ও কমলকে আমি চিনি না। তবে তাঁদের কথা শুনেছি। জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁদের বিষয়ে যাচাই করতে যাইনি।’
এ ছাড়া দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের আওতাধীন তেঘরিয়া, বেয়ারা, পশ্চিমদী, পূর্বদী ও বাক্তা মৌজার কয়েক শ দাগের জমি নিবন্ধন বন্ধ রাখা হয়েছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। ভুক্তভোগীদের দাবি, এসব মৌজায় প্রভাবশালী এক নেতার হাউজিং প্রকল্প থাকায় ভূমি নিবন্ধন করা হচ্ছে না। এর জন্য সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিবন্ধন বন্ধ রাখার বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রারের দাবি, উল্লিখিত মৌজাগুলো থেকে খুব কমসংখ্যক দলিল রেজিস্ট্রি হয়।
অভিযোগ আছে, রংপুরের বদরগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান কাজীকে ১ হাজার ২০০ টাকা ঘুষ না দিলে দলিল নিবন্ধন হয় না। দলিল লেখকদের কাছ থেকে ঘুষের টাকা তোলার জন্য তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন নকলনবিশ আনোয়ার হোসেনকে। দলিল লেখকদের কাছে গিয়ে আনোয়ারের টাকা আদায় করার একটি ভিডিও চিত্র আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। বদরগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান কাজী অবশ্য ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
ঘুষের বিনিময়ে রাজস্ব ফাঁকি
পাবনা, বরগুনা, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, পঞ্চগড় এলাকার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতেও জমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ঘুষ আদায়ের পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ আছে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে এবং বাজারমূল্য কম দেখিয়ে দলিল নিবন্ধন করে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করার অভিযোগ ওই সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে। জমির প্রকৃত দামের চেয়ে কম দাম দেখিয়ে নিবন্ধন করায় নিবন্ধন ফি কম দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সরকার যথাযথ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
নিবন্ধন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, প্রতিবছর গড়ে ৩৫ লাখের বেশি দলিল নিবন্ধন হয়। এতে রাজস্ব আয় হয় বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ঘুষের টাকা ভাগাভাগি
দলিল নিবন্ধনে ঘুষ বাবদ আদায় করা অর্থ ভাগ করে নেন সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, দলিল লেখক ও সংশ্লিষ্ট দালালেরা। অভিযোগ আছে, কুমিল্লা সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখকেরাই দলিল করার সময় অফিস খরচের অজুহাতে বাড়তি টাকা নেন। জানা যায়, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়ন্ত্রণ অফিস সহকারী খোশনেহার বেগমের হাতে। ঘুষের ২৫ শতাংশই নেন তিনি। ৫০ শতাংশ দেন সাব-রেজিস্ট্রারকে, বাকি ২৫ শতাংশ ভাগাভাগি হয় অন্যদের মধ্যে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মো. হানিফ ব্যস্ততার কথা বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ
জমির দলিল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দলিল লেখকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দেশের ৫০১টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে প্রায় ৯৮ হাজার নিবন্ধিত দলিল লেখক আছেন। তাঁরা জমির ক্রেতা-বিক্রেতার চাহিদা অনুসারে দলিল লেখেন। এর জন্য নির্ধারিত হারে পারিশ্রমিক নেওয়ার কথা। ১৯৯৪ সালে আইন মন্ত্রণালয় থেকে দলিল লেখকদের পারিশ্রমিকের হার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু দলিল লেখকেরা সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে সেবাগ্রহীতাদের থেকে ইচ্ছেমতো টাকা নেন। না দিলে নানাভাবে হয়রানি করেন। অনেক সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়ন্ত্রকও দলিল লেখকেরাই। নোয়াখালী সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের এজলাসে সাব-রেজিস্ট্রারের পাশে দাঁড়িয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন দলিল লেখক সমিতির নেতারা। জমির শ্রেণিসহ কাগজে গরমিল থাকলেও ঘুষের বিনিময়ে দ্রুত রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা করেন তাঁরা। একাধিক দলিল লেখক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, প্রতিটি সাব-কবলা দলিল রেজিস্ট্রি করতে প্রথমে সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য ২ হাজার টাকা, বঙ্গবন্ধু দলিল লেখক সমিতির নামে ১ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হয়। প্রতি হেবা দলিলে সরকারি চার্জ ১ হাজার ৫০০ টাকা হলেও নেওয়া হয় ৭-৮ হাজার টাকা।
বেড়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে দলিলপ্রতি লাখে ১ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ আছে। সমিতির নেতারা এই টাকা আদায় করেন। অভিযোগ রয়েছে, নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে নির্ধারিত অর্থের চেয়ে দ্বিগুণ টাকা দিতে হয় দলিল লেখকদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাব-রেজিস্ট্রার বলেন, ‘দলিল লেখকের পারিশ্রমিকের বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা অনেক আগের, সেটা আপডেট না করায় তাঁরা ইচ্ছেমতো টাকা নেন।’
বাড়তি টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ বলেন, ‘দলিল লেখকেরা কাজের পারিশ্রমিক তো অবশ্যই নেবেন। কাজ অনুসারে কত টাকা পাবেন, তা নির্ধারিত নেই। খুশি হয়ে পার্টি যা দেয়।’
ডিজিটালাইজেশন করার পরামর্শ
২০১৯ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় বলা হয়, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতে দলিল নিবন্ধনের জন্য সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়তি নেওয়া হয়। এর ১০-৫০ শতাংশ সাব-রেজিস্ট্রার এবং বাকি অংশ অন্যদের মধ্যে বণ্টন হয়। একটি অংশ জেলা রেজিস্ট্রার অফিস, নিবন্ধন অধিদপ্তর পর্যন্ত যাওয়ার অভিযোগ আছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘গবেষণার পরবর্তী সময়েও অবস্থার উন্নতি হয়নি। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতি অব্যাহত আছে। এসবের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশন করতে হবে। তাতে হয়তো দুর্নীতি অনেকটা কমে আসবে।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন কুমিল্লা, পাবনা, বরগুনা, নোয়াখালী, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, পঞ্চগড়, বাগাতিপাড়া, বেড়া, বদরগঞ্জ, পীরগাছা, ফুলবাড়ী, ডিমলা, কমলগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ ও সাভার প্রতিনিধি]
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
‘সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের ইটেও টাকা চায়। ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। যাঁরা আসেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আসেন। এখানে ফেরেশতা আসলেও টাকা দিতে হবে।’ ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা আশরাফুল হায়দার
১১ মার্চ ২০২৩‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের ইটেও টাকা চায়। ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। যাঁরা আসেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আসেন। এখানে ফেরেশতা আসলেও টাকা দিতে হবে।’ ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা আশরাফুল হায়দার
১১ মার্চ ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
‘সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের ইটেও টাকা চায়। ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। যাঁরা আসেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আসেন। এখানে ফেরেশতা আসলেও টাকা দিতে হবে।’ ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা আশরাফুল হায়দার
১১ মার্চ ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
‘সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের ইটেও টাকা চায়। ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। যাঁরা আসেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আসেন। এখানে ফেরেশতা আসলেও টাকা দিতে হবে।’ ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন সাভার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা আশরাফুল হায়দার
১১ মার্চ ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫