Ajker Patrika

হঠাৎ ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসল, ঘরবাড়ির ক্ষতি

নাসিরনগর ও সরাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ৪৬
Thumbnail image

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও সরাইলে ৩০ মিনিটের ঝড়ে স্কুল, মাদ্রাসা, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ ৩০০ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত রোববার রাত ৩টার পর এই ঝড় হয়। এ ছাড়া শিলাবৃষ্টিতে দুই উপজেলার প্রায় তিন হাজার হেক্টরের বেশি জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আধা পাকা বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসল রয়েছে। পাশাপাশি দুই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। এসব এলাকায় রাত ৩টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নাসির নগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নে। ভলাকুট বাজারে ২০টি দোকান এবং ওই গ্রামে ৭০টি ঘর, খাগালিয়া গ্রামে ৬৫টি ঘর, বাঘী ও কুটুই ২০টি ঘর, বালিখোলায় ৫০টি ঘর, দুটি মাদ্রাসা, দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত গেছে। এ ছাড়া নাসিরনগর সদরে ধনকুড়া গ্রামে ১০টি ঘর, কুন্ডা ইউনিয়নে একটি কিন্ডারগার্টেনসহ ১০টি ঘর এবং বুড়িশ্বর ইউনিয়নে ৫টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৪টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে।

সরেজমিনে উপজেলার ভলাকুটে দেখা গেছে, ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। রাস্তার ওপর ঘর ও গাছপালা ভেঙে পড়ে কুন্ডা থেকে ভলাকুট পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তার যান চলাচল ভোর থেকে বন্ধ রয়েছে। নাসিরনগর সদরে অবস্থিত একমাত্র সরকারি কলেজের একটি হোস্টেলের টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। পূর্ব বালিখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকটি টেবিল ছাড়া আর কোনো কিছুই নেই।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিতা রানী দাস বলেন, ‘রাতে ঝড় হয়েছে। সকালে এসে দেখি স্কুলের টেবিল চেয়ার ছাড়া আর কোনো কিছু নেই।’

উপজেলার ভলাকুট ইউপি চেয়ারম্যান রুবেল মিয়া বলেন, ‘হঠাৎ ঝড়ে ইউনিয়ন পরিষদের চালা বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। পরিষদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া অফিসের কম্পিউটারটিও নষ্ট হয়ে গেছে।’

নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদি হাসান খান শাওন বলেন, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ভলাকুট ও পূর্বভাগ ইউনিয়নে বেশি ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। ভলাকুট ইউনিয়নের প্রায় ২৫০ ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলায় প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর ফসলি জমিসহ কয়েকটি সরকারি বিদ্যালয়, সরকারি কলেজ হোস্টেল ও মসজিদ-মাদ্রাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সরাইল উপজেলার পাকশিমুল, চুন্টা, পানিশ্বর, অরুয়াইল ও শাহজাদাপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে এই ঝড় ও শিলাবৃষ্টি বয়ে গেছে। এর মধ্যে উপজেলার অরুয়াইলও পাকশিমুল এলাকার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

সরাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. একরাম হোসেন বলেন, ঝড়ে নুয়ে পড়া পাকা ধানের তেমন ক্ষতি হবে না, তবে শিলাবৃষ্টিতে সামান্য ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করছি। একই সঙ্গে কৃষকেরা যেন ক্ষতির মুখে না পড়েন, সেদিকে লক্ষ রেখে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ের কাজ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত