Ajker Patrika

খেজুর রসের স্বাদ ভুলতে বসেছে নতুন প্রজন্ম

বাসাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৩৮
খেজুর রসের স্বাদ ভুলতে বসেছে নতুন প্রজন্ম

বাসাইলে একদিকে যেমন গাছির সংকট, অন্যদিকে খেজুরের গাছ ব্যবহার হচ্ছে ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে। এ কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে খেজুরের গাছ ও রস। বর্তমান প্রজন্ম ভুলতে বসেছে এর স্বাদ। তালের মতো খেজুরের গাছ লাগানোর তাগিদ দিয়েছেন গাছপ্রেমীরা।

শীতে খেজুরের রসের সঙ্গে গ্রামবাংলার সম্পর্ক বেশ পুরোনো ও নিবিড়। তবে এই গাছের রসের স্বাদ ভুলতে বসেছেন মানুষ। বর্তমানে ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে খেজুরের গাছ ব্যবহার ও গাছিসংকটে তেমনভাবে আর রস সংগ্রহ করা হয় না। ফলে হারাতে বসেছে একসময়ের রস সংগ্রহের ঐতিহ্যও।

আগে রাস্তার ধারে খেজুর গাছ দেখা যেত। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে গ্রামের সেসব রাস্তায় লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। ফলে খেজুর গাছ হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।

শীত মৌসুমে গ্রামের প্রতি ঘরে খেজুরের রস দিয়ে ফিরনি, পায়েস তৈরি করা হতো। গুড় দিয়ে চিড়া-মুড়ি, খইয়ের নাড়ু, ভাঁপা, চিতই পিঠাসহ হরেক রকম পিঠাপুলির মহোৎসব চলত। আগের দিনে গাছিরা পৌষ ও মাঘের কুয়াশার চাদর মোড়ানো সকালে গাছ থেকে সংগৃহীত কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থান ও হাটবাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আবার কেউ সকালে রস জ্বাল দিয়ে গুড়-মিঠাই তৈরি করতেন।

গাছি খশবর আলী বলেন, সড়ক সংস্কারের কারণে খেজুরের গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। নতুন করে আর কেউ গাছ লাগাচ্ছেন না। বর্তমানে যে হারে কেটে ফেলা হচ্ছে, তাতে একসময় হয়তো আমাদের এলাকায় খেজুরের গাছ আর দেখা যাবে না।

স্থানীয় বৃক্ষপ্রেমীরা বলছেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে খেজুরের গাছ কমে যাচ্ছে। কারণ নতুন করে গাছ লাগানোয় মানুষ আগ্রহী হচ্ছেন না। তালগাছের মতো যদি খেজুরের গাছ লাগানোর ব্যাপারে সরকারি-বেসরকারি প্রচার থাকত, তাহলে হয়তো এ গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পেত। বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পেত ঐতিহ্যবাহী খেজুরের সুস্বাদু রস।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজনীন আক্তার বলেন, গাছিদের খেজুরের গাছ কাটার কাজটি এক ধরনের শিল্প। এর জন্য দরকার হয় বিশেষ দক্ষতার। ডাল কেটে গাছের বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য। খেজুরের রস থেকে বিভিন্ন রকমের গুড় তৈরি করে থাকেন গাছিরা। দিন দিন এই শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত