Ajker Patrika

‘সার না পেলে খেত নষ্ট হবে’

জামালপুর প্রতিনিধি
‘সার না পেলে খেত নষ্ট হবে’

জামালপুরে সারের সংকট যেন কাটছেই না। কৃষকেরা ডিলার ও খুচরা দোকানে সার না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

গত বুধবার সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষকদের মধ্যে সার বিক্রি করা হয়। স্থানীয় সার ডিলার আহসান হাবিব ২০০ বস্তা সার পেয়ে তিনজন কৃষকের মধ্যে এক বস্তা করে বিক্রি করেন। অল্প সময়ের মধ্যে ওই সার শেষ হয়ে যায়।

পরে কৃষকদের জানানো হয়, ‘আজ সার শেষ, আগামীকাল আবার দেওয়া হবে। এতে লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা কৃষকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। কৃষকেরা বলেন, ‘৭-৮ দিন ধরে বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও সার পাওয়া যাচ্ছে না। সকাল ৮টা থেকে লাইনে এসে দাঁড়িয়েছি। এখন বলছে সার নাই। এ সময় সার না দিতে পারলে খেত নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা কোথায় যাব। সরকার খোলাবাজারে সার দিলে আমরা সার কিনতে পারব।’

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৯ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর কৃষকদের মধ্যে সার বিতরণের জন্য ডিলারদের মধ্যে ৯২৮ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ দেওয়া হয়।

উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক জহুরুল সার না পেয়ে বাড়ি ফিরছেন। পথেই কথা হয় তাঁর সঙ্গে। হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সারের জন্য গেছিলাম। সার পাইলাম না। সকাল ৮টায় কামকাজ বাদ দিয়ে লাইনে খাড়াইয়া ছিলাম। এখন অফিসার আইস্যা বলল, সার কাল দিবে। কৃষি কার্ড যাদের আছে তাগরেই দিব। তাহলে আমার ৯০ শতাংশ জমির ধান নষ্ট হয়ে যাবে। চিন্তায় পথ দেখতাছি না।’ একই কথা বলেন হামিদপুর এলাকার কৃষক কামাল, ‘আমি ১১০ কড়া জমি আবাদ করছি। ৭-৮ দিন ধরে নান্দিনা শরিফপুর ঘুরে সার পাই নাই। আজ (বুধবার) সকালে মুকুলবাজারে সার দেওয়ার কথা শুইনা সকাল ৮টায় এসে লাইনে বসে ছিলাম। সার না নিয়ে ফিরে যাইতাছি। কী করমু খেত বাঁচাইতে না পারলে আমরা কী খামু। সরকার খোলাবাজারে সার দেইক। প্রয়োজনে ১ হাজার ৬০০ টাকা বস্তায় সার কিনমু।’

শ্যামপুর গ্রামের ৭০ বছর বয়সের কৃষক হাসেন আলী সকাল ৯টা থেকে সারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, ‘৯০ শতাংশ জমিতে আবাদ করছি। ৮০০ টাকা কামলার ময়না (মজুরি) আলবাইছি ১২ টাকা। আমার খেত লাইতে ৫০ হাজার টাকা খরচ হইছে, এখন সারের ব্যাগড়ে খেত বাঁচতাছে না। কী করমু, সরকার কী চায়। আমরা না খেয়ে মরি সরকার এইড্যাই চাইছে। কামকাজ বাদ দিয়ে সাত দিন ধইরে ঘুরতাছি সার পাইতাছি না। আমরা সার কেমনে পামু, সার না দিলে খেত বাঁচামু কেমনে।’

এদিকে কৃষকেরা সার পাচ্ছে না কেন জানতে বেলা ১টায় সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা ইয়াসমিনের অফিসে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত